নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
উপন্যাস ‘‘অসমাপ্ত জবানবন্দী’’ ও ‘‘নিরু”, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস ‘‘মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ’’ ও ‘‘একাত্তরের অবুঝ বালক’’ এর লেখক। পেশায়-আইনজীবী। কর্মস্থল- হাইকোর্ট।www.facebook.com/mohammad.toriqueullah
বাংলাদেশের প্রত্যেকটি জেলায় এক বা একাধিক অর্থ ঋণ আদালত আছে। যুগ্ম জেলা জজ পর্যায়ের একজন বিচারক সাধারণত অর্থ ঋণ আদালতের বিচার কাজ করে থাকেন। সরকার এসব বিচার কাজ করার জন্য ২০০৩ সালে অর্থ ঋণ আদালত আইন প্রণয়ন করে। আইনানুযায়ী আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ আদায় সম্পর্কিত যাবতীয় মামলা এ আদালতে দায়ের করতে হয়।
অর্থ ঋণ আদালত আইন, ২০০৩ এর বিধান মোতাবেক খেলাপি ঋণ আদায়ের/ অর্থ ঋণ মামলা দায়েরের প্রাথমিক ধাপ সমূহ হলো ঃ
১) প্রথমে Bank / Non Banking Financial Institution গ্রাহককে ঋণ পরিশোধের জন্য অনুরোধ/ প্রেসার করবে।
২) অনুরোধ/ প্রেসার করে কাজ না হলে ৭ দিন সময় দিয়ে ডিমান্ড নোটিস দিতে হবে।
৩) তারপরও যদি কাজ না হয়, তবে মামলা দায়ের করতে অফিসিয়াল অনুমতি নিতে হবে।
৪) অফিসিয়াল অনুমতি পাওয়ার পর উকিলের মাধ্যমে Legal Notice দিতে হবে।
৫) এরপর গ্রাহককে ১৫ দিন সময় দিতে হবে।
৬) তারপরও যদি Adjust না করে তাহলে মর্টগেজ সম্পত্তি বিক্রি করে পাওনা শোধ না হলে আদালতে মামলা করতে হবে। বিক্রির জন্য পত্রিকায় নিলাম আহবান করা হয়।
[ উল্লেখ্য, যে ক্ষেত্রে ঋণের বিপরীতে স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি বন্ধক রাখা হয়, সে ক্ষেত্রে বাদী-আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে অবশ্যই মামলা দায়েরের পূর্বে ধারা ১২ এর বিধান সাপেক্ষে বন্ধককৃত সম্পত্তি নিলামের মাধ্যমে বিক্রয়ের চেষ্টা করতে হবে। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচিত হয়েছে ১২(৩) ধারায়। উক্ত ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিবাদীর কাছ থেকে কোনো স্থাবর সম্পত্তি বন্ধক রেখে অথবা অস্থাবর সম্পত্তি দায়বদ্ধ রেখে ঋণ প্রদান করলে এবং বন্ধক প্রদান বা দায়বদ্ধ রাখার সময় বন্ধকি বা দায়বদ্ধ সম্পত্তি বিক্রির ক্ষমতা আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করা হয়ে থাকলে, তা বিক্রি না করে এবং বিক্রয়লব্ধ অর্থ ঋণ পরিশোধ বাবদ সমন্বয় না করে অথবা বিক্রির চেষ্টা করে ব্যর্থ না হয়ে এই আইনের অধীনে অর্থঋণ আদালতে কোনো মামলা দায়ের করা যাবে না।’ অর্থাৎ যদি কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে কোনো সম্পত্তি বিক্রির ক্ষমতা দিয়ে কোনো সম্পত্তি বন্ধক দেয়া হয়, তাহলে ওই আর্থিক প্রতিষ্ঠান সেই সম্পত্তি বিক্রি করে বিক্রয়লব্ধ অর্থ ঋণ পরিশোধ বাবদ সমন্বয় করার চেষ্টা করবে। এতেও যদি ঋণ না মেটে কিংবা সম্পত্তি বিক্রির চেষ্টা করে যদি প্রতিষ্ঠানটি ব্যর্থ হয়, কেবল তখনই অর্থঋণ আদালত মামলা দায়ের করা যাবে।]
৭) এছাড়া মর্টগেজকৃত সম্পত্তি নিলাম দিতে ব্যর্থ হলে আদালতে মামলা দায়ের করতে হবে। যাকে অর্থঋণ মামলা বলা হয় ।
বাংলাদেশের প্রত্যেকটি জেলায় এক বা একাধিক অর্থ ঋণ আদালত আছে। যুগ্ম জেলা জজ পর্যায়ের একজন বিচারক সাধারণত অর্থ ঋণ আদালতের বিচার কাজ করে থাকেন। সরকার এসব বিচার কাজ করার জন্য ২০০৩ সালে অর্থ ঋণ আদালত আইন প্রণয়ন করে। আইনানুযায়ী আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ আদায় সম্পর্কিত যাবতীয় মামলা এ আদালতে দায়ের করতে হয়।
**মামলা দায়েরের নিয়মঃ
ক) মামলার বাদী-আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ আদায়ের জন্য অর্থঋণ আদালত আইনের ধারা ৮(১) অনুযায়ী আরজি দাখিলের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট আদালতে মামলা দায়ের করতে পারবেন।
খ)মামলার আরজিতে উপস্থাপন করতে হবে : বাদী-বিবাদীর নাম, ঠিকানা, কর্মস্থল, বাসস্থানের ঠিকানা, দাবির সঙ্গে সম্পর্কিত সব ঘটনা, কোর্ট ফি প্রদানের উদ্দেশ্যে মামলার মূল্যমান, আদালতের এখতিয়ার আছে এ মর্মে বিবরণ এবং প্রার্থিত প্রতিকার।
গ) আরজিতে দুটি তফসিল থাকবে।
প্রথম তফসিলে থাকবে বিবাদীকে প্রদত্ত মূল ঋণ অথবা বিনিয়োগকৃত টাকার পরিমাণ; স্বাভাবিক সুদ/মুনাফা/ভাড়া হিসেবে আরোপিত টাকার পরিমাণ; দণ্ড সুদ হিসেবে আরোপিত টাকার পরিমাণ; অন্যান্য বিষয় বাবদ বিবাদীর ওপর আরোপিত টাকার পরিমাণ; মামলা দায়েরের আগ পর্যন্ত প্রণীত শেষ হিসাবমতে বিবাদী কর্তৃক বাদীর আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ঋণ বা পাওনা পরিশোধ বাবদে জমাকৃত টাকার পরিমাণ; বাদী কর্তৃক প্রদত্ত ও ধার্য মোট এবং বিবাদী কর্তৃক পরিশোধিত মোট টাকার তুলনামূলক অবস্থান।
দ্বিতীয় তফসিলে থাকবে, ওইসব স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি যা বন্ধক বা জামানত রেখে বিবাদী ঋণ গ্রহণ করেছিলেন। সে সম্পত্তির বিস্তারিত বিবরণ ও আর্থিক মূল্য সেখানে উল্লেখ করতে হবে এবং প্রত্যাশিত প্রতিকার চেয়ে একটি হলফনামা লিখে প্রদত্ত ঋণের অর্থ আদায়ের জন্য অর্থঋণ আদালতের বিচারক বরাবর এ মামলাটি দাখিল করা যাবে।
ঘ) সেই সঙ্গে মূল্যানুপাতিক কোর্ট ফি প্রদান করতে হবে।
ঙ) এই আইনে বিবাদী মূল ঋণ গ্রহীতা কিংবা ঋণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তৃতীয় পক্ষ বন্ধকদাতা এবং তৃতীয় পক্ষ গ্যারান্টরকেও বিবাদী শ্রেণিভুক্ত করে মামলা করতে হবে। অর্থাৎ আর্থিক প্রতিষ্ঠান মূল ঋণগ্রহীতার (Principal debtor) বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার সময় তৃতীয় পক্ষ বন্ধকদাতা (Third party mortgagor) বা তৃতীয় পক্ষ গ্যারান্টর (Third party guarantor) ঋণের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকলে, তাদেরকেও পক্ষ করতে হবে।
চ) বিবাদী বা বিবাদীদের প্রতি সমন জারি করতে হবে।
ছ) বিকল্প বিরোধ-নিষ্পত্তির চেষ্টা করতে হবে।
অর্থঋণ আদালত আইন ২০০৩ সালের ৫ম অধ্যায়ে বৈঠক ও মধ্যস্থতার মাধ্যমে বিকল্প বিরোধ-নিষ্পত্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বিবাদী উপস্থিত হলে মধ্যস্থতা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এই আইনের ২২ ধারায়
মনে রাখতে হবে, যে ক্ষেত্রে ঋণের বিপরীতে স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি বন্ধক রাখা হয়, সে ক্ষেত্রে বাদি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে অবশ্যই মামলা দায়েরের পূর্বে ধারা ১২ এর বিধান সাপেক্ষে বন্ধককৃত সম্পত্তি নিলামের মাধ্যমে বিক্রয়ের চেষ্টা করতে হবে। বিবাদী মূল ঋণ গ্রহীতা কিংবা ঋণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তৃতীয় পক্ষ বন্ধকদাতা এবং তৃতীয় পক্ষ গ্যারান্টরকেও বিবাদী শ্রেণিভুক্ত করতে হবে। বিবাদী বা বিবাদীদের প্রতি সমন জারি করতে হবে। আইনের ৭ নম্বর ধারায় সরাসরি, বিকল্প পদ্ধতি এবং অতিরিক্ত সমন জারির বিধান বর্ণিত আছে। সমন জারির পর, বিবাদীগণ ৯ ধারা অনুসারে ও ১০ ধারায় বর্ণিত সময়সীমার মধ্যে লিখিত জবাব দাখিল করবে এবং মামলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে। বিবাদী লিখিত জবাবের সঙ্গে দালিলিক প্রমাণাদি এবং সেই সঙ্গে একটি হলফনামা দাখিল করতে হবে। যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাদী লিখিত জবাব প্রদান না করে তাহলে একতরফাভাবে মামলা নিষ্পত্তি হয়ে যাবে।
অর্থঋণ আদালতের রায়, আদেশ বা ডিক্রি সকল বিবাদিগণের বিরুদ্ধে যৌথ ও পৃথকভাবে কার্যকর হবে। ডিক্রি জারির মামলা সব বিবাদি-দায়িকের বিরুদ্ধে একই সঙ্গে পরিচালিত হবে। কাউকে বাদ দেওয়া যাবে না। ডিক্রি জারির মাধ্যমে দাবি আদায় হওয়ার ক্ষেত্রে আদালত প্রথমে মূল ঋণ গ্রহীতার সম্পত্তি যতদূর সম্ভব আকৃষ্ট করবেন। মূল ঋণ গ্রহীতার সম্পত্তির পরও যদি দাবি আদায় না করা যায় তাহলে তৃতীয় পক্ষ বন্ধকদাতা ও তৃতীয় পক্ষ গ্যারান্টরের সম্পত্তি যতদূর সম্ভব আকৃষ্ট করার ব্যবস্থা করতে হবে। তৃতীয় পক্ষ বন্ধকদাতা ও তৃতীয় পক্ষ গ্যারান্টর যদি দাবি পরিশোধ করে তাহলে ডিক্রি তাদের অনুকূলে স্থানান্তরিত হবে এবং তারা মূল ঋণ গ্রহীতার বিরুদ্ধে তা প্রয়োগ করতে পারবেন।
অনেকক্ষেত্রে দেখা যায় বিবাদীর অজ্ঞাতে কিংবা বিবাদী কিছু বুঝে ওঠার আগে কিংবা অর্থঋণ মামলা তেমন বুঝেন না এমন কোন বিজ্ঞ আইনজীবী কর্তৃক মামলা পরিচালনার কারণে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে মামলার রায় হয়ে যায়। তখন বিবাদী খৈ হারিয়ে পেলে এবং কি করবে তাও বুঝতে পারে না। এমনকি অনেক সময় দেখা যায় সামাস্য ব্যাংক ঋণের বিপরীতে জামানত বাবদ রাখা মূল্যবান মর্গেজকৃত সম্পত্তি নিলাম হয়ে যায়। তাই অর্থঋণ মামলায় শুরু থেকেই বাড়তি সতর্কতা জরুরি এবং রায়-ডিক্রি হয়ে গেলেও হতাশ হওয়ায় কিছু নেই। আইনি প্রক্রিয়ায় আপনি সুরক্ষা পেতে পারেন।আজতে আমরা রায়-ডিক্রি হয়ে গেলে কি কি শর্তে আপীল, রিভিশন এবং কোন কোন প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের সংশ্লিষ্টতায় রীট দাখিল করে প্রতিকার পাওয়া যায় তা নিয়ে আলোচনা ।
**আপীল, রিভিশন এবং অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ/রীট
এই আইনের ৪১, ৪২ এবং ৪৩ ধারায় যথাক্রমে আপিল ও রিভিশনের বিধানাবলি বর্ণিত আছে।
**আপীল
এই আইনের ধারা-৪১ অধীনে ডিক্রীকৃত টাকার পরিমাণ ৫০ (পঞ্চাশ) লক্ষ টাকা অপেক্ষা অধিক হয়, তাহলে হাইকোর্ট বিভাগে, এবং যদি ডিক্রীকৃত টাকার পরিমাণ ৫০ (পঞ্চাশ) লক্ষ টাকা অথবা তদ্অপেক্ষা কম হয়, তাহলে জেলাজজ আদালতে আপীল দায়ের করতে হবে। আপীলকারী, ডিক্রীকৃত টাকার পরিমাণের ৫০% এর সমপরিমাণ টাকা আদালতে জমা করে আপীল দায়ের করতে হবে। তবে বিবাদী-দায়িক ইতোমধ্যে ১৯(৩) ধারার বিধান মতে ১০% (দশ শতাংশ) পরিমাণ টাকা নগদ অথবা জামানত হিসাবে জমা করে থাকলে, অত্র ধারার অধীনে আপীল দায়েরের ক্ষেত্রে উক্ত ১০% (দশ শতাংশ) টাকা উপরি-উল্লিখিত ৫০% (পঞ্চাশ শতাংশ) টাকা হতে বাদ যাবে৷
তবে এক্ষেত্রে বাদী-আর্থিক প্রতিষ্ঠান এই ধারার অধীনে কোন আপীল দায়ের করলে, তাকে উপরি-উল্লিখিত নিয়মে কোন টাকা বা জামানত জমা দান করতে হবে না৷
**আপীল নিষ্পত্তির সময়সীমা
আপীল আদালত, আপীল গৃহীত হবার পরবর্তী ৯০ (নব্বই) দিবসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে এবং ৯০ (নব্বই) দিবসের মধ্যে আপীলটি নিষ্পত্তি করতে ব্যর্থ হলে, আদালত, লিখিতভাবে কারণ উল্লেখপূর্বক, উক্ত সময়সীমা অনধিক আরো ৩০ (ত্রিশ) দিবস বর্ধিত করতে পারবে৷
**রিভিশন
এই আইনের ধারা-৪২ অধীনে কোন আদালত, আপীলে প্রদত্ত রায় বা ডিক্রীর বিরুদ্ধে কোন রিভিশনের দরখাস্ত গ্রহণ করা যাবে না, যদি না দরখাস্তকারী, আপীল আদালত কর্তৃক প্রদত্ত বা বহালকৃত ডিক্রীর টাকার ৭৫% এর সমপরিমাণ টাকা, আপীল দায়ের কালে দাখিলকৃত ৫০% টাকাসমেত, উক্ত পরিমাণ টাকার স্বীকৃতি স্বরূপে সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানে, অথবা বাদীর দাবী স্বীকার না করলে জামানত স্বরূপে ব্যাংক ড্রাফট, পে-অর্ডার বা নগদায়নযোগ্য অন্য কোন বিনিমেয় দলিল (Negotiable Instrument) আকারে ডিক্রী প্রদানকারী আদালতে জমা করে উক্তরূপ জমার প্রমাণ দরখাস্তের সহিত আদালতে দাখিল করে৷
তবে বাদী-আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে এই ধারার অধীনে রিভিশন দায়ের করলে, তাকে উপরি-উল্লিখিত নিয়মে কোন টাকা বা জামানত জমা বা দাখিল করতে হবে না৷
**রিভিশন নিষ্পত্তির সময়সীমা
উচ্চতর আদালত, রিভিশনের দরখাস্ত গৃহীত হবার পরবর্তী ৬০ (ষাট) দিবসের মধ্যে ইহা নিষ্পত্তি করবে, এবং ৬০ (ষাট) দিবসের মধ্যে রিভিশন নিষ্পত্তি করতে ব্যর্থ হলে, আদালত, লিখিতভাবে কারণ উল্লেখপূর্বক, উক্ত সময়সীমা অনধিক আরো ৩০ (ত্রিশ) দিবস বর্ধিত করতে পারবে।
**সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগে আপীল
এই আইনের ৪৩ ধারার অধীনে হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক আপীল বা রিভিশনে প্রদত্ত কোন রায়, ডিক্রী বা আদেশের বিরুদ্ধে আপীল বিভাগে আপীল দায়েরের জন্য ঋণ গ্রহীতা-বিবাদীকে আপীল বিভাগ অনুমতি প্রদান করার ক্ষেত্রে, সংগত মনে করলে, এই আইনের ৪২(১) ধারার অনুরূপ পদ্ধতিতে ডিক্রীকৃত টাকার অপরিশোধিত অবশিষ্টাংশের যে কোন পরিমাণ টাকা নগদ বাদী-আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অথবা জামানতস্বরূপ ডিক্রী প্রদানকারী আদালতে জমাদান করার আদেশ প্রদান করবে।
**অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের বিরুদ্ধে রীট মামলা
অর্থঋণ আদালতের অন্তর্বর্তী আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে না, সে ক্ষেত্রে রিট মামলা দায়ের করা যাবে।
**দিবস গণনার ক্ষেত্রে
এই আইনের ৪৮ ধারার অধীনে দিবস গণনার ক্ষেত্রে কেবলমাত্র বিচারকের কার্যদিবস গণনা করা হইবে এবং সাময়িকভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারকের কার্য দিবসও অনুরূপ গণনার অন্তর্ভুক্ত হইবে৷
অর্থঋণ মামলায় তামাদি বিষয়ে জটিলতা!
অর্থঋণ আদালত আইন, ২০০৩-এর ৪৬ ধারায় বলা হয়েছে:
‘(১) দ্য লিমিটেশন অ্যাক্ট, ১৯০৮-এ ভিন্নতর বিধান যাহাই থাকুক না কেন, কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান সম্পাদিত চুক্তি বা চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ঋণগ্রহীতার নিকট হইতে ঋণ পরিশোধ সূচী (Repayment schedule ) অনুযায়ী ঋণ পরিশোধ শুরু হইবার পরবর্তী—
ক) প্রথম এক বৎসরে প্রাপ্য অর্থের অন্যূন ১০%, অথবা
খ) প্রথম দুই বৎসরে প্রাপ্য অর্থের অন্যূন ১৫%, অথবা
গ) প্রথম তিন বৎসরে প্রাপ্য অর্থের অন্যূন ২৫%, পরিমাণ অর্থ আদায় না হইলে উপধারা (২)-এর বিধান সাপেক্ষে উহার পরবর্তী এক বৎসরের মধ্যে মামলা দায়ের করিবে।
(২) আর্থিক প্রতিষ্ঠান উপধারা (১)-এ উল্লিখিত মেয়াদের মধ্যেই ঋণ পরিশোধের তফসিল পুনঃতফসিল (Reschedule ) করিয়া থাকিলে উক্ত উপধারা (১)-এর বিধান, তদনুযায়ী প্রয়োজনীয় পরিবর্তন সাপেক্ষে (Mutatis Mutandis ), নতুনভাবে কার্যকর হইবে।
(৩) উপধারা (১)-এ উল্লিখিত ঋণ পরিশোধ সূচি (Repayment schedule) অনুযায়ী ঋণ পরিশোধের নির্ধারিত সাকল্য মেয়াদ ৩ (তিন) বৎসর অপেক্ষা কম হইবার ক্ষেত্রে উক্ত নির্ধারিত সাকল্য মেয়াদের মধ্যে আদায়ের পরিমাণ ২০% অপেক্ষা কম হইলে, আর্থিক প্রতিষ্ঠান উপধারা (৪)-এর বিধান সাপেক্ষে উহার পরবর্তী এক বৎসরের মধ্যে মামলা দায়ের করিবে।
(৫) উল্লিখিত মেয়াদান্তে কোনো মামলা দায়ের করা হইলে আদালত অবিলম্বে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীকে লিখিতভাবে অবহিত করিবে এবং কোনো কর্মকর্তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার কারণে মেয়াদের মধ্যে উক্ত মামলা দায়ের না হইলে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ অনুরূপ দায়ী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে এবং এই উপধারার অধীন অবহিত হইবার ৯০ (নব্বই) দিবসের মধ্যে গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে সরকার এবং আদালতকে অবহিত করিবে।’
অর্থঋণ আদালত আইনের ৪৬ ধারা মোতাবেক বিভিন্ন শর্ত ভঙ্গ করলে পরবর্তী এক বছরের মধ্যে ব্যাংকার মামলা করতে বাধ্য। এই এক বছরকে অনেক বিজ্ঞ আইনজীবী তামাদির সময় বলে আখ্যায়িত করেন। আবার কেউ কেউ মনে করেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মামলা না করলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীকে আদেশ দিয়েই ক্ষান্ত হয়েছে, মামলা কি চলতে পারে, নাকি না পারে, এ ব্যাপারে আইন যেহেতু নিশ্চুপ, সেহেতু এটা বলা যায় না যে ধারা ৪৬ সম্পূর্ণভাবে আদেশব্যঞ্জক অর্থ প্রকাশ করে ( mandatory implication ), বরং এটা একটা নির্দেশক বা নির্দেশনামূলক (directory one)। সে কারণে এ মামলা তামাদি দ্বারা বারিত নয় (2009) [14BLC (HC)-11]
অর্থঋণ আদালত আইনের ৪৬ ধারা মোতাবেক ব্যাংকারদের জন্য অর্থ আদায়ের ক্ষেত্রে তামাদি আইন, ১৯০৮-এর সংশ্লিষ্ট বিধান প্রযোজ্য রইল না।
- মোহাম্মদ তরিক উল্যাহ
অ্যাডভোকেট
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট
০১৭৩৩৫৯৪২৭০ ( কল করার পূর্বে হোয়াটস্অ্যাপে ম্যাসেজ দিন)
লেখক- আইন বিষয়ক উপন্যাস 'নিরু" এবং 'অসমাপ্ত জবানবন্দী', মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস 'মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ' এবং 'একাত্তরের অবুঝ বালক' ।
১৯ শে এপ্রিল, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১৮
এম টি উল্লাহ বলেছেন: মামলার সর্বশেষ অবস্থা কি?
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে এপ্রিল, ২০২২ বিকাল ৫:৪৩
পিরা২০২২ বলেছেন: আমার উপর একের পর এক অবিচার হচ্ছে, সন্তান হত্যার বিচারও পেলাম না, নিজেও ২০১৭ থেকে জিবিএস ভাইরাসে পুরো শরীর পারালাইসিস হয়ে যায় - এখনও বসা থেকে উঠতে পারিনা , স্বাভাবিক ভাবে চলাচল করতে পারিনা - তার উপর মামলা !! কে লন নিয়েছিল - আমি নাকি গ্রেনটার ছিলাম ১০ বছর আগে - এখন পুলিশ আমাকেই খুজছে - মুল ঋণ গ্রহিতাকে পাওয়া যায় না