নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্ন আর বাস্তবতা- ঘুমভাঙা সকালের মতো

তৌহিদ জামান73

বাইসাইকেলও কখনো কখনো সুখকর স্মৃতি হয়ে যায়!

তৌহিদ জামান73 › বিস্তারিত পোস্টঃ

দুঃখবিলাস-৭

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:২৬

পিলুভাই কলা খেতে পছন্দ করেন। জানতাম।
সেদিন দেখা করতে এলেন দুলাভাই। অনেক খাবার এনেছেন সাথে। শুকনো খাবারের মধ্যে চিড়া, পাটালি বিস্কুট ইত্যাদি রয়েছে। সাথে এনেছেন বিশাল সাইজের ডজনখানেকের বেশি কলা।
বললাম, দুলাভাই এসব খাবারের চেয়ে এক বান্ডিল বিড়ি দেন। এক বান্ডিলে ৫ শ' বিড়ির স্টিক থাকে।
বিড়ি দেবার কথা শুনে তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন ভদ্রলোক।
আমি বলি, দেন এই জগতে বিড়ির চেয়ে আপন কেহ নাই!
উনি তো বিড়ির বিষয়ে কিছুই জানেন না। এক বৃষ্টিসকালে ওয়ার্ডের ভেতর দুজন আনমনে বসে আছেন।
ভাবি, বৃষ্টি স্মৃতিকাতর করেছেন দুজনকেই। আসলে বৃষ্টি আসে মানুষের, প্রাণির, সবুজের সর্বদেহ রাঙাতে।
তাদের স্মৃতিকাতরতায় মুগ্ধ হই। দুজন একমনে বৃষ্টির শব্দ শুনছে, আর সৌন্দর্য উপভোগ করছে। দেখতে ভারি ভাল লাগলো।
তারা দুজন এমন বিভোর হয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে যে তাদের ডাকত্ওে ইচ্ছে হল না। যদি ঘোর কেটে যায়।
এভাবে ঘণ্টা পার হয়ে যায়। দুজনের কেউই ওঠে না। আশ্চর্য ভাললাগায় মন ভরে গেল!
কি জানি কি করছিলাম। হঠাত তাদের একজনের চিতকারে সম্বিত ফিরে পাই। তাকিয়ে দেখি একজন খুশিতে হাসছে, অপরজন কিছুটা বিষন্ন।
খুশি মানুষটা অপরজনের কাছে বলছেন, দে আমার দু' প্যাকেট দে। আমি জিতেছি।
বিষয়টি ভালভাবে পর্যবেক্ষণ ও শুনে যা বুঝলাম, তাতে বৃষ্টির প্রতি তাদের যে কেমন ভালবাসা তা হাড়ে হাড়ে টের পেলাম।
মূল ঘটনা, বৃষ্টিতে দেয়ালের ওপরে দুটি কাক ভিজছিল। ভদ্রলোক দুজন এক একটি কাকের ওপর বাজি ধরেছেন। যার কাক আগে উড়বে তাকে অপরপক্ষ দু'প্যাকেট বিড়ি দেবে।
হায়রে বৃষ্টিস্মৃতিকাতর মানুষ!!
দুলাভাইকে বুঝাতে পারিনি এখানে বিড়ির মূল্য নগদ টাকার চেয়ে ভয়ংকর রকম বেশি।
যিনি আমাদের খাবার ধরেন, কাপড় ধুয়ে দেন, বাসন পরিষ্কার করে দেন, তাকে সপ্তাহান্তে বিড়ি দেয়া লাগে।
যাহোক দুলাভাই বললেন, দাড়া- এনে দিচ্ছি।
কিছুটা স্বস্তি পাই। উনি বাইরে গেলেন। ফিরলেন কিছুক্ষণ পর। তারপর যেটা হাতে ধরিয়ে দেয়া হল-তা পেয়ে হাসবো না কাদবো ভেবে পাই না।
উনি ধুমপান ত্যাগ করার ওষুধ, চুইং জিনজার এনেছেন দু কৌটা।
তাই সই... মালামাল নিয়ে ওয়ার্ডে ফিরছি। বেশ খানিকটা দূরত্ব। হাটতে হাটতে আসছি, আর পরিচিত-অপরিচিত অধিবাসীদের চাহিদা মেটাচ্ছি।
যখন ওয়ার্ডে ফিরি, পিলুভাইয়ের হাতে মোটে দুটো কলা দিতে পারলাম।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.