নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
উপন্যাস ‘‘অসমাপ্ত জবানবন্দী’’ ও ‘‘নিরু”, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস ‘‘মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ’’ ও ‘‘একাত্তরের অবুঝ বালক’’ এর লেখক। পেশায়-আইনজীবী। কর্মস্থল- হাইকোর্ট।www.facebook.com/mohammad.toriqueullah
প্রতি বছর ডিসি সম্মেলন কে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রের বিচার বিভাগ ও প্রশাসনের মধ্যে এক স্নায়ু যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। যদিও এ বার আর তা স্নায়ুর পর্যায়ে না থেকে সরাসরি সামাজিক গণমাধ্যমের ওয়ালে ওয়ালে দেখা গিয়েছে । একদিকে ডিসি সাহেবদের আবদার , অন্যদিকে স্বাধীন বিচার বিভাগের যুগে (কাগজে-কলমে!) এমন আবদার কতটা যুক্তিযুক্ত কিংবা আদৌ কোন প্রয়োজনীয়তা রয়েছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন ছুড়া হচ্ছে। কেউ কেউ স্বয়ং নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের মাধ্যমে ১০৪ টি আইনের আওতায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকে প্রশ্নের সম্মুখীন করছেন। উভয় পক্ষের স্ব-স্ব দাবি ও যুক্তির দিকে না তাকিয়ে একজন আম জনতা এবং আইনের দিনমজুর হিসাবে আমার মনে নানান প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে । নিঃসন্দেহে প্রশাসন ও বিচার বিভাগে নিয়োজিত কর্মকর্তাগণ জাতির শ্রেষ্ঠ মেধাবী সন্তান (কোটা ব্যাতিক্রম হতে পারে)। সে হিসেবে বিচারিক কার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে মেধার দিক থেকে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটগণকে অবজ্ঞার চোখে কিংবা তাদের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তোল অবান্তর।
তবে, দ্বন্দ্বের জায়গা ঠিক কোথায় তা জানার আছে দেখে নেওয়া যাক নির্বাহীদের দাবি কি নিয়ে। ডিসি সাহেবদের মূল চাওয়া হলো ফৌজদারি কার্যবিধির ২৫ ধারায় এক্স অফিসিও ‘জাস্টিস অফ দ্য পিস’ হিসেবে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা। এমনটা হলে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটরা (ডিসি) অপরাধ আমলে নেয়ার ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার পাশাপাশি মর্যাদাও নাকি আগের মতো ফিরে পাবেন। অর্থাৎ ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ তে ২০০৭ সালের সংশোধনীর আগ পর্যন্ত ওই কোডের ২৫ ধারা অনুসারে অন্যান্যের মধ্যে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটরাও এক্স অফিসিও ‘জাস্টিস অফ দ্য পিস’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন।কিন্তু ২০০৭ সালে বিচার বিভাগ পৃথক হওয়ার পর জেলা ম্যাজিস্ট্রেটদের ওই ক্ষমতা ও মর্যাদা রহিত করা হয়। বর্তমানে জেলা পর্যায়ে সেশন জজ, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটসহ অন্য জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটরা এ ক্ষমতা প্রয়োগ করেন। সহজে বললে যা দাঁড়ায় তা হলো, বর্তমানে ডিসি সাহেবেরা শুধুমাত্র প্রিভেনটিভ ক্ষমতা প্রয়োগ করেন আর পিউরলি জুডিশিয়াল ক্ষমতা নেই তাদের । তবে, ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯০ (৪) বিধান মতে সরকার চাইলে কোনো নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কোনো এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটকে অপরাধ আমলে নেয়ার ক্ষমতা দিতে পারেন। তাই এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণকারী হিসেবে ডিসিকে ‘জাস্টিস অফ দ্য পিস’ হিসেবে গণ্য থাকা জরুরি বলে মনে করছেন ডিসি সাহেবরা।
তাছাড়া জেলা ম্যাজিস্ট্রেসিতে কর্মরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের ক্ষমতা বাড়াতে ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮-এর ১৫৬ (আমলযোগ্য মামলার তদন্ত), ১৫৯ (তদন্ত বা প্রাথমিক অনুসন্ধান করার ক্ষমতা), ১৯০(১)(এ)(বি)(সি) (ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক অপরাধ আমলে নেওয়া তৎপরবর্তী কিছু ক্ষমতা), ১৯১ (আসামির আবেদনক্রমে মামলা হস্তান্তর), ১৯২(২) (প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক কোনো মামলা আমলে নেওয়া ও বিচারসংশ্লিষ্ট কিছু ক্ষমতা), ২০২ (পরোয়ানা দান স্থগিত রাখা) এবং ২৬০-২৬৫ (সংক্ষিপ্ত বিচারসংক্রান্ত বিভিন্ন ক্ষমতা) ধারায় ক্ষমতা প্রয়োগের এখতিয়ার চেয়েছেন। এ জন্য তারা ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধন করার মাধ্যমে এ ক্ষমতা পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন।
এখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে বিচার কার্যের জন্য রাষ্ট্রের আলাদা একটি স্বতন্ত্র বিভাগ থাকা সত্বেও নির্বাহীদের এসব ক্ষমতা থাকতে হবে কেন? জেল কোড অনুসারে কারাগারের ওপর সাধারণ নিয়ন্ত্রণ (কারাগার পরিদর্শন, বন্দিদের ডিভিশন প্রদান, বন্দিদের শারীরিক অবস্থা, চিকিৎসা, বন্দিদের বিভিন্ন আবেদন বিবেচনা ও অগ্রায়ন, সদাচরণের জন্য লঘু অপরাধের বন্দিদের মুক্তির বিষয়ে বিবেচনার জন্য সুপারিশ, কারা শৃঙ্খলা রক্ষা, মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করা), জেলা ট্রেজারিতে রাষ্ট্রের পক্ষে সব ধরনের স্ট্যাম্পস সংরক্ষণ ও বিতরণ এবং নিয়ন্ত্রণ, নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন সহ সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুষ্ঠু বাস্তবায়ন মনিটরিং,পাবলিক পরীক্ষা ব্যবস্থাপনার মত অতিরিক্ত দায়িত্বের সাথে প্রায় দুই শতাধিক কমিটিতে সভাপতির দায়িত্ব পালন করতে হয় ডিসিদের। এতো দায়িত্বের পরও কেন বিচারিক ক্ষমতার ভাগীদার হতে হবে নির্বাহীদের। আমাদের ভুললে চলবে না বিচারকি দায়িত্ব কোন ফ্যাশন নয়। মর্যাদার প্রশ্নে কিংবা রাষ্ট্রীয় প্রটোকলে যে রাষ্ট্রের অপরাপর ক্যাডারদের চেয়ে অগণিত সুযোগ সুবিধা নির্বাহীগণ পাচ্ছেন তা কেন ভাবছি না। একটা রাষ্ট্রের মাঠ প্রশাসনদের মত গুরু দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে প্রশংসার ভাগিদার যে নির্বাহীগণ হতে পারেন তা কম কিসের।
সবচেয়ে বড় বিষয় হলো ন্যায় বিচার নিশ্চিত করণের স্বার্থে নির্বাহী বিভাগের মাধ্যমে বিচারিক কাজ পরিচালনা করা বাস্তবিক অর্থে চ্যালেঞ্জের বিষয় নয় শুধু বরং অপ্রয়োজনীয়ও বটে। এখানে আবদারের কোন সুযোগ থাকা উচিত নয়। আর বিচার বিভাগের দায়িত্বশীলদের বিক্ষিপ্ত মন্তব্যের মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্ত না করে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে আনা উচিত। এখানে কারো কোন ভাব ধরার কিংবা যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার সু্যোগ নেই।বিচার বিভাগ ও প্রশাসন স্ব-স্ব দায়িত্বের তরে সচেষ্ট হলেই রাষ্ট্রের মঙ্গল। প্রতিযোগিতা, আবদার, স্নায়ুযুদ্ধ হোক রাষ্ট্রের তরে। রাষ্ট্রীয় সংকটকে পুঁজি করে দাবি আদায়ের প্রতিযোগিতায় নামাটা মোটেও সমীচীন নয়। ধন্যবাদ
এডভোকেট এম টি উল্যাহ
[email protected]
০১৮১৬ ৫৫৭ ৫৮৩
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১১:০৬
এম টি উল্লাহ বলেছেন: ধন্যবাদ
২| ২৩ শে জুলাই, ২০১৯ রাত ১১:১২
মোগল সম্রাট বলেছেন: আমলকী, জলপাই আর হরিবোল থুক্কা হরিতকি মিলে ত্রিফলা হয়। এখন দ্যাশের মানুষ ত্রিফলা খাইতেছে খালিপেটে ভরাপেটে সমানে মাগার কোস্টকাঠিন্য দুর হইতেছে না। কোতা কুতি করেই চলছে রিলিজ হচ্ছে না।
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১১:০৬
এম টি উল্লাহ বলেছেন: ধন্যবাদ
৩| ২৪ শে জুলাই, ২০১৯ সকাল ৯:২৭
রাজীব নুর বলেছেন: আমাদের দেশে কেউ কাউকে সহ্য করতে পারছে না।
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে জুলাই, ২০১৯ রাত ১০:১৪
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: আমি এক বার বিসিএস পরীক্ষার ভাইবা দিতে গিয়েছিলাম। আমাকে প্রশ্ন করা হলো, আপনি কি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা চান ? আমি জবাব দিলাম, জি স্যার , আমি চাই । তখন তিনি আমাকে প্রশ্ন করলেন, তাহলে আপনি ম্যাজিস্ট্রেট গুলিকে কি করবেন?
আমার তো আক্কেল গুড়ুম । আমি তখন ছিলাম এক জন বেকার যুবক । দেশের প্রধানমন্ত্রী না। ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে চিন্তা ভাবনা আমার থাকার কথা না।