![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গলির মোড়ে রাস্তায় যে পাগল ছবি অাঁকে, অামি তার নামও জানি না। কিন্তু তাকে মাঝেমধ্যেই দেখি, অাবার দেখি না। কোন অঞ্চলের মানুষ সে? পাগল কি মানুষ? কারোর সঙ্গেই কথা বলে না, সে কারোর প্রশ্নেরই উত্তর দেয় না। কেউ পাউরুটি-কলা কিনে দিলে খায়, অাবার কেউ দিলে খায় না। কতকাল চুলদাঁড়ি না কাটানো পাগলের প্রৌঢ় মুখখানাও ঠিকঠাক দেখা যায় না, কারণ, সে ছবি অাঁকে রাস্তায়। রাস্তার দিকেই উবু হয়ে থাকে পাগলের চোখমুখ, ভাঙা ইটের টুকরো দিয়ে ঘষে ঘষে পাগল ছবি এঁকে চলে রাস্তার কালো পিচের ওপর। পাগলের ড্রইং সেন্স মারাত্মক, কয়দিন অাগে দেখি রাস্তায় ইটের টুকরো ঘষে সে এক হাতি এঁকে নিজে সেই হাতির ওপর বসে অাছে। লোকজন গোল হয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে এক অচেনা পাগলকে। পাগল হাতি এঁকে বসে অাছে, পাগল বাঘ এঁকে বসে অাছে লেজের ওপর। ওই যে বললাম, পাগলের ড্রইং সেন্স ভালো, কয়েকমাস অাগে, দেশে অনেকদিন বৃষ্টি না হওয়ার হাহাকার ছড়িয়ে ছিল। শহর পুড়ছিল খরায়। সেসময়ই একদিন দেখি, পাগল রাস্তায় ইটের টুকরো ঘষে মেঘ এঁকে এঁকে যাচ্ছে, পাগল একমনে রাস্তায় দিনেরবেলায় চাঁদ এঁকে রাখছে। তারপর হঠাৎ পাগল কদিন উধাও, কেউ কি জানে পাগল কোথায় গেছে? পাগল কী হারিয়েছে!
অামি জানি পাগল সম্বন্ধে অত মাথা ব্যথা অামাদের কারোরই নেই, অামারও নেই। অামরা তো অার পাগল না, তাই 'পাগল' সংখ্যা লিটল ম্যাগাজিন কারা করে, অামরা জানি না। 'প্রেম' কবিতায় রণজিৎ দাশ পাড়ার মোড়ের যে পাগলের কথা অামাদের বলেছেন, যার নাম পাগলা হরেন, যে পাগল দুপুরে ঘূর্ণির মধ্যে উড়ে যাওয়া একটি কাগজের টুকরো ধরতে চায়, যে কাগজে লেখা অাছে একটি নাম, মালতী বসু--এর কোনো কিছু নিয়েই অামাদের চিন্তা নেই। কারণ, অামরা পাগল না, অামরা ভালো, অামরা বাংলা সংষ্কৃতি বহে নিয়ে যাওয়ার কুলি। অামরা কবিতা ভালোবাসি, অামরা গানের সঙ্গে দুলি। মানুষ হিসেবে অামরা অানন্দ-উৎসব পছন্দ করি। এরকমই, তারপরও, বাইশে শ্রাবণে প্রচুর মেঘ হয় টেলিভিশনে, লেন্সের সামনে। পাগল মেঘও এঁকে রাখে, রাস্তায়।
সেরকমই, অাজ ছিল পহেলা ফাগুন। বসন্ত অাসিল রে। মেয়েরা কী সাজুগুজু করে পুষ্পপল্লবে বইমেলায় যাচ্ছে বাসা থেকে সকালবেলায় বেরুনোর সময় দেখি, রাস্তার মোড়ে সেই পাগল। অার্টিস্ট পাগল। কাছে গিয়ে দেখি, প্রৌঢ় পাগল রাস্তায় এঁকেছে এক শাড়িপরা কিশোরী মেয়েকে, অাঁকা-কিশোরীর পাশেই বসে অাছে অার সত্যি সত্যি কয়েকটি ফুল-পাতা এনে সে রাস্তায় অঙ্কিত কিশোরীর মাথার চূলের ওপর রেখে পাগল একটু একটু লজ্জ্বাও পাচ্ছে। মজা লাগল, দেখলাম, হঠাৎ সে শুয়ে পড়ল তার অাঁকা মেয়েটির পাশে। ফলে, অামিও সরে পড়লাম...
২| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:০২
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: শুয়ে পড়লে কেউ কেটে পড়াই উচিৎ
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ২:০৪
মহা সমন্বয় বলেছেন: হা হা পাগলের কান্ড শুনে ভাল লাগল।
আসলে আমরা সবাই পাগল।