নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

৩২ পৃষ্ঠায় খড়, ৩৩ পৃষ্ঠায় অাগুন

টোকন ঠাকুর

কবিতা গল্প লিখি, ছবি আঁকি-বানাই, একাএকা গান গাই...

টোকন ঠাকুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

লিখতে বসব, পাঠকের জন্যে

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:২০

লিখতে বসব, পাঠকের জন্যে




মধুপুর এমন একটি গ্রাম, গাড়াগঞ্জ বাজারের পাশে, কুমার নদের পাড়ে। ঝিনাইদহ থেকে শৈলকূপা যাওয়ার পথে মধুপুর রাস্তায় হাতের ডাইনে, বাম পাশে গাঙ। গাঙের নাম কুমার। এই কুমার নদের জলে স্নান করতে করতেই বড় হয়ে গেলাম। এই মধুপুরে বসেই কবিতা লেখার চর্চায় জড়িয়ে গেলাম। সে অামার মাধ্যমিকের দিন, অামি তখন পড়ি গাড়াগঞ্জ বহুমুখি উচ্চ বিদ্যালয়ে। বাংলা কবিতার সঙ্গে একটা গাঁটছড়া সম্পর্কে সূচিত হবার বয়েস। তারও অাগে অামি ছিলাম ভায়নাতে। ভায়না হরিণাকুণ্ডু থানার গ্রাম, যে গ্রামে যেতে হতো নৌকায় নদী পার হয়ে, সে এক বিস্তীর্ণ অজপাড়াগাঁ।

অাগে একটু ভায়নার কথা বলি। ভায়না অামার মামাবাড়ি, অামি জন্মেছিলাম সেকালের রীতি অনুযায়ী মামাবাড়িতেই। ভায়নাতে একটি প্রাইমারি ইশকুল ছিল। সরকারি। অামি ছিলাম সেই ইশকুলের ছাত্র। সেই ইশকুলের ছুটির ঘণ্টা যখন বাজত, মনে হতো পুরো ভায়না গ্রামেই সেই ঘণ্টাধ্বনি ছড়িয়ে পড়ছে। সম্ভবত সেই ঘণ্টাধ্বনিই ছিল ভায়না গ্রামের সবচেয়ে বড় শব্দ। কোনো মোটরগাড়ি তখনও ভায়নাতে ঢুকতে পারত না, কারণ, নদী। নদীতে তখনও ব্রিজ ছিল না। নৌকা ছিল। শীতকালে নদী শুকিয়ে যেত বলে নদীর ওপরে বাঁশের সাঁকো ছিল। অামরা নৌকায় যেমন পার হয়েছি, পার হতাম সেই সাঁকোর ওপর দিয়ে কাঁপা-কাঁপা পায়ে।

অনেক ঝোঁপজঙ্গল ছিল মামাবাড়ির গ্রামেও। সারি সারি গ্রামবসতি, গ্রামের বাড়িঘরদোরের পেছনে হয়তো বাঁশবন, অামবাগান, ছিল যত্রতত্র নারকেল গাছ। নারকেল বন। অামরা বনে বনে খেলে বেড়িয়েছি অামাদের কৈশোরে। মামাবাড়ির পেছনে যেমন বিস্তীর্ণ বাঁশবন, তারপরে ফসলি জমির মাঠ। সেই মাঠে কিছুদূর পার হলেই অারও এক ফাঁকা মাঠের মধ্যে বড় একটি শাল-সেগুনের বন। সেই শাল-সেগুনবনের ধারে কাছে কোনো মানুষের বাড়ি ছিল না। দুপুরে অামি যখন একা একা সেই বনে ঢুকতাম, একটু ভয় ভয়ও লাগত।কেমন একটা ঝিম মারা নির্জনতা। ভূতগ্রস্থ নৈঃশব্দ্য। ঘুঘু ডাকত খুব, বনে। অারও কত কী পাখি ডাকত, সে তো অার অামি জানি না। কিন্তু অামি সেই পাখির ডাক শুনতে শাল-শিশু বনে ঢুকতাম। নিশ্চয়ই অামার খুব ভালো লাগত সেই বনান্তরের ঝিম? দূরের লোকালয়ের মানুষের কণ্ঠস্বর সেই বনে পৌঁছুত না। এরকম জঙ্গল ছিল বাংলাদেশের গ্রামজীবনে, এই কদিন অাগেও, গত শতাব্দির অাশির দশকেও। তখন তো অার অাজকের মতো এতো মানুষ ছিল না, ছিল গাছ, ছিল জঙ্গল, ছিল পাখির ডাকাডাকি। ছিল অনেক নীলাকাশ। অাকাশে তখন এত বিমান ছিল না। অাকাশটা ছিল ফাঁকা মাঠের মতো। অাকাশটা ছিল অনেকদূর। অাকাশটা ছিল মাঠ। ভুবনডাঙার মাঠ। অামরা খেলতে যেতাম সেই ভুবনডাঙার মাঠে। মাঠের পরে মাঠ পেরিয়ে সেদিন অামরা অনেক নীল পেরিয়ে গেছি। ঝিল পেরিয়ে গেছি। দেখেছি, বক বিকেলবেলায় পুঁটিমাছ ধরে মাড়ি চিবাচ্ছে। বিকেলের জলখাবার।

সেই অাকাশে কোনোদিন একটা বিমানের শব্দ শোনা গেলে বাড়ির বড়রা-ছোটরা প্রায় সবাই ঘর থেকে উঠোনে বেরিয়ে অাসত। বিমানের শব্দ কোন দিক থেকে অাসছে, প্রথমে সেটা নির্ণয় করতেই সবার মধ্যেই একটা হুড়োহুড়ি লেগে যেত। শব্দের গতির সঙ্গে বিমানের যাত্রা গতি অামরা কিছুতেই মেলাতে পারতাম না। তবু তার মধ্যে কেউ হয়তো অাবিষ্কার করে ফেলত, ওই যে বিমান, ওই যে উড়োজাহাজ। শুনতাম, উড়োজাহাজ যন্ত্রটার অনেক দাম। গ্রামের কেউ উড়োজাহাহ কিনতে পারবে না, এটা অামি বুঝতাম। তখন মনে হতো, অামি একদিন একটা উড়োজাহাজ বানাব। তারপর ভায়না গ্রামের সবাইকে সেই উড়োজাহাজে চড়িয়ে নদীর ওপার নিয়ে যাব। নিঃসন্দেহে মোরগ ডাকার শব্দে ভোর হতো সেই গ্রামে। সেই গ্রামে অামার জন্ম, ধাত্রীমার হাতে। নিহারিকা নামের সেই মা মা চেহারার ধাত্রীমাই ভায়না-বাঘ অাঁচড়া, পিয়ারপুর, হরিশপুর, সুগ্রীবপুর অঞ্চলের শিশুবাচ্চাদের ধাত্রীমা। বড় হয়ে অামি অার কোনোদিন সেই ধাত্রীমাকে দেখা পাইনি। অবশ্য অামিও সেই মামাবাড়ির গ্রাম ছেড়েছি ছোটবেলাতেই। তারপর তো দাদাবাড়ি। সেই মধুপুর। গাড়াগঞ্জ বাজারের পাশে। কুমার নদের পাড়ে। অামার বাল্যকাল ভেসে গেছে কুমারের জলে। ডাঙায় হাফপ‌্যান্ট খুলে রেখে নদীতে লাফিয়ে পড়বার অানন্দ অামার জন্যেও বরাদ্দ ছিল। অামি তা নিয়েছি।

সেই নৈঃশব্দ্য-মন্দ্রিত বাল্যকাল পার করে পরে যখন শ্রীপুরে গেলাম, তখন অামি অষ্টম শ্রেণিতে পড়ি। শ্রীপুর মাগুরা জেলার একটি থানা শহর। শহর তো নামে মাত্র, শ্রীপুরও একটি গ্রাম। কুমার নদের পাড়ে সেই ছোট্ট ছিমছাম থানা শহর অামার ভালো লেগেছিল। বাবার ব্যাংকের চাকরির কারণেই অামরা শ্রীপুরে ছিলাম। শ্রীপুর হয়তো তখন একটি গ্রাম-শহর। হরিন্দী, কাজলি, খামারপাড়া, তারাউজালা, লাঙ্গলবাঁধ, বিজুলিয়া, মনোহপুর, দহকোলা, বারোইপাড়া, লক্ষণদিয়া, দুধসর, বাজুখালি_ চারপাশে শুধু গ্রাম অার গ্রাম। এরকম গ্রামজীবনের মধ্যে শৈশব-কৈশোর কাটিয়ে, বাংলা কবিতার সন্ধানে অামাকে চলে অাসতে হলো শহরে। শহরের কলেজ, শহরের বিশ্ববিদ্যালয়, শহরের অফিস, শহরের অাবাসিক এলাকায় ঘুরে ঘুরে অনেকানেক সময় পার করতে হল এবং হচ্ছে, যেখানে প্রচুর যন্ত্র, যন্ত্রের শব্দ। শব্দের শাসনে অাছি। বলা যায় ত্রাশণেও।

হ্যাঁ, কবিতা লিখতে শব্দ লাগে বৈকি! ওঁঃ। শব্দ ব্রক্ষ্ম। অাদিতে শব্দ ঈশ্বর ছিলেন, ঈশ্বর বাক্য ছিলেন, ঈশ্বর সদা বাক্য হয়ে থাকেন। বাক্য ভালোবাসা হয়ে থাকে। বাক্য বিষাদ হয়ে থাকে। বাক্য বেদনা হয়ে থাকে। বাক্য অভিপ্রায় হয়ে থাকে। বাক্য ভ্রমণ-নির্দেশিকা হয়ে থাকে। বাক্যই অামাকে নিয়ে যায় মামাবাড়ি ভায়নার সেই নির্জন শাল-শিশুবনে। বাক্য অামাকে মধুপুরের ভৌতিক দুপুরবেলায় অামবাগানে ভয় পাইয়ে দেয়। মাঝেমধ্যে মনে হয়, উপ্পয়নপ্রিয় কোনো একটা বাক্যই অামার সেই গ্রামবাসিকে উড়িয়ে নিয়ে যেতে চাওয়া উড়োজাহাজ! কী সেই বাক্য, কী তার বাক্যের মহিমা?

মাঝেমধ্যে এও মনে হয়, অামি মনে হয় সেই বাক্যের সন্ধানে অাছি, শব্দের ভিড় ঠেলে যথা বাক্যের সন্ধানে ঘোরাফেরা করছি। বাক্যটি পেলেই চলে যাব। কোথায় যাব? কোথায় যে যাব, মানুষ যে কোথায় যায়?


শহরে অামি শালবনের সেই বাক্যটিকে অাজ কীভাবে খুঁজে পাব? সারি সারি ফার্নিচারের দোকান। টেবিল-চেয়ার-খাট-পালঙ্ক-অাসবাবপত্র বানানো। তার মানে, কত গাছ কাটা হয়েছে, কত গাছ কাটা হচ্ছে প্রতিদিন শুধু কাগজ বানাতে গিয়ে, তারপর সেই কাগজে ছাপা হচ্ছে কবিতা-পাঠ্যবই। তাহলে গাছ হত্যা করে অামি বনের সবুজ মায়া লিখতে চেয়েছি! এ কীরকম চাওয়া? মাঠ হত্যা করে অামি সন্ধ্যার সূর্যাস্ত লিখতে চেয়েছি! নিজেকে হত্যা করে মানুষ ভালোবাসার কথা লেখে, এ মানুষের অাত্মবিরুদ্ধ স্বভাব। এই স্বভাব মানুষ ভালোবাসে। বিষ্মিত হই।

এরকম নদীর ওপর দিয়ে উড়ে অাসা হাওয়ায় যখন ভাসছি, তাকিয়ে দেখছি একটার পরে একটা দিন পেরিয়ে যাচ্ছে গোয়ালনন্দ ঘাট পার হয়ে, ওপারে পাটুরিয়া ঘাট। ঘাট পেরুলেই ঘিওর, শিবালয়, মানিকগঞ্জ। মানিকগঞ্জের পর ধামরাই, নবীনগর, সাভারের শালবন, অামিন বাজার। অামিন বাজার ব্রিজের ওপারই হচ্ছে গাবতলি। এই ঢাকা চলে অাসলাম। ওফ! কী শব্দ। কী যান্ত্রিকতা। এই যান্ত্রিকতার মধ্যেই দীর্ঘ সময়! তার মানে অামরাও যে যার মতো যন্ত্র হতে চলেছি। অনবরত চলছি অার চলছি। যন্ত্রের মতো চলছি।

সনাতন পৃথিবী যন্ত্রকে এড়িয়ে যেতে পরেনি বলেই, দিনে দিনে যন্ত্রের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কী দিন ছিল কদিন অাগেও! যে মেয়েটিকে ভালো লেগে গিয়েছিল মেলায় একবার দেখার পরই, তখন তার সঙ্গে তো ছিল তার বাবা-মা। তাই কথা বলা তো দূরের, ভালো করে তাকাতেও পারিনি। তারপর মেয়েটি হয়তো চলে গেল অভিভাবকদের সঙ্গে। যেতে যেতে, একবার দুবার হয়তো পেছন ফিরে তাকালও। ব্যস। এরপরে অার ঘুম হয়? এখন কে জানে, মেয়েটি কোথায় থাকে? তাকে একটা চিঠি তো লেখাই দরকার। চিঠি যে লিখব, চিঠি তার হাতে পৌঁছুবে কী করে! মেয়েটির বাড়ির ঠিকানাই বা কোথায়! ঠিকানা হয়তো মিলল, চিঠিও লিখলাম, ডাক বিভাগে ছেড়েও দিলাম 'যাঃ চিঠি যাহ' বলে। কিন্তু চিঠি প্রাপিকার হাতে পৌঁছুবে তো? নাকি চিঠি হাতে নিয়ে পরের সপ্তাহে বিচার বসাবে মেয়েটির রাশভারি কাকা?

এখন, একটি মোবাইল ফোনের টেক্সটেই মনের কথা জানিয়ে দিতে পারছে মনন, মুন্নীকে। এমনকি অচেনা অদেখা কোনো মানুষের সঙ্গেও অালাপ পরিচয়-পরিণয় হয়ে যাচ্ছে যন্ত্রের মধ্য দিয়ে, অনলাইনে, ফেসবুকে। কত কী পরিবর্তন। পরিবেশ অাপন প্রয়োজনেই পরিবর্তিত হয়ে চলেছে। এই পরিবর্তনের যুগে, অবশ্য যুগ নিয়তই পরিবর্তনশীল, এতে অামার কোনো অাফসোস নেই। অাফসোস এই অর্থে নেই যে, অাগে এটা ভালো ছিল, এখন খারাপ বা এখন ভালো, অাগে খারাপ ছিল। পৃথিবীতে প্রত্যেকটা দিনই নতুন দিন। প্রত্যেকটা মানুষই নতুন মানুষ। প্রত্যেকটা কবিতাই নতুন কবিতা। প্রত্যেকটা ছবিই নতুন ছবি। প্রত্যেকটা ভালোবাসাই নতুন ভালোবাসা। অামি এই ভালোবাসাকে গ্রহণ করতে চাই। কেননা, কার কথা কীভাবে বলব আমি? বন থেকে প্রকাশিত দৈনিক ঝরাপাতা—কারা তাতে লেখে আর কারাই বা পাঠক-পাঠিকা? কার কাছে বলা যায়—উত্তরের হাওয়া আসে গুপ্তচর হয়ে? সন্ধে থেকেই ওঁত্ পেতে বসে আছে আততায়ী ঘ্রাণ, চন্দ্রমল্লিকার! মনে হয়, ভাবনা সম্প্রচার কেন্দ্রের আজ রজতজয়ন্তী, তুমুল ভাবনাসৃজনসূচি...ভাবনাকে দেখতে আসে বুদ্বুদ—দোস্তে দোস্তে জুয়া খেলে কয়েক সেকেন্ড; এর মধ্যেই ঝাঁপ দেয় গনগনে কবিতাখসড়া, এর মধ্যেই উঁকি দিয়ে যায় এক স্বর্ণমৃগয়া, নড়ে ওঠে ঝোপঝাড়, যেহেতু সতর্ক, ভয়টয় সব বাইপাস করে ছুটতে থাকি ছুটতে ছুটতে ছুটতে ছুটতে বনবনানির নির্জনতায় যেখানে এলাম—ওহ কী দুরবস্থা, নিজেই রচনা করেছি সুনিপুণ আত্মঘাতী ব্যাকরণ—আমি এই জঙ্গলের গাছে গাছে ফেরার কোনো চিহ্ন এঁকে রেখে আসিনি, কীভাবে ফিরব? আমি কি আজ অরণ্যমন্ত্রী? না, আমি এই বনবাস উদ্যাপন করছি না। হাওয়া-বাতাসের অর্কেস্ট্রায় এই মর্মর কম্পোজিশন আমার ভালো লাগছে না। আমি জানি, এক দিগ্বালিকা বড় হচ্ছে ঘরের মধ্যে, রাতে; বাইরে বসন্তপূর্ণিমা, বাইরে অঙ্গার বৈরাগীর গান—'পাতা-টাতা নাই বনে, ভালোবাসি তোমারে, হরিণেরা কি জানে, ভালোবাসি তোমারে...?' ঘরের মধ্যে বড় হচ্ছে বালিকা, বালিকারা বড় হচ্ছে কার জন্যে—এই প্রশ্ন কোনো প্রশ্নই হয়ে উঠত না, যদি, আমাদের কবিতার চেয়ে করে আসা লোকাচার, ধর্মাচার, তদীয় গ্রন্থাচার বড় না হতো! আমি জানি এক দিগ্বালিকা বড় হচ্ছে ঘোরের মধ্যে, ঘরে, জনপদে। সে বালিকা জানে তার ভালোবাসা সেই ডালিম, ধীরে ধীরে বড় হয়, লুব্ধক প্রেমিকের হাতে পড়লেই পাকা ডালিমটা ফেটে যায়, পাকা ডালিম ফাটা ডালিম ভেতরটা দেখিয়ে দেয়। আমি সেই ফলের রসময়ী দানাগুচ্ছ থেকে বহুদূরে এক স্বর্ণমৃগয়ার খপ্পরে পড়ে এই বনভূমির মধ্যে_আজ আর এই গ্রিন অভিবাস পছন্দ করছি না।

যদিও কোকিল ডাকছে, এতে পরিস্থিতির আরো অবনতি হচ্ছে, স্বাভাবিকতার পতন ঘটছে। এ সময় কবিতা লিখতে ইচ্ছে করে, এ সময় উত্তরের হাওয়া আসে গুপ্তচর হয়ে, দক্ষিণের বারান্দায় ওঁত্ পেতে বসে থাকে আততায়ী ঘ্রাণ, চন্দ্রমল্লিকার। মনে হয়, শিহরণ শব্দের অর্থ বুঝতেই দিগ্বালিকা আজ আর স্কুলে যাবে না, কিন্তু স্কুলে যাবার নাম করে সে ঠিকই বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়বে।

অামি শিহরণগুচ্ছ লিখতে বসব, তোমার শরীরে। পাঠক অপেক্ষায় অাছে।



কালের খেয়া, সমকাল ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫
রচনাঃ ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:২৬

ইরিবাসের রাত বলেছেন: কালের খেয়ায় একবার পড়ে মন কেমন করেছিল-এখানে আবার পড়ে আবার উদাস হয়ে গেলাম। কেমন যেন অস্তিত্বহীন নষ্টালজিয়া অবাক এসে ভীড় জমাল আজন্ম শহরবাসী এই মনে।
জয়তু টোকন ঠাকুর।

২| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৩৮

টোকন ঠাকুর বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:১২

বদিউজ্জামান মিলন বলেছেন: টোকন দা, আমি মিলন। আমাকে কি চিনতে পারছেন? আপনার লেখা আমার সব সময়ই ভালো লাগে। যেখানেই পাই বলতে পারেন গো গ্রাসে গিলি। এই লেখাটাও অসাধারণ। আমি এমন লেখা পড়ে আনন্দ পেয়েছি শুধু আরেকজনের লেখায়..বিভূতিভূষণ । আরণ্যক। আপনার লেখা আমাকে টানে ঠিক বিভূতির মতোই। আপনি যে মধুপুর এর কথা বলেছেন আমার বাড়ি সেখানটা পেরিয়ে যেতে হয়। হাবিবপুর। আমার দিপু ভাইকে কি আপনার মনে পড়ে ? রাজশাহী বিশ্ব বিদ্যালয়ে পড়ত। বাড়ি তে বেড়াতে এসে ইলেকট্রিক শক খেয়ে মারা গেল। এই সেপ্টেম্বর মাসেই। দিপু ভাইয়ের সঙ্গে আপনার কেমন সম্পর্ক ছিল জানি না। ফেসবুকে আপনার সঙ্গে আমার ফ্রেন্ড লিস্ট আছে কিনা জানি না। না থাকলে রিকোয়েস্ট পাঠালে একসেপ্ট করবেন। ভালো থাকবেন।

৪| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ২:৫৯

টোকন ঠাকুর বলেছেন: মিলন, দিপুকে ভুলিনি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.