![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যশোরে বিষ্ণুপদ সমাদ্দার নামে এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মহানবী হজরত মোহাম্মদ (স.) সম্পর্কে কটূক্তি এবং মুসলমানদের ধর্মবিশ্বাসে আঘাত হানার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হলে ওই ডাক্তারের কর্মস্থলে পুলিশ যায়। তবে, বিষ্ণুপদ সমাদ্দার মহানবী (সা.) সম্পর্কে কোনো কথা বলেননি বলে দাবি করেছেন।
হাসপাতালটির একাধিক ডাক্তার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলছেন, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, সংশ্লিষ্ট ডাক্তার-কর্মচারী বা আঘাতপ্রাপ্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে অভিযুক্ত ডাক্তারকে গ্রেফতার করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
যশোর শহরের খাজুরা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থিত †বসরকারি হাসপাতাল ‘যশোর শিশু হাসপাতালে’ চাকরি করেন ডা. বিষ্ণুপদ সমাদ্দার।
হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত ডা. বিষ্ণুপদ সমাদ্দার দায়িত্বরত ছিলেন। দুপুরে ডা. শাকিল মেহেদি রেজা অফিসে এসে তাকে হাজিরার বিষয়টি ইনফর্ম (জানাতে) করতে যান। এসময় ডা. বিষ্ণুপদ তার উদ্দেশে বলেন, ‘ নেড়ের বাচ্চা আসবাই তো। তোমাদের নবী তো যুদ্ধের নামে মানুষ খুন করে বেড়াতো। তার কাছ থেকেই প্রশিক্ষণ নিয়ে এখন ব্লগারদের হত্যা করছো।’ এছাড়াও ডাক্তার সমাদ্দার মহানবী (স.) সম্বন্ধে আরও নানা মন্তব্য করেন।
বিনাউস্কানিতে ডা. বিষ্ণুপদর এই অনাকাঙিক্ষত, বিতর্কিত ও অবমাননাকর বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন ডা. শাকিল। এ সময় ডা. সমাদ্দার তার দিকে তেড়ে আসেন।
সূত্র আরো জানিয়েছে, ডা. বিষ্ণুপদ এর আগেও মহানবীকে (স.) ‘চরিত্রহীন’ বলেছেন। এছাড়া তিনি ‘হিন্দুদের এ গ্রেড নাগরিক ও মুসলিমদের সি গ্রেড নাগরিক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
বিভিন্ন সময় মহানবী (স.) ও মুসলিমদের সম্পর্কে নানা নেনতিবাচক কথাবার্তা বললেও বৃহস্পতিবারের লাগামছাড়া বক্তব্য হজম করতে পারেননি ডা. শাকিল। তিনি ডা. সমাদ্দারের কথার প্রতিবাদ করেন। এ নিয়ে দুই ডাক্তারের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। এ সময় হাসপাতালে আগত রোগী ও তাদের স্বজনরাও ঘটনা শুনে উত্তেজিত হয়ে ওঠে। ক্রমে আশপাশের লোকজনের কানেও যায় বিষয়টি। সন্ধ্যার দিকে এলাকার বহু লোক হাসপাতালে আসেন ডা. সমাদ্দারের কথার প্রতিবাদ করতে।
শিশু হাসপাতাল-লাগোয়া এসএম মেডিকেল নামে একটি ওষুধের দোকানি নাহিদ জানান, ডা. সমাদ্দার রাসুল (সা.) সম্বন্ধে আজেবাজে কথাবার্তা বলায় লোকজন উত্তেজিত হয়ে ওঠে। সন্ধ্যার পর ক্রমে হাসপাতালে বিক্ষুব্ধ লোকজনের ভিড় বাড়তে থাকে।
লোকজন উত্তেজিত হয়ে উঠছে এবং পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে আশঙ্কায় সন্ধ্যার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জরুরি সভায় বসে। সেখানে সংশ্লিষ্ট দুই ডাক্তারকেই সতর্ক করা হয় বলে সূত্র জানায়। ওই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়।
ডা. শাকিল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘ডা. সমাদ্দারের কথায় যেকোনো মুসলিম আহত হবেন। তাই আমি প্রতিবাদ করেছি।’
একই হাসপাতালের চিকিৎসক ইমদাদুল হক জানান, তিনি হাসপাতালে রাউন্ডে এসে বিষয়টি শুনেছেন। তবে এ বিষয়ে ডা. সমাদ্দারের সঙ্গে কথা হয়নি।
ডা. বিষ্ণুপদ সমাদ্দারের সঙ্গে শুক্রবার সকাল নয়টার দিকে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। ধর্মানুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘শাকিল মেহেদি রেজা পরিকল্পিতভাবে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার বিষয়টি উত্থাপন করেছেন। উনি আমার অ্যাসিস্ট্যান্ট, হয়তো আমাকে পছন্দ করেন না। স্রেফ সাধারণ মানুষের অনুভূতিকে পুঁজি করে ইসলাম ধর্ম ও মহানবী (সা.) সম্পর্কে কটূক্তির কল্প কাহিনী সাজিয়ে তিনি আমাকে নাজেহাল করার চেষ্টা করছেন।’
তিনি বলেন, ‘আমিও একটা ধর্ম বিশ্বাস করি, কেন অপর ধর্মের প্রতি এ ধরনের কটূক্তি করতে যাবো?’
এ বিষয়ে যশোর কোতয়ালী থানার ওসি শিকদার আককাছ আলী জানান, খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছিলেন। বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
রাত ১২টায় যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনা শুনেছেন বলে জানান।
এডিশনাল এসপি বলেন, ‘কোতয়ালী থানার ওসিকে আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলেছি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, কোনো ডাক্তার বা আঘাতপ্রাপ্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে অভিযুক্ত ডাক্তারকে গ্রেফতার করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
©somewhere in net ltd.