![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যশোর।।
স্কুলের বন্ধুদের হাসি-আনন্দে মাতিয়ে রাখবে না আর মাইশা। ছোট্ট এই শহরের সবার প্রিয়মুখ পপলুকে আর আড্ডায় পাবেন না তার সুহৃদরা। সকলকে ব্যাথার সাগরে ভাসিয়ে চিরবিদায় নিলেন বাবা-আর মেয়ে।
হাজার হাজার মানুষের চোখের জলে আজ সম্পন্ন হলো কুমিল্লায় পেট্রোল বোমায় নিহত নূরজ্জামান পপলু আর তার মেয়ে মাইশার নামাজে জানাজা।
বুধবার বেলা ১১টায় যশোর কেন্দ্রীয় ঈদগাহে তাদের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর শহরের ঘোপ কবরস্থানে সমাহিত করা হয় তাদের।
জানাজার আগে নিহতের বড়ভাই প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান এবং ছেলে মাথিনের আবেগাপ্লুত বক্তব্যে সেখানে থাকা মানুষ চোখের জল আটকে রাখতে পারেননি।
জানাজায় আগতদের উদ্দেশে স্বজনহারা এ দু’জনের দাবি, রাজনীতির নামে এমন সহিংসতা ও তার নির্মম বলি যেন আর কাউকেই এভাবে বরণ করতে না হয়।
গত বৃহস্পতিবার মাইশা একপ্রকার বায়না ধরেই কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে গিয়েছিল বাবা-মার সাথে। সুখের সেইসব মুহূর্তগুলো বন্ধুদের জানিয়ে দিতে তা ফেসবুকে আপলোডও করে। সমুদ্রবিলাসশেষে বাবা-মায়ের সাথে জীবিত অবস্থায় ফিরতে পারেনি সে। বাবার সাথে লাশ হয়ে ফিরলো মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিজবাড়িতে।
সহিংসতার রাজনীতির নির্মম বলি পপলু আর তার আদরের মেয়ে মাইশা দুর্বৃত্তদের ছোড়া পেট্রোলবোমায় দগ্ধ হয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালো। দগ্ধ হয়েছেন মা মিতাও। সর্বশেষ ফেসবুকে পোস্ট করা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে নিজ হাতে বাবা-মার সাথে তোলা সুখের মুহূর্তের ছবিগুলো এখন শুধুই স্মৃতি। ওই ছবিগুলোর মিষ্টি হাসি এখন স্বজনদের চোখে কেবল জলই ঝরাচ্ছে।
মাইশা তাসনীমের সহপাঠী তাসনিম তাবাসসুম, নাসরিন আক্তার সাথীর মতে, ‘ও ছিল আমাদের হাসি-খুশির প্রতিক। সবসময় তার হাসিমুখ আমাদের ছিল প্রেরণা। ডাক্তার হওয়ার বাসনা ছিল, তাই একসাথেই একই কোচিং সেন্টারে ভর্তি হই। যেন এসএসসিতে খুব ভাল রেজাল্ট হয়।’
ভেজাকণ্ঠে তাদের জিজ্ঞাসা, ‘নোংরা এই রাজনীতির নির্মম বলি কেন আমাদের বন্ধুকেই হতে হবে?’
নিহত পপলুর বন্ধু যশোর কলেজের অধ্যক্ষ মোস্তাক হোসেন শিম্বা জানান, এ ধরনের ঘটনা খুবই হৃদয়বিদারক। বর্তমান রাজনৈতিক নেতৃত্বের কাছে তিনি দাবি করেন, সহিংসতার পথ পরিহার করুন। আপনাদের কারণে এভাবে তরতাজা প্রাণ হারিয়ে যাবে-তা কারোই কাম্য নয়।
যশোর পুলিশ লাইন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক মো. আব্দুল আজিজ জানান, মাইশা ২০০৬ সালে ওয়ানে ভর্তি হয়। ক্লাস সিক্স পর্যন্ত তার বাবা অথবা মা স্কুলে দিয়ে যেতেন। এরপর সে বন্ধুদের সাথেই আসতো।
দীর্ঘ এ সময়ে তার বিরুদ্ধে কখনোই কেউ কোন কমপ্লেন করেনি জানিয়ে তিনি দাবি করেন, রাজনীতি হোক রাজনীতির ভাষায়, নির্মমতার শিকার কোন ছেলেমেয়ে যেন আর বহন না করে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার ভোররাতে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বাসে পেট্রোলবোমায় নিহত ৭ জনের মধ্যে ছিলেন যশোরের মাইশা তাসনীম (১৫) ও তার বাবা নূরুজ্জামান পপলু (৫০)। আর মা মাহফুজা বেগম মিতা (৪৪) হন অগ্নিদগ্ধ। তারা শহরের ঘোপ এলাকার বাসিন্দা।
নিহত পপলু কক্সবাজারে ঠিকাদারী কাজে যাচ্ছিলেন। এসময় মেয়ে মাইশা তার সাথে যাবার বায়না করলে তিনি স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে গত বৃহস্পতিবার কক্সবাজারে যান। তিনদিন বেড়ানো শেষে সোমবার রাতে তারা যশোরে ফিরছিলেন।
খবর পেয়ে বড়ভাই পাট গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক আসাদুজ্জামান কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে লাশ দুটি শনাক্ত করেন। সহিংসতায় মাহফুজা বেগম মিতার হাত, পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থান পুড়ে যায়।
নূরুজ্জামান পপলু পেশায় ঠিকাদার ছিলেন। শহরের ঘোপ সেন্ট্রাল রোডে তার বাড়ি। তিনি শহরের অতি পরিচিত মুখ। মেয়ে মাইশা যশোর পুলিশ লাইন হাইস্কুলের দশম শ্রেণিতে পড়ত। ছেলে হাসিব মোহাম্মদ ইমতিয়াজ জামান মাথিন আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ-এর বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত।
২| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৫
জীবলু বলেছেন: এই নির্মমতার প্রতিবাদ জানানোরও ভাষা হারিয়ে ফেলেছি । এই অসুস্থ রাজনিতী থেকে আমরা যে কবে মুক্তি পাব তা আল্লা মালুম । মরহুমদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
যাদের কারনে অকালে ঝরে গেল এই মূল্যবান দুটি প্রান তাদের বিচারের জোর দাবী জানাচ্ছি ।
শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ বণ্ধু ।
©somewhere in net ltd.
১|
০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:৪৬
চাঁদগাজী বলেছেন:
খালেদা জিয়া 'অবরোধ' শব্দটি উচ্ছারণ করার সাথে সাথে পাকী সন্ত্রাসীরা সারাদেশ দখল করে নিয়েছে; দেশকে করেছে আফগানিস্তান।