নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
উপন্যাস ‘‘অসমাপ্ত জবানবন্দী’’ ও ‘‘নিরু”, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস ‘‘মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ’’ ও ‘‘একাত্তরের অবুঝ বালক’’ এর লেখক। পেশায়-আইনজীবী। কর্মস্থল- হাইকোর্ট।www.facebook.com/mohammad.toriqueullah
আগুণে পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত সম্পত্তির আর্থিক লোকসান পুষিয়ে নিতে অগ্নি বীমা করে রাখেন অনেকে। নির্ধারিত হারে প্রিমিয়াম জমা নিয়ে বীমা কোম্পানিগুলো অগ্নি বীমা পলিসি ইস্যূ করে। কিন্তু কিছু সতর্কতার অভাবে বা কোম্পানির দাবি পরিশোধের সক্ষমতা বা গ্রাহক সেবার মান কেমন এসব না জানার কারণে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হলে অধিকাংশ গ্রাহককে হয়রানির মধ্যে পড়তে হয়। অনেক সময় সঠিকভাবে পলিসি না করার কারণে তারা বীমা দাবি পান না।
কোম্পানিগুলো সাধারণত অগ্নি বীমা দাবিটি যথাযথ কিনা তা যাচাইয়ের জন্য জরিপকারি বা সার্ভেয়ার প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দিয়ে থাকে বীমা কোম্পানি। তাই অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতির প্রমাণ করতে গ্রাহককে সচেতন থাকতে হয়। এমন কিছু সচেতনতা মূলক বিষয় হলো ঃ
* বীমা চুক্তিতে প্রয়োজনীয় সব বিষয় আছে কিনা। যেমন- তার বীমা অংক কত এবং কি ধরণের কভারেজ আছে, কি কি বিষয় কাভারেজের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং কি অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
*অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হলে দাবি উত্থাপনের শর্তগুলো কি, কত দিনের মধ্যে দাবি উত্থাপন করতে হবে ইত্যাদি।
* পলিসির প্রিমিয়ামের টাকা সঠিকভাবে কোম্পানিতে জমা হলো কি না।
অগ্নি কান্ডের পর করণীয়:
* অগ্নিকাণ্ডের পর যত দ্রুত সম্ভব বীমা কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করে ক্ষতি সম্পর্কে জানাতে হবে।
* প্রয়োজনীয় ক্ষতির তথ্য কোম্পানিকে অবশ্যই লিখিত আকারে জানাতে হবে।
* প্রতিষ্ঠানের পলিসি পত্রটি হারিয়ে গেলে বা অন্য কোনোভাবে নষ্ট হয়ে গিয়ে থাকলে যত শীঘ্র সম্ভব বীমা পত্রটির একটি অনুলিপি কোম্পানির কাছ থেকে সংগ্রহ করে নিতে হবে।
* ক্ষতিপূরণ সম্পর্কে নিশ্চত না হওয়া পর্যন্ত কোন সম্পত্তি হস্তান্তর, মেরামত বা পুন:স্থাপনের জন্য কোন পুন:স্থাপন কোম্পানিকে অনুমতি দেওয়া উচিত না।
*বীমা কোম্পানির অ্যাডজাস্টার বা সমন্বয়কারির সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়ে রেকর্ড রাখুন।
*এসব রেকর্ডের পৃথক ফাইল করুন। যখন কোন তথ্য বা নথি অ্যাডজাস্টারের কাছে জমা দেবেন তখন সতর্কতা অবলম্বন করুন। প্রতিটি নথির অনুলিপি সংগ্রহ করুন।
*পলিসির সামর্থ অনুযায়ী সব সুযোগ-সুবিধা আদায় করার চেষ্টা করুন অথবা সরকারি অ্যাডজাস্টারের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
* যদি বীমা দাবি ৯০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি না হয় তাহলে কোম্পানির কাছে ব্যাখ্যা চান।
* বীমা কোম্পানি ৯০ দিনের মধ্যে দাবি পরিশোধ করতে বাধ্য। আর পরিশোধ না করলে ৯০ দিনের পরবর্তী প্রতিদিনের বিলম্বের জন্য আপনি প্রচলিত ব্যাংক সুদের হারে উপর মাসিক ভিত্তিতে আরো ৫% যোগ করে সুদসহ বীমা দাবি পাওয়ার অধিকার রাখেন।
=>অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত কারখানা বা প্রতিষ্ঠানের কাছে যেসব তথ্য বা নথি চাইতে পারেঃ
বীমা কোম্পানি অথবা জরিপকারি বা সার্ভেয়ার প্রতিষ্ঠান অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত কারখানা বা প্রতিষ্ঠানের কাছে যেসব তথ্য বা নথি চাইতে পারে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে –
সঠিকভাবে পূরণকৃত বীমা দাবির ফরম (ফায়ার ক্লেইম ফরম),
সমর্থনকারি কাগজ বা নথিসহ অনুমিত ক্ষতির পরিমাণ,
ফায়ার ব্রিগেডের প্রতিবেদন,
ফায়ার লাইসেন্স কপি,
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা সম্পর্কে স্থানীয় চেয়ারম্যান বা ওয়ার্ড কমিশনারের বিবৃতি,
ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের আমদানির বা স্থানীয় চালানপত্র,
ঘটনার সময় উপস্থিতির লিখিত বিবৃতি,
সিল-স্বাক্ষরসহ জেনারেল ডায়েরি বা জিডি’র অনুলিপি,
অগ্নিকাণ্ডের আগের তিন মাসের স্টক রেজিস্টারের অনুলিপি এবং ব্যাংক স্টেটমেন্ট ইত্যাদি।
এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানের ধরণ অনুযায়ী অন্যান্য কাগজপত্র প্রয়োজন হতে পারে।
** মনে রাখবেন, যথাযথ ক্ষতিপূরণ না পেলে মামলা করে টাকা আদায় করা যায়।
- এম টি উল্যাহ
আইনজীবী (ঢাকা)
০১৭৩৩৫৯৪২৭০
©somewhere in net ltd.