নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সৈয়দ মামুনূর রশীদ

সৈয়দ মামুনূর রশীদ

কাঙাল মানুষ, কাঙাল মন / আগা-গোড়া কাঙালী জীবন/ দুঃখ করি না, দুঃখ দিই না/ জোৎস্নার দিঘীতে স্নান দিয়ে/ সুখে ভাসতে চাই।

সৈয়দ মামুনূর রশীদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রবীণের যুক্তি আর নবীনের শক্তি - দুইয়ে মিলে সমাজের মুক্তি;

২৭ শে মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৩:৩৬

নবীণ আর প্রবীণের সমন্বয়ে দাঁড়ায় একটি প্রকৃত সমাজ ব্যবস্থা। বাংলাদেশে আবহমানকাল ধরে যে সমাজব্যবস্থা প্রচলিত রয়েছে সেখানে প্রবীণদের ভুমিকা অত্যন্ত উজ্জ্বল এবং সম্মানজনক। আমাদের সমাজে সাধারণত প্রবীণেরা তাদের তৃতীয় প্রজন্ম গঠনে উল্লেখযোগ্যভাবে ভুমিকা রেখে আসছিলেন। এতে করে তৃতীয় প্রজন্মের সামাজিক ও নৈতিক মুল্যবোধসহ নিরাপদ ও আনন্দময় শৈশব নিয়ে বেড়ে উঠার পাশাপাশি তাদের দ্বিতীয় প্রজন্মের নির্বিঘেœ আয়-রোজগার ও ক্যারিয়ার গঠন হয় অত্যন্ত সহজ ও মসৃণ। গত দুই দশক ধরে প্রযুক্তি নির্ভর নানামুখি উন্নয়ণ কর্মকান্ডের ফলে বৈশ্বিক পরিবর্তনের পাশাপাশি ভাঙন ধরেছে আমাদের সেই প্রাচীণ সমাজ ব্যবস্থায়। পরিবার থেকে দুর দুরান্তে কর্মস্থল, মানুষের মধ্যে অতিমাত্রায় যান্ত্রিকতার প্রভাব, সহনশীলতার অভাব, মুল্যবোধের অবক্ষয়সহ নানাবিধ কারণে মানুষ এখন যৌথ পরিবার ভেঙে ক্রমশ একক পরিবারে আগ্রহি হয়ে উঠছে। যার ফলে সমাজের প্রবীণ জনগোষ্ঠি যেমন অবহেলা ও অনিশ্চয়তার শিকার হচ্ছে তেমনি অনিরাপদ এবং নানারকম আশংকাজনক পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে শিশু কিশোর। এ দুই প্রান্তের দুই জনগোষ্ঠির সমস্যাগুলো ভিন্ন ভিন্ন হলেও উদ্ভব সংকটগুলো পারস্পারিক সম্পর্কিত। এজন্য দেখা যায় দেশে বাচ্চাদের ডে-কেয়ার এর পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বৃদ্ধাশ্রম। সহায়-সম্পত্তি হারানো প্রবীণেরা বৃদ্ধাশ্রমে যেমন শান্তি খুঁজে পাচ্ছে না তেমনি ডে-কেয়ার, বেবিসিটার এবং কাজের বুয়াদের হাতে শিশুরা নানাভাবে হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে প্রতিনিয়ত। শুধু তাই নয় নৈতিক ও সামাজিক মুল্যবোধ ছাড়া অনিরাপদ ও পারিবারিক মমত্বহীন ব্যবস্থাপনায় বেড়ে উঠা এসকল শিশুরা জড়িয়ে পড়ছে আরো ভয়াবহ অপরাধ প্রবণতায়। এধরণের সামাজিক অবক্ষয়ের কথা ভেবে বোধহয় প্রিয় নবী বলেছিলেন, যারা ছোটদের স্নেহ করে না এবং বড়দের সম্মান করে না তারা আমার দলের অর্ন্তভুক্ত নয়’। একসময় বাংলাদেশের উন্নয়ণ সেক্টরে প্রবীণদের নিয়ে আলাদা কোন কার্যক্রম দেখা যেতো না। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উৎকর্ষে বিশ্বব্যাপী প্রবীণ জনসংখ্যা দ্রুত হারে বাড়ছে। উদ্বেগজনক বিষয় হলো অতি প্রবীণদের (৮০+) সংখ্যা বাড়ছে সবচেয়ে দ্রুতগতিতে। এছাড়াও আগামিতে আসছে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব। এ বিপ্লবের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপি চলমান সমাজ ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ এধরণের পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয় প্রবীণ আর শিশু। তখনকার কর্ম-পরিবেশ, ধরণ, প্রকৃতির সাথে আমাদের ভারসাম্য রক্ষায় সার্বিক প্রস্তুতির পাশাপাশি প্রবীণদের ক্ষেত্রে বিশেষ উদ্যোগ প্রয়োজন। এধরণের বিভিন্ন কারণে ইদানিং সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে প্রবীণদের কল্যাণে নানামুখি উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে দেখা যায়। প্রবীণদের শুধু পারিবারিক ও সামাজিক সমস্যা নয় ভিন্নধরণের নতুন নতুন শারিরীক সমস্যারও মুখোমুখি হতে হয় প্রতিনিয়ত। আমাদের দৃষ্টির সামনে বিশেষ করে সমাজের অস্বচ্ছল ও প্রতিবন্ধি প্রবীণেরা অসহায় অবস্থায় দিনাতিপাত করে - যা সভ্য যুগে কোনভাবেই কাম্য নয়। প্রবীণদের শারিরীক চিকিৎসার ক্ষেত্রে আমাদের বিশেষ উদ্যোগ প্রয়োজন। স্বাভাবিক কারণে শারিরীকভাবে প্রবীণেরা নাজুক অবস্থায় থাকে। বিভিন্নধরণের রোগব্যাধি তাদের শরীরে বাসা বাঁধে। এজন্য প্রবীণদের সবচেয়ে জরুরী প্রয়োজন হলো স্বাস্থ্যসেবা। বার্ধক্যের ভিন্নতর শারিরীক সমস্যাগুলো মোকাবেলায় বাংলাদেশে পর্যাপ্ত প্রশিক্ষিত চিকিৎসক প্রয়োজন। শিশুদের চিকিৎসায় যেমন বিশেষ প্রশিক্ষণ ও মানসিকতাসম্পন্ন চিকিৎসক প্রয়োজন তেমনি প্রবীণদের বার্ধক্যজনিত রোগের চিকিৎসায়ও প্রশিক্ষিত ও সহনশীল চিকিৎসক প্রয়োজন হয়। সুতরাং প্রবীণদের কল্যাণে জরুরী ভিত্তিতে পর্যাপ্ত সংখ্যক চিকিৎসক, নার্স, পুষ্টিবিদ, ডেন্টাল সার্জন, থেরাপিস্ট, মনোবিজ্ঞানী, সমাজকর্মী, আইনজ্ঞ ইত্যাদি পেশাজীবী তৈরির বলিষ্ঠ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। আরো একটি জরুরি বিষয় হলো কর্মক্ষম প্রবীণেরা যখন কর্মহীন হয়ে পড়ে তারা দ্রুত অসুস্থ হয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে তাদের যোগ্যতানুযায়ী কাজের সাথে সম্পৃক্ত করার বিষয়টিও আমাদের বিবেচনায় রাখা উচিত। প্রবীণদের কল্যাণে অবসরে যাওয়া দেশের সুদক্ষ মানবসম্পদকে দেশের বিভিন্ন জাতিগঠনমূলক কর্মকান্ডে জড়িত হওয়ার সুযোগ দেওয়ার কথা কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করতে পারে। যদি অবসর নেয়া প্রবীণদের এলাকা ভিত্তিক গ্রুপ গঠন করে তাদের স্ব-স্ব যোগ্যতাভিত্তিক তৃতীয় প্রজন্মের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তাসহ নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্ম-উপযোগি করে দায়িত্ব দেয়া যায় তাহলে তারা পরিবারে নিজেদের সন্মানবোধ বজায় রাখার পাশাপশি সমাজ উন্নয়ণেও ভুমিকা রাখতে সক্ষম হবে। প্রবীণদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা এবং নবীণদের শক্তি ও সাহস এ দুইয়ের সমন্বয়ে দেশ ও সমাজ উন্নয়ণে অধিকতর কার্যকর উদ্যোগ নেয়া সম্ভব। বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান প্রবীণ জনগোষ্ঠী সংশ্লিষ্ট সমস্যা মোকাবেলার ক্ষেত্রে প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে বার্ধক্য বিষয়ে ব্যক্তি, পরিবার এবং সংগঠনের অবগতি, সচেতনতা, সক্রিয়তা, আগ্রহ এবং উদ্যোগের ঘাটতি এবং অনীহা। চলমান নাগরিক সেবাকেন্দ্রে গিয়ে সেবা গ্রহণের সামর্থ্য ও সুযোগ প্রবীণদের কতটা আছে? বর্তমান সরকার যথেষ্ট প্রবীণবান্ধব হওয়া সত্বেও বাংলাদেশে আমরা এসব বিষয়ে বেশ পিছিয়ে আছি। বিশেষ করে দুস্থ ও প্রতিবন্ধি প্রবীণদের প্রতি বিশেষ নজর দেয়া প্রয়োজন। সুতরাং প্রবীণদের নানাধরণের সমস্যা মোকাবেলায় সরকারি উদ্যোগের অংশীদার হয়ে বিশিষ্ট নাগরিক এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনদের আরো ব্যাপকভাবে এগিয়ে আসতে হবে। নাগরিকদের সক্রিয় সমর্থন ও অংশিদারিত্বের মাধ্যমে দেশে বার্ধক্যবীমা, সার্বজনীন নাগরিক পেনশন ব্যবস্থা ইত্যাদির প্রচলন করা সবচেয়ে জরুরি। জাতীয় প্রবীণ নীতিমালা ২০১৩ অনুযায়ী বাংলাদেশে ৬০ বা তদুর্ধ বয়সীরা হচ্ছেন প্রবীণ। মহামান্য রাষ্ট্রপতি এসকল প্রবীণদের ‘সিনিয়র সিটিজেন’ ঘোষণা করেছেন। র্বতমান সরকার ভশিন ২০২১ র্কমপরকিল্পনায় প্রবীণদরে র্সাবকি কল্যাণ সাধনে নানামুখী র্কমসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছ।েআগামীতে প্রবীণদরে সুযোগ-সুবধিা বৃদ্ধরি লক্ষ্যে জাতীয় প্রবীণ নীতমিালা বাস্তবায়ন এবং প্রবীণ উন্নয়ন ফাউন্ডশেন গড়ে তোলার উদ্যোগ নয়ো হয়ছেে । প্রবীণদরে সুরক্ষা ও নরিাপত্তার জন্য পতিামাতার ভরণ-পোষণ আইন ২০১৩ প্রণয়নসহ বয়স্ক ভাতা র্কমসূচরি মাধ্যমে উপকারভোগীর সংখ্যা, ভাতার হার এবং পরমিাণ যথষ্টেভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে। জাতসিংঘরে সদস্যভুক্ত সকল দশেরে ন্যায় বাংলাদশেে যথাযথ গুরুত্ব ও র্মযাদায় আর্ন্তজাতকি প্রবীণ দবিস ২০১৮ পালতি হয়। এবাররে প্রতপিাদ্য মানবাধকিার প্রতষ্ঠিায় প্রবীণদরে স্মরণ পরম শ্রদ্ধায়’-এর সাথে মলি রখেে বলা যায় য,ে বশ্বি মানবাধকিার র্অজনে প্রবীণদরে ভূমকিা অনস্বীর্কায। একথা মনে রাখা জরুরী যে, প্রবীণদের জন্য পরিবার ও সমাজে যথাযথ মর্যাদা, শ্রদ্ধা প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে তাদের জীবন যাপন নিরাপদ ও নিশ্চিত করা সম্ভব হলে আমাদেও শিশু কিশোরদের জীবনও নিরাপদ ও নৈতিকতায় পরিপুর্ণ হয়ে উঠবে। নবীন ও প্রবীণের সমন্বয়ে গড়ে উঠবে একটি নিরাপদ সুখি সমৃদ্ধ সমাজ ব্যবস্থা। এটি প্রবীণদের প্রতি আবেগ-অনুকম্পা অথবা দয়া-দাক্ষিণ্য নয়, এটি তাদের অধিকার আর প্রাপ্য সন্মান।





মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৩:৪৮

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: আমাদের দেশের নবীন প্রবীনরা এখন চাঁদাবাজি করে জায়গায় জায়গায়।
তবে আপনার চিন্তাভাবনার সাথে আমি একমত।

২| ২৭ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ৮:১৭

রাজীব নুর বলেছেন: এই দেশ নিয়ে একসময় আমি খুব আশাবাদী ছিলাম। আমার আশা গুলো সব মরে গেছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.