নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কেরানীর চাকরী করি। আর কখনো সময় ও মন দুটোই মিলে গেলে লেখার চেষ্টা করি, এই আর কি!

তৌফিক

আমি আমার মতই। সুখদুঃখের স্মৃতিতেই আমার বসবাস। তবে সুখের কথাগুলোই বলতে ভালোবাসি।

তৌফিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে প্রেমিকাকে লেখা এক কেরানীর চিঠি

১৪ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৯:৪৪

কেমন আছো লক্ষ্মী? আমাকে আর আগের মতো ভালোবাসো না, তাইনা সোনা? হুমম, নতুন বছর আমাকে নতুন করে ভালবাসবে, পুরাতনের মতো করে কেন! আমি জানি তুমি আমাকে সব সময় নতুনের মতো ভালোবাসো, আমিও তোমাকে তেমনি ভালোবাসি সোনা। দেখতে দেখতে সারাটা দিন অর্থাৎ পহেলা বৈশাখ শেষ হয়ে গেল, আজ দিনটি আমার অফিসেই কেটেছে। সকালে উঠে মরিচ তেল আলু বেগুনের তরকারি দিয়ে পান্তা খেলাম, দারুন লাগলো। অফিস বন্ধ ছিল, মনে করেছিলাম স্যার আসবেন না, কিন্তু তিনি এসে গেলেন। আমি তারাতারি গোছলে ঢুকলাম ফ্রেস হতে, কারন উনি এসেছেন মানেতো অফিস শুরু হয়ে গেছে, যতই বন্ধের দিন থাক। একটু পরে কেউ (স্যারের কোনো অতিথি) এসে পড়লে, আর আমাকে এরকম এলোমেলো চুলে হাফহাতা গোল গলা গেঞ্জি আর ট্রাউজার পরা দেখলে অফিসের প্রতি ওনার খারাপ মনোভাব সৃষ্টি হবে, আর স্যারও মন খারাপ করতে পারেন। সে যাইহোক স্যারকে অফিসে ঢুকিয়ে অন্যকেউ আসছে কিনা তা দেখার জন্য অপেক্ষা না করে আমি গোছলে ঢুকে গেলাম। সকালে উঠেই কিছু কাপড় ধোয়ার জন্য ভিজিয়ে রেখেছিলাম। কি আর করার ধুতে হবে, কয়েকটি শার্ট সুতি, অন্য কাপড়ের সাথে অনেকক্ষণ ভিজিয়ে রাখলে রঙ উঠতে পারে তাই তখনেই ধুতে হবে বলে মনস্থ করলাম। আর ধুয়ে ফেললাম। ধোয়ার সময় খেয়াল রাখলাম, যত কম শব্দ করা যায়! কাপড় ধুয়ে গোছল শেষে গায়ে জড়ালাম পাঞ্জাবী, ঐতিহাসিক লুঙ্গির পাঞ্জাবী, যেটি পরে তুমি আমার একটা ছবি তুলে দিয়েছিলে, আর সেই ছবিতে তোমার ছায়া এসে পড়েছিলো আমার বুকে, মনে আছে তোমার? সেই পাঞ্জাবীর সাথে পরলাম খাকী রঙের প্যান্ট আর চামড়ার স্যান্ডেল। মন্দ লাগছিল না। ধোয়া কাপড়গুলো মেলে দিয়ে আমার ডেস্কে বসলাম, ফেসবুকে ঢুকে তোমাকে মেসেস দিলাম, পহেলা বৈশাখের একটা স্ট্যাটাস দিলাম। রবীন্দ্র সংগীত এসো হে বৈশাখ বার কয়েক শুনলাম, জোহরের ওয়াক্তে নামাজ পড়লাম, ছুটির দুপুরে বিশ্রাম নেয়ার জন্য বিছানা পেতে ঘুম দিলাম। ঘুম ভেঙ্গে গেছে, একটু পর আসরের আজান দিবে এমন সময় স্যার ঘরে এসে জিজ্ঞেস করলো, তৌফিক, তৌফিক তোমার কি শরীর খারাপ লাগছে?

আমি উঠে বসলাম, তারপর বললাম, না, না, এমনিতে একটু ঘুমালাম।

আমিতো ভেবেছিলাম তুমি বাইরে বেরিয়ে গেছো...

না, যাইনি, এই গরম আর রোদের মধ্যে বাইরে বেরুলে আমার অবস্থা খারাপ হয়ে যেতে পারে তাই যাইনি।

দুপুরে খেয়েছো?

হ্যা, খেয়েছি।

কি খেয়েছ?

মুখে হাসি এনে বললাম, হ্যা, খেয়েছি, যা ছিল, সেগুলোই খেয়েছি।

উনি চলে গেলেন। আসরের নামাজ পরে আবারো শুয়ে পড়লাম, হাতে জুলফিকার নিউটনের অনুবাদ করা বিশ্বের সেরা গল্পগুলোর একটি বই। সবগুলো গল্প অসাধারন, আসলেই এগুলো শ্রেষ্ঠ হওয়ার যোগ্য। গল্পের লেখক ও গল্পের নাম তোমাকে পরে জানিয়ে দিবো। নয়তো তোমাকে বইটি দিয়ে দিবো তুমি একটি একটি করে পড়ে শেষ করবে, আর আমরা সেই গল্পগুলো নিয়ে আলোচনা করবো। জানো আমার গল্পের বই পড়তে খুব ভালো লাগে। তোমার কেমন লাগে? উত্তরটা আমার জানা, তোমারও গল্পের বই অনেক পছন্দের।



আর যখন দিনের আলোয় পড়া যাচ্ছে না, তখন বিছানা ছেড়ে উঠলাম। বাসা থেকে আম্মা পাঁপড় পাঠিয়েছিল সেগুলো কিছু ভাজলাম। স্যার ভাজা-পোড়া খাননা, তবে উনি এক ধরনের চানাচুর প্রায় প্রতিদিন খান। এই সাহসে তাঁকেও কয়েকটা দিলাম। দেয়ার সাথে সাথে উনি খাওয়া শুরু করলেন।

হাল্কা স্বরে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি পাঁপড় খাও? কোথা থেকে কিনেছো?

বললাম, কিনিনি, বাড়ি থেকে আম্মা পাঠিয়েছেন।

উনি কি নিজে তৈরি করতে পারেন?

মনে হয় না, আম্মা কিনেই পাঠিয়েছেন।

অফিসের সকল লাইট জ্বালিয়ে দিলাম। মাগরিব পড়লাম।

নামাজ শেষে তিনি আমাকে তাঁর ডালিমের জুস খেতে দিলেন। খেলাম, অনেক মজার, অনেক সুস্বাদু। তোমাকে খাওয়াবো, দেখো কেমন মজাদার!

উনি চলে গেলেন, ৭.৩০ এর দিকে, আমি রান্নাঘরে আলু-কায়তা(চিচিঙ্গা)-চাল দিয়ে খিচুরি বসিয়ে দিলাম। পহেলা বৈশাখ আমার কেমন কাটলো তোমাকে তা জানাতে জানতেই ৯.৩০ বেজে গেল। খিচুরি হয়েছে অনেকক্ষণ হল, চামচে নিয়ে খেলাম, স্বাদ খারাপ হয়নি। খাবে নাকি খিচুরি?

তোমার কিভাবে পহেলা বৈশাখ কাটলো জানাতে ভুল না যেন।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:০১

নূর আদনান বলেছেন: কেরাণী সহেবের চিঠি বেশ ভাল লাগলো।

২| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:৩৪

তৌফিক বলেছেন: ধন্যবাদ নূর আদনান ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.