নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
উপন্যাস ‘‘অসমাপ্ত জবানবন্দী’’ ও ‘‘নিরু”, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস ‘‘মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ’’ ও ‘‘একাত্তরের অবুঝ বালক’’ এর লেখক। পেশায়-আইনজীবী। কর্মস্থল- হাইকোর্ট।www.facebook.com/mohammad.toriqueullah
ভারতে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপির 'জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট' বা -এনডিএ বিশাল জয় পাওয়ার বাংলাদেশের সাথে দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সম্পর্ক ও অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে কিছু জটিল অংক সামনে আসার কথা আমি মাস দুয়েক আগেই এক কলামে উল্লেখ করেছিলাম। বাংলাদেশের জন্য এটি (এনডিএ জোট পুনরায় সরকার গঠন) রীতিমতো অজানা আতঙ্ক বহন করে উল্লেখ করে বলেছিলাম, এর মূল কারণটা হলো এনডিএ'র প্রাক-নির্বাচনী ঘোষণা ও প্রচারাভিযানের অন্যতম উল্লেখযোগ্য বিষয় ছিল বাংলাদেশের কথিত অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করতে আসামের মতো পশ্চিমবঙ্গ ও অন্যান্য প্রদেশে এনআরসি করা হবে। আর অনাগরিক চিহ্নিতদের দেশছাড়া করা হবে। একই সাথে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে আগত অমুসলিম বা হিন্দুদের নাগরিকত্ব দেয়ার জন্য পুনরায় আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হবে। অর্থাৎ বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে ভারতে গমন করা হিন্দুদেরও নতুন হিসেবের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আসামের ন্যায় জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) প্রক্রিয়া নিয়ে ভারতে যেমন রাজনৈতিক উন্মাদনা সৃষ্টি হয়েছে তেমনি বাংলাদেশের জন্যও ভারতের সাথে দ্বিপাক্ষিক কূটনীতির(Bilateral Diplomacy)ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উদ্ভব হতে যাচ্ছে। কারণ উভয় দেশের পক্ষ থেকে কূটনীতির সম্পর্কের জায়গায় পারস্পরিকতার নীতি(Reciprocity)কেই সর্বদা স্বীকার করা হয়।
বিজেপির প্রভাবশালী সাধারণ সম্পাদক রাম মাধবের মতে, তাদের পরিকল্পনা হলো তিনটে ‘ডি’- ডিটেক্ট, ডিলিট ও ডিপোর্ট। প্রথম ধাপে অবৈধ বিদেশি কারা, তাদের শনাক্ত করা হবে (ডিটেক্ট) । এরপর ভোটার তালিকা থেকে তাদের নাম বাদ দেওয়া ও বিভিন্ন সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করার প্রক্রিয়া শুরু হবে (ডিলিট)। আর তারপর তাদের বাংলাদেশে ডিপোর্ট করা হবে। এবং আসামের পর এবার সারা ভারতেই এনআরসি প্রক্রিয়া চালু করা হবে।
পশ্চিমবঙ্গে এই ইস্যুতে বিজেপি সবচেয়ে বেশি প্রচারণা চালিয়েছে এবং তারা সফলতাও পেয়েছে। সেখানকার এক নির্বাচনী সভায় অমিত শাহ বলেছিলেন, ‘আমরা যদি ক্ষমতায় ফিরে আসি, তাহলে আমরা পশ্চিমবঙ্গে ও ভারতের বাকি সবখানে এনআরসি তৈরি করব। বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ অভিবাসীদের চিহ্নিত করে তাদের বহিষ্কার করার ব্যাপারে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ তিনি অবৈধ অভিবাসীদের ‘উইপোকা’ হিসেবেও সম্বোধন করেন।
এখন তারা ক্ষমতায় এসেছে। আর নব-গঠিত সরকারের প্রতিশ্রুতি মোতাবেক এনআরসি প্রক্রিয়া নিয়ে পুরো ভারতে শুরু হয়ে গেলে তা বাংলাদেশের জন্য শুধু বিব্রতকর নয় বরং বিপদজনক কিছু হয়ে যাবে। এমনিতে, বিনিয়োগ ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকারের বিদেশ নীতি চীন মুখী হয়ে পড়ছে মর্মে ভারতীয়দের অভিযোগ রয়েছে। বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ ও নিরঙ্কুশ প্রভাব মোদি সরকারের শেষ বছরের অন্যতম মাথা ব্যাথার কারণ ছিল। সে জায়গায় বিজেপির পুনরায় সরকার গঠন এবং এনআরসি প্রক্রিয়া নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে টানাপোড়নের কারণ হতে পারে।
মোদি’র বিজেপি ভারতে হিন্দুত্ববাদী জাতীয়তাবাদকে উসকে দিয়ে ক্ষমতার মসনদ ধরে রাখার প্রয়াস হিসাবে এটি একটি কৌশল হিসাবে নিয়েছেন ধরে নিলেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিষয়টিতে নিরব থাকার মধ্য দিয়ে কোন সুখবর বয়ে আনবে না। কারণ, এই ইস্যুর কারণে ভারতের পার্লামেন্ট নির্বাচনের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ইস্যু হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে বাংলাদেশ।
এরই মধ্যে গত ১৬ জুলাই ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার ২৭ ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহা বাংলাদেশে ৩ কোটি ৭০ লাখ হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান নিখোঁজ রয়েছেন (Disappearance) মর্মে যে তথ্য দিয়েছেন তার সাথে ভারতের জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) কার্যক্রমেরও সম্পর্ক থাকতে পারে। কারণ এই তথ্য একদিকে যেমন বাংলাদেশ থেকে ভারতে গমন করা হিন্দুদের হিসেব তুলে ধরার চেষ্টা চালানো হয়েছে অন্যদিকে এনআরসি কার্যক্রমের আওতায় যদি বাংলাদেশ থেকে গমন করা হিন্দুদের ক্ষেত্রেও মুসলিমদের ন্যায় একই সিদ্ধান্ত হয় তাহলে তাদের ফিরে আসার ক্ষেত্রে নতুন করে যাতে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে না হয় তারও পূর্বভাস দেওয়া হলো!
তবে হিসেবে যাই হোক , অসাম্প্রায়িকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত উপস্থাপনকারী বাংলাদেশের ভাবমূর্তি যাতে ক্ষুণ্ণ না হয় এবং সম্প্রীতি বিনষ্টের ষড়যন্ত্রের বিষয়ে সচেষ্ট থাকতে হবে।
২২ শে জুলাই, ২০১৯ রাত ৯:৫৪
এম টি উল্লাহ বলেছেন: ধন্যবাদ
২| ২২ শে জুলাই, ২০১৯ সকাল ৮:৪৬
রাজীব নুর বলেছেন: ইয়েস।
২২ শে জুলাই, ২০১৯ রাত ৯:৫৪
এম টি উল্লাহ বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে জুলাই, ২০১৯ রাত ১২:৩৪
জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: সহমত।