নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফেসবুকে www.facebook.com/tanimhh

অশ্রুকারিগর

একজন তীব্রমাত্রায় পাঠক ; স্বল্পমাত্রায় লেখক!!

অশ্রুকারিগর › বিস্তারিত পোস্টঃ

দেশের ক্রিকেটে অশনি সংকেত, বিসিবি প্রধান কি শুনতে পাচ্ছেন ?

১২ ই জুন, ২০১৬ রাত ২:১২

(সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রনি বর্তমান বাংলাদেশ ক্রিকেট নিয়ে একটি কলাম লিখেছেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট অনুরাগীদের জন্য অন্দরমহলের এই সব খবর কিছুটা স্তম্ভিত করে দেওয়ার মত। কোন পথে যাচ্ছে সম্ভাবনাময় এই খেলা ? )

অস্ট্রেলিয়ায় তখন চলছে ২০১৫ বিশ্বকাপ। ব্রিসবেনে এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ দলকে সংবর্ধনা দিচ্ছিল স্থানীয় বাঙালিরা। নিজের বক্তৃতায় দল নিয়ে কথা বলতে গিয়ে এক পর্যায়ে বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান রসভরা কণ্ঠে বললেন, “আমাদের ‘বুম বুম তামিম’ তো এখন ‘ঘুম ঘুম তামিম’ হয়ে গেছে!’’

পুরো হলরুমে হাসির হুল্লোড় উঠল। ক্রিকেটাররা সবাই স্তব্ধ। তামিম ইকবাল চেষ্টা করেছেন স্বাভাবিক থাকতে। কিন্তু ভেতরে ভেতরে যেন মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন। সেদিন রাতে হোটেলে ফিরে হাউমাউ করে কেঁদেছেন তামিম। ঘনিষ্ঠজনদের বলেছেন, ক্রিকেট খেলার ইচ্ছাটাই মরে গিয়েছিল তাঁর। পরে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা রাতজুড়ে বুঝিয়েছেন তাঁকে। উজ্জীবিত করেছেন। সকালের দিকে খানিকটা স্বাভাবিক হয়েছেন এই ওপেনার।

পরের কয়েক দিন দলের সবাই শুধু একটি কথাই বারবার বলেছেন, ‘একজন বোর্ড প্রধান এভাবে বলতে পারেন!’

হ্যাঁ, নাজমুল হাসান পারেন। সেটিই প্রথম ছিল না। শেষও নয়। ক্রিকেটারদের নাম ধরে পারফরম্যান্স নিয়ে বোর্ড প্রধানের এভাবে প্রকাশ্যে বলার নজির ক্রিকেট ইতিহাসেই বিরল। কিন্তু বিসিবি প্রধান নানা সময়ে মাইক্রোফোনের সামনে অকপটে বলে দিয়েছেন, “আল আমিনের তো ফিল্ডিং হয় না” বা “অমুক তো রানই করতে পারছে না”, কিংবা “তমুকের বোলিং চলে না”। বলার অপেক্ষরা রাখে না, নাম নেওয়া ক্রিকেটার তো বটেই, সতীর্থরাও বারবার বিব্রত ও লজ্জিত হয়েছে তাদের অভিভাবকের কথায়।

এই অভিভাবক আবার বেশ কবারই কথা দিয়ে কথা রাখেননি। জাতীয় দলের বাইরের বেশিরভাগ ক্রিকেটারের রুটি-রুজির মূল উৎস যেটি, সেই ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ‘প্লেয়ার্স বাই চয়েজ’ (বিভিন্ন ক্যাটেগরিতে ক্রিকেটারদের পারিশ্রামিক বেঁধে দেওয়া) বিতর্কিতভাবে চালু হয়েছে নাজমুল হাসানের সময়েই। প্রথমবার চালুর সময় তিনি জোর গলায় বলেছিলেন, “নিশ্চয়তা দিচ্ছি এটি শুধু এবারের জন্যই। আর কখনও হবে না।”
এক মৌসুম পরই মিলিয়ে গেছে তাঁর নিশ্চয়তা। এবারই প্লেয়ার্স বাই চয়েজে তিনি প্রত্যক্ষ অনুমোদন দিয়েছেন, পরোক্ষে দিয়েছেন উৎসাহ ও প্রণোদনা। ক্রিকেটারদের অসহায় আর্তি তাঁর কপটতার দেয়ালে মুখ থুবড়ে পড়েছে।

গত এপ্রিলে বোর্ড প্রধান আচমকা জানালেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সিরিজ খেলতে চায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দিন-তারিখ বলেও জানালেন যে, অমুক তারিখে চূড়ান্ত জানা যাবে। এরপর আর সেটা নিয়ে কথা নেই। পরে জানা গেল, আসলে এরকম প্রস্তাবই দেয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজ!

নানা সময়ে হুটহাট নানা সিরিজের ঘোষণা দিয়ে পরে আর কিছুই করতে না পারার উদাহারণ আছে আরও। এরপর গত আইসিসি সভা থেকে ফিরে র‌্যাঙ্কিংয়ে পাঁচে ওঠার ভুল খবর দিয়ে গোটা ক্রিকেট বিশ্বের সামনে লজ্জিত করেছেন বাংলাদেশকে।

গত কিছু দিন ধরে অবশ্য এ সবের চেয়েও বড় হয় উঠেছে আরেকটি অভিযোগ। জাতীয় দলের প্রধান কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহেকে অবারিত ক্ষমতা দিয়ে রেখেছেন বোর্ড প্রধান। সেই ক্ষমতার চর্চা করে হাথুরুসিংহে হয়ে উঠেছেন প্রায় বাংলাদেশ ক্রিকেটের সর্বেসর্বা!

বিসিবি ও টিম ম্যানেজমেন্টের ঘনিষ্ঠজনেরা বলছেন, হাথরুসিংহের দায়িত্বের প্রথম এক-দেড় বছর মোটামুটি ঠিকভাবেই চলছিল সব। গড়বড় শুরু হয়েছে গত কিছুদিনে, যখন কোচ বুঝতে পারলেন তার ক্ষমতা প্রায় অসীম।

কোচের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণেই ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যনের পদ থেকে সরানো হয়েছে নাঈমুর রহমান দুর্জয়কে, এটা ক্রিকেটাঙ্গনে মোটামুটি ‘ওপেন সিক্রেট’। সীমার বাইরে কোচের ক্ষমতা চর্চার চেষ্টায় বাধ সেধেছিলেন নাঈমুর; মনে করিয়ে দিয়েছিলেন কোচ দিনশেষে বিসিবির একজন চাকুরে। কোচের উচিত তাঁর দায়িত্বের পরিধির ভেতরই থাকা।

ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান হিসেবে নাঈমুর তাঁর দায়িত্বটিই পালন করেছিলেন। বিসিবিতে সেটাই হয়ে যায় ‘গুরুতর অপরাধ’। নাঈমুরকে খেসারত দিতে হয় পদ হারিয়ে। কোচ যখন দেখলেন, তাঁর কথায় এতবড় পরিবর্তনও হয়ে যাচ্ছে, নিজের ক্ষমতার সীমানাটা নতুন করে বুঝে ফেললেন তিনি।

ক্রিকেট প্রশাসন থেকে সেই ক্ষমতার চর্চা চলে এল মাঠেও। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকেই মূলত যেটি বেশি শুরু হয়েছে। অভিযোগ আছে, কোচের চাওয়ার প্রেক্ষিতেই বিশ্বকাপে দলের সঙ্গে কোনো নির্বাচক পাঠানো হয়নি। অধিনায়কের মতামত টুকটাক কানে নিলেও একাদশ নির্বাচনে কোচেরই ছিল একচ্ছত্র আধিপত্য।

সবচেয়ে বেশি বিতর্কের জন্ম দিল যখন অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের কারণে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেলেন তাসকিন আহমেদ ও আরাফাত সানি। অধিনায়ক মাশরাফিসহ সিনিয়র ক্রিকেটাররা বদলি দুজনের একজন হিসেবে চাইছিলেন স্পিনার আবদুর রাজ্জাককে। তাদের যুক্তি ছিল, বিশ্বকাপের মতো আসরে পোড়-খাওয়া অভিজ্ঞ একজনকে দরকার। কিন্তু কোচ একতরফাভাবেই শুভাগত হোমের সঙ্গে ডেকে পাঠালেন কোনো ম্যাচ না খেলা বাঁহাতি স্পিনার সাকলাইন সজিবকে।

শেষ নয় সেখানেই। গোলমাল একাদশ নির্বাচনেও। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের আগের দিন বেঙ্গালুরু পৌঁছানো দুই ক্রিকেটারদের সরাসরি একাদশে নামিয়ে দিতে চাইলেন কোচ। অধিনায়ক ও সিনিয়র ক্রিকেটারদের চাওয়া ছিল, টুর্নামেন্ট জুড়ে উপেক্ষিত নাসির হোসেনকে সুযোগ দেওয়া। ম্যাচের আগের রাতে একাদশ বাছাই নিয়ে টানাপড়েনের এক পর্যায়ে কয়েকজন জুনিয়র ক্রিকেটারের সামনেই অধিনায়ককে যাচ্ছেতাই ভাষায় শাসিয়ে দেন কোচ। অধিনায়ক আর কথা বাড়াননি। কোচের ইচ্ছাই পূরণ হয়। পরদিন মাঠে সেটির খেসারতও দিতে হয়।
কোচের একক সিদ্ধান্তেই টুর্নামেন্টে কোনো ম্যাচে, এমনকি শেষ ম্যাচেও খেলানো হয়নি নাসিরকে। শুধু এটুকুই নয়, টুর্নামেন্ট জুড়ে ম্যাচ চলাকালে মাঠের বাইরে থেকে বোলিং-ফিল্ডিং পরিবর্তনসহ নানা নির্দেশনা দিয়েছেন অযাচিতভাবে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচেই যেমন অধিনায়ক একজনের হাতে বল দেওয়ার পর বাইরে থেকে অনেকটা জোর করেই নির্দেশ দিয়ে মাহমুদউল্লাহকে বোলিংয়ে আনেন কোচ। মাহমুদউল্লাহ নিজেও স্বস্তি পাননি এটায়, ওই ওভারে দিয়ে বসেন ১৬ রান।

বিরক্ত অধিনায়ক ও সিনিয়র ক্রিকেটারররা এক পর্যায়ে বেঙ্গালুরুর টিম হোটেলে বোর্ড প্রধানের কাছে খোলাখুলি বলে দেন কোচের বাড়াবাড়ি নিয়ে সব কিছু। সিনিয়র একজন ক্রিকেটার জানাচ্ছেন, বোর্ড প্রধান তখন আশ্বাস দিয়ে বলেছিলেন, “তোমরা তো আমাকে আগে এসব বলোনি। অবশ্যই আমি ব্যবস্থা নেব।”

ক্রিকেটাররা অবাক হয়ে দেখলেন, বোর্ড প্রধান করলেন উল্টো। সংবাদ মাধ্যমের সামনে কোচকে প্রশংসায় ভাসালেন। আড়ালে বা ইঙ্গিতেও দিলেন না কোনো বার্তা। ক্ষমতার সীমানা তাতে আরও বাড়িয়ে নিলেন কোচ।

অবারিত এই প্রশ্রয়ে সবশেষ সংযোজন কোচকে নির্বাচক কমিটিতে রাখা। দল নির্বাচনে কোচের মতামত বরাবরই নিতেন নির্বাচকরা। কিন্তু এক পর্যায়ে মতামতকে প্রায় ‘নির্দেশ’ বানিয়ে ছাড়েন কোচ। এরপর আনুষ্ঠানিক ক্ষমতাই দাবি করে বসলেন এবং পেলেন।

নির্বাচক কমিটিতে কোচের থাকা নতুন কিছু নয়। অনেক দেশে অনেক সময়ই ছিল। এই সময়েও অস্ট্রেলিয়ায় আছেন ড্যারেন লেম্যান, নিউজিল্যান্ডে মাইক হেসন। বাংলাদেশেও ছিলেন ডেভ হোয়াটমোর। তবে শঙ্কার জায়গাটা হাথুরুসিংহে বলেই। বাইরে থেকেই যেভাবে হস্তক্ষেপ করেছেন দল নির্বাচনে, এখন হয়তো নিজের পছন্দেই গড়ে ফেলবেন স্কোয়াড! ক্রিকেটাররাও নিশ্চিতভাবেই দলে জায়গা নিয়ে ভুগবেন নিরাপত্তাহীনতায়।

শুধু কোচকে জায়গা দেওয়াই নয়, দল নির্বাচন পদ্ধতির খোলনলচেই পাল্টে ফেলা হচ্ছে। গড়া হচ্ছে দুই স্তরের নির্বাচক কমিটি। এখনকার তিন নির্বাচককে নিয়ে গড়া হবে নির্বাচক প্যানেল। সেখানে আবার একজন প্রধান নির্বাচক। আরেকটা থাকবে নির্বাচক কমিটি। সেখানে নির্বাচক প্যানেলের তিন জনের পাশাপাশি থাকবেন কোচ, ম্যানেজার। এটির আহবায়ক ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান।

ভেবে দেখুন, বাংলাদেশর মতো একটি ক্রিকেট-খেলুড়ে দেশের জন্য দুই স্তরের নির্বাচক কমিটি, যেখানে ‘প্লেয়ার পুল’ খুবই সীমিত, ১৪-১৫ জনের দলের মধ্যে ৮-৯ জন স্বয়ংক্রিয় পছন্দ, আরও কয়েকজন টুকটাক আলোচনার পর চলে আসে। শেষমেষ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপার থাকে আসলে ২-১ জনকে নিয়ে। সেটার জন্যই দুটি স্তর, ৬ জনের বহর! ‘খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি’র আদর্শ উদাহরণ।

বিসিবির কর্তাব্যক্তিদের বক্তব্য, দল নির্বাচন নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির অবসান ও যোগাযোগে ঘাটতি কাটানোর জন্যই এই ব্যবস্থা। মাথাব্যথা হলে মাথা কেটে ফেলার প্রবাদ আছে। এটা যেন মাথাব্যথা বলে কৃত্রিম উপায়ে আরেকটা মাথা গজিয়ে ফেলার ব্যাপার!

কোচকে নির্বাচক করাটা না হয় তর্কসাপেক্ষে মানা গেল। কিন্তু বোর্ড প্রধান জানালেন, কোচের ঘরোয়া ক্রিকেট দেখার বাধ্যবাধকতা থাকবে না। তাহলে কেমন নির্বাচক!

ক্রিকেট পরিচালনা কমিটির বর্তমান চেয়ারম্যান আকরাম খান এক সময় নিজেও ছিলেন প্রধান নির্বাচক। ২০১২ এশিয়া কাপের আগে তাঁর নির্বাচিত দলে সেই সময়ের বিসিবি প্রধান আ হ ম মুন্তফা কামাল হস্তক্ষেপ করায় তিনি পদত্যাগ করেছিলেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে আবার ফেরেন দায়িত্বে। সেই আকরাম খান এখন নিজেই ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগে থেকে নির্বাচক কমিটির আহবায়ক হয়ে গেলেন!

নতুন কাঠামোতে সবচেয়ে প্রশ্নবিদ্ধ সিদ্ধান্ত হচ্ছে ম্যানেজারের অন্তর্ভুক্তি। এই ভাবনাটাই এতটা উদ্ভট ও অকল্পনীয় যে, আর কোনো ক্রিকেট-খেলুড়ে দেশে এটা নিয়ে হয়তো আলোচনাই হবে না। টিম ম্যানেজারের কাজ শৃঙ্খলা ও লজিস্টিকসের মতো ব্যাপারগুলো দেখা। সেই ম্যানেজারকে নির্বাচক কমিটিতে রাখা এতটাই অকল্পনীয় ব্যাপার যে, অন্যদের ভাবনার সীমানায় এটা ধরা পড়বে না। আমাদের বোর্ড শুধু ভাবেইনি, বাস্তবায়নও করার পথে।

ম্যানেজারকে রাখার পেছনে বোর্ড প্রধানের যুক্তি, দল নির্বাচন নিয়ে অধিনায়কের মতামত ম্যানেজার নির্বাচক কমিটিতে উপস্থাপন করবেন। বিস্ময়কর তো বটেই, হাস্যকরও। অধিনায়ক তো ভিনগ্রহে বাস করেন না বা প্রবাসে থাকেন না যে, তার মতামত জানাতে একজন ‘দূত’ লাগবে! অধিনায়করা সবসময় মতামত জানিয়ে আসছেন। নির্বাচক কমিটিকে, এমনকি বোর্ড প্রধানকেও নিজের মতামত নানান সময়ে জানিয়েছেন অধিনায়ক। তখন দূত লাগেনি, এখন কেন লাগছে? আর অধিনায়কের মতামত এতই গুরুত্বপূর্ণ হলে তাকেই নির্বাচক কমিটিতে রাখা যায়। দূতকে রাখতে হবে কেন?

ক্রিকেট পাড়ায় জোর গুঞ্জন, ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজনকে জায়গা দিতেই এই আয়োজন। সাবেক এই অধিনায়ক বাংলাদেশের ক্রিকেটে এখন চলমান এক প্রশ্নের নাম। বোর্ড পরিচালক হয়েও তাঁর ম্যানেজার হওয়া নিয়ে আছে প্রশ্ন। একই সঙ্গে তিনি বিসিবির গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান, একটি বিপিএল দলের কোচ, ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের দলের কোচ, ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি। সবগুলো দায়িত্বই পরস্পর সাংঘর্ষিক। এরপর ম্যানেজার হয়েও নির্বাচক? ক্রিকেট ইতিহাসে এই নজির আর আছে বলে জানা নেই।

সবচেয়ে বড় কথা, দেশের ক্রিকেটে এত এত সমস্যা, সে সব নিয়ে না ভেবে হঠাৎ নির্বাচক কমিটি নিয়ে উঠেপড়ে লাগাটাই অনেক প্রশ্নের জন্ম দেয়। যোগাযোগের ঘাটতি হলে একসঙ্গে বসিয়ে সেটা মিটিয়ে নেওয়া যায়। নির্বাচকদের ভার বেশি হয়ে গেলে আরও ২-১ জন নেওয়া যায়। তারা মাঠে গিয়ে খেলা না দেখলে জবাবদিহিতায় জোর দেওয়া যায়। তারপরও কাজ পছন্দ না হলে তাদের বদলে ফেলার সুযোগ তো আছেই। কার্যকর ও প্রমাণিত সিস্টেমটাই বদলাতে হবে কেন?

সব মিলিয়ে হঠাৎ করেই যেন দেশের ক্রিকেটে শুরু হয়েছে অস্থিরতা। মাশরাফির নেতৃত্বে দল সীমিত ওভারে ভালো করতে শুরু করেছে, দলে পারফর্মার এখন অনেকে বেড়েছে, টেস্টে খুব অল্প হলেও উন্নতির ছাপ পড়তে শুরু করেছে। মোটামুটি একটা থিতু ইউনিট। হঠাৎই সব গুবলেট পাকানোর আয়োজন চলছে।

একটা ব্যাপার অবশ্যই বলতে হবে, স্রেফ ক্রিকেট কোচ হিসেবে হাথুরুসিংহে অবশ্যই দারুণ। বাংলাদেশের উন্নতিতে তার অবদান অনেক, দলে অনেক ভালো সংস্কৃতিও চালু করেছেন। অন্তত ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত বাংলাদেশের ক্রিকেটে তাঁকে দরকার, কিন্তু যদি তিনি কোচিং এবং এই সংক্রান্ত ব্যাপারগুলোতেই থাকেন। বোর্ড প্রধান যদি দায়িত্বের সীমাটা কোচকে মনে করিয়ে দেন, তাহলে অধিনায়ক ও সিনিয়র ক্রিকেটাররাও কোচের ওপর আস্থা ফিরে পাবেন।

নাজমুল হাসানের এই বোর্ড বেশি কিছু ভালো কাজও করেছেন, সন্দেহ নেই। তবে সাম্প্রতিক নানা কর্মকাণ্ডে ভালোগুলো চলে গেছে কালোর পেটে। একটা সময় ভুলগুলি অবশ্যই উপলব্ধি হবে বোর্ড কর্তাদের, হয়তো সংশোধন করার চেষ্টাও চলবে। তত দিনে দেশের ক্রিকেট পিছিয়ে যাবে আরও কয়েক বছর।

বিসিবি প্রধান কি সেই অশনি সংকেত শুনতে পাচ্ছেন?

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই জুন, ২০১৬ রাত ২:৫২

মহা সমন্বয় বলেছেন: নাজমুল হাসানের ওই রসভরা কণ্ঠের মন্তব্যের জন্য তামিমের এতটা ভেঙ্গে পড়া উচিৎ হয়নি। নিছক মজা করেই হয়ত বলেছিলেন। তাই বলে প্রফেশনাল একজন খেলোয়ারের এমন কাঁন্নাকাটি করা একদমই মানানসই হয়নি ।
আর নাজমুল হাসানের সংবাদ সম্মেলনে নাম ধরে খেলোয়ারদের পারফর্মেন্স নিয়ে কথা বলাটাও ঠিক হয় না। এট মূলত অভিজ্ঞতার অভাব থেকেই হয়। আমাদের ক্রিকেট সংস্কৃতি যত সমৃদ্ধ হবে তত এসব ছোটখাটো বিষয় দূর হয়ে যাবে।

কোচের ক্ষমতা বৃদ্ধি করার পক্ষে আমি, অন্তত আমাদের বাংলাদেশে কোচকে সর্বোচ্চ ক্ষমতা দেয়াই ভাল,বাইরের লোকজনই যত ঝামেলা পাঁকায় আর দূর্ণীতি করে।
হারুতসিংহ যখন বাংলাদেশ দলের কোচ হিসেবে নিয়োগ পেলেন তখন আমি তার তীব্র বিরোধী ছিলাম :-P যদিও সে ভাল করেছে যথেষ্ট ভাল করেছে। বাংলাদেশের ক্রিকেটের এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছেন।
রাজ্জাককে দলে না নেয়ার বিভিন্ন কারণ আছে, কোচ কখনও হটকারী সিন্ধান্ত নেয় না এটা তার চাকরী রুটি, রুজি। বাইরে থেকে যা মনে হয় আসলে তা না। কোন কোচই তার দলের খারাপ চায় না।
সব দেশেই কোচ আর অধিনায়কের মধ্যে একটু আধটু মন কষাকষি হয়ই। এটা হচ্ছে পিতা আর বড় ছেলের সম্পর্কের মত।
এই মন কষাকষি বেশি হয়ে গেলে সমস্যা বাঁধে।
কোচ এবং অধিনায়ক এ দুজন দলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পার্সন। সূতরাং দলে কে খেলবে না খেলবে তা তাদেরই নির্বাচন করতে দেয়া উচিৎ।

১২ ই জুন, ২০১৬ রাত ৩:২১

অশ্রুকারিগর বলেছেন: আপনার সুচিন্তিত দীর্ঘ মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

প্রথম কথা হচ্ছে একটা টুর্নামেন্ট বা সিরিজ চলাকালীন দলের খেলোয়াড়দের মনোবল নষ্ট করার মত কথা বলাটা যে কতটুকু অপেশাদার সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না । যেখানে খেলোয়াড়দের মনোবল বাড়াতে মনোবিদ নিয়োগ দেওয়া হয় সেখানে একজন খেলোয়াড়কে নিয়ে এভাবে হাস্য রসিকতা জনসাধারনের মানায় , কোন দায়িত্বশীল ব্যক্তির নয়।
তামিম কান্নাকাটি করবে না তো কি করবে ? চিন্তা করেন মানুষভর্তি পার্টিতে আপনার অফিসের বস আপনাকে নিয়ে লেইম জোক্স করছেন, কি করবেন আপনি ? তামিম তো সাথে সাথে আবেগ দেখায় নাই, নিজের একান্তে আবেগ দেখিয়েছে।

এই পাপন সাহেবের সর্বশেষ কীর্তি মনে আছে ? ৫ নং এ উঠে গেছি আমরা বলে যে শোরগোল তোলা হল!

সর্বময় ক্ষমতা আর স্বেচ্ছাচারিতার মধ্যে খুব একটা ব্যবধান থাকে না। জবাবদিহিতা না থাকলে একটা সময় চেইন অফ কমান্ড বলে কিছু থাকবে না। আমরা নিশ্চয়ই সিডন্সের আমল ফিরে পেতে চাই না !

সমস্যাটা তো এই নির্বাচক কমিটি নিয়েই, নতুন প্রস্তাবটা যে কতটা হাস্যকর এবং ধ্বংসাত্বক সেটা কে বুঝাবে বোর্ড কে !

২| ১২ ই জুন, ২০১৬ রাত ৩:০৮

মাগুরগিয়াসাইবারফোর্স বলেছেন: এখন কি হবে

১২ ই জুন, ২০১৬ রাত ৩:২৪

অশ্রুকারিগর বলেছেন: কি আর হবে। চলিতেছে সার্কাস, চলবে সার্কাস..........

৩| ১২ ই জুন, ২০১৬ ভোর ৪:০১

গেম চেঞ্জার বলেছেন: হাতুরে সিংহের কিছু ব্যাপারে আমাদের সবারই অসন্তোষ আছে। আর পাপন স্যার একজন ভাল মানুষ। উনিও যেটা করেছেন সেটা ঠিক হয়নি তবে উনার আমলেই ক্রিকেট আলোর মুখ দেখেছে। আর কোচের কথা দ্বিতীয়টি বলার তো দরকার নাই। এই আর্টিকেল আমি বিডিনিউজের অপিনিয়নে পড়েছি আগেই। সবমিলিয়ে আমার কাছে যেটা মনে হচ্ছে, আবেগের বশে কিছু বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে। কোচ ও পাপন স্যার উভয়ের ব্যাপারেই আস্থা ছিল। আছে।

১২ ই জুন, ২০১৬ সকাল ১১:৪৯

অশ্রুকারিগর বলেছেন: গেম চেঞ্জার ভাই, পাপন সাহেবের উপর আপনার আশা থাকতে পারে। ক্রিকেটার এবং আপামর মানুষের আস্থা নেই। সংগঠক হিসেবে লোটাস কামাল অনেক ভাল ছিল। তবে পাপন সাহেবের হয়তো ইচ্ছা আছে ভাল কিছু করার কিন্তু তাহলেতো উনাকে সেটা কাজে প্রমাণ দিতে হবে। এইযে প্রিমিয়ার লিগে পুল সিস্টেম করল, জাতীয় দলের বাইরে সারা দেশের খেলোয়াড়দের আয়ের অন্যতম উতস এই লিগ। পাপন সাহেবের এই আইনের ফলে অনেক খেলোয়াড়ের আয় কমল সাথে কমল টাকা পাওয়ার নিশ্চয়তা।
কোচের মাঠের সিদ্ধান্তে পুরো আস্থা আছে, কিন্তু কোচকে সর্বময় ক্ষমতা দিয়ে স্বেচ্ছাচারিতা করতে দেওয়ার পক্ষপাতি নই।

৪| ১২ ই জুন, ২০১৬ ভোর ৪:০৬

ধ্রুবক আলো বলেছেন: কেচো খুরতে গেলে সাপ বের হয়ে আসবে। দেখেন কোন পার্শ্ববর্তী দেশের ইশারায় মাথা নাড়াচ্ছে কি না

১২ ই জুন, ২০১৬ সকাল ১১:৫০

অশ্রুকারিগর বলেছেন: হাহাহাহাহাহা।

৫| ১২ ই জুন, ২০১৬ সকাল ৯:২৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে সাংবাদিকরা এতটা ভাবছেন এবং তীক্ষ্ণ নজর রাখছেন, তা দেখে ভালো লাগলো। লেখাটা তথ্যবহুল এবং পক্ক ক্রিকেট ভাবনা প্রসূত, তাতে সন্দেহ নেই। তবে সাংবাদিকের কাজ সাংবাদিক করেছেন, হুঁশিয়ারী ঘন্টা বাজিয়েছেন। এখন এসব তথ্যের চুলচেরা বিশ্লেষণ যাদের করার কথা, তারা তা করলেই হলো। মোটা দাগে আমার কথা, জনাব নাজমুল হাসান পাপন সাহেব একজন নিখাদ ক্রিকেট অনুরাগী ব্যক্তি এতে সন্দেহ নেই। তিনি হয়তো কিছু কিছু বেফাঁস কথা বার্তা বলে ফেলেন মাঝে মাঝে, কিন্তু তার আমলেই তো বাংলাদেশ ক্রিকেটে সর্বোচ্চ সাফল্যের মুখ দেখেছে এবং দেখছে। কোচ সম্পর্কেও একই কথা বলা যায়। নিঃসন্দেহে হাট্রুসিংহে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের এ যাবত পাওয়া সবচেয়ে সফল কোচ। কোচের ক্ষমতায়নকে আমি সমর্থন করি। তা না হলে দলের শৃঙ্খলায় ভাটা পড়তে পারে। তবে এটাও ঠিক, বেশী ক্ষমতাধর হয়ে গেলে মানুষের মাটিতে পা পড়েনা এবং তখন সে বড় ভুল করে বসে। রাজনৈ্তিক কারণে পাপন সাহেব হয়তো জানেন, এ মুহূর্তে তার কোন প্রতিদ্বন্দী নেই। তাই তাকে কাউকে কোন পরোয়া করে কথা বলতে হবেনা। এ কারণে তিনি বড় ভুল করে বসতে পারেন। আবার হাট্রুসিংহে জানেন যে যতদিন তিনি পাপন সাহেবের গুড বুকে আছেন, ততদিন পাপন সাহেবের একচ্ছত্র ক্ষমতাটা তার মাঝেও সঞ্চারিত থাকবে। একই কারণে তিনিও বড় ভুল করে বসতে পারেন। তবে এ ধরণের লেখালেখি হলে তারা উভয়ে সতর্ক থাকবেন, তাই এমন লেখার প্রয়োজন রয়েছে। ক্রিকেট নিয়ে এমন একটা পোস্ট দেয়ার জন্যে লেখককে ধন্যবাদ জানাই।
১ নং মন্তব্যে মহা সমন্বয় যা বলেছেন, তা ভালো লাগলো। আবার তার উত্তরে লেখক যা বলেছেন, সেটাও ভালো লাগলো। পোস্টে আরও বিচক্ষণ মন্তব্য আসতে থাকুক, তা দেখতে চাই।

১২ ই জুন, ২০১৬ সকাল ১১:৫৩

অশ্রুকারিগর বলেছেন: আমাদের তো একটাই যক্ষের ধন খেলা রে ভাই। ফুটবলেও পেছাতে পেছাতে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, এথলেটিকসে কোঙ্কালেই কিছুর আশা ছিল না, হকি বা অন্যান্য খেলায়ও। খেলাটা যদি দেশকে রিপ্রেজেন্ট করে তাহলে এই ক্রিকেট আর ইদানীংকালে গলফ একটু আশার আলো দেখাচ্ছে। এহেন এইটা ভালোভাবে না চললে তো সমস্যা। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৬| ১২ ই জুন, ২০১৬ সকাল ৯:৩৭

মুক্তমনা ওমর বলেছেন: আগেই বলে নিলাম, আমি খেলা কম বুজি। তারপরও আমার মনে হয়, কাকে দিয়ে ভাল খেলানো যাবে তা কোচকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কারণ নির্বাচকরা একজন গাধা নির্বাচন করে তাকে দিয়ে ঘোড়ার মত খেলাতে বললে তো আর হবে না। আর কোচ যদি গাধা নির্বাচন করেও থাকেন, তবে উনিই ভাল বুজবেন কিভাবে গাধা দিয়ে ঘোড়ার কাজ করা যায়।

১২ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ১২:০০

অশ্রুকারিগর বলেছেন: আপনি আগেই বলে নিয়েছেন খেলা কম বুঝেন সেজন্য আপনাকে কিছুটা জিনিস জানাই।

নির্বাচক বলে যে পদটা আছে বিশ্বের সবদেশে তাদের কাজ কি ? তাদের কাজ হচ্ছে একটা খেলার জন্য খেলোয়াড় বাছাই করা। তারা আপনার জন্য খেলোয়াড় বাছাই করে দেবে অর্থাৎ মাঠের বাইরের দায়িত্ব তাদের। খেলায় কে খেলবে সেটার দায়িত্ব কোচ এবং অধিনায়কের। এই যে বর্তমান নির্বাচকরা আছেন তারা দীর্ঘদিন ধরে এই কাজ করছেন এবং সফলতার সাথেই করছেন। তাদের কাজটাই হল সাগর সেঁচে মুক্তো কুড়ানো। তাদের কাজ পছন্দ হচ্ছে না ? বাদ দিয়ে আরো ভালো নির্বাচক নেন। কাজের পরিধি বাড়ান। কিন্তু সিস্টেমটা নষ্ট করার তো মানে নাই।

৭| ১৩ ই জুন, ২০১৬ রাত ১০:৪২

মাদিহা মৌ বলেছেন: ইয়াল্লা! ভিতরে ভিতরে এসব চলছে!


পাপনকে আমার কখনোই পছন্দ নয়। আমি এইই বুঝি না যে কিনা কখনো ক্রিকেট ব্যাট ছুঁয়েও দেখেনি, সে কী করে বোর্ড প্রধান হয়?
এইসব আজেবাজে কথা প্লেয়ারদেরকে? এইভাবে অপমান? বোর্ড প্রধানের মুখে?

কিছুই টের পাচ্ছি না আমরা! আর এই ভেবেই মাথা খুটে মরছিলাম, কেন সাকলাইন আর শুভাগত? কেন নাসির নয়? কোচ ছড়ি ঘুরাচ্ছে? শঙ্কিত হয়ে পড়ছি। আমাদের ক্রিকেটের মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দেওয়ার পায়তারা চলছে নাকি?

১৪ ই জুন, ২০১৬ রাত ১২:০৭

অশ্রুকারিগর বলেছেন: অন্দরমহলের সব খবর তো আমরা আমজনতারা পাই না। অফ দ্য রেকর্ডে যদিও সাংবাদিকরা অনেক খবরই পান।

আপনার সাথে আমার কিঞ্চিত দ্বিমত আছে। খেলোয়াড় আর সংগঠক দুটো আলাদা ব্যাপার। ভালো প্লেয়ার যে ভালো সংগঠক হবে এমন কোন কথা নেই। তবে সংগঠক হিসেবে পাপন সাহেবের অবদান শূন্য। সে তুলনায় সাবের হোসেন কিংবা লোটাস কামাল অনেক ভাল সংগঠক ছিলেন। পাপনের বেঁফাস কথাবার্তার কথা আর নাই বললাম।

আমাদের বোধহয় কপালটাই খারাপ। সব কোচের আমলেই কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্লেয়ার ব্ল্যাকলিস্টেড হয়ে যায়।

আলোচনায় অংশ নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.