![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি আমার মতই। সুখদুঃখের স্মৃতিতেই আমার বসবাস। তবে সুখের কথাগুলোই বলতে ভালোবাসি।
ভাগ্যগুণে বা দোষে ঢাকা এসে অনার্স ও মাস্টার্সে পড়াশুনা করার সুযোগ পেয়েছি। একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে মানসম্মান বজায় রেখে চাকরি করছি। বেতন-ও দেয়। বেতন কত পাই সেটা নাই বা বললাম। তবে বেতনের চেয়ে আমি আমার কাজের প্রশংসাই বেশি পাই। অফিসের আমি একজন প্রিয় কলিগ ।
অত্যান্ত নম্র ও ভদ্র হওয়ার কারনে মানুষ (কেউ) আমার সাথে বেয়াদবি করলে তাঁর সাথে বেয়াদবি করতে পারিনা। তবে মানুষ হিসেবে, আমার একটা মন আছে, আছে সম্মানবোধও। তাই ঘৃণা না করলেও ঐ মানুষটির প্রতি আমার সম্মানবোধ নষ্ট হয়ে যায়। যেটা আর কখনও ফিরে আসে না।
আমি নীলফামারী গভ. কলেজের প্রাত্তন ছাত্র নই। তাই নীলফামারীর আর দশজনের মতো আমি মেধাবীও নই। এমনটি বলার কারন জানতে চাচ্ছেন নিশ্চয়, হ্যাঁ বলছি, আমি পড়েছি সাংবাদিকতায় (অনার্স ও মাস্টার্স)। এই পেশায় থাকবো বলে ঠিক করেছি। বন্ধুমুখে জানতে পারলাম অ্যালেক্সা রেটিং-এ বাংলাদেশের প্রথম সারির একটি অনলাইন পত্রিকার মালিকের বাড়ি আমার জন্মস্থানে, নীলফামারী। জেনে আমি যারপরনাই খুশি হলাম। আমার তৈরি করা সিভি সামান্য এডিট করে গেলাম সেই অফিসে, জমা দিলাম। মাস দুয়েক পরে আমাকে ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকা হলো।
ইন্টারভিউয়ে ডেকে সে কি ব্যবহার? কয়েকটি ঘটনা/দৃশের কথা না বললে বোঝাতে পারবো না।
রিসেপশনিস্ট (বিশ/বাইশ বছর বয়েসী এক ছেলে) জিজ্ঞেস করলেন, কাক চান? কোঠে থাকি আইচ্ছেন?
উত্তরে বললাম, ..... ডট কমের ইন্টার্ভিউয়ের জন্য আমাকে ডাকা হয়েছে।
আমার কথা শোনা মাত্রই ফোনের রিসিভার উঠিয়ে কোথায় যেন কল করলেন, আর বললেন – স্যার, ..... ডট কম থাকি একঝন আইচ্ছে।
ডিরেক্টর নিজেই ওনার রুম থেকে বের হয়ে আসলেন।
ডিরেক্টর আমার পরিচিত। উঁচু, লম্বা, দীর্ঘদেহী আর ফর্সা, পুরোপুরি হ্যান্ডসাম যাকে বোঝায়, তিনি দেখতে সেরকমেই। আগে (গভ. হাই স্কুলে পড়া অবস্থায়) বড় মাঠের মধ্যে দেখা হলে সালাম-হাই-হ্যালো টাইপের কথা হতো। আমি আমার স্বভাবসুলভ হাসি মুখে ভাই বলে সম্বোধন করলাম। উনি আমাকে চিনতে পেরেছেন বলে মনে হলো না। ওনাকে আগে সালাম দিতাম সেকথা মনে করিয়ে দিলেও তিনি অতীত হাতরে আমাকে মনে করতে পারলেন না। মনে মনে একটি স্মরণীয় বাণী সৃষ্টি করলাম – ‘অতীতের পরিচয়েই বড় পরিচয় নয়, বর্তমানের পরিচয়েই বড় পরিচয়।‘
ততোক্ষণে ডিরেক্টর সাহেবের রুমে বসে কথা বলছি। অনার্স – মাস্টার্স কোথা থেকে করেছি, এখন কোথায় চাকরি করছি, এমন কি কত বেতন পাচ্ছি সেটাও তিনি জিজ্ঞেস করে জেনে নিলেন।
তিনি আমার সিভিটা নাক সিটকে সিটকে দেখছেন, আর বলছেন - এটা কোনো সিভি হইছে?
ভাবলাম সিভিতে দেয়া ইনফর্মেশনগুলো কম হয়ে গেছে তাই ডিরেক্টর সাহেবের পছন্দ হয় নি। কিন্তু তাই বলে এমনটি হবে ভাবতে পারিনি।
টেবিলের ঐ প্রান্ত থেকে তিনি আমার সিভিটা ছুড়ে মারলেন, এবার যেন খানিকটা জোর দিয়েই বলল – এটা কোনো সিভি হইছে? অবাক হলাম, ওনার বাড়ি নীলফামারী বলে। সাথে আমার বাড়িও। ভাবলাম আমি নিজে মফিজ হয়ে, আরেক মফিজের কাছে চাকরি চাইতে আসছি। অন্য জেলার লোক হলে আমি নিশ্চয় আর এক মুহূর্ত বসে থাকতাম না। শুধু আমি মফিজ বলে বসে থাকলাম, আরও কিছু সময়, খেয়াল করতে লাগলাম, ডিরেক্টর সাহেবের কথাবার্তা, আর আচরণ ভঙ্গি!
উনি বলে যাচ্ছিলেন, আর আমি শুনে যাচ্ছিলাম, উনি নাকি যখন চাকরি চাইতে ইন্টারভিউতে গিয়েছিলেন তখন ওনার মুখে কত যে সিভি ছুড়ে মেরেছিল তার ইয়ত্তা নেই। তাঁর এ কথা শুনে আমি বুঝলাম, ওনার চেয়ে আমার ভাগ্য ভালো। সমান হলে তিনি আমার মুখে সিভি ছুড়ে মারতেন নিশ্চয়ই!
উনি ওনার চেয়ারে প্রায় শুয়ে রয়েছেন আর আমার সাথে বাৎচিত করছেন। রাজকীয় ভাবে ঠোঁট ফুলিয়ে ফুলিয়ে কথা বলছেন। উনি অফিসে ঢুকলে নাকি সবাই থর থর করে ভয়ে কাঁপে।
বাহ কত মহান তিনি! অফিসে থাকা অবস্থায় সবাই ভয়ে কাঁপে!
আমি স্কুল-কলেজ-ভার্সিটি এমনকি বর্তমান অফিসেও ‘এটিকেট‘ বা শিষ্টাচার শিখেছি। কোনো কারনে রাগ হলেও ভদ্র কিভাবে থাকতে হয় তাও শিখেছি। নিজের প্রশংসা করছি হয়তো, কি করবো বলেন, মানুষ অধম বলে আমি উত্তম হবো না
পরের কয়েকটি দৃশ্য আরও চমৎকার(!)। (চলবে)
২| ০৪ ঠা জুন, ২০১৩ রাত ৮:২১
তৌফিক বলেছেন: এক দম, এক নাম্বার।
৩| ০৪ ঠা জুন, ২০১৩ রাত ৮:৪১
েবনিটগ বলেছেন: পোস্ট পর্যবেক্ষন
৪| ০৪ ঠা জুন, ২০১৩ রাত ৯:১১
ডি মুন বলেছেন: মানুষ অধম বলে আমি উত্তম হবো না
কি আর করবেন এখনতো - ‘অতীতের পরিচয়েই বড় পরিচয় নয়, বর্তমানের পরিচয়েই বড় পরিচয়।‘
৫| ০৪ ঠা জুন, ২০১৩ রাত ১০:৩৬
ক্ষুদ্র খাদেম বলেছেন: আমার গত কিছুদিনে দেশীয় কিছু কোম্পানির লোকজনের আচার-আচরণে বেশ অবাক লেগেছে ... যে আসলে এরা এই পর্যায়ে এলো কিভাবে???
তবুও আপনার জন্যে বেস্ট অব লাক
©somewhere in net ltd.
১|
০৪ ঠা জুন, ২০১৩ রাত ৮:১২
সেমিবস বলেছেন: মনে হইতেছে বদমাইশা মালিক