নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তন্দ্রাবিলাসে আপনাদের স্বাগতম

তন্দ্রা বিলাস

আমি একজন কৃষকের ছেলে, এই হাতে হাল চালাই, এই হাতেই কলম চালাই আবার এই হাতেই কীবোর্ড চালাই। সবকিছুই করার প্রচেষ্টা আমার মধ্যে রয়েছে।

তন্দ্রা বিলাস › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রথম শ্রেণী হতে মাধ্যমিক পর্যন্ত পাঠ্য সকল ছড়া ও কবিতার সংকলন। (দ্বিতীয় পর্ব)

১৩ ই নভেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৩৯

প্রথম পর্ব

তৃতীয় পর্ব

চতুর্থ পর্ব

আসুন আজ আর একবারের মতো শৈশব থেকে একটু ঘুরে আসি। কত মজা করেই না আমরা ছোট বেলা ছড়া পড়তাম। কোথাও বেড়াতে গেলে বা বাড়িতে মেহমান আসলে আম্মু সবসময় বলত ‘একটা ছড়া শোনাও তো’। আমি প্রথম শ্রেণী হতে মাধ্যমিক পর্যন্ত পাঠ্য সকল ছড়া ও কবিতা সংকলন করার একটা ছোট চেষ্টা করেছি। প্রথম পর্বে আপনাদের ভালো সাড়া পেয়ে আজ দ্বিতীয় পর্ব প্রকাশ করছি। আজকের কবিতা গুলি আমার খুবই পছন্দের আশা করি আপনাদেরও ভালো লাগবে। আজ তৃতীয় শ্রেণীর পাঠ্য বইয়ের সকল ছড়া ও কবিতা সমূহ তুলে ধরেছি।



১। প্রার্থনা

সুফিয়া কামাল



তুলি দুই হাত করি মোনাজাত

হে রহিম রাহমান

কত সুন্দর করিয়া ধরণী

মোদের করেছ দান,

গাছে ফুল ফল

নদী ভরা জল

পাখির কণ্ঠে গান

সকলি তোমার দান।

মাতা, পিত, ভাই, বোন ও স্বজন

সব মানুষেরা সবাই আপন

কত মমতায় মধুর করিয়া

ভরিয়া দিয়াছ প্রাণ।

তাই যেন মোরা তোমারে না ভুলি

সরল সহজ সৎ পথে চলি

কত ভাল তুমি, কত ভালোবাস

গেয়ে যাই এই গান।





২। মাঝি

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর



আমার যেতে ইচ্ছে করে

নদীটির ওই পারে

যেথায় ধারে ধারে

বাঁশের খোঁটায় ডিঙি নৌকো

বাঁধা সারে সারে।

কৃষাণেরা পার হয়ে যায়

লাঙল কাঁধে ফেলে,

জাল টেনে নেয় জেলে,

গরু মহিষ সাঁতরে নিয়ে

যায় রাখাল ছেলে।

সন্ধ্যে হলে যেখান থেকে

সবাই ফেরে ঘরে,

শুধু রাত দুপুরে

শেয়ালগুলো দেকে উঠে

ঝাও ডাঙাটার পরে

মা, যদি হও রাজি,

বড় হলে আমি হব

খেয়াঘাটের মাঝি।





৩। বৃষ্টির ছড়া

ফররুখ আহমদ



বিষ্‌টি এল কাশ বনে

জাগল সাড়া ঘাস বনে,

বকের সারি কোথা রে

লুকিয়ে গেল বাঁশ বনে।



নদীতে নাই খেয়া যে,

ডাকল দূরে দেয়া যে,

কোন সে বনের আড়ালে

ফুটল আবার কেয়া যে।



গাঁয়ের নামটি হাটখোলা,

বিষ্‌টি বাদল দেয় দোলা,

রাখাল ছেলে মেঘ দেখে,

যায় দাঁড়িয়ে পথ-ভোলা।



মেঘের আঁধার মন টানে,

যায় সে ছুটে কোন খানে,

আউস ধানের মাঠ ছেড়ে

আমন ধানের দেশ পানে।





৪। মুক্তিসেনা

সুকুমার বড়ুয়া



ধন্য সবায় ধন্য

অস্ত্র ধরে যুদ্ধ করে

মাতৃভূমির জন্য।



ধরল যারা জীবন বাজি

হলেন তারা শহীদ গাজি

লোভের টানে হয়নি যারা

ভিনদেশীদের পণ্য।



দেশের তরে ঝাঁপিয়ে পড়ে

শক্ত হাতে ঘায়েল করে

সব হানাদার সৈন্য

ধন্য ওরায় ধন্য।



এক হয়ে সব শ্রমিক কিষাণ

ওড়ায় যাদের বিজয় নিশান

ইতিহাসের সোনার পাতায়

ওরায় আগে গণ্য।



৫। স্বাধীনতার সুখ

রজনীকান্ত সেন



বাবুই পাখিরে ডাকি, বলিছে চড়ায়,

“কুঁড়ো ঘরে থাকি কর শিল্পের বড়ায়,

আমি থাকি মহাসুখে আট্টলিকা পরে

তুমি কত কষ্ট পাও রোধ, বৃষ্টির, ঝড়ে।”



বাবুই হাসিয়া কহে, “সন্দেহ কি তাই?

কষ্ট পাই, তবু থাকি নিজের বাসায়।

পাকা হোক, তবু ভাই, পরের ও বাসা,

নিজ হাতে গড়া মোর কাঁচা ঘর, খাসা।”



৬। চল্‌ চল্‌ চল্‌

কাজী নজরুল ইসলাম



চল্‌ চল্‌ চল্‌

ঊর্ধ্ব গগনে বাজে মাদল

নিম্নে উতলা ধরণীতল

অরুণ প্রাতের তরুণ দল

চল্‌রে চল্‌রে চল্‌।।



ঊষার দুয়ারে হানি আঘাত

আমরা আনিব রাঙা প্রভাত

আমরা টুটাব তিমির রাত,

বাধার বিন্ধ্যাচল।



নব জীবনের গাহিয়া গান

সজীব করিব মহাশ্মশান

আমরা দানিব নতুন প্রাণ

বাহুতে নবীন বল।

[আমি যখন ক্লাস থ্রিতে ছিলাম তখন এই কবিতার বিশেষ লাইন নিয়ে আমাকে ক্ষেপানো হতো]





৭। বাংলা ভাষা

অতুলপ্রসাদ সেন



মোদের গরব, মোদের আশা,

আ মরি বাংলা ভাষা!

তোমার কোলে,

তোমার বোলে,

কতই শান্তি ভালোবাসা!



কী যাদু বাংলা গানে!

গান গেয়ে দাঁড় মাঝি টানে,

গেয়ে গান নাচে বাউল,

গান গেয়ে ধান কাটে চাষা।

মোদের গরব, মোদের আশা,

আ মরি বাংলা ভাষা!





৮। আদর্শ ছেলে

কুসুমকুমারী দাশ



আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে

কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে?

মুখে হাসি বুকে বল, তেজে ভরা মন

‘মানুষ হইতে হবে’ –এই যার পণ।

বিপদ আসিলে কাছে হও আগুয়ান

নাই কি শরীরে তব রক্ত, মাংশ, প্রাণ?

হাত পা সবারই আছে, মিছে কেন ভয়?

চেতনা রয়েছে যার, সে কি পড়ে রয়?

সে ছেলে কে চাই বল, কথায় কথায়

আসে যার চোখে জল, মাথা ঘুরে যায়?

মনে প্রাণে খাটে সবে, শক্তি কর দান,

তোমরা ‘মানুষ’ হলে দেশের কল্যাণ।





৯। আমাদের গ্রাম

বন্দে আলী মিয়া



আমাদের ছোট গাঁয়ে ছোট ছোট ঘর,

থাকি সেথা সবে মিলে নাহি কেহ পর।

পাড়ার সকল ছেলে মোরা ভাই ভাই,

এক সাথে খেলি আর পাঠশালে যাই।

আমাদের ছোট গ্রাম মায়ের সমান,

আলো দিয়ে, বায়ু দিয়ে বাঁচাইছে প্রাণ।

মাঠ ভরা ধান তার জল ভরা দিঘি,

চাঁদের কিরণ লেগে করে ঝিকিমিকি।

আম গাছ, জাম গাছ, বাঁশ ঝাড় যেন,

মিলে মিশে আছে ওরা আত্মীয় হেন।

সকালে সোনার রবি পুব দিকে উঠে,

পাখি ডাকে, বায়ু বয়, নানা ফুল ফুটে।





৯। রাখাল ছেলে

জসীমউদ্‌দীন



রাখাল ছেলে ! রাখাল ছেলে ! বারেক ফিরে চাও,

বাঁকা গাঁয়ের পথটি বেয়ে কোথায় চলে যাও?



ওই যে দেখ নীল-নোয়ানো সবুজ ঘেরা গাঁ,

কলার পাতা দোলায় চামর শিশির ধোয়া পা,

সেথায় আছে ছোট্ট কুটির সোনার পাতা ছাওয়া,

সাঁজ আকাশে ছড়িয়ে পড়া আবীর রঙে নাওয়া,

সেই ঘরেতে একলা বসে ডাকছে আমার মা।

সেথায় যাব, ও ভাই, এবার আমায় ছাড় না।



রাখাল ছেলে ! রাখাল ছেলে ! আবার কোথায় যাও,

পুব আকাশে ছাড়ল সবে রঙিন মেঘের নাও।

ঘুম হতে আজ জেগেই দেখি শিশির ঝরা ঘাসে,

সারা রাতের স্বপন আমার মিঠেল রোদে হাসে।

আমার সাথে করতে খেলা প্রভাত হাওয়া, ভাই,

সরষে ফুলের পাঁপড়ি নাড়ি ডাকছে মোরে তাই।

সারা মাঠের ডাক এসেছে খেলতে হবে ভাই,

সাঁজের বেলা কইব কথা এখন তবে যাই।





১০। রুপকথা

আহসান হাবীব



খেলাঘর পাতা আছে এই এখানে,

স্বপ্নের ঝিকিমিকি আঁকা যেখানে।

এখানে রাতের ছায়া ঘুমের নগর,

চোখের পাতায় ঘুম ঝরে ঝরঝর।

এই খানে খেলাঘর পাতা আমাদের,

আকাশের নীল রং ছাউনিতে এর।

পরীদের ডানা দিয়ে তৈরি দেয়াল,

প্রজাপতি রং মাখা জানালার জাল।

তারা ঝিকিমিকি পথ ঘুমের দেশের,

এই খানে খেলাঘর পাতা আমাদের।

ছোট বোন পারুলের হাতে রেখে হাত,

সাত ভাই চম্পার কেটে যায় রাত।

কখনও ঘোড়ায় চড়ে হাতে নিয়ে তীর,

ঘুরে আসি সেই দেশ চম্পাবতীর।

এই খানে আমাদের মানা কিছু নাই,

নিজেদের খুশি মত কাহিনী বানাই।



১১। ভর দুপুরে

আল মাহমুদ



মেঘনা নদীর শান্ত মেয়ে তিতাসে

মেঘের মতো পাল উড়িয়ে কী ভাসে।

মাছের মতো দেখতে এ কোন পাটুনী

ভর দুপুরে খাটছে সখের খাটুনি।

ওমা এ-যে কাজল বিলের বোয়ালে

পালের দড়ি আতকে রেখে চোয়ালে

আসছে ধেয়ে লম্বা দাড়ি নাড়িয়ে,

ঢেউয়ের বাড়ি নাওয়ের সারি ছাড়িয়ে।



কোথায় যাবে কোন উজানে ও-মাঝি

আমার কোলে খোকন নামের যে পাজি

হাসছে, তারে নাও না তোমার নায়েতে

গাঙ, শুশুকের স্বপ্নভরা গাঁয়েতে;

সেথায় নাকি শালুক পাতার চাদরে

জলপিপিরা ঘুমায় মহা আদরে,

শাপলা ফুলের শীতল সবুজ পালিশে

থাকবে খোকন ঘুমিয়ে ফুলের বালিশে।

[এটা সম্প্রতি সংযোজিত]













উৎসর্গঃ- সুফিয়া কামাল, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ফররুখ আহমদ, সুকুমার বড়ুয়া, রজনীকান্ত সেন, কাজী নজরুল ইসলাম, অতুলপ্রসাদ সেন, কুসুমকুমারী দাশ, বন্দে আলী মিয়া, জসীমউদ্‌দীন, আহসান হাবীব, আল মাহমুদ।



প্রথম পর্ব



©আহমেদ সজীব আমান।

লেখকের আনুমতি ছাড়া এই পোস্টটা কপি পেস্ট করে কোথাও প্রকাশ করা নিষেধ ।









আসুন আজ আর একবারের মতো শৈশব থেকে একটু ঘুরে আসি। কত মজা করেই না আমরা ছোট বেলা ছড়া পড়তাম। কোথাও বেড়াতে গেলে বা বাড়িতে মেহমান আসলে আম্মু সবসময় বলত ‘একটা ছড়া শোনাও তো’। আমি প্রথম শ্রেণী হতে মাধ্যমিক পর্যন্ত পাঠ্য সকল ছড়া ও কবিতা সংকলন করার একটা ছোট চেষ্টা করেছি। প্রথম পর্বে আপনাদের ভালো সাড়া পেয়ে আজ দ্বিতীয় পর্ব প্রকাশ করছি। আজকের কবিতা গুলি আমার খুবই পছন্দের আশা করি আপনাদেরও ভালো লাগবে। আজ তৃতীয় শ্রেণীর পাঠ্য বইয়ের সকল ছড়া ও কবিতা সমূহ তুলে ধরেছি।



১। প্রার্থনা

সুফিয়া কামাল



তুলি দুই হাত করি মোনাজাত

হে রহিম রাহমান

কত সুন্দর করিয়া ধরণী

মোদের করেছ দান,

গাছে ফুল ফল

নদী ভরা জল

পাখির কণ্ঠে গান

সকলি তোমার দান।

মাতা, পিত, ভাই, বোন ও স্বজন

সব মানুষেরা সবাই আপন

কত মমতায় মধুর করিয়া

ভরিয়া দিয়াছ প্রাণ।

তাই যেন মোরা তোমারে না ভুলি

সরল সহজ সৎ পথে চলি

কত ভাল তুমি, কত ভালোবাস

গেয়ে যাই এই গান।





২। মাঝি

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর



আমার যেতে ইচ্ছে করে

নদীটির ওই পারে

যেথায় ধারে ধারে

বাঁশের খোঁটায় ডিঙি নৌকো

বাঁধা সারে সারে।

কৃষাণেরা পার হয়ে যায়

লাঙল কাঁধে ফেলে,

জাল টেনে নেয় জেলে,

গরু মহিষ সাঁতরে নিয়ে

যায় রাখাল ছেলে।

সন্ধ্যে হলে যেখান থেকে

সবাই ফেরে ঘরে,

শুধু রাত দুপুরে

শেয়ালগুলো দেকে উঠে

ঝাও ডাঙাটার পরে

মা, যদি হও রাজি,

বড় হলে আমি হব

খেয়াঘাটের মাঝি।





৩। বৃষ্টির ছড়া

ফররুখ আহমদ



বিষ্‌টি এল কাশ বনে

জাগল সাড়া ঘাস বনে,

বকের সারি কোথা রে

লুকিয়ে গেল বাঁশ বনে।



নদীতে নাই খেয়া যে,

ডাকল দূরে দেয়া যে,

কোন সে বনের আড়ালে

ফুটল আবার কেয়া যে।



গাঁয়ের নামটি হাটখোলা,

বিষ্‌টি বাদল দেয় দোলা,

রাখাল ছেলে মেঘ দেখে,

যায় দাঁড়িয়ে পথ-ভোলা।



মেঘের আঁধার মন টানে,

যায় সে ছুটে কোন খানে,

আউস ধানের মাঠ ছেড়ে

আমন ধানের দেশ পানে।





৪। মুক্তিসেনা

সুকুমার বড়ুয়া



ধন্য সবায় ধন্য

অস্ত্র ধরে যুদ্ধ করে

মাতৃভূমির জন্য।



ধরল যারা জীবন বাজি

হলেন তারা শহীদ গাজি

লোভের টানে হয়নি যারা

ভিনদেশীদের পণ্য।



দেশের তরে ঝাঁপিয়ে পড়ে

শক্ত হাতে ঘায়েল করে

সব হানাদার সৈন্য

ধন্য ওরায় ধন্য।



এক হয়ে সব শ্রমিক কিষাণ

ওড়ায় যাদের বিজয় নিশান

ইতিহাসের সোনার পাতায়

ওরায় আগে গণ্য।



৫। স্বাধীনতার সুখ

রজনীকান্ত সেন



বাবুই পাখিরে ডাকি, বলিছে চড়ায়,

“কুঁড়ো ঘরে থাকি কর শিল্পের বড়ায়,

আমি থাকি মহাসুখে আট্টলিকা পরে

তুমি কত কষ্ট পাও রোধ, বৃষ্টির, ঝড়ে।”



বাবুই হাসিয়া কহে, “সন্দেহ কি তাই?

কষ্ট পাই, তবু থাকি নিজের বাসায়।

পাকা হোক, তবু ভাই, পরের ও বাসা,

নিজ হাতে গড়া মোর কাঁচা ঘর, খাসা।”



৬। চল্‌ চল্‌ চল্‌

কাজী নজরুল ইসলাম



চল্‌ চল্‌ চল্‌

ঊর্ধ্ব গগনে বাজে মাদল

নিম্নে উতলা ধরণীতল

অরুণ প্রাতের তরুণ দল

চল্‌রে চল্‌রে চল্‌।।



ঊষার দুয়ারে হানি আঘাত

আমরা আনিব রাঙা প্রভাত

আমরা টুটাব তিমির রাত,

বাধার বিন্ধ্যাচল।



নব জীবনের গাহিয়া গান

সজীব করিব মহাশ্মশান

আমরা দানিব নতুন প্রাণ

বাহুতে নবীন বল।

[আমি যখন ক্লাস থ্রিতে ছিলাম তখন এই কবিতার বিশেষ লাইন নিয়ে আমাকে ক্ষেপানো হতো]





৭। বাংলা ভাষা

অতুলপ্রসাদ সেন



মোদের গরব, মোদের আশা,

আ মরি বাংলা ভাষা!

তোমার কোলে,

তোমার বোলে,

কতই শান্তি ভালোবাসা!



কী যাদু বাংলা গানে!

গান গেয়ে দাঁড় মাঝি টানে,

গেয়ে গান নাচে বাউল,

গান গেয়ে ধান কাটে চাষা।

মোদের গরব, মোদের আশা,

আ মরি বাংলা ভাষা!





৮। আদর্শ ছেলে

কুসুমকুমারী দাশ



আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে

কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে?

মুখে হাসি বুকে বল, তেজে ভরা মন

‘মানুষ হইতে হবে’ –এই যার পণ।

বিপদ আসিলে কাছে হও আগুয়ান

নাই কি শরীরে তব রক্ত, মাংশ, প্রাণ?

হাত পা সবারই আছে, মিছে কেন ভয়?

চেতনা রয়েছে যার, সে কি পড়ে রয়?

সে ছেলে কে চাই বল, কথায় কথায়

আসে যার চোখে জল, মাথা ঘুরে যায়?

মনে প্রাণে খাটে সবে, শক্তি কর দান,

তোমরা ‘মানুষ’ হলে দেশের কল্যাণ।





৯। আমাদের গ্রাম

বন্দে আলী মিয়া



আমাদের ছোট গাঁয়ে ছোট ছোট ঘর,

থাকি সেথা সবে মিলে নাহি কেহ পর।

পাড়ার সকল ছেলে মোরা ভাই ভাই,

এক সাথে খেলি আর পাঠশালে যাই।

আমাদের ছোট গ্রাম মায়ের সমান,

আলো দিয়ে, বায়ু দিয়ে বাঁচাইছে প্রাণ।

মাঠ ভরা ধান তার জল ভরা দিঘি,

চাঁদের কিরণ লেগে করে ঝিকিমিকি।

আম গাছ, জাম গাছ, বাঁশ ঝাড় যেন,

মিলে মিশে আছে ওরা আত্মীয় হেন।

সকালে সোনার রবি পুব দিকে উঠে,

পাখি ডাকে, বায়ু বয়, নানা ফুল ফুটে।





৯। রাখাল ছেলে

জসীমউদ্‌দীন



রাখাল ছেলে ! রাখাল ছেলে ! বারেক ফিরে চাও,

বাঁকা গাঁয়ের পথটি বেয়ে কোথায় চলে যাও?



ওই যে দেখ নীল-নোয়ানো সবুজ ঘেরা গাঁ,

কলার পাতা দোলায় চামর শিশির ধোয়া পা,

সেথায় আছে ছোট্ট কুটির সোনার পাতা ছাওয়া,

সাঁজ আকাশে ছড়িয়ে পড়া আবীর রঙে নাওয়া,

সেই ঘরেতে একলা বসে ডাকছে আমার মা।

সেথায় যাব, ও ভাই, এবার আমায় ছাড় না।



রাখাল ছেলে ! রাখাল ছেলে ! আবার কোথায় যাও,

পুব আকাশে ছাড়ল সবে রঙিন মেঘের নাও।

ঘুম হতে আজ জেগেই দেখি শিশির ঝরা ঘাসে,

সারা রাতের স্বপন আমার মিঠেল রোদে হাসে।

আমার সাথে করতে খেলা প্রভাত হাওয়া, ভাই,

সরষে ফুলের পাঁপড়ি নাড়ি ডাকছে মোরে তাই।

সারা মাঠের ডাক এসেছে খেলতে হবে ভাই,

সাঁজের বেলা কইব কথা এখন তবে যাই।





১০। রুপকথা

আহসান হাবীব



খেলাঘর পাতা আছে এই এখানে,

স্বপ্নের ঝিকিমিকি আঁকা যেখানে।

এখানে রাতের ছায়া ঘুমের নগর,

চোখের পাতায় ঘুম ঝরে ঝরঝর।

এই খানে খেলাঘর পাতা আমাদের,

আকাশের নীল রং ছাউনিতে এর।

পরীদের ডানা দিয়ে তৈরি দেয়াল,

প্রজাপতি রং মাখা জানালার জাল।

তারা ঝিকিমিকি পথ ঘুমের দেশের,

এই খানে খেলাঘর পাতা আমাদের।

ছোট বোন পারুলের হাতে রেখে হাত,

সাত ভাই চম্পার কেটে যায় রাত।

কখনও ঘোড়ায় চড়ে হাতে নিয়ে তীর,

ঘুরে আসি সেই দেশ চম্পাবতীর।

এই খানে আমাদের মানা কিছু নাই,

নিজেদের খুশি মত কাহিনী বানাই।



১১। ভর দুপুরে

আল মাহমুদ



মেঘনা নদীর শান্ত মেয়ে তিতাসে

মেঘের মতো পাল উড়িয়ে কী ভাসে।

মাছের মতো দেখতে এ কোন পাটুনী

ভর দুপুরে খাটছে সখের খাটুনি।

ওমা এ-যে কাজল বিলের বোয়ালে

পালের দড়ি আতকে রেখে চোয়ালে

আসছে ধেয়ে লম্বা দাড়ি নাড়িয়ে,

ঢেউয়ের বাড়ি নাওয়ের সারি ছাড়িয়ে।



কোথায় যাবে কোন উজানে ও-মাঝি

আমার কোলে খোকন নামের যে পাজি

হাসছে, তারে নাও না তোমার নায়েতে

গাঙ, শুশুকের স্বপ্নভরা গাঁয়েতে;

সেথায় নাকি শালুক পাতার চাদরে

জলপিপিরা ঘুমায় মহা আদরে,

শাপলা ফুলের শীতল সবুজ পালিশে

থাকবে খোকন ঘুমিয়ে ফুলের বালিশে।

[এটা সম্প্রতি সংযোজিত]













উৎসর্গঃ- সুফিয়া কামাল, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ফররুখ আহমদ, সুকুমার বড়ুয়া, রজনীকান্ত সেন, কাজী নজরুল ইসলাম, অতুলপ্রসাদ সেন, কুসুমকুমারী দাশ, বন্দে আলী মিয়া, জসীমউদ্‌দীন, আহসান হাবীব, আল মাহমুদ।



প্রথম পর্ব



©আহমেদ সজীব আমান।

লেখকের আনুমতি ছাড়া এই পোস্টটা কপি পেস্ট করে কোথাও প্রকাশ করা নিষেধ ।









মন্তব্য ৩৭ টি রেটিং +১১/-০

মন্তব্য (৩৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৪৫

আমি বাঁধনহারা বলেছেন:
শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ভাই!

ভালো লাগল++++

১৩ ই নভেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৪৮

তন্দ্রা বিলাস বলেছেন: সাথে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

২| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৪৮

নাটক বলেছেন: ভাই, গতকাল অনুমতি পাইছেন এসবিতে?

১৩ ই নভেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৫১

তন্দ্রা বিলাস বলেছেন: কাল মেইল পাঠিয়েছি, আজ লগইন করিনি। এখন করব দেখি কি অবস্থা। ধন্যবাদ।

১৩ ই নভেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৫৮

তন্দ্রা বিলাস বলেছেন: ভাই আমাকে এসবি তে সেইফ করে দিয়েছে।

৩| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৫৯

নাটক বলেছেন: আচ্ছা!! এবার নিয়মিত ওখানেও লেখা চাই।

১৩ ই নভেম্বর, ২০১২ রাত ১০:০৩

তন্দ্রা বিলাস বলেছেন: ইনশাআল্লাহ্‌।

৪| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৫৯

নাটক বলেছেন: এই পোষ্টটা দিয়ে শুরু করতে পারেন।

৫| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১২ রাত ১০:৫৪

শহিদুল ইসলাম বলেছেন: বাহ ! পুরনো কবিতাগুলো আবার পড়া হলো

ভালো লাগা পোষ্টে

১৩ ই নভেম্বর, ২০১২ রাত ১১:০৩

তন্দ্রা বিলাস বলেছেন: সাথে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

৬| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১২ রাত ১১:২০

অজয় বলেছেন: শৈশবে ফিরিয়ে নিলেন ভাই

১৩ ই নভেম্বর, ২০১২ রাত ১১:৪১

তন্দ্রা বিলাস বলেছেন: হুমম মজা না। আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম।

৭| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১২ রাত ১:৫৬

মোস্তফা কামাল পলাশ বলেছেন: পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ । সেই সাথে পিলাচ সহ প্রিয়তে নিলাম।

১৪ ই নভেম্বর, ২০১২ সকাল ৮:৩৬

তন্দ্রা বিলাস বলেছেন: ধন্যবাদ, কিন্তু পিলাচ দিলেন কই?

৮| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১২ সকাল ৮:৪০

তন্দ্রা বিলাস বলেছেন: আজকের পোস্টটা সিলেক্টেড পেজে গেল না। :(( :(( :(( :(( :((

২৯ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১:৪৭

তন্দ্রা বিলাস বলেছেন: (: (: (:

৯| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১২ সকাল ১১:১৮

সবুজ মহান বলেছেন: আহসান হাবিবের''মনা রে মনা কোথায় যাস "
ও রুকুনুজ্জামান দাদা ভাইয়ের ''হাসতে নাকি জানে না কেউ , কে বলেছে ভাই ''
কবিতা দুইটাও চাই

১৫ ই নভেম্বর, ২০১২ দুপুর ১:২০

তন্দ্রা বিলাস বলেছেন: সামনে পাবেন ইনশাআল্লাহ্‌।

১০| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১২ দুপুর ২:১৪

মুরাদ আহমদ (আসাদ) বলেছেন: ভাল লাগলো.।.।.।.। ++++++




সজীব করিব মহাশ্মশান

১৫ ই নভেম্বর, ২০১২ দুপুর ১:২২

তন্দ্রা বিলাস বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই সাথে থাকার জন্য। এবং বিশেষ ধন্যবাদ বিশেষ লাইনটা ধরতে পাড়ার জন্য।

১১| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১২ বিকাল ৫:১৬

শাশ্বত স্বপন বলেছেন: হারিয়ে ছিলাম স্মৃতিতে.

অসংখ্য ধন্যবাদ । ভাল কাজ করেছেন।

১৫ ই নভেম্বর, ২০১২ দুপুর ১:২৫

তন্দ্রা বিলাস বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। আপনি চাইলে প্রথম পর্ব টাও দেখতে পারেন।

১২| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১২ ভোর ৬:১৪

মোস্তফা কামাল পলাশ বলেছেন: ভাইডি, ভুইলা গেছিলাম। যান এবার দিয়া গেলাম ৫ নম্বরটা

১৫ ই নভেম্বর, ২০১২ দুপুর ১:২৭

তন্দ্রা বিলাস বলেছেন: অনেক অনেক থ্যাঙ্কু।

১৩| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১২ দুপুর ১:৩১

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: খুব ভালো পোষ্ট। +

১৫ ই নভেম্বর, ২০১২ দুপুর ১:৪১

তন্দ্রা বিলাস বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

১৪| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১২ দুপুর ১:৫২

নরাধম বলেছেন: চমৎকার, প্রিয়তে।

১৫ ই নভেম্বর, ২০১২ বিকাল ৫:১৫

তন্দ্রা বিলাস বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। ভাল থাকবেন।

১৫| ২৩ শে নভেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:০৩

যাযাবরমন বলেছেন: লেখকের আনুমতি ছাড়া এই পোস্টটা কপি পেস্ট করে কোথাও প্রকাশ করা নিষেধ ।

এর কোনটাইতো আপনার লেখা না, তাহলে কপি পেস্ট করা যাবে না কেন?

২৪ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ৯:১৩

তন্দ্রা বিলাস বলেছেন: এতো কষ্ট করে টাইপ করে পোস্ট দিব আর অন্য কেও সেটা কয়েক সেকেন্ডে কপি করে পেস্ট করবে তা কি হয় বলেন? তবে লিঙ্ক দিলে বা অন্যের লেখা সেটা স্বীকার করলে কোন সমস্যা নাই।

১৬| ২৪ শে নভেম্বর, ২০১২ দুপুর ২:৩৭

ভোরের রোদ বলেছেন: দারুন। +++

২৪ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ৯:১৩

তন্দ্রা বিলাস বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভালো থাকবেন।

১৭| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৫৯

রাইহান খাইরুল্লাহ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
মাঝে মাঝে কাজে লাগে।
++++++++

২০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:০৬

তন্দ্রা বিলাস বলেছেন: :) :) :) :)

১৮| ২৭ শে মে, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৩

নীল_সুপ্ত বলেছেন: অনেক ভালোলাগা, প্রিয়তে অবশ্যই

২৮ শে মে, ২০১৩ রাত ৯:৫৮

তন্দ্রা বিলাস বলেছেন: আপনাদের ভাল লাগলেই তো আমার সার্থকতা। ধন্যবাদ।

১৯| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:৪৫

গেন্দু মিয়া বলেছেন: "লেখকের আনুমতি ছাড়া এই পোস্টটা কপি পেস্ট করে কোথাও প্রকাশ করা নিষেধ ।"

ছড়া/কবিতা গুলো কি নেয়া যাবে?

২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:৫৮

তন্দ্রা বিলাস বলেছেন: অবশ্যই?
এত কষ্ট করে টাইপ করে পোস্ট দেয়ার পর যদি কয়েকটা সাইটে হুবুহু দাঁড়ি কমা সহ এমনকি শিরোনাম সহ যদি এই পোস্ট দেখি তাহলে রাগ হবে না বলেন?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.