![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রাজপুত্তুর...দি লিটল প্রিন্স
রাজপুত্তুর' এর পোষ্টার করার জন্যে ধ্রুব এষের কাছে হোসেন অাতাহার অনেক স্টিল রেখে এসেছে। স্টিল দেখা থেকেই কথাপ্রসঙ্গে ধ্রুব দা আজ বললেন, 'ছোটপুপেদি তো একটা পাখনাই, অার রাজপুত্তুর অদ্ভুত লাজুক লাজুক।'
বললাম, 'শুটিংয়ের সময়ের একটা ঘটনা শোনেন। কাপাসিয়ার দরদরিয়া গ্রামে মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন অাহমদের বাড়ি ও বাড়ি-সংলগ্ন শালবনে শুটিং হচ্ছিল 'রাজপুত্তুর'এর। রাজপুত্তুর ও পুপেদি ঢাকায় নালন্দা স্কুলের ছাত্রছাত্রী। রাজপুত্তুর পড়ে ওয়ানে, ছোটপুপেদি পড়ে টু-তে। সে যাই হোক, একদিন খুব ভোরে বৃষ্টির পরপরই শুটিং করতে গিয়ে রাজপুত্তুর শালবনে ধপাস করে পা পিছলে পড়ে গেল। পুরো ইউনিটে এই খবর ছড়িয়ে পড়ল যে, রাজপুত্তুর ধরাশায়ী, শালবনে অাছাড় খেয়েছে। ধুতি-ফতোয়া কাদায় মাখামাখি। লাজুক রাজপুত্তুরের মান যায় যায়। এমনিতেই ছোটপুপেদি সুযোগ পেলেই রাজপুত্তুরকে একটু-অাধটু খোঁচা-টোচাও মারে। মূলগল্পে পুপেদি রামায়ণপাঠের সময় রাতেরবেলায় রাবণবধের দৃশ্য দেখে পরদিন সকালে যখন বলল, সে হরণ হয়ে গেছে (মনে মনে)। তখন তাকে উদ্ধার করতেই না পুপেদির দাদুমশাই রাজপুত্তুরকে দায়িত্ব দেন, সে যেন পুপেদিকে উদ্ধার করে অানে। অার শুটিংয়ের সময় কীনা সেই রাজপুত্তুরই শালবনে ঢিপিস! বিরাট লজ্জার ব্যাপার।
তো অামিও জানলাম, রাজপুত্তুর শালবনে পড়ে গিয়ে পুরো ইউনিটে তো লজ্জার মধ্যে পড়েছেই, ওর বেশি ভয় হচ্ছে শুটিং শেষে ঢাকায় ফিরে ছোটপুপেদি যখন স্কুলের সবাইকে বলে দেবে ধপাসের ঘটনাটা, তখনকার চাপ সামলানো দায় হয়ে যাবে। শুনে, অামি বললাম, 'এখন এই পড়েটড়ে যাওয়ার কথা বাদ, তুই ক্যারেক্টারে থাক।' দুঃশ্চিন্তা মাথায় নিয়েই রাজপুত্তুর অামার কথা মেনে নিল। পরদিন, ফের শালবনে শুটিং। পরদিন সকাল শুরুই হলো ঝুম বৃষ্টি দিয়ে। দুপুরের দিকে শালবনে দৌড়ের শটে গিয়ে ছোটপুপেদিও ধপাস হলো। কিন্তু সে তক্ষণি উঠেই পোশাক ঠিকঠাক করে ফের শটে দাঁড়িয়ে গেল। যেন, পড়েছি তো কী হয়েছে, দরকার হলে অাবারও পড়ব। কিন্তু অামাদের রাজপুত্তুরের তখন কী অানন্দ! কারণ, ওর ধারণা, 'এবার অার পুপেদি স্কুলে ফিরে অামার পড়ে যাওয়াটা ফাঁস করতে পারবে না। কারণ ও তো নিজেও পড়েছে।'
ছবির গল্পে যদিও হরণ হয়ে যাওয়া পুপেদিকে চাঁদের কবল থেকে উদ্ধার অভিযানে রাজপুত্তুর পুপের দাদু কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত, তারপরও, গল্পের মধ্যেই কথাপ্রসঙ্গে ছোটপুপেদি দাদুকে বলেও দেয়, 'হুম, রাজপুত্তুর না লাজপুত্তুর! ওকে অামি জটায়ুপাখি বলেও মনে করিনে।'
সেদিন ডাবিংয়ের সময় রাজপুত্তুরকে বললাম, 'কি রে, স্কুলে পুপেদির সঙ্গে তোর দেখা হয়?'
রাজপুত্তুর বলল, 'দেখা হয়, কিন্তু কথা হয় না।'
'কেন?'
রাজপুত্তুর অভিযোগের সুরে বলল, 'কথা কী হবে? ও তো দেখা হলেই অামারে খালি মারে।'
'কী, মারামারি করিস তোরা? সত্যি তোকে পুপেদি মারে?'
রাজপুত্তুর বলল, 'খালি চিমটি মারে। অামার ব্যথা লাগে তাও মারে।'
এ কথা শুনে অামি কী বলব? বললাম, 'অাচ্ছা, পুপেদিকে অামি বলে দেব, তোকে যেন অার চিমটি না মারে।'
রাজপুত্তুর অাঁৎকে উঠল, 'না, কিচ্ছু বোলো না, অামি ওর মারার কথা বলে দিছি এটা যদি পুপেদি শোনে তাইলে এরপরে মনে হয় অারো বেশি করে মারবে।'
বললাম, 'অাচ্ছা, বলব না।'
অাবার ডাবিংয়ে তো একদিন দুইজনের শিডিউল একই সময়ে পড়ল। দেখলাম, কোনো মারামারি নেই, বরং ওরা গল্পই করছে 'ড্রিমার ডাংকি' অডিও প্যানেলে। অবশ্য রাজপুত্তুর বলেছে, পুপেদি ওকে চিমটি মারে স্কুলে। এমনকি ওর অারো দুচারজন বন্ধুও নাকি ওকে মারে। ও খেলতে না চাইলেও মারে।
ছোটবেলা এমনই। অামরাও ছোট ছিলাম। এমন কী কিছু হয়নি তখন অামাদেরও?
©somewhere in net ltd.
১|
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৫২
প্রামানিক বলেছেন: ভাল লাগল। ধন্যবাদ