![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
'রাজপুত্তুর' কনফেস ০১
রবীন্দ্রশিশুসাহিত্যের ছবি 'রাজপুত্তুর' ছবিতে পুপেদি, পুপেদির দাদুমশাই, সুকুমার, বড় সুকুমার, সুকুমারের বাবা ডা: নিতাই, পুপের গৃহশিক্ষক কিশোরী চট্টোপাধ্যায়, ধীরু, ধীরুর পরিবার প্রমুখ--এরাই মূল ফিকশন-ক্যারেক্টার। এর মধ্যে 'ডাকঘর' 'মিনি ও কাবুলিওয়ালা' বীরপুরুষ' থেকে যে-অংশটুকু এডাপ্টেশন করা হয়েছে, সেখানে চলচ্চিত্রের ফিকশন মুড থেকে সরে গিয়ে অ্যাপ্লাই করেছি থিয়েট্রিক্যাল ট্রিটমেন্ট। এটা অামার মনের অালস্য-বিলাসের একটা সাজেসটিভিটি অার কি। ফলে, 'রাজপুত্তুর' ছবিতে পুপেদি-দাদুমশাই-সুকুমার বা অামাদের রাজপুত্তুর হচ্ছে রিয়েল ক্যারেক্টার, সিনেমা-সিনেমা। অন্যদিকে ফাঁকা মাঠের মধ্যে একটা অাধা-রিয়েলিস্টিক ঘর-জানলার সাজেশনে রোদের মধ্যে বিছানায় শুয়ে অাছে বালক অমল, স্বপ্নময় জ্বরে সে অাক্রান্ত। র. ঠাকুরের 'ডাকঘর'এ অমলের কাছে রাজার চিঠি অাসবে বলে অামরা জানতে পারি, 'রাজপুত্তুর' ছবির থিয়েট্রিক্যাল ভঙ্গিতে রচিত অমলকে দেখা যাবে সে অলরেডি রাজার চিঠি পেয়ে গেছে এবং সেই চিঠি নিয়ে রাস্তা-মাঠ দিয়ে সে দৌড়ে দৌড়ে যাচ্ছে অার বলছে,'রাজার চিঠি, রাজার চিঠি, রাজার চিঠি...চিঠি না এটা পাখি, পাখি পাখি পাখি...' তারপর অমল তার হাতের সেই ভাঁজ করা কাগজ বা চিঠি কিম্বা কাগজের পাখিকে ছুঁড়ে মারে তার বন্দিদশার ঘর-জানলা দিয়ে। পাখিটা উড়ে যায় অাকাশে। ইটস, অ্যানিমেটেড। অ্যানিমেশন যে সব কারণে এ ছবিতে নানা জায়গায় যুক্ত হয়েছে 'ড্রিমার ডংকি'র সাপোর্টে।
পুপেদির গল্পে অারো অাত্মীকরণ হয়ে গেছে শশী মালিনীর মেয়ে সুধা কিম্বা চিরপরিচিত দইওয়ালা, যে থাকে অনেকদূরের গ্রাামে, সেই পাঁচমোড়া পাহাড়ের তলায় শ্যামলি নদীর ধারে...।
দইওয়ালা হাঁক দিয়ে যায়-- দই, দই, দই, ভালো দই।
সুধা ঘুমন্ত অমলের শিয়রে বসে অার্তি জানায়-- অমল উঠলে বোলো, সুধা ওকে ভোলেনি...
অন্যান্য যে চরিত্রেরা এখানে সাজেসটিভিটিতে ঢুকেছে-- সুধা, দইওয়ালা, মিনি, কাবুলিওয়ালা, বীরপুরুষ, দুই পালকিবাহক, বীরপুরুষের মা, ডাকাতদল কিম্বা রাবণবধের দৃশ্যে রাম-রাবণ, হনুমান ও বানরসৈন্যদল। রাবণবধের যুদ্ধটা তো করেছি যাত্রার ভঙ্গিতে। অাবার ফিরে এসেছি মূল ফিকশনের ক্যারেক্টারে, পুপেদি-দাদুমশাই-সুকুমারের কাছে, শালবনের মধ্যে, কবির বাড়িতে, বাগানে।
কাগজে বানানো দুটো পাখিও ওড়াউড়ি করে ছবির মধ্যে। সুক-সারির ওড়াউড়ি কিম্বা ঝগড়া দেখা যাবে থ্রি-ডি অ্যানিমেশনে, পাখির অডিও ব্যবহৃত হয়েছে পাপেটি-টোনে। সুক পাখিটা অাকাশের পক্ষে কথা বলে; সারি পাখিটা বলে; জঙ্গলই তার ভালো। রাবীন্দ্রিক স্কুলিংএ থেকেই এইসব অার কি।
তো শেষপর্যন্ত, ছবি হিসেবে 'রাজপুত্তুর' কী দাঁড়াচ্ছে? দর্শক, অাপনাকে কোথাও নিয়ে যেতে পারবে তো 'রাজপুত্তুর', নির্মাতা হিসেবে অামার যা যা অপারগতা ও সীমাবদ্ধতার পাঁচিল পেরিয়ে?
পারলে পারলাম, না পারলে পরবর্তীতে পারব, নিজের কাছেই কথা দিচ্ছি...
টোকন ঠাকুর
১৭. ফেব্রুয়ারি ২০১৫
ঢাকা
©somewhere in net ltd.