![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঘুমন্ত মানুষ গুলো যদি জেগে উঠে বলতো - আমি আছি
আসিফ যখন অফিসে পৌঁছালো তখন অলমোস্ট সময় দশটা। দশটার সময় অফিসে ঢোকা নিষেধ জানা সত্ত্বেও সে ঢুকেছে। এমন নয় যে সে এখানকার কেরানী কিংবা দারোয়ান। ম্যানেজিং এক্সিকিউটিভ অফিসার হিসেবে আজ তার চাকরীর প্রায় চার মাস। প্রায় চার মাস বলার একটা কারণ আছে। কারণটা খুব জরুরী নয়। ইদানীং অবশ্য আসিফের কাছে কোনো কিছুই জরুরী বলে মনে হয়না। তার ধারণা প্রয়োজনের অতিরিক্ত অভিলাষ জীবনের সুখের পথে অন্তরায়। এ মুহূর্তে তার পড়নে একটা মেরুন কালারের শার্ট। মেরুন কালার হলো দুঃখের রং। দুঃখের রঙে কেউ সাজতে পারে সেটা তাকে না দেখলে কেউ বুঝতে পারবেনা। আর আজ অফিসটাও যেনো কেনো থমথমে হয়ে আছে। প্রচন্ড ঝড় আসার আগে সবকিছু যেমন চুপ মেনে যায় অনেকটা তেমন। তবু এক অজানা কারণে ব্যাপারটা যথেষ্ট উদ্বেগের বলে মনে হচ্ছেনা তার কাছে।
- স্যার , আপনারে ডাহে।
- কে ডাকে ?
- বড় স্যার।
- ও আচ্ছা, তুমি ভালো আছো করিম ?
- জ্বে স্যার। আমি ভালা আছি। চা খাইবেন স্যার ?
- না করিম এখন আর খাবোনা।পরে লাগলে তোমাকে ডাকবো।
- জ্বে স্যার। আমি যামু তাইলে ?
- হুম। যাও। আমি আসতেছি।
ফোঁস করে বুকের ভেতর থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে ওর। দরদর করে ঘামা ওর স্বভাব নয়। কিন্তু এখন তেমন কিছু রকমই অনুভব করছে সে। পা চালানো দরকার। দেরী হলে পরে বড় স্যার রাগ করতে পারেন। বড় মানুষদের রাগ ও তাদের মতই অদ্ভুতুড়ে। এতদিন চাকরী করার পর এটা আর তার অজানা নয়।
- স্যার , আসবো ?
- জ্বি আসিফ সাহেব আসুন।
- থ্যাংক উই স্যার।
- আপনি একটা বিশেষ কারণে ডেকেছিলাম আর কি।
- বলুন স্যার।
- আসলে আপনাকে আর আমরা রাখতে পারছিনা।
- জানি স্যার।
- জানেন ?
- জ্বি জানি।
- স্ট্রেইঞ্জ, হাউ ডু ইউ নো ?
- সে আপনি বুঝবেন না স্যার। আমার এ মাসের বেতনটা কি পাবো ?
- আই এম সরি আসিফ সাহেব। আপনার সিদ্ধান্তটা আগের মাসেই হয়েছে। আজ থেকে শুধু বলবৎ হলো। সে হিসেবে এ মাসে কোম্পানির ভ্যালিড কর্মকর্তা ছিলেন না বিধায় সেলারীটা আপনি পাচ্ছেন না ।
- ইটস ওকে স্যার। আই গেট ইট।
বেলা এগারোটা বেজে সাত মিনিট। নিউ ইস্কাটন গার্ডেন এলাকার ছোটো এক গলিতে ছুটছে ঘর্মাক্ত দেহের বাহন রিক্সা। রিক্সার পেছনে বসে আছে স্বয়ং আসিফ। মন খারাপ থাকলে সে রিক্সায় ঘুরে বেড়ায়। রিক্সায় লাল নীল রঙা হুডের কালার তার বড় প্রিয়। আজ চাকরীটা যে তার চলে যাবে এটা এক প্রকার অনুমতিই ছিলো তার কাছে। কাল অফিস শেষ হবার পথে লিফটে আফরিনকে বিরক্ত করছিলো বড় স্যার। আসিফের দোষ ছিলো এটাই যে সে তখন ভুলে গিয়েছিলো কে স্যার আর কে কর্মচারী। ঘটনাটা আরো বহু দূর গিয়ে কোথায় শেষ হতে পারে সে সম্পর্কে তার ধারণা ছিলো আগে থেকেই। আজকের ব্যাপারটার জন্য সে মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়েই এসেছিলো।
ব্যাপার না। একটা চাকরীই তো। মজার ব্যাপার হচ্ছে চাকরীটা চলে যাবার পরও ওর তেমন কোনো অনুভূতি হচ্চ্ছেনা। ও ভাবছে মাসের সেলারীটার কথা। বিশ হাজার টাকা অনেক টাকা। এ টাকায় এ শহরে ভাত পাওয়া যায়। সে ভাত খাওয়ানোর জন্য অনেক অভাবী মুখ পাওয়া যায়। গড়া যায় খয়েরী রঙা এক ছোটো টুনাটুনির সংসার। বিশ হাজার টাকা অবশ্যই অনেক টাকা।
পকেট থেকে ফোনটা বের করলো সে। সারাকে ফোন করা দরকার। কিন্তু ফোন করে কি বলবে সে ? যে "সারা আমার চাকরী চলে গেছে। এখন আর আমি তোমাকে নিয়ে সংসার শুরু করতে পারবোনা। " না এটা বেশী হাস্যকর হয়ে যায়। তার থেকে চুপ থাকাই ভালো। ও চুপ থাকলে সারা যেনো কিভাবে এমনিতেই সব বুঝে নেয়। সে বোঝাতে থাকে এক মুঠো আকাশ। এক ফালি শহুরে বাতাস আর দু দুটো হাতের স্পর্শ। এত দামী জানিস পাওয়ার জন্য আজীবন চুপ করে থাকাটা খুব কঠিন কিছু নয় ওর কাছে। অবশ্যই নয় । আজ অনেকদিন পর মাথার উপর উড়ে যাচ্ছে মেঘের দল। গন্তব্যহীন সে মেঘেদের সাথে চতুর্বিংশ এক যুবকের জীবনের সীমারেখার কি নিদারুণ মিল ! ভাবতেই অবাক লাগে আসিফের কাছে । অকারণেই ....
২৪ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:০৯
টোকাই রাজা বলেছেন:
২| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:১০
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: একটু ভিন্ন ভাবনার গল্প! যেভাবনা এখন আর কেউ ভাবতে চায় না
++++
২৪ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:১১
টোকাই রাজা বলেছেন: ঠিক বলেছেন এখন আর এভাবে কেউ ভাবতে চায় না। ধন্যবাদ
৩| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:১৭
এহসান সাবির বলেছেন: দেরিতে হলেও বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা রইল
২৪ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:১১
টোকাই রাজা বলেছেন: আপনাকেও
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৫
আহলান বলেছেন: আহারে ... কেন যে বেচারা বাড়া ভাতে ছাই দিতে গেলো ....!