![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি আমার মতই। সুখদুঃখের স্মৃতিতেই আমার বসবাস। তবে সুখের কথাগুলোই বলতে ভালোবাসি।
ইউরোপ আমেরিকার মত আমাদের দেশেও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোসহ বেশ কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ একাউন্টে ফলাফল প্রকাশ করা হয়। দেশে ইন্টারনেট সুবিধা বৃদ্ধি পাওয়ায় এ সিস্টেমের মাত্রাও দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ সিস্টেম শিক্ষার্থীদের তাঁদের পরীক্ষার রেজাল্ট নিয়ে হীনমন্যতা থেকে রক্ষা করে, তাই এ সিস্টেম অনেক ভাল।
উচ্চ শিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি এখন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের ফলাফলও দেয়ালে বা নোটিশবোর্ডে না টাঙ্গিয়ে তাঁদের নিজ নিজ একাউন্টে জানিয়ে দেয়া হয় বা খামের মাধ্যমে দিয়ে দেয়া হয়। অত্যন্ত গোপনীয়তার সাথে ফলাফল প্রকাশ হলেও একে অন্যেরটা জানতে বা জানাতে ইউরোপ আমেরিকার মত এখনও অশোভন আচরণ মনে করা হয় না।
হবেই বা কি করে কারন আমাদের দেশে যেকোনো পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ একটা বড় উৎসবের মতো ব্যাপার। সবাই সবার রেজাল্ট জানবে, মজা করবে, হই-হুল্লোর করবে, বাসায় বাসায় মিষ্টি বিতরণ করবে, বরঞ্চ রেজাল্ট চেপে যাওয়াই কোনো শিক্ষার্থীর জন্য কষ্টকর। যে শিক্ষার্থী তুলনামূলকভাবে খারাপ রেজাল্ট করে সে কিছুটা মিথ্যার আশ্রয় নিলেও চলতি আনন্দ থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখে না।
শুধুমাত্র পরীক্ষার রেজাল্টই একজন শিক্ষার্থীর জ্ঞানের মানদণ্ড হতে পারেনা। তবে আমাদের দেশে রেজাল্টের কদর অনেক বেশি। এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পাস করে অপর কোনো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে গেলে, চাকরী পেতে গেলে, কিংবা বিয়ে করতে গেলেও এ রেজাল্টের কেরামতি বোঝা যায়। শুধুমাত্র স্বাধীনভাবে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে এই রেজাল্টের কোনো প্রয়োজন হয়না। কিন্তু তবুও সে বা তাঁর পরিবারের লোকজন কোনো না কোনো কারনে সেই অর্জিত ফলাফল প্রকাশ করে থাকে।
মা-বাবারা তাঁদের সন্তানদের অনেক ভালবাসেন, এটাতে কোনো কমতি নেই, যা সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত। সন্তানদের ভাল ফলাফলের জন্য সামর্থ্য অনুযায়ী তাঁদের চেষ্টার কোনো ত্রুটি থাকেনা, অবশেষে যখন সেই কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জিত হয় তখন তাঁদের হৃদয়ের খুশি সম্ভবত একমাত্র আল্লাহই ঠিকভাবে অনুভব করতে পারেন। তাই ফলাফলের পর অনেকদিন পর্যন্ত বাবা-মা সেই দিনটির কথা মনে রাখেন আর প্রসঙ্গক্রমে স্মৃতির পাতা উল্টিয়ে বেশ গর্ব নিয়েই গল্প করেন তাঁদের বন্ধু-বান্ধব বা আত্মীয়-স্বজনদের সাথে।
আমি এক মাকে চিনি যিনি অনেক কষ্ট স্বীকার করে স্বামীর পূর্বের স্ত্রীদের সন্তান ও নিজের গর্ভের-সহ মোট সাত-আট সন্তানকে নিয়ে ঘর-সংসার করেছেন। এতোগুলো মানুষের সংসারে রান্নাবান্নাসহ কাজের কোনো কমতি ছিলনা। এতো কিছুর মধ্যেও তিনি নিজের পড়াও চালিয়ে গেছেন। চাকরী করেছেন। তাঁর প্রত্যেকটি সন্তান মেট্রিকে অর্থাৎ এসএসসিতে ফ্রাস্ট ডিভিশনে পাস করেছেন। তাঁরা এখন দেশ-বিদেশে বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে দায়িত্বশীল পদে নিয়োজিত রয়েছেন। কিন্তু এখনও যেকোনো পাবলিক রেজাল্টের সময় দুই-তিন যুগ আগে প্রকাশ পাওয়া ওনার সন্তানদের রেজাল্টের কথা ওনাকে গর্বের সাথে বলতে শোনা যায়।
সম্প্রতি সন্তানের প্রাতিষ্ঠানিক ও পাবলিক পরীক্ষার রেজাল্ট নিয়ে বাবা-মাকে পূর্বের চেয়ে কয়েকগুন বেশি সিরিয়াস মনে হয়। সন্তানদের দৈনিক লেখাপড়া নিয়ে তাঁদের অনেক টেনশন পোহাতে হয়। আর অপরদিকে কিছু কিছু সন্তান যুগের সাথে আধুনিক হয়ে ইন্টারনেট আর গ্যাজেটের উপর নির্ভরশীল হয়ে গা ছাড়া অবস্থার মধ্যদিয়ে দিনাতিপাত করছে। এদের কারও কারও জীবনে দেখা দিচ্ছে প্রেম! এমনি এক প্রেমের ছোট্ট গল্প দিয়ে শেষ করতে চাই।
ছেলেটি লেখাপড়া করেনা, সারাদিন মোবাইল নয়তো আইপ্যাড নিয়ে গেম খেলে নয়তো স্যোসাল ওয়েবসাইটে বন্ধুদের সাথে চ্যাটিংয়ে আড্ডা মেরে সময় কাটায়। ছেলের পড়ালেখার অনীহা দেখে বাবা-মা শাসন করে বললেন যে, যেভাবে লেখাপড়া চলছে এভাবে পড়লে নিশ্চিত ফেল করবি, আর এবার ফেল করলে রিক্সা কিনে দিবো, তখন মোবাইল না চালিয়ে রিক্সা চালাবি। ছেলেটির প্রিয় এক বান্ধবী আছে, তাকে তার খুব পছন্দ, তারও প্রায় একি রকম সমস্যা। কিন্তু তার বাসায় বলেছে – যদি এবার ফেল করিস তাহলে রিক্সাওয়লার সাথে বিয়ে দিয়ে দিবো। তাদের দুজনের পরিবারের এমন আলাপচারিতায় ছেলেটি যেন সামান্য খুশি হয় এবং সেই খুশিতে মেয়েটিকে বলে ফেলে- তাহলে আর চিন্তা কি, এবার ফেল করলে আমি রিক্সা চালাবো আর আমার সাথে তোমার বিয়ে হবে, ব্যাস - ল্যাডা চুকে গেলো!
©somewhere in net ltd.
১|
২৯ শে মে, ২০১৭ দুপুর ১:৩৬
ওমেরা বলেছেন: হি হি হি হি হি হি -----------ল্যাডা চুকে গেল !!