নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব।

এম টি উল্লাহ

আমি এম টি উল্যাহ। আইনি উপন্যাস ‘‘অসমাপ্ত জবানবন্দী’’ ও ‘‘নিরু”, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই ‘‘মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ’’ ও ‘‘একাত্তরের অবুঝ বালক’’ এর লেখক। পেশায়-আইনজীবী।www.facebook.com/mohammad.toriqueullah , Email- [email protected]

এম টি উল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ডিও লেটার, সুবর্ণচর ও পৌরসভা বৃত্তান্ত!

২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:২৩

ডিও বা 'Demi-official letter' হলো আধ- সরকারি পত্র বা বে-সরকারীভাবে লিখিত পত্র। যা সরকারে উপরের মহলের বিশেষ করে উপদেষ্টা, মন্ত্রী, সাংসদ, সংসদীয় কমিটির সভাপতি কিংবা সমপর্যায়ের উর্ধবতন মানুষজন ইস্যু করে থাকেন সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতর/বিভাগে চাহিদা মোতাবেক।

এ ডিও নিয়ে আমাদের দেশে হাজারো কাহিনী দেখা যায়। বিশেষ করে আমরা দেখে থাকি, ‘প্রার্থী --- একজন সক্রিয় কর্মী। স্কুলজীবন থেকে শুরু করে --- হিসেবে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছে।’ ‘সে আমার নির্বাচনী এলাকার --- পরিবারের সন্তান। ওই পরিবারের সকল সদস্য আজীবন ---দলের সমর্থক।’ ‘এরা সবাই --- পরিবারের সন্তান।’ ‘প্রার্থী ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত।’ এমন ডিও ইস্যু হয় চাকুরি নিয়োগের ক্ষেত্রে। আবার একটি মাত্র পদে/বিষয়ে একজন মন্ত্রী/সাংসদ একাধিক জনের/প্রতিষ্ঠাননের নামে ডি.ও লেটার ইস্যু করেছেন, তারও প্রমানও পাওয়া যায়। অর্থাৎ ডি.ও লেটার ধারীরা চাকুরী পেলে/অনুমোদন পেলে বিষয়টি দাড়ায় এমন 'ঝড়ে বক মরে, ফকিরের কেরামতি বাড়ে!'

যদিও প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী নিয়োগের জন্য কোনোভাবেই মন্ত্রী বা জনপ্রতিনিধিরা এভাবে সুপারিশ করতে পারেন না। কোনো আইনে এভাবে সুপারিশ করার কথা বলা নেই। এটা সরাসরি অনিয়ম। মেধার ভিত্তিতে কোটার আওতায় এ নিয়োগ হওয়া উচিত। এখানে মান্যবরদের ডিও লেটারের কোনই ভুমিকা কাম্য নয়। এ ব্যাপারে সরকারের কোন নির্দশনাও নেই। অথচ ডি.ও লেটার ইস্যু ছাড়া চাকুরীই হচ্ছে না। মান্যবরদের ডি.ও লেটার ঝালমুড়ির ঠোঙা হিসেবে ব্যবহার হলে মানুষের কাছে এর মর্যাদা ক্ষুন্ন হয়, জাতি হিসাবে আমরা লজ্জিত হই। বলে রাখা ভাল, আধা সরকারি পত্রের (ডিও লেটার) মাধ্যমে বদলি বা পদোন্নতির জন্য তদবির করলে বিপদও হয় অনেক সময়। কারণ ভবিষ্যতে ‘ডিও লেটার’ তদবিরকারী কর্মকর্তার জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে!।

যাইহোক মূল কথায় আসা যাক, পৌরসভা বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকরা ব্যবস্থার শহর এলাকার সরকার এর মধ্যে নিম্ন স্তরের প্রশাসনিক এলাকা। পৌরসভা আইন ২০০৯ অনুযায়ী বাংলাদেশের কোন এলাকা পৌরসভা ঘোষণা করা যেতে পারে যদি ঐ এলাকার চারটি বৈশিষ্ট্য বা যোগ্যতা থাকে। যা হলো-
এক. তিন চতুর্থাংশ লোক অকৃষজ পেশায় নিয়োজিত থাকে,
দুই. শতকরা ৩৩ ভাগ লোক অকৃষিজ পেশায় নিয়োজিত থাকে
তিন. জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ১৫শত জনের বেশি হয় এবং
চার.ঐ এলাকার মোট জনসংখ্যা ৫০ হাজারের কম হবে না

এসব ঠিক থাকলে ক শ্রেণী, খ শ্রেণী, গ শ্রেণী বাংলাদেশে তিন ধরনের পৌরসভা করা হয়। বাংলাদেশে মোট ৩২৭ টি পৌরসভা রয়েছে।

এসব যোগ্যতা থাকলে সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধির/স্হানীয় ইউনিয়ন কর্তৃক স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর পৌরসভা আইন ২০০৯ এর ৩ ও ৪ ধারা অনুযায়ী আবেদন করা কিংবা কারো ডিও লেটার ইস্যু মূলে চাইতে হয়। পরবর্তীতে তা স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রণালয়ের স্হানীয় সরকার বিভাগ (পৌর শাখা) কর্তৃক ডাটা বিশ্লেষণ/সম্ভাব্যতা যাচাই এর সকল দাপ্তরিক ও প্রশাসনিক শেষে সচিব বরাবর নথি পেশ করা হয়। পরবর্তীতে তা প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাসসংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি (নিকার) বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয় এবং তারই আলোকে গেজেটটি প্রকাশিত হয় রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে ।

ফেসবুক মারফৎ খবর ও ব্যাক্তিগতভাবে প্রশাসনিক তথ্য থেকে যা জানলাম তা হলো, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব ওবায়দুল কাদের বিগত ০৪/১০/২০১৭ ইং তারিখে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর ডিও বা 'Demi-official letter' ইস্যু করেন সুবর্ণচর পৌরসভা গঠন সংক্রান্তে। উক্ত পত্র পেয়ে মাননীয় স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রণালয়ের সচিব ব্যবস্হা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট শাখা তথা মাননীয় স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নগর উন্নয়ন শাখায় প্রেরণ করেন ১১/১০/২০১৭ ইং তারিখে। তারই আলোকে ১ ২৫/১০/২০১৭ ইং তারিখে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নগর উন্নয়ন (পৌর শাখা-২) কর্তৃক জেলা প্রশাসকের কার্যালয়,নোয়াখালী (স্থানীয় সরকার বিভাগ) নিকট সুবর্ণচর পৌরসভা গঠন সংক্রান্তে পৌরসভা আইন ২০০৯ এর ৩ ও ৪ ধারা অনুযায়ী নিদিষ্ট ফরমে জরুরী ভিত্তিতে তথ্য চাওয়া হয়। যার ফলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়,নোয়াখালী (স্থানীয় সরকার বিভাগ) কর্তৃক জরুরী ভিত্তিতে উক্ত তথ্য চেয়ে ০৮/১১/২০১৭ ইং তারিখে উপজেলা নির্বাহী অফিসার,সুবর্ণচর প্রেরণ করেন এবং তিনি উক্ত পত্র অনুযায়ী তথ্যের তাগিদে সুবর্ণচর পৌরসভা গঠন সংক্রান্তে পৌরসভা আইন ২০০৯ এর ৩ ও ৪ ধারা অনুযায়ী নিদিষ্ট ফরম পূরণের জন্য সুবর্ণচরের সকল ইউপি চেয়ারম্যান বরাবর স্ব-স্ব ইউনিয়নের তথ্য প্রদানের জন্য জরুরী ভিত্তিতে পত্র দেওয়া হয় ১০/১২/২০১৭ ইং তারিখে । বাকিটা খবর এখন অজানা!

যাইহোক, মাননীয় মন্ত্রী জনাব ওবায়দুল কাদের সাহেব ডিও লেটার ইস্যু উনি করছেন এবং জেলার মন্ত্রী হিসেবে এটা করা উত্তম সিদ্ধান্ত। যেমনটি নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, আমাদের উপজেলা এসব জনাব ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ সাহেবের ডিও তে হয়েছে। কারণ উপজেলা চেয়ারম্যান, স্থানীয় এমপির ডিও তে পৌরসভা আসবে না। তবে, তবে সীমানা নিয়ে উপজেলা প্রশাসন/চেয়ারম্যান, স্থানীয় এমপির ভূমিকা থাকার কথা। জানি না তারা কি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে, যোগ্য হিসেবে চরবাটা খাসের হাট সীমানায় আসলে কারো ক্ষতি হওয়ার কথা নয়। হয়তো ১/২ জন কাউন্সিলর এর সীমানা বাড়বে এবং অধিক পৌর আদায় সম্ভব হবে। আমি মনে করি সুযোগ থাকলে সেই চর আক্রামও পৌরসভার আওতায় আসুক।

জেনে রাখা ভাল,পৌরসভা আইন ২০০৯ এর
ধারা-৩ এর উপধারা (৩) এর বিধান মতে উল্লিখিত শহর এলাকা ঘোষণার অভিপ্রায় সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনটি প্রকাশিত হওয়ার পর অনূর্ধ্ব ১ মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ উক্তরূপ অভিপ্রায় প্রস্তাবের বিরুদ্ধে সরকার বরাবরে লিখিত আপত্তি উত্থাপন করতে পারবে।
সরকার উপ-ধারা (৩) এর অধীন উত্থাপিত আপত্তি তিন মাসের মধ্যে নিষ্পন্ন করিবে এবং শহর এলাকা গঠনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হইলে সরকার উহা সর্বসাধারণের অবগতির জন্য সরকারি গেজেটে প্রকাশ করিবে।-MT Ullah

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:১৫

রাজীব নুর বলেছেন: শ্রমিকদের আইন নিয়ে কিছু লিখুন।

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:০৭

এম টি উল্লাহ বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.