নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
উপন্যাস ‘‘অসমাপ্ত জবানবন্দী’’ ও ‘‘নিরু”, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস ‘‘মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ’’ ও ‘‘একাত্তরের অবুঝ বালক’’ এর লেখক। পেশায়-আইনজীবী। কর্মস্থল- হাইকোর্ট।www.facebook.com/mohammad.toriqueullah
কোনো জমি যদি সরকারের হাতে ন্যস্ত হয় এবং সেই জমিগুলি যদি সম্পূর্ণ সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন এবং সরকার,এই জমিগুলি সরকার কর্তৃক প্রণীত পদ্ধতি অনুযায়ী বন্দোবস্ত দিতে পারেন অথবা অন্য কোনো ভাবে ব্যবহার করতে পারেন তাহলে উক্ত ভূমিগুলিকে খাস জমি বলে।
খাস জমির শ্রেণীবিন্যাসঃ
১৯৮৭ সালের খাসজমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত নীতিমালা অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি খাসজমি ভূমিহনিদের মাঝে বন্দোবস্ত প্রদান করা হয়েছে। উক্ত ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত নীতি মালা কিছুটা সংশোধন করে ১৯৯৭ সালে খাসজমিকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. কৃষি খাস জমি
২. অকৃষি খাস জমি
ক) চা বাগান, রাবার বাগান, চিংড়ি চাষের জমি
খ) সর্বসাধারণের ব্যবহার্য জমি যেমন রাস্তা, খাল, ঘাট ইত্যাদি
গ) জেগে উঠা চরের জমি
** কারা খাস জমি বন্দোবস্ত পাওয়ার অধিকারীঃ
কৃষি খাস জমি সাধারণত ভূমিহীনরা বন্দোবস্ত পাওয়ার অধিকারী। সে জন্য জেনে নেয়া দরকার কারা ভূমিহীন হিসেবে গণ্য হবে। খাস জমি বরাদ্দ নীতিমালা অনুযায়ী সেই সব পরিবার ভূমিহীন বলে গণ্য হবে যেসব পরিবারের;
(ক) বসতবাড়ী ও কৃষি জমি কিছুই নাই, কিন্তু পরিবারটি কৃষি নির্ভর
(খ) ১০ শতাংশ পর্যন্ত বসতবাড়ী আছে কিন্তু কৃষিযোগ্য জমি নেই, এইরূপ কৃষি নির্ভর পরিবারও ভূমিহীন হিসেবে গণ্য হবে।
তবে একটি উপজেলায় ভূমিহীন পরিবারের সংখ্যা অনেক খাকতে পারে । সবাইকে একসাথে জমি দেয়া সম্ভব নাও হতে পারে। কারণ সেই উপজেলায় পর্যাপ্ত পরিমাণ খাস জমি নাও থাকতে পারে। খাস জমি থাকলেও দেখা যায় দেওয়ানি আদালতে মামলা মোকদ্দমা থাকার কারণে বন্দোবস্ত দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাছাড়া সকল শ্রেণীর খাস জমি বরাদ্দ দেয়া যায় না। তাই সরকার ভূমিহীনদের জমি বন্দোবস্ত পাওয়ার একটি অগ্রাধিকারের ক্রম তৈরি করে দিয়েছে। সেই অগ্রাধিকারের ক্রম নিচে দেয়া হল-
**কারা খাস জমি বন্দোবস্ত পাওয়ার অগ্রাধিকার পায়ঃ
সবার আগে (১) দুঃস্থ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার, এরপর (২) নদীভাঙা পরিবার, তারপর (৩) সক্ষম পুত্রসহ বিধবা বা স্বামী পরিত্যক্তা পরিবার, তারপর (৪) কৃষি জমিহীন ও বাস্তুভিটাহীন পরিবার, তারপর (৫) অধিগ্রহণের ফলে ভূমিহীন পরিবার, সবশেষে (৬) যে পরিবারের ১০ শতাংশ পর্যন্ত বসতবাড়ী আছে, কৃষি জমি নেই কিন্তু কৃষি নির্ভর
** অকৃষি খাস জমি দীর্ঘমেয়াদী বন্দোবস্ত সংক্রান্তঃ
১। সরকারি অকৃষি খাস জমি বন্দোবস্ত পাওয়ার জন্য ৫/- টাকার কোর্ট ফি দিয়ে জেলা প্রশাসকের নিকট দরখাস্ত দাখিল করতে পারবেন। আবেদন পত্রের সহিত প্রার্থীত জমি যে উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য বন্দোবস্ত চাওয়া হয়েছে তা ব্যতিরেকে অন্য কোন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হবে না মর্মে অঙ্গিকারনামা (এফিডেভিট) দাখিল করতে হবে।
২। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আবেদন পত্রখানা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে উপজেলা ভূমি অফিসে প্রেরণ করা হয়।
৩। সরেজমিনে পরিমাপ,তদন্ত ও নীতিমালায় উল্লেখিত শর্ত সাপেক্ষে প্রার্থীত ভূমি বন্দোবস্ত প্রদানের যোগ্য হলে কেস নথি সৃজন পূর্বক জমির মূল্য নির্ধারণ করে স্কেস ম্যাপ,রেন্ট রোল ইত্যাদির সমন্বয়েএকটি প্রস্তাব উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রেরণ করা হয়। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রেরণ করার পর তা যথাযথ কি-না পরীক্ষান্তে প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়।
কৃষি খাসজমি স্থায়ী বন্দোবস্ত সংক্রান্তঃ
যে কোন ভূমিহীন পরিবার সরকারি খাস জমি বন্দোবস্ত পাওয়ার জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর নিকট নির্ধারিত ফরমে দরখাস্ত দাখিল করতে পারবেন।
আবেদনপত্রের সহিত যা জমা দিতে হবেঃ
১। সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বার/চেয়ারম্যানকর্তৃক সত্যায়িত ০২ কপি ফটো।
২। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদত্ত নাগরিকত্ব সার্টিফিকেট।
উপজেলা কৃষি খাস জমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত কমিটি প্রাপ্ত আবেদনপত্রসমূহ যাচাই-বাছাইপূর্বক প্রকৃত ভূমিহীন পরিবারের তালিকা প্রস্তুত ও জমি বরাদ্দের পরিমাণ নির্ধারণ করবেন। এর ২১ দিনের মধ্যে সহকারী কমিশনার(ভূমি) বন্দোবস্ত কেস রেকর্ড সৃজন পূর্বক উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর নিকট প্রেরণ করবেন। উক্ত কেস রেকর্ড পরবর্তী ২১ দিনের মধ্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রেরণ করা হবে।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে অনুমোদিত প্রস্তাব ফেরৎ পাওয়ার পরে ১/-টাকা সেলামীর বিনিময়ে বন্দোবস্ত প্রাপকের অনুকুলে কবুলিয়ত সম্পাদন, খতিয়ান খোলা ও বন্দোবস্তকৃত জমির দখল বুঝিয়ে দেয়া হবে।
দরখাস্তের নমুনা পয়েন্টগুলোঃ
দরখাস্তকারী কোন শ্রেণী
১) দুঃস্থ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার
২) নদী ভাঙ্গা পরিবার
৩) সক্ষেম পুত্রসহ বিধবা বা স্বামী পরিত্যক্তা পরিবার
৪) কৃষি জমি নাই ও বাস্তবাটিহীন পরিবার
৫) অন্মধিক ০.১০ একর বসতবাটি আছে কিন্তু কৃষি জমি নাই এমন কৃষি নির্ভর পরিবার
৬) অধিগ্রহণের ফলে ভূমিহীন হইয়া পড়িয়াছে এমন পরিবার
খ) ভূমিহীন শ্রেণীর স্বপক্ষে দাখিলকৃত কাগজপত্রঃ
১) যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত মুক্তিযোদ্ধা সনদপত্র
২) ইউনিয়ন চেয়ারম্যান/ পৌর চেয়ারম্যান/ ওয়ার্ড কমিশনারের সনদপত্র
৩) অন্যান্য
২। দরখাস্তকারীর পরিবার প্রধানের ……………………………………… বয়সঃ
৩। দরখাস্তকারীর পিতার নাম/ স্বামীর নাম …………………. জীবিত/মৃত ………………..
৪। দরখাস্তকারীর জন্মস্থান/ঠিকানা গ্রাম ………………….. ইউনিয়ন ………………. উপজেলা ………………… জেলা ……………….
৫। পরিবার প্রধানের স্ত্রী/ স্বামীর নাম ……………………. বয়সঃ………………
৬। দরখাসত্মকারীর পরিবারে সদস্যের নাম ……………………..
ক্রমিক নং নাম বয়স সম্পর্ক কি করেন মন্তব্য
৭। দরখাস্তকারীর নিজের বসতবাটির বিবরণ …………………………..
৮। নিজের বসতবাটি না থাকলে পরিবার যেখানে বাস করে উহার বিবরণ (বর্তমান ঠিকানা)
৯। দরখাস্তকারী অথবা তাহার পিতা/মাতা পূর্বে কোন খাস কৃষি জমি পাইয়া থাকলে উহার বিবরণ…………………
১০। খাস জমির জন্য কোন জায়গায় দরখাসত্ম দাখিল করিলে উহার বিবরণ ……………………
১১। নদী ভাঙ্গা পরিবার হইলে কবে কোথায় কিভাবে নদী ভাঙ্গিয়া ছিল এবং সেই জায়গায় কোন দলিল দসত্মাবেজ থাকলে উহার বিবরণ (প্রয়োজনে পৃথক কাগজ ব্যবহার করিতে হইবে)
১২। পরিবারে কেহ শহীদ বা পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা হইলে তাহার বিসত্মারিত পরিচয় ো শহীদ পঙ্গু হইবার বিবরণ ও প্রমাণ(প্রয়োজনে পৃথক কাগজ ব্যবহার করিতে হইবে)
১৩। দরখাস্তকারীর দখলে কোন খাস জমি জায়গা থাকিলে উহার বিবরণ। করে হইতে কিভাবে দখলে আছেন এবং জমির বর্তমান অবস্থা কি তাহা জানাইতে হইবে (প্রয়োজনে পৃথক কাগজ ব্যবহার করিতে হইবে)
১৪। দরখাস্তকারী কোন বিশেষ খাস পাইতে চাহিলে তাহার কারণ ও বিবরণ ………..
১৫। প্রাথিত জায়গা বন্দোবস্ত দেওয়া সম্ভব না হইলে অন্য কোন এলাকা হইতে জমি চাহেন (ক্রমানুসারে ২ /৩টি মৌজার নাম উলেস্নখ করিতে হইবে) ১৬। দরখাস্তকারীর সম্পর্কে ভাল জানেন এমন দুইজন গন্যমান্য লোকে নাম ও ঠিকানা
শপথনামাঃ
আমি…………………………….. পিতা/স্বামী ………………………………….. শপথ করিয়া বলিতেছি যে, আমার সম্পর্কে উপরোক্ত বিবরণ আমি পড়িয়াছি অথবা আমাকে পড়িয়া শুনানো হইয়াছে। প্রদত্ত বিবরণ আমার জ্ঞান ও বিশ্বাস মতে সত্য। উক্ত বিবরণের অংশ ভবিষ্যতে যে কোন সময়ে মিথ্যা প্রমানিত হইলে আমাকে প্রদত্ত বন্দোবস্তকৃত জমি বিনা ওজরে সরকারের বরাবরে বাজেয়াপ্ত হইবে এবং আমি বা আমার ওয়ারিশান উহার বিরদ্ধে কোন প্রকার আইনতঃ দাবি দাওয়া করিতে পারিবে না, করিলেও কোন আদালতে গ্রহণযোগ্য হইবে না। আমি শপথপূর্বক আরও বলিতেছি যে, আমার এবং আমার স্ত্রীর নামে খাস জমি বন্দোবসত্ম দেওয়া হইলে উহা আমরা নিজে চাষাবাদ করিব, বর্গাদার দিয়া কোনভাবে চাষ করিব না এবং হস্তান্তর করিব না। আমি দরখাস্তের সকল মর্ম জানিয়া শুনিয়া এবং বুঝিয়া সুস্থ জ্ঞানে সই করিলাম/ টিপসই দিলাম।
দরখাসস্তকারীর সই / টিপসই
সনাক্তকারীর সই / টিপসই
দরখাস্ত ফরম পুরণকারীর নাম …………….
দরখাস্ত পুরণকারীর পিতা/ স্বামীর নাম ……….
ভূমিহীন পরিবার:
যে পরিবারের বসতবাড়ি ও কৃষিজমি কিছুই নাই, কিন্তু পরিবারটি কৃষি নির্ভর।
কৃষিজমি প্রাপ্তিতে ভূমিহনি পরিবারের অগ্রাধিকারের তালিকা:
১।দু:স্থ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার
২।নদী ভাঙ্গা পরিবার (যাহার সকল জমি বিলীন হয়েছে)
৩।সক্ষম পুত্র সহ বিধবা বা স্বামী পরিত্যাক্তা পরিবার
৪।কৃষিজমিহীন ও বাস্ত্তভিটাহীন পরিবার
[email protected]
facebook.com/mohammad.toriqueullah
01733 594 270
২| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:৪০
রাজীব নুর বলেছেন: খাস জমিন আমার কিছু দরকার ছিলো। চাষবাস করতাম।
©somewhere in net ltd.
১| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:৩৩
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: যারা প্রাপ্য, তারা খাস জমি পায় না, কারণ, তাদের অনেকেই এই নিয়ম ও পদ্ধতি জানে না। খাসজমিগুলো আসলে ভূমিদখলদারদের অধীনে চলে যায়। নানান ধরনের ফেইক ডকুমেন্টস তৈরি করে নিজেদের নামে নিয়ে নেয়। জোর যার, খাস জমি তার, এর ব্যত্যয় খুঁজে পাওয়া ভার।