নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দি বিডি নিউজ ডট কম

দি বিডি নিউজ

www.thebdnews.com

দি বিডি নিউজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মোবাইল প্রেম, মোবাইল ফোনকে প্রেমের সহজতম অনুষঙ্গ হিসেবে ব্যবহার

১৮ ই আগস্ট, ২০০৮ রাত ৩:০৯

একটা সময় ছিল যখন পায়রার পায়ে ভর করে প্রেমিকের হৃদয়ের অনুচ্চারিত কথামালা পৌঁছে যেত প্রেমিকার কাছে। সময় বদলেছে, বদলেছে প্রযুক্তির প্রেক্ষাপটও। এখন আর হলুদ খামের অপেক্ষায় আনচান হয়না কাঠফাঁটা দুপুরগুলো। এখন প্রেমের বাহন হয়ে উঠেছে হাতের মুঠোয় থাকা ছোট্ট সেলফোন খানা। আজকাল এই অতি মূল্যবান যন্ত্রটির মাধ্যমে লেনদেন হচ্ছে প্রেমিক প্রেমিকাদের হৃদয়ের পংক্তিমালার।



রং নাম্বার টেলিফোনে, নাম না জানা কে বললো হ্যালো? কিন্তু তারপর? তারপরের কাহিনী অবশ্য অনেকে ধারণা করলেও করতে পারেন। এরপর হয়তো মোবাইলে বন্ধুত্ব, তারপর প্রেম, প্রেম থেকে পরিনয়ও হতে পারে। সে যাই হোক, মোবাইল যে আজকের তারুণ্যের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ, তা সবাই স্বীকার করবেন নির্দ্বিধায়। আর মোবাইলে প্রেম, সে তো বর্তমান সময়ের ‘জনপ্রিয়!’ এক প্রেমপন্থা। যখন আপনি মোবাইলে কারো সাথে প্রেম করবেন, তখন তাকে মোবাইল প্রেম বললেও বোধকরি খুব বেশি ভুল হবে না। কারণ মোবাইল যখন আপনার সাথে, তখন প্রেমকেও নিশ্চয়ই আপনি বহন করে চলেছেন। আর যদি আপনার প্রেমের মূল উপজীব্য হয় মোবাইল ফোন তবে তো এহেন বিশেষণ হান্ড্রেড পার্সেন্ট খাঁটি। মোবাইল প্রেম তথা মোবাইলে প্রেম নিয়ে আজকে আপনাদের খানিক জ্ঞান দেবে বলে ঠিক করেছে তরুণ কণ্ঠ। কারণ আপনাদের মতো আমরাও জানি জ্ঞান এবং বুদ্ধি এই দুই-ই বিতরণে বাড়ে। কথাগুলো কি খুব প্যাঁচানো মনে হচ্ছে। আমাদের ষষ্ঠেন্দ্রিয় বলছে, এই মূহুর্তে আপনি চোখ-মুখ কালো করে কপাল কুঁচকে আছেন। তার মানে কথাগুলো আপনার কাছ বেশ প্যাঁচানো মনে হচ্ছে। তবে এটাই কিন্তু শেখার বিষয়। মোবাইলে প্রেম করার প্রথম শর্তই হচ্ছে, কথা প্যাঁচানো বা কথোপকথনের দীর্ঘায়ন। এতো কথা যে বলছি, মোবাইলে প্রেম করা কি আদৌ পজিটিভ, নাকি পুরোপুরি নেতিবাচক। বড়রা অবশ্য তা-ই বলেন। কিন্তু আপনি যদি সম্পর্কের একমাত্র যোগাযোগ হিসেবে মোবাইল ফোনটিকে বেছে নেন, তাহলে হয়তোবা নেতিবাচকতার মাত্রাটি অনেক বেড়ে যাবে। আবার যদি প্রেমের যোগাযোগ সহজতর করার জন্য মোবাইল ফোনকে বেছে নেন, সেটা খুব স্বাভাবিকভাবেই গ্রহণ করবে সবাই। এখন কথা হচ্ছে মোবাইল প্রেমের রকমফের কিরকম। মোবাইল প্রেম দুরকম হতে পারে। এক. আপনি অপরজনকে চেনেন. দুই. চেনেন না (এমনও হতে পারে জীবনে দেখেনওনি)। হয়তো ভাবতে পারেন জীবনে দেখিনি কিংবা চিনি না এমন মানুষের সাথে প্রেম করতে আমার বয়েই গেছে। চেনা মানুষদেরই পাত্তা দেই না। আর যারা অচেনা মানুষের সাথে প্রেম করছেন বা করেছেন তারা আপত্তিতো তুলবেনই না, বরং তাদের সুখ অথবা দুঃখের কথা বলতে শুরু করতে পারেন। অর্থাৎ যারা মোবাইলে প্রেম করে জীবনের অন্যতম শান্তি খুঁজে পেয়েছেন (যদিও এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া বেশ দুস্কর) তারা গর্বের সহিত তাদের প্রেমকাহিনীর বর্ণনা শুরু করবেন। আর যারা মোবাইলে প্রেমের মাধ্যমে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ দুঃখটা পেয়েছেন তারা হয়তো মোবাইল ফোন আর প্রেম উভয়ের ফোরটিন জেনারেশন উদ্ধার করবেন। সে যাই হোক মোবাইলে প্রেম যে সবসময় খারাপ তা নয়। আর যোগাযোগের সহজ মাধ্যম হিসেবে মোবাইল ফোন কেবল প্রেম নয়, বর্তমান জীবনের সকল ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। মোবাইল ফোনে প্রেমের গল্পের বিস্তারিত নিয়ে পরে আসছি, তার আগে প্রেমে মোবাইল ফোন কখন কোথায় জরুরি হয়ে পড়ে সে বিষয়ে কিছু আলোচনা করি।



ধরা যাক, চারটার সময় ডেটিং ফিক্স করা আছে কোনো ফাস্টফুড অথবা কোনো শপিং মলের সামনে। জুড়ির একজন চাতক পাখির মতো অপরজনের জন্য অপেক্ষিত, কিন্তু তার আসার কোনো নামগন্ধও নেই। এই অধৈর্য অপেক্ষার এক এবং অদ্বিতীয় শান্তিবার্তা বয়ে নিয়ে আসতে পারে আপনার মোবাইল ফোনটি। তবে এটা সত্য যে, ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হলে মোবাইলের সুবিধা নিয়ে অপরজন কতো দূরে আছে জেনেও ধৈর্যের পরিমাণ বাড়ে বৈ কমে না। এক্ষেত্রে অবশ্য বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের থিওরি অব রিলেটিভিটি বেশ ভালোভাবে প্রয়োগযোগ্য। আইনস্টাইন বলেছিলেন সুন্দরী কোনো মেয়ের সামনে পাঁচমিনিট বসে থাকলে মনে হয় পাঁচ ঘন্টা বসে আছি। একইরকমভাবে মনের মানুষের জন্য পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করলে সেই সময়টাকে পাঁচ ঘন্টা মনে হওয়া খুব বেশি অস্বাভাবিক নয়। এক্ষেত্রে মোবাইল ফোন হতে পারে আপনার প্রিয় বন্ধু। বাসা থেকে বের হওয়ার আগে দু’জনে মোবাইলফোনে কথা বলে নিন। ফলে সময় সম্পর্কে একটি কাছাকাছি ধারণা পাওয়া যাবে। আপনাদের নির্ধারিত স্থানটি যদি কারো বাসার অথবা অবস্থানের কাছাকাছি হয়, তবে তাকে বলুন স্থানে পৌঁছানোর পর আপনি তাকে মিস কল দিলে যেন সে চলে আসে। তবে এরপরও যদি আপনাকে অপেক্ষার প্রহর গুণতে হয় তবে তাকে নিয়তির নির্মম পরিহাস ছাড়া আর কিছু বলা যাবে না।



আপনার মনের মানুষ যখন দূরে অবস্থান করে তখন তৃষ্ণার্ত আপনাকে শান্তি দিতে পারে আপনার মোবাইল ফোনটি। সুখে হোক কিংবা দুঃখে, মোবাইলফোনের মাধ্যমে আপনি চলে যেতে পারেন আপনার মনের মানুষের কাছাকাছি। কথা বলা তো হবেই, কথার সাথে অনেক টথাও বলতে পারেন (টথা মানে নিশ্চয়ই আপনাদের বুঝিয়ে দিতে হবে না)। দূরে অবস্থান না করলেও অনেক সময় মোবাইল ফোন নির্ভর হয়ে যেতে পারে আপনার প্রেম। যখন আপনার প্রিয় মানুষটির ব্যস্ত সময় কাটছে অথবা তার পরীক্ষা চলছে তখন নিশ্চয়ই হুটহাট করে আপনার সাথে সে দেখা করতে পারবে না। আবার এমনও হতে পারে সম্পর্কের বছরখানেক যেতে না যেতেই আপনি কিংবা আপনার সেইজন একে অপর থেকে ছিটকে পড়তে পারেন অনেক দূরে। তখন আনমনে গেয়ে উঠবেন, ‘এই পারে আমি, আর ঐ পারে তুমি, মাঝখানে নদী ঐ বয়ে বয়ে যায়।’ দূরত্ব যতোই কম হোক তাকে সাত সমুদ্দুর তের নদী মনে হতেই পারে। কিন্তু কেন? আপনার মোবাইল ফোন আছে না? তখন সাত সমুদ্দুর তের নদী কোনো ঘটনাই না। দূরে থাকবেন বলে কি কথা বন্ধ হবে? কখনোই না। অন্তত মোবাইল ফোনখানা হাতে থাকাবস্থায় এরকম চিন্তা ঘুনাক্ষরেও মাথায় আনবেন না।



ল্যান্ডফোনের বিকল্প হিসেবে মোবাইল ফোন অনেক আগেই স্বীকৃতি পেয়েছে। আর তরুণদের কাছে তো এর জনপ্রিয়তার বৃহস্পতি তুঙ্গে। এর কারণও আছে ঢের। ল্যান্ড ফোন সাধারণত বাসায় থাকায় ফোনবিল শব্দের সাথে অনেক আগে থেকেই পরিচিত। আর বিলের ভূত যদি খুব বেশি রেগে যায় তবে তো কথাই নেই। বাক্যবাণে বিদ্ধ হয়ে বন্ধ হয়ে যেতে পারে কথার গাড়ি। আর অভিভাবকরা যদি কোনোভাবে টের পায় যে এহেন কর্ম আপনার দ্বারা কৃত, তবে তো অজুহাতের পাহাড় নির্মাণে আপনাকে মনোযোগী হতেই হবে। তাই মোবাইলের সাথে বন্ধুত্ব করে ফেলুন এক্ষুনি আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, তারপরও বলছি, মিসড কল কিন্তু উপস্থিতি জানানোর একটি ভালো উপায়। ধরুন আপনি অনেক্ষণ ধরে তার সাথে কথা বলছেন না। একটি মিসকল দিন তাকে। তার ভালো লাগবে। আবার যদি রিপ্লাইতে একটি মিস কল পান, তবে আপনারও বোধকরি ভালো লাগবে। কখনো এই মিস মিস খেলা বাদ দিয়ে সাহায্য নিতে পারেন মুঠোবার্তারও। ছোট্ট একটি এসএসএম পাঠিয়ে দিন। আবার মজার কোনো উপকরণ পেলে এমএমএস পাঠাতে পারেন।



এইতো গেল আপনারা যারা মোবাইল ফোনকে প্রেমের সহজতম অনুষঙ্গ হিসেবে ব্যবহার করেন তাদের কথা। কিন্তু আমাদের সমাজে এমন অনেককে খুঁজে পাওয়া যাবে যারা মোবাইল ফোনে প্রেম করেন কিন্তু তার অপর পক্ষের মানুষটিকে চেনেন তো না-ই, কমপক্ষে কোনোদিন দেখেনওনি। এমন সম্পর্ক কারোরই কাম্য নয়। কারণ, খুব পরিস্কার। আপনি যার সাথে প্রেম করছেন তাকে চিনবেন না, সে কেমন কথা। চিনতেই হবে। না চিনে এমন সম্পর্ক গড়ে তোলা খুব বেশি বুদ্ধিমানের কাজ নয়। এরকম হতে পারে, এমন একটি অবস্থা হলো, কেউ যদি খুব বেশি একাকীত্বে ভোগে আর সেই সময় যদি শেয়ার করা যায় এমন কারো সাথে পরিচয় ঘটে তবে সেই পরিচয় পরিণয় হয়ে যায় খুব সহজেই। কিন্তু আবেগের বশবর্তী হয়ে কারো সাথে রিলেশন করা প্রশ্ন সাপেক্ষ। এমন কিছু ঘটনায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নেতিবাচক পরিণতি দেখা গেছে। হ্যাঁ, শুরুটা এমন হতে পারে। তবে চূড়ান্ত সম্পর্কে যাওয়ার আগে অবশ্যই জেনে-শুনে, ভেবে-চিন্তে তারপর সিদ্ধান্ত নিন। পরে যদি আবার গেয়ে ওঠেন ‘আগে জানলে তোর ভাঙা নৌকায় চড়তাম না’, সেই দায়ভারও কিন্তু আপনার। আর মোবাইলে যারা প্রেম করেন, সেটা যেমনই হোক তাদের জন্য একটি সতর্কবাণী, পকেটের অবস্থা বুঝে মোবাইল ফোনের ব্যবহার করুন। পরে যেন ফুটো পকেট নিয়ে ঘুরতে না হয়। আরেকটি বিষয়, মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় সেট থেকে একটি রেডিয়েশন নির্গত হয়। সেই রেডিয়েশন মানবশরীরে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। যা থেকে ব্রেইন টিউমার পর্যন্ত হতে পারে।



অনেক কাঠখোট্টা বিষয় নিয়ে আলোচনা হলো। এর মাত্রা বাড়লে হয়তো আপানারা বিরক্ত হবেন। তাই আর বাড়ালাম না। তবে যারা মোবাইলে প্রেম করছেন, তাদের উদ্দেশ্যে বলছি মোবাইল ফোন আমাদের জন্য প্রযুক্তির আশীর্বাদ। এর ব্যবহার করুন, অপব্যবহার নয়।



মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.