নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

৩২ পৃষ্ঠায় খড়, ৩৩ পৃষ্ঠায় অাগুন

টোকন ঠাকুর

কবিতা গল্প লিখি, ছবি আঁকি-বানাই, একাএকা গান গাই...

টোকন ঠাকুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাজপুত্তুর--ফাইনাল সিনোপসিস

১৮ ই জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০২

দ্য লিটল প্রিন্স (রাজপুত্তুর)
৫৬ মিনিট
সিনোপসিস


দোতলার বারান্দায় বসে ছবি অাঁকছেন দাদু। অষ্টাদশী নাতনি দাদুর পাশে বসে পায়ে অালতা লাগাচ্ছে। তখন, কথায় কথায়, দাদু তার নাতনি পুপেদিকে ছোটবেলার কথা মনে করিয়ে দিলেন। যেমন একদিন, কী কাণ্ডটাই না ঘটল! অাজকের পুপেদির তখন বয়স ৬ কি সাত। একরাতে, উঠোনের মঞ্চে রাবণবধের যুদ্ধ দেখে পরদিন সকালে শালবনের ভেতর দিয়ে ভীত-সন্ত্রস্থ হয়ে দৌড়ুতে দৌড়ুতে এসে পুপেদি তার দাদুকে বলল, 'হরণ করে নিল।'
'কাকে?' দাদু চমকে উঠলেন।
পুপেদি বলল, 'অামাকে।'
'কী সর্বনাশ।' দাদু শঙ্কিত হলেন।

জানা গেল, চাঁদের চিড়িয়াখানা থেকে এসে খরগোশ পুপেদিকে হরণ করে নিয়ে গেছে। এখন তাকে উদ্ধার করা চাই! সেই জন্যেই তো রাজপুত্তুরের শরণ নিতে হলো। রাজপুত্তুর হচ্ছে পুপেদির পাড়াত-সমবয়েসি ভাবুক-কিশোর, সুকুমার, সেও ৬ কি ৭। 'অামার ঘরের জানলা দিয়ে যে শালগাছটা দেখা যায়, বিছানায় শুয়ে শুয়ে শালগাছের মাথাটা অামি দেখতে পাই, মনে হয় ও স্বপ্ন দেখছে'_ এই হচ্ছে সুকুমারকে চিনে নেবার সংলাপ। সুকুমার সকাল-দুপুর ঘুরে বেড়ায় শালবনে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা গল্প 'সে'। এই গল্পের চরিত্র সুকুমারের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বা গল্পের দাদু ঠিক কার পোর্ট্রেট অাঁকিবুকি করেছেন? এই প্রশ্ন মনে অাসে, বালক সুকুমার বা রাজপুত্তুর'ই কি স্বয়ং জগতপ্রজ্ঞায় পূর্ণ বৃদ্ধ রবীন্দ্রনাথ নয়?

রবীন্দ্রনাথের পুত্র রথীন্দ্রনাথের পালিত কন্যা পুপেদি ছোটবেলায় ছিল দুষ্টু এবং সুকুমারের খেলার সাথী। বাড়ির বড়দের চোখ এড়িয়ে ভরদুপুরে তারা শালবনে ঘুরে বেড়ায়। জঙ্গলের ভেতর সুকুমারের জন্যে জলপাই ভরা বাটি নিয়ে অাসে পুপেদি। সুকুমারই তো তার রাজপুত্তুর। যদিও, পুপেদি তার দাদুর সঙ্গে অালাপকালে সুকুমারকে কোনো পাত্তাই দিতে চায় না, বরং ঠোঁট উল্টিয়ে অারো ভেংচি কাটে- 'হুম, রাজপুত্তুর না লাজপুত্তুর। ওকে অামি জটায়ুপাখি বলেও মনে করিনে'।
'রাজপুত্তুর' ছবিতে সত্যযুগের কথা অাসে। সত্যযুগে মানুষের ইচ্ছে অার ঘটনা ছিল একই। পুপেদি ছোটবেলায় বেড়াল পছন্দ করত। এটা তার ইচ্ছে। তাই দাদু পুপেদিকে বললেন, 'সত্যযুগ হলে ইচ্ছের সীমানা লোপ করতে হতো না। তুমি তুমিও থাকতে, বেড়ালও হতে।'
নাতনির সঙ্গে বসে বসে অালস্যমধুর গল্প করেন দাদু। কিছুটা গল্প নিজে বানান, কিছুটা গল্প নাতনি পুপেদিকে দিয়ে বানিয়ে নেন। এভাবেই গল্প এগোয় 'রাজপুত্তুর' ছবিতে। এমনকি রুপকথার শুক ও সারি পাখি ঝগড়া করতে করতে উড়ে এসে ঢুকে পড়ে গল্পের মধ্যে। গল্পের মধ্যে ঢং ঢং ঢং করে ঘণ্টাকর্ণ শব্দ করে যায়। এই ঘণ্টাকর্ণ অাসে সপ্তর্ষিপাড়ার ছায়াপথ ধরে।

কিন্তু অাকাশ মূলত 'কিছুই না'। 'কিছুই না'র রাস্তা ধরেই পুপেদিকে হরণ করে নিয়ে গিয়েছিল খরগোশ। রাজপুত্তুরও সেই 'কিছুই না'র রাস্তা ধরেই পুপেদিকে ফিরিয়ে অানতে চায় তার পঙ্খিরাজ ঘোড়ায় চেপে।

'রাজপুত্তুর' বা সুকুমার অারেকটু বড় হয়ে ওঠে। সে তখন ছবি অাঁকা শিখতে চায় নন্দলাল বসুর কাছে। কিন্তু তার বাবা চান, ছেলে অর্থকরী বিদ্যা অায়ত্ব করুক। পিতাপুত্রের চিরায়ত দ্বন্দ্ব দেখা যায়। সুকুমার বাবার উপর অভিমান করে চলে যায় বিলেতে। একদিন, এসব কথা কথায় কথায় দাদুই বলেন তার অষ্টাদশী পুপেদিকে। পুপেদির ভেতর জেগে ওঠে সুকুমারের সঙ্গে স্মৃতি হয়ে যাওয়া ছোটবেলাকার ছবি। তখন পুপেদির ভেতর জেগে ওঠে অপেক্ষা তার হারিয়ে যাওয়া রাজপুত্তুরের জন্যে।
এই ফিকশনে কোথাও কোথাও ট্রাডিশনাল থিয়েটারি ভঙ্গি ব্যবহার করা হয়েছে যেমন, অাবার প্রযুক্তিগত সুবিধায় টু ডি ও থ্রি ডি অ্যানিমেশন-এফেক্টসও ব্যবহার করা হয়েছে।

যে-কারণে ছোট্ট খুকি পুতুল খেলে এবং তার খেলার পুতুল থাকে দুইটা_ একটি ছেলে-পুতুল ও একটি মেয়ে-পুতুল, সে-কারণেই 'রাজপুত্তুর' ছবির ছোট্ট পুপেদি শালবনে গিয়ে খেলা করে তার খেলার সাথী সুকুমারের সঙ্গে। কেননা, বয়সে ছোটরাও ভালোবাসা করে, কে ছোট ছিল না একদিন? কে ভালো বাসেনি কাউকে?

গোপনে গোপনে, কোন মেয়েটি শালবনে ঘুরে বেড়ানো পুপেদি নয়? অার মনে মনে অামরা কে না রাজপুত্তুর?








মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.