নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব।

এম টি উল্লাহ

আমি এম টি উল্যাহ। আইনি উপন্যাস ‘‘অসমাপ্ত জবানবন্দী’’ ও ‘‘নিরু”, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই ‘‘মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ’’ ও ‘‘একাত্তরের অবুঝ বালক’’ এর লেখক। পেশায়-আইনজীবী।www.facebook.com/mohammad.toriqueullah , Email- [email protected]

এম টি উল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

রীট/রিট কি? রীট কেন এবং কিভাবে করতে হয় জেনে নিন/ সংক্ষেপে রীট বৃত্তান্ত

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০৯


সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কারো মৌলিক লঙ্গিত হলে হাইকোর্ট তা বলবত করতে পারে এবং বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনাকে কার্যকর করতে পারে যা হাইকোর্ট বিভাগের রিট এখতিয়ার নামে পরিচিত ।
রিট শব্দটির অর্থ হলো আদালত বা যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ঘোষিত বিধান বা আদেশ। কারো মৌলিক অধিকার লংঘিত হলে আমাদের সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী হাইকোর্ট বিভাগ তা বলবৎ করতে পারে এবং বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনাকে কার্যকর করতে পারে।

রিট শুধু মাত্র হাইকোর্ট বিভাগ জারী করতে পারে। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৭ থেকে ৪৩ এ উল্লেখিত মৌলিক অধিকার লংঘিত হলে সংবিধানের ৪৪ অনুচ্ছেদ প্রদত্ত অধিকারবলে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে মৌলিক অধিকার বলবত করার জন্য রিট পিটিশন দায়ের করতে পারে এবং হাইকোর্ট বিভাগ ১০২ অনুচ্ছেদ প্রদত্ত ক্ষমতা বলে মৌলিক অধিকার বলবত করার জন্য কতিপয় আদেশ নির্দেশ জারী করতে পারে, তাকে রিট বলে।

মৌলিক অধিকারগুলো জেনে নেয়া যাক
অনুচ্ছেদ ২৭ অনুযায়ী আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান এবং সবাই সমান আইনের আশ্রয় লাভের অধিকারী। অর্থাৎ এর মাধ্যমে সকল নাগরিকের মধ্যে আইনের সাম্য প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। যখনই কেউ আইনের সাম্য নষ্ট করেন তার বিরুদ্ধে এটিকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা যায়, অন্তত কেতাবি অর্থে।

অনুচ্ছেদ ২৮, সকল ধর্ম, বর্ণ, নারী পুরুষ ও জন্মস্থান ভেদে রাষ্ট্র যেন বৈষম্য না করতে পারে তার বিধান দেয়া হয়েছে

অনুচ্ছেদ ২৯, সরকারী পদে নিয়োগ লাভে সকল নাগরিকের সাম্যের নিশ্চয়তা দিয়েছে।

অনুচ্ছেদ ৩১, সকল নাগরিকের আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার নিশ্চিত করেছে। এই অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আইনী প্রক্রিয়া ব্যতীত কোন নাগরিকের জীবন, স্বাধীনতা, দেহ, সুনাম বা সম্পত্তির হানি ঘটানো যাবে না। অর্থাৎ পুলিশ চাইলেই যে কাউকে তুলে নিয়ে কারাগারে নিক্ষেপ করতে পারবে না। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আইনী প্রক্রিয়া শুরু না করে কাউকে গ্রেপ্তারও করতে পারবে না।

অনুচ্ছেদ ৩২, যথাযথ আইনই প্রক্রিয়া ছাড়া কোন নাগরিকের ব্যক্তি ও জীবনের স্বাধীনতা হরণ করা যাবে না।

অনুচ্ছেদ ৩৩, এখানে ব্যক্তির গ্রেপ্তার ও আটক বিষয়ে রক্ষাকবচ দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তিকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারের কারণ যথাশীঘ্র উল্লেখ না করে আটক রাখতে পারবে না এবং তাকে তার মনোনীত আইনজীবীর সাথে পরামর্শ করার সুযোগ দিতে হবে। তাছাড়া, আটকের পরবর্তী চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে আটককৃত ব্যক্তিকে আদালতে উপস্থাপন করবে পরবর্তী নির্দেশনার জন্য। তবে যদি তাকে কোন নিবর্তন মূলক আইনে আটক করা হয় বা সেই ব্যক্তি বর্তমানে দেশের শত্রু হয় তবে তার ক্ষেত্রে এই বিধান প্রযোজ্য হবে না।

অনুচ্ছেদ ৩৪, এর মাধ্যমে বাধ্যতামুলক শ্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অর্থাৎ কেউ জোর করে কাউকে দিয়ে শ্রম আদায় করতে পারবে না। এই অনুচ্ছেদে দুটি ব্যতিক্রম আছে- যেমন শ্রম যদি কারাভোগের অংশ হয় তাহলে বাধ্যতামূলক শ্রম আদায় করা যাবে আর দ্বিতীয়টি হল যদি জনগণের উদ্দেশ্য সাধনকল্পে তা আবশ্যক মনে হয়। যদিও কোন কোন ক্ষেত্রে রাষ্ট্র মনে করবে বাধ্যতামুলক শ্রম জনগণের উদ্দেশ্য সাধনকল্পে প্রয়োজন তা কোথাও উল্লেখ নেই। এখানে আইনের অস্পষ্টতা রয়েছে।

অনুচ্ছেদ ৩৫, এর মাধ্যমে ফৌজদারি অপরাধের বিচার ও দণ্ড সম্পর্কে নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে। বর্তমান সময়ে যদি কোন কাজ অপরাধের পর্যায়ে না পড়ে তাহলে পরবর্তীতে নতুন আইন করে সেই কাজকে অপরাধ হিসেবে সজ্ঞায়িত করে তাকে শাস্তি দেয়া যাবে না।

অনুচ্ছেদ ৩৬, এতে নাগরিকের আইনসংগত ভাবে বসবাস ও চলাফেরার নিশ্চয়তা বিধান করা হয়েছে।

অনুচ্ছেদ ৩৭, এতে শান্তিপূর্ণ উপায়ে সভা সমাবেশের অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে।
অনুচ্ছেদ ৩৮, এর মাধ্যমে আইনসঙ্গত বিধিনিষেধ সাপেক্ষে সংগঠন করার অধিকার দেয়া হয়েছে।

অনুচ্ছেদ ৩৯, এর মাধ্যমে বাক স্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে।

অনুচ্ছেদ ৪০, এর মাধ্যমে পেশা বা বৃত্তি নির্বাচনের স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে।
অনুচ্ছেদ ৪১, এর মাধ্যমে সকল নাগরিকের ধর্মীয় স্বাধীনতা বিধান করা হয়েছে।
অনুচ্ছেদ ৪২, এর মাধ্যমে সম্পত্তির উপর নাগরিকের অধিকার এবং সেই সম্পত্তি রাষ্ট্র যেন বাধ্যতামূলক অধিগ্রহণ, রাষ্ট্রায়ত্তকরণ ও দখল করতে না পারে তার বিধান দেয়া হয়েছে।

অনুচ্ছেদ ৪৩, এর মাধ্যমে আইনগত বিধিনিষেধ সাপেক্ষে নাগরিকের গৃহে প্রবেশ, তল্লাশি ও আটক থেকে নিরাপত্তাসহ চিঠিপত্র ও অন্যান্য ব্যক্তিগত যোগাযোগের গোপনীয়তার অধিকার দেয়া হয়েছে।

**কেন সরাসরি রীট করা হয়, মামলার সাথে রীটের তফাৎ কিঃ
রিটের বিষয়টি মামলার মত হলেও মৌলিক একটি পার্থক্য আছে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় কোন আইনের অধীনে প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না, কিন্তু কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ওপর অন্যায় করা হচ্ছে। তখন ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ এর প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করতে পারে। বিষয়টি পর্যালোচনা করে হাইকোর্ট সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেয়। আবার কেউ যদি মনে করে সরকারের প্রণীত কোন আইন প্রচলিত অন্য আইনের পরিপন্থী বা সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক, সে ক্ষেত্রেও আইনটিকে চ্যালেঞ্জ করে রিট করা যায়। রীটে খরচ কিছুটা বেশি হলেও সাধারণত দ্রুত নিষ্পত্তি হয়।

সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৭ থেকে ৪৩ এ আইনের দৃষ্টিতে সমতা, ব্যক্তি স্বাধীনতা ও জীবনের অধিকার, স্বাধীনতার অধিকার, চলাফেরার অধিকার, সমাবেশের অধিকার, সংগঠনের অধিকার, চিস্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা ও বাক-স্বাধীনতা, পেশা বা বৃত্তির অধিকার, ধর্মীয় স্বাধীনতা, সম্পত্তির অধিকার, ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার, গ্রেফতার বা আটক সর্ম্পকে রক্ষাকবচ ইত্যাদি অধিকারগুলোকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র রাষ্ট্র এ অধিকারগুলো লংঘন করে, কোনো ব্যাক্তি করে না ।

যদিও ১০২ অনুচ্ছেদ অনুসারে হাইকোর্ট বিভাগ কোনো সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির আবেদনের প্রেক্ষিতে তার মৌলিক অধিকার বলবৎ করণের জন্য যে কোনো ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষকে উপযুক্ত নির্দেশনা বা আদেশ দিতে পারেন। কিন্তু বর্তমানে সুপ্রীমকোর্টের আন্তরিক ও ইতিবাক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে “সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি”-এর অর্থে ব্যপকতা এসেছে অর্থাৎ রিট মামলা দায়েরের যোগ্যতার পরিধি ব্যাপকভাবে বিস্তৃতি লাভ করেছে।

অনুচ্ছেদ ১০২ এ দেখা যায়, কোনো ব্যক্তি কেবল নিজে সংক্ষুব্ধ বা ক্ষতিগ্রস্ত হলেই রিট করতে পারে (২)(ক)(অ)-(আ) এবং যে কেউ সংক্ষুব্ধ হলে হাইকোর্টের নিকট আবেদন করতে পারবেন অনুচ্ছেদ (২)(খ)(অ)-(আ) অনুযায়ি ।

যেহেতু রাষ্ট্রই মেীলিক অধিকার লংঘন করে তাই শুধুমাত্র রাষ্ট্র কিংবা রাষ্টীয় কোনো সংস্থায় কর্মরত কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে রিট করা যায়।

হাইকোর্ট এই রিট বিষয়ে অবারিত ক্ষমতা ব্যাবহার করতে পারে অর্থাৎ বিষয় বিবেচনা করে যেকোনো আদেশ দিতে পারে কোনো কিছুই আদালতকে বারিত করে না ।

এক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা হলো বেসরকারি কোনো সংস্থায় কর্মরত কর্মকর্তা বা কর্মচারির বিরুদ্ধে রিট করা যায় না অর্থাৎ প্রাইভেট সংস্থা যদি মৌলিক অধিকার ক্ষুন্ন করে তাহলে তা হবে অপরাধ, তখন রিট মামলা করা যায় না। মামলা করতে হবে দেওয়ানী আদালতে।

**রীটের প্রকারভেদঃ বাংলাদেশ সংবিধানে পাঁচ ধরনের রীটের কথা বলা আছে। যথা:
(১) Writ of Habeas Corpus (হেবিয়াস কর্পাস)
(২) Writ of Mandamus (ম্যান্ডামাস)
(৩) Writ of Prohibition (প্রহিবিসন)
(৪) Writ of Certiorari ( ছারসিওরারি)
(৫) Writ of Quo Warranto (কুয়া ওয়ারেন্টো

১) বন্দী প্রদর্শন রিট/Habeas Corpus: কোনো ব্যক্তিকে সরকার বা অন্য কেউ আটক করলে কি কারণে তাকে আটক করা হয়েছে তা জানার জন্য বন্দীকে আদালতে হাজির করার যে নির্দেশ দেওয়া হয় তাই বন্দী প্রদর্শন রিট।

২) পরমাদেশ বা হুকুমজারি রিট/Mandamus : কোনো অধ:স্তন আদালত, ট্রাইব্যুনাল, ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যদি তার আইনগত দায়িত্ব পালন করতে অস্বীকার করে কিংবা ব্যর্থ হয় তাহলে উচ্চতর আদালত যে আদেশের মাধ্যমে উক্ত আইনগত দায়িত্ব পালন করতে উক্ত আদালত বা ট্রাইব্যুনালকে বাধ্য করে তাকে হুকুমজারী রিট বা পরমাদেশ বলে।

৩)নিষেধাজ্ঞামূলক রিট/Prohibition: কোনো অধস্তন আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা কোনো কর্তৃপক্ষ, সংস্থা বা ব্যক্তি তার এখতিয়ার বর্হিভূত কাজ করতে উদ্দ্যত হয়েছে কিংবা ন্যায় নীতি ভঙ্গ করতে যাচ্ছে। এ অবস্থায় উচ্চতর আদালত যে আদেশের মাধ্যমে উক্ত ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষকে ঐ কাজ করা থেকে বিরত রাখেন তাকে নিষেধাজ্ঞামূলক রিট বলে। নিষেধাজ্ঞামূলক রিটকে বিচার বিভাগীয় রিটও বলা হয়।

৪)উৎপ্রেষণ রিট/Certiorari : দুটি উদ্দেশ্যে উচ্চতর আদালত উৎপ্রেষণ রিট জারী করতে পারে- ক) অধ:স্তন কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা ব্যক্তি বা সংস্থা কর্তৃক কৃত ক্ষমতা বহির্ভূত কাজকে বাতিল বা নাকচ করে দেয়া। খ) অধ:স্তন আদালত বা ট্রাইব্যুনালের কোনো মামলা শুনানীর জন্য উচ্চতর আদালত নিজেই গ্রহণ করে এ রিট জারী করতে পারে।

৫)কারণ দর্শাও রিট/Quo Warranto: কোনো ব্যক্তি যদি এমন কোনো সরকারি পদ দাবী করে, যে পদের যোগ্যতা তার নাই অথবা অবৈধভাবে যদি কোনো সরকারি পদ দখল করে বসে থাকে, তাহলে উচ্চতর আদালত যে আদেশের মাধ্যমে উক্ত ব্যক্তিকে তার পদ দখলের বা দাবীর কারণ দর্শাও নির্দেশ দিয়ে থাকে তাকে কারণ দর্শাও রীট বলে।

অবশ্য কিছু কিছু ক্ষেত্র রয়েছে যেখানে রিট এবং সাধারণ মামলা দু’টিই করা চলে। রিটে খরচ কিছুটা বেশি হলেও সাধারণত দ্রুত নিষ্পত্তি হয়।


** আইনজীবির সাথে যোগাযোগঃ-

উচ্চ আদালতে মামলার জন্য কোন আইনজীবির কাজে যেতে হবে সে পরামর্শ দিতে পারেন। তবে যে কোন আইনজীবির কাছেই যাওয়া যেতে পারে। তবে দক্ষ ও অভিজ্ঞ আইনজীবির হাতে ফল ভালো হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
অভিজ্ঞ এবং সুপরিচিত আইনজীবি ছাড়া যে মামলা জেতা যাবে না, তা কিন্তু নয়। তুলনামূলকভাবে নবীন কিন্তু দক্ষ আইনজীবিও কম খরচে মামলা জিতিয়ে দিতে পারেন। রীট করলেই হয় না, যথাযথভাবে বুঝে শুনে করলে ভালো প্রতিকার পাওয়া সম্ভব।

সংক্ষেপে রীট বৃত্তান্তঃ-
১. রীট করতে হলে প্রথমে একজন আইনজীবীর সাথে কথা বলতে হবে ।

২. আইনজীবী রীট করার মতো বিষয় হলে রীট পিটিশনটি হাইকোর্টে দাখিল করবে।

৩. রীট পিটিশন দাযেরের পর আদালতে প্রাথমিক শুনানি হবে।

৪. উক্ত শুনানিতে আদালত রীট কারীর আইনজীবীর বক্তব্যে সন্তুষ্ট হলে প্রতিপক্ষের উপর রুল জারি করবেন অর্থাৎ রুল শুনানিতে যদি আদালত মনে করে রীট কারীর বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি রিটের শর্তগুলো পূর্ণ করেছে তবে আদালত উক্ত রিটের জবাব দেওয়ার জন্য প্রতিপক্ষে নির্দেশ দিবে যা রুল জারি নামে পরিচিত।

৫. অনেক ক্ষেত্রে বিষয়টি যদি তাৎক্ষনিক পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন আদালত মনে করে তবে আদালত অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে এবং একই সাথে রুল জারি করতে পারে। আর যদি প্রাথমিক শুনানিতে আদালত রীট কারী আইনজীবীর বক্তব্যে সন্তুষ্ট সন্তুষ্ট না হয় তবে উক্ত রীট আবেদনটি খারিজ করে দিবে।

৬. এবার প্রতিপক্ষের থেকে রুলের জবাব পাওয়ার পর উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে আদালত চূড়ান্ত শুনানি গ্রহন করবেন।

৭. উক্ত শুনানির উপর ভিত্তি করে আদালত সুচিন্তিত একটা ডিরেকশন দিবেন যা অনেকটা রায়ের মতো বলতে পারেন। আদালতের এই ডিরেকশন প্রদানের মাধ্যমে একটি রীট মামলার চূড়ান্ত নিস্পত্তি হয়ে থেকে।

বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি রীট হয়ে থাকে যে বিষয়গুলো নিয়ে তা হলঃ

১. কারো কোন সরকারি পদে থাকার বৈধতা নিয়ে।

২. কমিটি গঠনের বৈধতা নিয়ে রীট

৩. নিয়োগ প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে রীট

৪. সরকারি কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বিধি বহির্ভুতভাবে কাউকে জমি থেকে উচ্ছেদ করতে চাইলে।

৫. কাউকে কোন পদ থেকে বিধি বহির্ভুতভাবে বহিষ্কার করলে।

৬. সংবিধান পরিপন্থী বা মৌলিক অধিকার পরিপন্থী কোন আইন হলে।

৭. সরকারি কোন বে-আইনি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রীট করতে পারেন

৮. দেশের স্বার্থে বা জন স্বার্থে কোন কিছু ক্ষতিকর হলে আপনি রীট করতে পারবেন

৯. আপনার জমি সরকার অধিগ্রহণ করলে উক্ত অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে

১০. সরকারি কোন সিদ্ধান্তে আপনি সংক্ষুব্ধ হয়ে রীট করতে পারেন।


- মোহাম্মদ তরিক উল্যাহ
অ্যাডভোকেট
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট
০১৭৩৩৫৯৪২৭০ ( কল করার পূর্বে হোয়াটস্অ্যাপে ম্যাসেজ দিন)

লেখক- আইন বিষয়ক উপন্যাস 'নিরু" এবং 'অসমাপ্ত জবানবন্দী', মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস 'মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ' এবং 'একাত্তরের অবুঝ বালক' ।


মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:২৯

শোয়াইব আহমেদ আসিফ বলেছেন: অনেক কিছু জানতে পারলাম, ধন্যবাদ ।

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৫৪

এম টি উল্লাহ বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.