![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মাথার কুচকুচে কালো চুল দেখে লুৎফুন্নেসার বয়স হিসেব করা হলে হিসেবটা মিথ্যে হবে। লুৎফুন্নেসার বয়স হয়েছে। শরীরটা এখনও তেমন ভাঙ্গে নাই বলে প্রথম দেখাতে তাকে বায়ান্নো-তেপান্নোর উপর মনে হয় না। শরীর বয়সটাকে আটকে রাখলেও মনটা অবশ্য বুড়িয়ে গেছে। আজকাল মৃত্যু ভীতি মনে বাসা বেঁধেছে। প্রতি মূর্হুতে তার মনে হয় আর যদি ছেলে - মেয়ে , পাড়া-প্রতিবেশীদের কখনও না দেখি? মৃত্যুভীতির পেছন পেছন এসেছে স্মৃতি। অতীত স্মৃতি। যাই দেখেন, শুনেন তাতেই পুরানো দিনের কথা মনে পড়ে তার। চোখেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। এর কতটা অসুখ আর কতটা আনন্দ-বেদনার তার হিসেব তিনি রাখেন না। করেন না। কেবল খেয়াল করেন আজকাল পানিতে ভর্তি হয়ে আসে চোখ দুটো। এই যেমন এখন ভর্তি। অথচ পানি আসার মত কোন কথা আসলাম বলে নাই। লুৎফুন্নেসার বড় সন্তান এই আসলাম। মায়ের চোখে পানি দেখেও যেন সে দেখে না। তার নজরটা এখন গাড়ির খোলা জানালার বাইরে।
লুৎফুন্নেসাও গাড়ির অপর জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছেন। সাধারনত গাড়ির জানালাগুলো বন্ধই থাকে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রন ছাড়া তার এ ছেলেটা চলতে-ফিরতে পারে না। অথচ তিনি এসির হাওয়া খেতে পারেন না। শ্বাস কষ্ট হয়। আসলামের খুব ইচ্ছা ছিল তার সাড়ে তিন হাজার বর্গফুটের পুরো ফ্ল্যাটটা ফুল এসি করে ফেলবে। কিন্তু মায়ের জন্য পারা গেল না। আসলামের মাতৃভক্তির পরিমান অসাধারন না। সাধারন। তাই সে মাঝে মাঝে মাকে বলেও ফেলে , আপনার জন্য পুরোটা এসি করা গেল না। দিন কি সবার সমান যায়?
লুৎফুন্নেসার এখনকার চোখের পানির সাথে এসির হাওয়ার কোন সর্ম্পক নাই। আজ তার কেবলই পুরানো দিনের কথা মনে পড়ছে। আসলামের বাবার কথা মনে পড়ছে। এ রাস্তা দিয়ে ছাতা মাথায় দিয়ে প্রতিদিন উনি কাজে যেতেন, আসতেন। আসলাম, আশফাক আর মুন্নী তার হাত ধরে স্কুলে যেত, বিকেলে মাঝে মাঝে বাজারে। রোদ -ঝড় - বৃষ্টিতে মোটা কাঠের ডাটের ছাতা মাথায় দিয়ে এ রাস্তা ধওে উনি জীবনের চৌত্রিশটা বছর হেঁটেছেন। তার সন্তানরা হেঁটেছে, দৌড়েছে। মানুষ হয়েছে। আল্লাহ যখন ছেলেদের গাড়ি হাঁকাবার ক্ষমতা দিয়েছে তখন উনি নাই। আসলামের বাবা মারা গেছে আজ বছর দশেক। জীবনে যে ছেলে-মেয়েদের মানুষ করার জন্য এত কষ্ট করল মানুষটা, তাদের দুটো পয়সা ভোগ করে যেতে পারলেন না। ভাবতেই হু-হু করে উঠে লুৎফুন্নেসার বুক। একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে টিস্যু দিয়ে চোখের পানি মুছতে থাকেন তিনি।
আসলাম খেয়াল করে তার ড্রাইভার গাড়ির কাঁচ দিয়ে ঘনঘন লুৎফুন্নেসাকে দেখছে। একটু বিরক্ত হয় আসলাম। মা এসব কি শুরু করল? বিরক্ত ভরা গলায় মাকে বলে , কি শুরু করলা মা? আমি কি এমন বলেছি যে তুমি ওমন শুরু করলা?
লুৎফুন্নেসা উত্তর দেয় না। বাইরে তাকিয়ে থাকে। একতলার সরকারী এ কলোনীগুলো সেই আগের মত আছে। রাস্তায় মানুষ বেড়েছে। সেকালের লাল ইটের রাস্তার উপর এখন বালু- পিচের কালো পোচ। সরকারী বাসার আশেপাশে দু’চারটা ঘর তুলে ভাড়া দেবার হারটা একটু যেন বেশীই। আগের চেয়ে তাই হয়ত কলোনীটা এখন অনেক বেশী ঠাসাঠাসি দেখায়। তারপরও এরা আজও বাসার সামনে দু’চার লাইন বেগুন লাগায়। টমেটো, মরিচ, লাউয়ের মাচাও বাদ যায় না। লুৎফুন্নেসা যেভাবে লাউয়ের মাচায় ছেঁড়া স্যান্ডাল কিংবা ভাঙ্গা মাটির হাঁড়ি ঝুলিয়ে দিতেন সেকালে , তেমন মাচাও এ কালে কম না। বাসার সামনে মহিলাদের জটলা, ছেলে-মেয়ের গাড়ির পেছনে দৌড়া-দৌড়ি কিংবা সরকারী বাসা থেকে পানি নেবার জন্য কলস হাতে বস্তির ছোট মেয়েদের ঘোরাঘুরি সব যেন একই আছে।
লুৎফুন্নেসার মনে হয় তার কালো চুলের মত সময় যেন এ সরকারী কোলনীতে থমকে আছে। কেবল মানুষ পাল্টেছে । লুৎফুন্নেসা এ জায়গায় ছেড়েছেন আজ পনের বছর। এ পনের বছরে তার জীবনে অনেক পরিবর্তন এসেছে। তিনি বুড়িয়ে গেছেন। আসলামের বাবা সবাইকে ছেড়ে চলে গেছে। বড় ছেলেটার ঘর-বাড়ি বানানোর ব্যবসাটা ফুলে-ফেঁপে উঠেছে। ছোট ছেলেটা দেশ ছেড়ে বাইরে। মেয়েটাও বিয়ের পর প্রবাসী। লুৎফুন্নেসা এখন টিস্যু দিয়ে চোখ মুছেন। তার দেখাশোনার জন্য বাসায় সবসময় একটা কাজের মানুষ থাকে। কত কি পাল্টেছে কিন্তু এই কলোনীটা যেন এখনও পাল্টে নাই। সবকিছু আগের মত। এমন জায়গায় এসে আসলাম কিভাবে ওমন কথা বলে?
কথাটা তেমন কিছুই না। বড় রাস্তা থেকে মোড় ঘুরিয়ে তাদের কালো গাড়িটা যখন গলির ভেতর ঢুকে তখন আসলাম খালি বলে, দেখছেন কি অবস্থা? কত কত জায়গা খালি পড়ে আছে এ লাট সাহেবদের জন্য? সরকারী জায়গায় আবার ঘরের সামনে একেকজন বাগানও করেছেন। আশেপাশে দু’চারটা ঘরও তুলেছে দেখছি। ভাড়া খাচ্ছে। এখানে এক-একটা বড় বিল্ডিং তুললে সরকারেরও লাভ, জায়গাও সাশ্রয় হয়। শহরের ভেতরের এত দামী জায়গায় লাউ-কদুর ক্ষেত না করলে কি হয় না? যত্তোসব!
এ কথাটা শুনেই লুৎফুন্নেসার চোখে জল আসে তখন। খুবই নিরীহ এ কথায় তার চোখে পানি আসাটা কি ঠিক হল? ঠিক না। কিন্তু লুৎফুন্নেসার মনে আছে এই আসলামই স্কুল থেকে ফিরে প্রতিদিন নিড়ানী হাতে ওদের বাসার সামনের লাল শাকের ছোট ঘেরটার দিকে দিত দৌড়। বাবার সাথে এক সাথে ঘের থেকে লালশাক তুলে আনত। সেই সেবার যখন গলির মুখের তিনতলার বিল্ডিং এর দু’তলায় এ আসলামের বাবা একটা নতুন ঘরের খবর আনে তখন এই আসলামই বেঁকে বসে। ওখানে গেলে কি আর তার বাগান হবে? লালশাকগুলো কে দেখবে? যাওয়া যাবে না। ছেলের গোঁয়ারতুমিতে আর তাদের যাওয়া হয় না। জীবনের আটাশটা বছর একই ঘরের সামনে লাল-পালং আর মরিচ ক্ষেতে পানি দিয়ে জীবন বিকেলবেলা গুলো কাটিয়ে দিল লুৎফুন্নেসা। ওরাই ছিল তার অবসরের সঙ্গী। সেই আসলাম কিনা এখন এসবকে বলে যত্তোসব ?
আসলামের মা যখন শুকনো চোখে বাইরের দিকে তাকিয়ে এসব ভাবছিল তখন আসলামের মাথায় চলছে অন্য চিন্তা। বড় বটগাছের পাশের খালি জায়গাটুকুর লিজ পেয়েছে তার কোম্পানী সরকার থেকে। পাক্কা দেড় কোটি টাকা সরকারী কোষাগারে দিয়ে আর পাঁচ কোটি টাকায় চেয়ার-টেবিলকে খুশি করে জায়গাটা বাগিয়েছে তার কোম্পানী। জায়গাটা বিশাল। আনায়সেই একটা সিটি করতে পারে সে। শহরের ভেতর ছোট শহর। জায়গাটা রাস্তার সাথেই। সমস্যা দুটো। প্রথমত জায়গার কোনায় কয়েকটা ঝুপড়ি ঘর আছে। ওদের তাড়াতে হবে। দ্বিতীয়ত, মধ্যবিত্ত ছাড়া উচ্চবিত্তরা এ জায়গায় ফ্ল্যাট কিনতে আসবে না। চারদিকে সব নিচু স্তরের সরকারী কেরানীদের ছড়াছড়ি। সারাদিন মুফতে একের পর এক চা খায় এরা আর পান খেয়ে তার রস এখানে-সেখানে থুথুর সাথে ছড়িয়ে দেয়। আশেপাশে কোথাও কোন উঁচু ভবন নাই। জায়গার অবস্থানের উপর সামাজিক মর্যাদা নির্ভর করে। এ জায়গায় পাঁচ হাজার বর্গফুটের ফ্ল্যাট যতটা আভিজাত্য দিতে পারবে তার চেয়ে গুলশানে সাড়ে দশ হাত বাই সাড়ে দশ হাতের এক রুমের সামাজিক মর্যাদা অনেক বেশী। লাউ-কদু -ছেঁড়া জুতোকে যে এরা কবে ছাড়তে পারবে!
এ এলাকায় লুৎফুন্নেসা আজ প্রায় বছর আটেক পর এলেন। আসলাম আনতে চায়নি। এক রকম জোর করেই এসেছেন। আসলাম যখন তার কাজ সারবে তখন তিনি একা একা একটু ঘুরে দেখবেন। পরিচিত অনেকেই এখনও আছে। সুখ-দুঃখের একটু আলাপ করবেন। আসলাম তাকে তাদের পুরানো বাসার সামনে রেখে যায়। যাবার আগে বলে, ঘন্টা দুয়েকের ভেতর এসে তোমাকে নিয়ে যাব। লুৎফুন্নেসা এ বাসা- ও বাসায় যান। ঘোরাঘুরি করেন। বাচ্চাদের চেঁচামেচি, এর-ওর নামে অভিযোগ শোনেন। নিজেকে যেন দেখতে পান। নিজেদের পুরানো বাসার সামনে যখন চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিলেন তখন মানুষটা আসে। মাথায় সাদা কিস্তি টুপি। মুখে সাদা দাঁড়ি। কুঁজো হয়ে হাঁটে। গায়ে একটা ফ্যাকাশে হয়ে আসা নীল ফতুয়া। হাতে খালি বস্তা।
কাছে আসার পর বয়সের বলিরেখায় ভর্তি মুখটাকে লুৎফুন্নেসা চিনতে পারে। নাম কবির। গলির ও মাথায় যে কিন্ডার গার্ডেন স্কুলটা আছে এক সময় ওতে দপ্তরীর ছিল। তাও অনেক বছর আগে। কাজ শেষে কোন এক বাসার সামনে থেকে ঘাস কাটতে বসে যেত। অনেক সময় লাল গরুটাকে এনে বেঁধে রাখত তাদের বাসার সামনে। আসলাম ছোটবেলায় খুব ন্যাওটা ছিল কবিরের। আসলামের গ্রামের তার দাদার একটা লাল গরু ছিল। সে কারনেই কিনা আসলাম গরুটাকে দেখলেই ফোকলা মুখে হেসে হেসে বলত দাদার গরু, দাদুর গরু। আসলাম তখনও স্কুলে যায় না। একদিন ওকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না। এ নিয়ে কত হৈ-চৈ। শেষমেষ পাওয়া গেল রাস্তার ধারের ওই বড় গাছটার পাশের মিউনিসিপালটির ড্রেনটার কাছে। ড্রেনের পাড়ে গরুর ঘাস কাটছে কবির। আসলাম পাশে বসে দাদুর গরুকে রাক্ষসের গল্প শোনায়। আসলামের উপর টান এসে পড়ে কবিরের। মাঝে মাঝে বাটিতে করে দুধ দিয়ে যেত কবির। লুৎফুন্নেসা অনেকবার কিছু টাকা দিতে চেয়েছিল দুধের দাম দেবার জন্য। কবির কোনবারই নেয় নাই। কিছু বললেই মুখ কালো করে বলত, নাতি তার দাদুর গরু থেইক্যা দুধ খাইব। হের লাইগা আবার টেহা কা?
লাল গরু, রাক্ষসের গল্প, গরুর দুধ । সবকিছু মনে হয় এই সেদিনের কথা। লুৎফুন্নেসার একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে। লাঠি ভর করে লুৎফুন্নেসার কাছে এসে দাঁড়ায় কবির। চোখ কুঁচকে খেয়াল করে তাকে। মুখের বলিরেখাগুলো এবার কুঁচকে আসে। হাসিতে ভওে আছে তার মুখ। আপা, ভালা আছেননি?
আছি কবির। তোমার কি খবর? শরীর ভাল?
তা আল্লাহ ভালাই রাখছে।
ছেলে-মেয়েরা কি করে?
বেবাকের বিয়া শাদী শেষ। নাতি-নাতনী আছে। পোলারা মিইলা ঘর পাকা করছে। বড় রাস্তা থেইক্যা দেহা যায়। উপরের টিনের লাল রং পড়ছে।
লুৎফুন্নেসার মনে পড়ে কবির তার সংসার পেতেছিল মিউনিসিপালটির ড্রেনের পাড়ে। ওখানেই কি পাকা ঘর তুলছে তারা? জিজ্ঞেস করে সে।
হ। সেই ড্রেইন এহুন আর নাই। সব বস্তিতে ভইরা গেছে।
এই দিকে কই যাও?
আপনের আওনের খবর শুইন্যা আইলাম। গরুটার লাইগা ঘাসও নিমু। তয় আপনাগো সময়ের গরু পালনের মত আরাম ওহন নাই। খালি দূর-দূও করে বেকে। এক হাত জায়গার লাইগা কোলনীর মাইনষে কিলাকিলি করে। সরকারী জায়গা নিয়া এত কাইজ্জা করনের কি আছে কন?
ও। তা সময় পেলে বাসায় যেও। নিউমার্কেটের পেছনে যে বড় সাত তলাটা লাল বিল্ডিংটা আছে ওটার চার তলায় থাকি। গেলে আমার নাম বললে ওরা ঢুকতে দেবে।
যামু একসময়। আমাগো আসলাম বাবাজী ভালা আছে?
আছে। ও তো এসেছিল আমার লগে। একটু পর আবার আসবে। থাকলে দেখা হত।
কবির কি জানি একটা বার করে তার বস্তার ভেতর থেকে। লুৎফুন্নেসা ভাল করে খেয়াল করে দেখে ওটা একটা পেপসির খালি বোতল। ভেতরটা সাদা। দুধ। কবির বোতলটা এগিয়ে এনে বলে, বাবাজীর লাইগা দুধ নিয়া আইলাম। বাবাজীর কথা ঘাস কাটতে গেলে খালি মনে আইয়ে।
কবিরের মুখটা ভরে আছে হাসিতে।
লুুৎফুন্নেসা ঠিক কি বলবে বুঝতে পারে না। কেবল একটু চমকে বলে, এটার কি দরকার ছিল কবির?
নেন আপা। না নিলে দুখু পামু। বাবাজী কত রাক্ষসের গপ্পো শুনাইত।
লুৎফুন্নেসা নিরবে বোতলটা হাতে নিয়ে চুপ কওে থাকে। কবির একথা-সেকথা বলে বস্তাটা হাতে নিয়ে সামনে এগিয়ে যায় এক সময়।
আধাঘন্টা পর ওদের গাড়িটা যখন কলোনীর গলি থেকে বের হয়ে বড় রাস্তায় উঠে সবে মাত্র ঘুরছে তখন বড় বট গাছটার দিকে লুৎফুন্নেসার নজর যায়। এক কালে বড় গাছটার পেছনে ছিল বড় ড্রেন। বর্ষায় দু’কূল উপচে উঠত ড্রেনের কালো পানিতে। কবিরদের ঘরগুলো তখন ভাসত। ড্রেন পেরিয়ে অনেকখানি জংলা জায়গা ছিল সেকালে। কবির, কৈলাশ শীলের মানকচুর চাষ হত ওখানে। এখন আর মানকচু নাই। ড্রেনটাও নাই। সে জায়গায় এখন পাকা ঘর- বস্তি ঘর। লুৎফুন্নেসা আঙ্গুল তুলে গাড়ির জানালা দিয়ে আসলামকে দেখায়, দেখেছিস ওই বট গাছটা? ওর পেছনে এখন কত জায়গা। কত ঘর। এর মধ্যে ওই যে লাল টিনের ঘর ওটা তোর . . . .
লুৎফুন্নেসার কথা শেষ হয় না। আসলাম মুখের কথা কেড়ে নিয়ে বলে, এই জায়গার কথা থাক মা। তার চেয়ে তুমি বল এ দুধ দিল কে?
লুৎফুন্নেসার মুখটা হাসিতে ভরে যায়। তোর ছোট বেলার দাদুর কথা মনে আছে?
দাদু তো সেই কবে মারা গেছে মা।
আরে ওই দাদু না। তুই যে এক লাল গরু পেছনে হাঁটতি তার কথা মনে পড়ে?
আসলামের আচমকা মনে পড়ে। আশ্চর্য! এত বছরে একবারও মনে পড়ে নাই তার সে কথা। কেবল বলে , হু।
তোর সেই দাদু দিয়ে গেলরে।
সে কি! সে এখনও বেঁচে আছে?
আছে তো। ওই যে তোকে দেখাচ্ছিলাম লালটিনের হাফ বিল্ডিং , বটগাছটার পাশে- ওখানেই থাকে এখনও সে। সেই কবেকার মানুষ, এখনও বেঁচে আছে। আর তোর বাবা. . .
বলতে বলতে লুৎফুন্নেসার চোখে পানি চলে আসে।
আসলাম কিছু বলে না। সে খানিকটা বিব্রত। বাবার জন্য না। বুড়োটা জন্য। এলাকার মুরব্বীদের সে ম্যানেজ করে এসেছে। সাত-আটদিনের ভেতর বটতলার বস্তিগুলো ভাঙ্গা হবে। এর ভেতর বুড়োটা আবার গরু দোহাই দিয়ে এসে দাঁড়াবে না তো? এসব দাদু-ফাদু মানসিক যন্ত্রনা
।
লুুৎফুন্নেসার একটু পর মুখে হাসি এনে বলে, তোর মনে আছে রে আসলাম তুই যে কেবল লাল গরুটাকে রাক্ষসের গল্প বলতি? মনে আছে তোর গল্পটা?
আসলাম কিছু বলে না। বলার মত কিছু নাইও। মাকে নামিয়ে আবার যেতে হবে পুলিশকে ম্যানেজ করতে। সাত দিনের ভেতর জায়গার দখল তার নিতেই হবে। পেপসির বোতলে টলমল করা সাদা দুধের বোতলের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে তার মাথায় এখন এসব চিন্তাই ঘুরপাক খাচ্ছে।
০৯ ই জুন, ২০১৩ রাত ১০:৫০
toysarwar বলেছেন: ধন্যবাদ।
২| ০৯ ই জুন, ২০১৩ রাত ১০:২১
খেয়া ঘাট বলেছেন: রাক্ষসের গল্প শুনাতে শুনাতে আসলাম নিজেই রাক্ষস বনে গেলো।
চমৎকার লিখেছেন।
০৯ ই জুন, ২০১৩ রাত ১০:৫০
toysarwar বলেছেন: ধন্যবাদ।
৩| ০৯ ই জুন, ২০১৩ রাত ১০:২২
স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: ভালো লেগেছে !
০৯ ই জুন, ২০১৩ রাত ১০:৫১
toysarwar বলেছেন: ধন্যবাদ।
৪| ০৯ ই জুন, ২০১৩ রাত ১০:৫৩
ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: ভালো লাগলো
০৯ ই জুন, ২০১৩ রাত ১০:৫৪
toysarwar বলেছেন: ধন্যবাদ।
৫| ০৯ ই জুন, ২০১৩ রাত ১০:৫৬
সালমান ফার্সী বলেছেন: চালিয়ে যান।
১০ ই জুন, ২০১৩ ভোর ৫:৪৬
toysarwar বলেছেন: ধন্যবাদ।
৬| ০৯ ই জুন, ২০১৩ রাত ১০:৫৯
তুষার আহাসান বলেছেন: ভাল লাগা রইল।
+
১০ ই জুন, ২০১৩ ভোর ৫:৪৬
toysarwar বলেছেন: ধন্যবাদ।
৭| ০৯ ই জুন, ২০১৩ রাত ১১:০৯
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: আপনার স্বকীয়তা প্রবলভাবে প্রকাশ পেয়েছে এই গল্পে। চমৎকার গল্পের পরিষ্কার বর্ণনা মুগ্ধ করার মত।
দারুণ।
১০ ই জুন, ২০১৩ ভোর ৫:৪৭
toysarwar বলেছেন: ধন্যবাদ।
৮| ০৯ ই জুন, ২০১৩ রাত ১১:৩৯
শাওণ_পাগলা বলেছেন: গুছানো লেখা! আসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে আরেকটু গল্পটাকে দেখানো গেলে ভালো হইতো।
১০ ই জুন, ২০১৩ ভোর ৫:৪৭
toysarwar বলেছেন: ধন্যবাদ।
৯| ১০ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১০:০৩
রেজোওয়ানা বলেছেন: Khub valo lagchilo porte. . . .
১০ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৫:১৮
toysarwar বলেছেন: মন্তব্য করি না কিন্তু আপনার ব্লগ আমি সাধারনত মিস করি না। আপনার ভাল লেগেছে জেনে সম্মানিত বোধ করছি। ধন্যবাদ।
১০| ১১ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১১:০৮
মামুন রশিদ বলেছেন: দারুন লিখেছেন । ভালো লেগেছে ।
১১ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৩
toysarwar বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই জুন, ২০১৩ রাত ১০:২০
খাটাস বলেছেন: অনেক পরিচিত অন্যান্য বাস্তব গল্পের ধারায় হলে ও আপনার লেখা ও চিন্তা শক্তিতে ভিন্নতা পেয়েছে। সময় কারও আবেগ বাড়ায়, কারও কমায়। সুন্দর হয়েছে। প্লাস।