নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কেরানীর চাকরী করি। আর কখনো সময় ও মন দুটোই মিলে গেলে লেখার চেষ্টা করি, এই আর কি!

তৌফিক

আমি আমার মতই। সুখদুঃখের স্মৃতিতেই আমার বসবাস। তবে সুখের কথাগুলোই বলতে ভালোবাসি।

তৌফিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

শীতে প্রেম ও স্মৃতির উষ্ণতা

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৮

প্রত্যেকটা ঋতুরই আলাদা গন্ধ আছে। প্রত্যেকটা ক্ষণেরও আলাদা আলাদা গন্ধ আছে। সেই গন্ধ মনের ভিতরে ঢুকে সেই স্মৃতিতে নিয়ে যায়। নিয়ে যায় সেই ঘটে যাওয়া অতীতের সময়টাতে। ভাবিয়ে তোলে সেসময় কি হয়েছে আর কি হলে ভাল হতো বা কি কি হতে পারতো! কিংবা মনে পড়ে ঘটে যাওয়া ঘটনার ছোটখাট নানান ঘটনা। সেরকম কিছু কিছু গান ভিন্ন ভিন্ন সময়কে মনে করিয়ে দেয়।

ঋতুর রাজা বসন্ত হলেও আমার কাছে শীত অনেক উপভোগের। আমার স্মৃতিগুলো যে শীতেরই বেশি। আমার অল্পতেই ঠান্ডা লাগে, বলতে গেলে আমার ঠান্ডাটা খানিক বেশি। এই ধরুন, গরম কালেও রাতের বেলা আমাকে কাঁথা নিতে হতো এখনও মাঝে মাঝে হয়। অদ্ভূত এক ব্যাপার বললে আমাকে অস্বাভাবিক ভাবাটাই স্বাভাবিক, আমার তত্ত্ব ছিল - গরমে কাঁথার ভিতরে একটা ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব থাকে যা বাইরের গরমটাকে সামলে নিয়ে আমাকে ঠান্ডার পরশ দিয়ে ঘুমাতে সাহায্য করে। তাছাড়া যত গরম হোক সারা রাত ফ্যান ছাড়তে এখনও পারিনা। যদি ছাড়ি তাহলে পরদিন সকালে আমার গলা বসে যায়, সারাদিন ভাঙ্গা গলায় আর কথা বলতে ইচ্ছে করে না। তবুও শীত আমার প্রিয় ঋতু।

হুমায়ূন আজাদ বলেছিলেন, কোন বাঙ্গালী পারবে না সঠিকভাবে তার আত্মজীবনী লিখতে। আমিও পারবো না, পারা সম্ভবও নয়। আর অসম্ভবকে সম্ভব করাও এখানে মস্ত বড় একটা বিষয়। তাই সেভ সাইড থেকে যত টুকু লেখা যায় আর কি! মৈত্রেয়ী দেবী অনেকবার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে আত্মজীবনী লিখতে বলেছিলেন কিন্তু তিনি রাজি হননি, কারন তিনি সব লিখতে পারবেন না বলে। সান্তনামূলকভাবে বলেছিলেন, আলাদাভাবে আত্মজীবনী লেখার কি দরকার, ধরে নাও আমার গান ও কবিতার মধ্যেই সব আছে। কবি সত্যি বলেছিলেন, তাইতো ওনার কবিতায় নিজের অবস্থান দেখতে পাই, তখন মনে হয় কবিরও মনে হয় আমার মত অবস্থা হয়েছিল। উনি কবি বলে সুন্দরভাবে লিখে গেছেন, কিন্তু আমিতো তা পারিনা!

সে যাকগে, এক শীতে কলেজ থেকে বনভোজনে যাওয়া হলো, অনেক মজা হলো, খাওয়া-দাওয়া, হইহুল্লরের কোন কমতি ছিল না। সেবার সবাইকে অবাক করে দিয়ে ধুমপায়ী বন্ধুদের সাথে একটা বান্ধবী সিগারেট টেনেছিল। সেটাই ছিল আমাদের দেখা তার প্রথম ও শেষ ধুমপান দৃশ্য। অবশ্য সে এখন একজন আদর্শ গৃহিণী। কলেজে বান্ধবীর সংখ্যা ছিল মোটে চার-পাঁচ জন। সবার সাথেই আমার খাতির ছিল যা অন্যান্য বন্ধুদের ছিল না। অবশ্য তার অনেক কারনও ছিল। প্রধান কারন হলো - ওরা ছিল আমার বড় ভাইয়ের বন্ধুদের প্রেমিকা। তাদের যাতে কোন অসুবিধা না হয় সে দায়িত্ব আমার উপরেই ন্যস্ত ছিল। ভুল বুঝবেন না, কলেজে ভর্তির পর জেনেছি ভাইয়াদের সম্পর্ক এদের সাথে। পিকনিকে যাওয়ার পথে, একটি জনপ্রিয় গান শুনেছিলাম - ’যা পেয়েছি আমি তা চাইনা / যা চেয়েছি কেন তা পাইনা’। এখনও এ গানটি শুনলে আমার সেই কলেজ জীবনের কথা মনে পড়ে যায়।

প্রত্যেক শীতেই পাড়ার মধ্যে থার্টি ফার্স্ট নাইট আয়োজন করতাম, ওরে সেকি আনন্দ! একবার পাড়ার এক ছোটবোন তার বান্ধবীকে নিয়ে এসেছিল, আমি গিফট হিসেবে তাকে একটা বই দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু দিইনি, যদি ভালবাসা তৈরি হয়, আর তা যদি বাবা-মা জানতে পারেন, এই ভয়ে। তবে কিছুদিন পরে ওই বইটাই এক্সিডেন্ট করে হাত ভেঙ্গে গিয়ে অসুস্থ অবস্থায় থাকা আমার এক প্রিয় শিক্ষককে দেখতে গিয়ে উপহার দিয়েছিলাম। তিনি ছিলেন আমাদের বাংলা’র শিক্ষক ।

ইউনিভার্সিটির শেষের দিকে এক শীতে আমার জন্ডিস হলো, এক সেমিস্টার গ্যাপ পরে গেল। শুধু আরাম আর বিশ্রাম করেই কাটিয়ে দিয়েছিলাম পুরো একটা সেমিস্টার। সে সময় আমার বাবা-মার পাশাপাশি আরও একজনকে দেখেছি আমার এরকম অসুস্থতার জন্য চিন্তিত হতে। জেমসের ’প্রেম আমার শীতল পরশ যুদ্ধজয়ী মন / নিত্য নতুন চিঠির পাতায় সুখের আলাপন’ গানটি মনে আসলেই আমার সেই সেমিস্টারটার কথা মনে পড়ে যায়। মনে পড়ে চিতোই পিঠার উপরে ডিম ভেঙ্গে দিয়ে তৈরি সেই অসাধারন স্বাদের ডিম চিতোইয়ের কথা। সাথে আরও একটি গান বারবার মনে পড়ে, সেটাও জেমসেরই 'আরও কিছুক্ষণ রবে বন্ধু / আরো কিছু কথা কি হবে?'

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.