![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার পাঠানপাইকপাড়া স্কুল মাঠে হাজার হাজার মানুষের ভীড়। সবাই এসেছেন হাডুডু খেলার ফাইনাল দেখতে। আর এ খেলাকে সামনে রেখে পুরো এলাকাতেই সাজ সাজ রব। পসরা সাজিয়ে বসেছেন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। আনা হয়েছে নাগরদোলা। হরদম বিক্রি হচ্ছে পিঁয়াজু, চপ, চটপটি, জিলেপি, বাতাসা- আরও কত কী!
বাংলাদেশের জাতীয় এই খেলাকে এই গ্রামে এমন জাঁকজমকভাবে উদ্যাপিত হয়ে আসছে বহুকাল আগে থেকেই। পাঠানপাইকপাড়া সার্বিক উন্নয়ন সংস্থার আয়োজনে এবারকার প্রতিযোগিতা ১০৪তম।
আয়োজক কমিটির ক্রীড়া সম্পাদক ইউনুস আলী বলেন, এবারের প্রতিযোগিতায় বৃহত্তর যশোরের ১৬টি দল অংশগ্রহণ করে। দুদিনব্যাপী খেলায় ফাইনালে মুখোমুখি হয় টাইগার জলিল স্পোর্টিং ক্লাব ও সীমাখালি হাডুডু দল। উত্তেজনাকর খেলায় সীমাখালি হাডুডু দল প্রতিপক্ষকে ২-০ পয়েন্টে হারিয়ে প্রথম পুরস্কারে ভূষিত হয়। আর প্রথম পুরস্কার হিসেবে দলের অধিনায়ক ফারুক হোসেনের হাতে একটি ১০০ সিসি মোটরসাইকেলের চাবি তুলে দেয়া হয়। দ্বিতীয় পুরস্কার হিসেবে একটি ১৪ সিএফটি ফ্রিজ এবং তৃতীয় পুরস্কার দেয়া হয় একটি ২১ ইঞ্চি রঙিন টেলিভিশন।
খেলা দেখতে আসা জয়রামপুরের ৬৭ বছর বয়সী শহর আলী বিশ্বাস জানান, দশ বছর বয়স থেকেই তিনি এই খেলা দেখতে আসেন। দেশের ঐতিহ্যবাহী এই খেলা এখন অনেকেই ভুলতে বসেছে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। তিনি চান, নিজেদের এই খেলা যেন সবাই মনে রাখে সে ব্যবস্থা করা উচিৎ।
পুরুষের পাশাপাশি খেলা দেখতে আসেন অনেক প্রমীলা। কলেজছাত্রী মিম ও আয়েশা তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন বেশ উচ্ছ্বাসের সাথে। এত মানুষ একসাথে ঐতিহ্যবাহী এই খেলা উপভোগ করছেন দেখে তারা খুবই খুশি। বিশেষ করে আজকের এই খেলা তাদের জন্যে বেশ স্মরণীয়ও বটে। কেননা এই খেলার প্রধান অতিথি হয়ে এসেছেন দেশের একজন মন্ত্রী।
ফাইনাল খেলায় প্রধানঅতিথি ছিলেন বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এমপি। তিনি ফাইনাল খেলার উদ্বোধন করেন এবং কিছুসময় খেলা উপভোগ করেন। তিনি উপস্থিত সকলের উদ্দেশে বলেন, গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী জাতীয় এই খেলাকে হারিয়ে যেতে দেয়া হবে না। বাংলাদেশের সব প্রান্তরে জনপ্রিয় এই খেলাটিকে পৌঁছে দিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে তিনি অনুরোধ করবেন বলে জানান। পাঠানপাইকপাড়ার আয়োজনে তিনি তার মুগ্ধতার বিষয়টিও উপস্থাপন করেন।
প্রথম পুরস্কার বিজয়ী দলের অধিনায়ক ফারুক হোসেন জানান, তিনি ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার সন্তান। দেশ ও দেশের বাইরে বহু জায়গায় তিনি হাডুডু খেলায় অংশ নিয়েছেন। কিন্তু,এই আয়োজনে বিশেষভাবে খুশি এবং উচ্ছ্বসিত কেননা হাডুডু খেলায় এত সংখ্যক দর্শক আগে তিনি দেখেননি। সরকার যেন এই খেলার বিস্তৃতিলাভে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়-সেটাই তার আকাক্সক্ষা।
আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান সবদুল হোসেন খান বলেন, জাতীয় খেলা হাডুডু আজ বিলুপ্তির পথে। গ্রামবাংলার মেহনতি মানুষ সারাদিন পরিশ্রমশেষে একটু যাতে বিনোদিত হতে পারে- সে ব্যবস্থা নেয়া দরকার। এক্ষেত্রে পাঠানপাইকপাড়া মডেল হিসেবে দৃশ্যমান। ১০৪তম আয়োজন এবং প্রায় পচিশ হাজার মানুষের উপস্থিতিই প্রমাণ করে এ অঞ্চলের মানুষ কতটা হাডুডুভক্ত। তিনি মন্ত্রীর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে হাডুডু খেলার প্রসারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি জানান।
বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন ছাড়াও অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ লুৎফর রহমান, ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি ইকবাল কবীর জাহিদ, সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান ভিটু, অধ্যাপক লুৎফর রহমান ছাড়াও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
২| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:২৩
এহসান সাবির বলেছেন: দারুন খবর।
৩| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৩৯
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: আমাদের ঐতিহ্যগুলো এভাবেই যেন টিকে থাকে, নিজেদের ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলা আর অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলা সমান কথা।
অনেক ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫৪
♥কবি♥ বলেছেন: গ্রামীণ এই খেলাটি আজকাল প্রায় দেখাই যায় না। খবরটিকে সামনে নিয়ে আসার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।