নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফেসবুকে www.facebook.com/tanimhh

অশ্রুকারিগর

একজন তীব্রমাত্রায় পাঠক ; স্বল্পমাত্রায় লেখক!!

অশ্রুকারিগর › বিস্তারিত পোস্টঃ

সফলতা, ব্যর্থতা আর হতাশার কথা

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৫১

আপনি স্মার্ট, যোগ্য কিন্তু তবুও আপনার চাকরি হচ্ছে না ? আপনার চেয়ে আপাত কম যোগ্য লোকের চাকরি হয়, প্রমোশন হয়, আপনি শুধু পিছনে পড়ে থাকেন ? এতো পড়েন তবু ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাননা ? আমরা শুধু আমাদের না পাওয়াগুলো নিয়েই চিন্তা করি। হতাশায় ভুগি। অথচ এই না পাওয়ার হতাশা ঝেড়ে ফেলে নিজের কাজে মন দিলে ঠিকই বড় কিছু পাওয়া যায়।


আঠারো-উনিশ বছর বয়সী একজন ক্রিকেটারের প্রাথমিক স্বপ্ন কি? অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ খেলা। তার উপর যদি সে অধিনায়ক হয় তাহলে তো কথাই নেই, কিভাবে দল সাজাবে, গেমপ্ল্যান কি হবে এসব নিয়েই উত্তেজনায় রাতের ঘুম হারাম হওয়ার কথা। বিনা মেঘে বজ্রপাতের মত বিশ্বকাপের ঠিক আগে যদি শুনেন আপনি দলেই নেই, ক্যাপ্টেন্সী তো দূরের কথা, কেমন হবে আপনার পৃথিবীটা? অথচ আগের সিরিজেই আপনি সবকিছু ছিলেন।

হাসিব হামিদের পৃথিবীটা ধূসর হয়ে যায়নি। বিশ্বকাপের দলে জায়গা না পাওয়ার হতাশা ঝেড়ে ফেলে কাউন্টি ক্রিকেটে রানের বন্যা বইয়ে দিল। কাউন্টি ক্রিকেটে অভিষেকের বছরই তিনি ছাড়িয়ে গেছেন সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক মাইকেল আথারটনকে। ল্যাঙ্কাশায়ারের হয়ে সবচেয়ে কম বয়সে হাজারী ক্লাবে পৌঁছে যাওয়া ক্রিকেটার হলেন এখন হাসিব হামিদ। ১৭টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে তার সংগ্রহ ১৩৩০ রান। এর মধ্যে চারটি সেঞ্চুরি ছাড়াও আছে আটটি হাফ সেঞ্চুরি।
ফলাফল? বিশ্বকাপ খেলতে যেই দেশে আসার কথা সেই দেশেই টেস্ট দলে ডাক পেল। কি আয়রনি! যেখানে সারাবিশ্বের বাকিসব অনূর্ধ্ব ১৯ ক্রিকেটাররা এখনো পায়ের তলায় মাটি খুঁজে পায়নি সেখানে ইংল্যান্ডের বাংলাদেশ সফরে দলে ডাক পেলেন। খেলাটা মোটামুটি শিওর। ব্যাট করতে নামলেই রেকর্ড গড়বে ইংল্যান্ডের ইতিহাসে মাত্র ষষ্ট টিনেজ ক্রিকেটার হিসেবে টেস্ট খেলে।

আমার মনে পড়তেছে শাহরিয়ার নাফীসের কথা। ২০০৪ সালে বাংলাদেশে অনুষ্টিত অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে তারকাময় বাংলাদেশ দলে তার স্থান হয়নি। অথচ মাত্র এক যুগে সেই দলের তারকা নাফীস ইকবাল, আফতাব আহমেদ, শাহাদত হোসেন রাজীবদের ক্যারিয়ার শেষ। শাহরিয়ার নাফিস এখনো জাতীয় দলের আশেপাশেই আছেন।
অথবা, মাশরাফির কথা বলা যায়। আজন্ম স্বপ্ন ছিলো দেশের মাটিতে বিশ্বকাপে ক্যাপ্টেন হিসেবে টস করতে নামবেন। বিভিন্ন কারনে দেশের মাটিতে নামতে না পারলেও জীবন শেষ হয়ে যায়নি। বিদেশের মাটিতে ক্যাপ্টেন হিসেবে বাংলাদেশের সেরা পারফরম্যান্স এর রুপকার হিসেবেই তিনি সবার হৃদয়ে থাকবেন।

আরেকটা রুপক গল্প মনে পড়লো।

ভার্সিটি পাশ করে বেশ কয়েক বছর আগে বেড়িয়ে যাওয়া কিছু ছাত্র ব্যাক্তিগত জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়ে একদিন তাদের প্রিয় শিক্ষকের বাসায় বেড়াতে এলো। তাদের আলোচনার এক পর্যায়ে সবাই নিজ নিজে পেশাগত জীবনের চাপের কথা তাদের প্রফেসরকে জানালেন। এক সময় সবাইকে অপেক্ষা করতে বলে প্রফেসর তাদের জন্যে কফি বানিয়ে আনতে গেলেন।কিছুক্ষন পর তিনি একটি বড় কেটলিতে করে কফি ও একটা ট্রে তে করে বেশ কিছু ধরনের কাপ নিয়ে ফিরে এলেন।এই কাপগুলোর মধ্যে ছিলো চীনা মাটির কাপ, প্লাস্টিকের কাপ, স্ফটিকের কাপ-যেগুলোর কিছু ছিলো সস্তা আর কিছু ছিলো বেশ দামী ধরনের।প্রফেসর তাদের নিজেদেরকে কাপ নিয়ে কফি ঢেলে নিতে বললেন। যখন তারা সবাই নিজেরা কফি ঢেলে নিলো তখন প্রফেসর তাদের বললেন, ‘তোমরা লক্ষ্য করলে দেখতে সব দামী কাপগুলোই তোমরা নিয়ে নিয়েছো,ট্রে তে শুধু সস্তা আর সাধারন কাপগুলো পরে রয়েছে।
এই যে তোমরা সবসময় তোমরা নিজেদের জন্যে সবচেয়ে ভালটা চাও, এটাই তোমাদের জীবনের সমস্যা আর মানসিক চাপের কারন।
জেনে রাখো কাপ যত দামীই হোক তা কফির মধ্যে কোনো বাড়তি স্বাদ যোগ করে না। বরং অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমরা কি খাচ্ছি এটা বরং তাকেই লুকিয়ে ফেলে। তোমরা আসলে যা চাচ্ছিলে তা হলো কফি, কাপগুলো নয় কিন্তু তারপরও তোমরা সচেতনভাবে সবচেয়ে ভাল কাপটাই বেছে নিলে এবং তারপর একে অপরের কাপের দিকেও তাকাতে শুরু করলে।
এখন শোনোঃ
আমাদের জীবন হলো সেই কফির মত,আর চাকুরী,টাকা পয়সা আর সমাজ হলো সেই কাপটি। এগুলো শুধু জীবনটাকে ধরে রাখার জন্য কিন্তু এগুলো আমাদের জীবনের সংজ্ঞাও নির্ধারন করে না অথবা আমাদের জীবনের সুখ ও নির্ধারন করে না। কখনো কখনো অন্যের কাপটার দিকে তাকাতে গিয়ে আল্লাহ আমাদের সবাইকে যে কফিটা দিয়েছেন আমরা তাই উপভোগ করতে ভুলে যাই!

সো, ইউ জাস্ট হ্যাভ টু কিপ ফেইথ ইন ইউরসেলফ। কোন কিছুই থেমে থাকেনা। যদি কখনো বড়সড় ধাক্কাও আসে তাহলে আপনারও উচিৎ....
লম্বা একটা দম নিয়ে আবার কাজের মাঠে নেমে যাওয়া।

(নিজেকেই নিজে ইন্সপায়ার করলাম এতোক্ষণ)

মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:০৮

একটি পেন্সিল বলেছেন: অসাধারণ লেগেছে দ্বিতীয় গল্পটা। নতুন কিছু শিখলাম গল্পটার মাধ্যমে।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:২৭

অশ্রুকারিগর বলেছেন: অনুপ্রেরণার গল্পগুলো কিছুটা ঈশপের গল্পের মতো। দিনশেষে যদি আপনার মনে থাকে তবেই আপনার জীবনের পাথেয় হবে। পড়া ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

২| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:০৯

চন্দ্রনিবাস বলেছেন: আমার তো মনে হয়, প্রতিবন্ধকতাই মানুষকে তৈরি করে, দৃষ্টিভঙ্গিতে বৈচিত্র্য আনে, তাই সরল পথের চেয়ে গরল পথই বেশি শ্রেয়। আপনার পোস্টটি ভালো লেগেছে। আর এভাবে নিজেকে নিজে অনুপ্রেরণা দিতে থাকা মানুষ কখনো পিছিয়ে পড়ে না। কারণ তারা জানে, কিভাবে দুঃসময়ে নিজেকে নিজের পাশে রাখতে হয়। ভালো থাকবেন।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:৪৪

অশ্রুকারিগর বলেছেন: আপনি খুব সুন্দর একটি কথা বলেছেনঃ নিজেকে নিজে অনুপ্রেরণা দিতে থাকা মানুষ কখনো পিছিয়ে পড়ে না। কারণ তারা জানে, কিভাবে দুঃসময়ে নিজেকে নিজের পাশে রাখতে হয়।

আমার সম্পূর্ণ লেখাটার উদ্দেশ্য আপনার সুন্দর এবং গঠনমূলক মন্তব্যে একদম সার্থক হলো।

আপনিও ভালো থাকবেন। সম্ভবত আমার ব্লগে এই প্রথম আসলেন। অনেক শুভকামনা।

৩| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:৫১

মো:সাব্বির হোসাইন বলেছেন: অনেক কিছুই শিখলাম।

ধন্যবাদ।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:২৬

অশ্রুকারিগর বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।

৪| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫১

সুমন কর বলেছেন: চমৎকার লেখা। শুরু এবং রূপক গল্প সহ পুরো লেখাটিই ভালো লাগল।
+।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:২৭

অশ্রুকারিগর বলেছেন: নিজেকে অনুপ্রেরণা দিতেই লেখা আসলে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

৫| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৪:০৩

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: দ্বিতীয় গল্পটা জাস্ট ওয়াও।

রূপক অর্থে চমৎকার ভাবে বাস্তবতা ফুঁটে উঠেছে।

আসলেই আমরা তো আমরাই। অবস্থান যাই হোক - নিজেকে নিজের মত রেখে এগুতে পারলে কোন বাঁধাই আর আসবে না।

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:২২

অশ্রুকারিগর বলেছেন: অবস্থান যাই হোক - নিজেকে নিজের মত রেখে এগুতে পারলে কোন বাঁধাই আর আসবে না।

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

৬| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:৩০

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: পড়লাম কিন্তু কিছুই শিখতে পারলাম না, বস! অন্তরে মোহর মারা!

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৩৬

অশ্রুকারিগর বলেছেন: সাধুবাবা, শিখার কিছুই নাই। পড়ছেন, হঠাত কখনো দরকার পড়লে মনে পড়ে যাবে।

৭| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:৫৯

সামিয়া বলেছেন: ইন্সপায়ার :)

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৩৭

অশ্রুকারিগর বলেছেন: আপনে অনেক ইন্সপায়ারড আছেন। এগুলো আমার মতো পাবলিকের জন্যি বেশী দরকার! ;)

৮| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:২১

বাংলার পাসওয়ার্ড বলেছেন: Awesome ******
Onek valo laglo...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.