নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রঙ্গলীলার দর্শক

মোটাসোটা - গোলমুখ - চোখ ছোট একজন মানুষ

toysarwar

লেখার চেষ্টা করি।

toysarwar › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোটগল্প - কাগজের ফুল

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:৫১

মিলাদে বসে সারফরাজ খানের মনটা হঠাৎ করেই ভাল হয়ে গেল।



মানুষের মন খারাপ থাকার অনেকগুলো কারন থাকে। আমাদের মন নামক অঙ্গটি এক মূহুর্তে ভাল থাকলেও তার অবেচতন অংশে বাস করা অন্য কারনগুলোর জন্য অপর মূহুর্তেই তা খারাপ যেমন হতে পারে তেমনি আবার আরও একটু বেশী ভাল হতে পারে। বিশুদ্ধ ভাষায় বললে আরও দুঃখিত কিংবা আরও আনন্দিত হবার মানসিক ক্ষমতা আমাদের সব সময়ই আছে। হয়ত সেজন্যই আমাদের দুঃখের যেমন সীমা নাই, সুখেরও সীমা নাই। অনন্ত সুখ কিংবা দুঃখের কোনটাই আমাদের নশ্বর শরীর ধারন করতে পারে না। নশ্বর শরীরের গন্ডি পেরিয়ে ওরা বেরিয়ে আসতে চায় এবং চলেও আসে। যেমন এ মূহুর্তে সারফরাজ খানের নশ্বর শরীরের সীমা ছেদ করে ওটা চোখের পানির সাথে মিশে বের হয়ে আসছে। একটু আগে ঈদের রাতের ভরা জোৎস্নার আলোয় হাঁটতে হাঁটতে সারা দিনের ক্লান্ত মনটা হঠাৎই তার ভাল হয়ে যায়। কারনটা জোৎস্না না। চাঁদের আলোর সাদাটে অন্ধকারের ভেতর নড়তে থাকা নারকেল পাতাগুলো যখন চিকচিক করে তখন আটান্ন বছর বয়সী সারফরাজ খান হঠাৎ হঠাৎই তার শৈশবে ফেরত যান। তার কেবলই মনে হতে থাকে এখনই তার মরহুম আম্মাজান নারকেল গাছের আড়াল থেকে তাকে ডাক দিয়ে বলবে, ও সাফু । আয় । আয়। খাইতে আয়।



মায়ের চিন্তাতেই বুঁদ ছিলেন তিনি। এশার নামায শেষে মিলাদ শরীফে বসেও কেবল মায়ের কথাই ভাবছিলেন। ঘটনা যদি এভাবেই চলতে থাকত তবে নিশ্চিতভাবেই বলা যায় মোনাজাতের সময় কেবল মায়ের কথা চিন্তা করেই দু’চোখ তার অশ্রু সজল হয়ে উঠত। কিন্তু তা যে হয় নাই তার কারন ছোট ছেলেটা। মিলাদে ছোট ছেলেটাকে দেখে তিনি যেমন অবাক হলেন তেমনি খুশীও হলেন। ভয়ংকর খুশী।



মিলাদ শরীফে পুত্রের উপস্থিতি কি পিতার মনে এত আনন্দ আসলেই আনতে পারে? উত্তরটা হবে, পারে। এবার প্রশ্ন আসতে পারে, তাহলে সারফরাজ খান কি অতি আস্তিক মানুষ?



উত্তর, না। তিনি অতি আস্তিক না। নিয়মিত নামায পড়েন। রোযা রাখেন। দান-খয়রাত করেন। মিথ্যা বলেন না। সবাইকে সৎ পরামর্শ দেন। দোষের ভেতর একটাই যে উনি ঘুষ খান। তবে কারও ফাইল আটকে তা খান না। বরং মানুষের কাজ করলে যে যা দেয় তা খুশী মনে পকেটে রাখেন। এটাকে ঘুষ না বলে বখশিস বলা যায়। তবে শেষ বিচারে ওটা এক রকম ঘুষই। তাই এটাই তার দোষ এবং দোষ-গুন মেশানো এমন মানুষ আমাদের চারদিকে হর হামেশাই দেখা যায়। এবার প্রশ্ন আসতে পারে, তার ছেলেটা কি তাহলে নূন্যতম ধর্ম -কর্মও করে না? উত্তর হল, করে। কেবল করে বললে বোঝা যাবে না। বাড়বাড়ি রকম করে। এ বয়সেই তাহাজ্জুদের নামায ধরছে। বয়সটা বলা হয় নাই। ছোট ছেলেটার বয়স সবে পনের বছর। নাম আকরাম।



তাহলে একজন অতি আস্তিক পুত্রের মিলাদের উপস্থিতি কি কারনে একজন পিতার চোখে আনন্দ অশ্রু আনতে পারে? উত্তরটা দু-এক শব্দে দেয়া যাচ্ছে না। তবে আপনাদের ধৈর্য্যচুতি করার কোন ইচ্ছা লেখকের নাই। তাই লেখক সোজাসুজি এক বছরর তিন মাস আগের সেই দিনটাতে ফেরত যাচ্ছে।



দিনটা ছিল শুক্রবার। সরফরাজ খানের ছোট পুত্র মানে আকরাম সে সপ্তাহের আসছে মঙ্গলবার থেকে এস এস সি পরীক্ষায় বসবে। পুত্রের পরীক্ষার মঙ্গল কামনায় জুম্মার নামায শেষে মসজিদেই মিলাদের ব্যবস্থা করেছেন সারফরাজ খান। যথা সময়ে মিলাদ শুরু হয়। এক সময় শেষ হয়। জিলাপী বিতরন হয়। জিলাপী বিতরনের আগে পুত্রের নাম উল্লেখ করে অতি মধুর গলায় ইমাম সাহেব আকরামের পরীক্ষায় ভাল রেজাল্টের জন্য দোয়া করেন। সুরটা এতই মধুর ছিল যে স্বাভাবিক সময়ে বখশিস হিসেবে ইমাম সাহেব যা পান সেবার একটু বেশীই পেলেন। পুরো মিলাদের খুঁতটা এক জায়গায়। আকরাম অনুপস্থিত। অথচ মিলাদ শুরু হবার আগেও তাকে মসজিদে দেখা গেছে। মিলাদ শুরুর পর তাকে খুঁজে পাওয়া গেল না। সারফরাজ খান বেশী কিছুদিন হয় আকরাম সর্ম্পকে কিছু কথা শুনছিলেন। কয়েকটা বিষয় যে তারও নজর এড়ায়নি তা নয়। তবে ব্যাপারগুলোকে তিনি বয়সের খেয়াল হিসেবে তেমন একটা গোনায় নিতেন না। কিন্তু সেদিনের অনুপস্থিতি তাকে নতুন করে ভাবাতে শুরু করে।



সেদিন বিকেলে আকরামের জেরা শুরু হয়। জেরার শুরুটা করে বড় মেয়ে। বাবা মসজিদ থেকে ফিরে কপালের উপর হাত দিয়ে বিছানায় শুয়ে আছে- ব্যাপারটা বাসার কারও নজর এড়ায়নি। সারফরাজ খান প্রতি শুক্রবারের দুপুরের খাওয়াটা বেশ মজলিশি কায়দায় উদযাপন করেন। হৈ-চৈ করে বাসা মাথায় তুলেন। অথচ সেদিন তিনি একেবারেই চুপচাপ। সরফরাজ খানের পত্নী ঘটনা জানেন। বড় মেয়ে আয়েশা মায়ের কাছ থেকে সব শুনে বিকেলে আকরামকে জিজ্ঞেস করে, জুম্মার নামাযের পর তুই কই গেছিলি?



কেন বাসায় আসছি।



তুই জানতি না আজ তোর এসএসসি পরীক্ষার জন্য বাবা মসজিদে মিলাদ দিছে?



আকরাম কোন উত্তর দেয় না। চুপ করে থাকে।



কথা বলিস না কেন? জানতি না?



জানতাম।



তাহলে তুই মিলাদে ছিলি না কেন?



আকরাম আবার চুপ।



আয়েশা এবার হুংকার দিয়ে বলে, কথা বলিস না কেন? আব্বা মনে কত দুঃখ পাইছে তুই জানিস?



আকরাম হঠাৎ করে পাল্টা হুংকার দিয়ে বলে, আমি আগে বলছি না এসব বেশরিয়তি কাজ না করতে। মিলাদের ব্যাপারে কি ইসলামের হুকুম আছে? এইসব বেশরিয়তি কাজে ডাকলে আমি নাই। তা সে বাপই হোক বা মা।



ভাইয়ের কথার সুর বোনকে নিশ্চুপ করিয়ে দেয়। এ সুর ছোট ভাইয়ের গলার সুর না। অনেক শতাব্দী প্রাচীন কারও সুর। এ সুরের শক্তি বেশ জোরালো আর সূঁচালো। সবাই একে পরাস্ত করতে পারে না। উল্টো পরাস্ত হয়ে যায়।



তারপরও আয়েশা কিছুক্ষন কথা চালায়। কেবল কিছুক্ষন না। বরং এরপর অনেকদিনই কথা হয় এ নিয়ে। কখনও বক্তা আয়েশা, কখনও মা। আবার কখনও তাদের জায়গায় বাবা কিংবা অন্য কেউ। তাদের কথা পাল্টায়। সুর কখনও থাকে নরম। কখনও চড়া। তুই কোথায় শুনেছিস মিলাদ পড়লে ঈমান চলে যায়? শিরক হয়? কুফরী হয়? আমরা কি মিলাদে রাসূল (স) এর অমঙ্গল কামনা করি না মঙ্গলের জন্য কান্না-কাটি করি? আমরা কি উনাকে খোদার পাশে আসন দিয়ে শিরক করি? কই মনে তো আসে না কখনও এমন অপরাধ আমরা করেছি। আমরা তো মিলাদে কেবল উনার জন্য দুরুদ পাঠ করি, সালাম পাঠাই। উনার প্রতি আমাদের ভালবাসা প্রকাশ করি। কেবল ভালবাসা ছাড়া তো অন্য কোন কিছুর চিন্তায় আমরা এটা করি না।



কিন্তু আকরামের এক কথা । মিলাদ বেশরিয়তী কাজ। ইসলাম ধ্বংসের কাজ। এমনি করে আকরাম সারফরাজ খানদের ধর্মীয় রীতি পালনের নানা প্রথা নিয়ে প্রশ্ন উঠায়। এর কিছু কিছু যে যৌক্তিক তা অস্বীকার করা যাবে না। কিন্তু প্রায় সব ব্যাপারেই শিরক আর কুফরী খোঁজা যেন আকরামের নিত্য অভ্যাসে রূপ নেয়। আকরাম কার সাথে মিশে, কোথায় যায় সে ব্যাপারে কড়া নজরদারী শুরু হয়। ঘটনা কি? ছেলেটা আবার জঙ্গীদের সাথে মিশে না তো? নজরদারীর সাথে সাথে শুরু হয় পড়াশোন। ব্যাপক পড়াশোনা। ধর্ম নিয়ে সারফরাজ খানদের পরিবারে ঝড় বইতে থাকে। সারফরাজ খানরা তাদের অনেক রীতির যেমন কোন নজির খুঁজে পান না তেমনি সে সব রীতির সাথে কুফরী কিংবা শিরকের কোন যোগ সূত্রও খুঁজে পান না । হ্যাঁ। আরবের উদযাপনের সংস্কৃতির সাথে তাদের ভাব-ভালবাসা-শ্রদ্ধা প্রদর্শনের সংস্কৃতিতে পার্থক্য থাকাটাই স্বাভাবিক। একজন আরবের কাছে এক বাঙ্গালীর নানা প্রকাশভঙ্গি দৃষ্টিকটু লাগতেই পারে। কিন্তু তাই বলে কি একজন বাঙ্গালী যে জানে তার নানা আচার-ব্যবহারের প্রকৃত অর্থ কি সে কিভাবে তার সম্মান জানানোর ধরনের প্রকৃত অর্থকে ভুলভাবে ব্যাখা দেয় ? তাদের পড়ালেখা চলতে থাকে। পাশাপাশি চলতে থাকে আকরামের সাথে তর্ক-বিতর্ক । দু’চারটা চড়-থাপ্পড়ও যে আকরামের কপালে জুটে নাই তা নয়। কিন্তু আকরামের সেই এক কথা। আপনারা ধর্ম যা পালন করেন তা সব ভুল । আপনারা সাচ্চা মুসলমান না। হিন্দু মুসলমান।



নিজের ছেলের ভেতর এক ধর্মান্ধের ব্যাপার টের পেয়ে সারফরাজ খান চমকাতে থাকেন আর দিন রাত আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করতে থাকেন, হে খোদা! ওকে সুমতি দাও। সুমতি দাও।



খোদা তার কথা শোনে না। আকরামের নানা তর্ক শক্ত হতে থাকে দিন দিন। আপন সন্তান । ফেলতেও পারেন না। ছয় মাসে সারফরাজ খানদের পরিবারের সকলের বয়স যেন ছয় বছর বেড়ে যায়। কোন কিছুতেই তারা শান্তি পান না। কিভাবে পাবেন? তার ছেলে যে প্রচলিত কোন কথাই শুনতে চায় না। মানতে চায় না। পড়তে চায় না। তার এক কথা। সব জায়গায় শরিয়ত ধ্বংস হয়ে চলেছে। সবাই ধর্মহীনদের পথে চলছে।



দেখতে দেখতে এসে গেল কোরবানী। প্রতি বছর বাপ-বেটায় গরু কিনতে যায়। এবার বাবা তার ছেলেকে নিতে তেমন কোন উৎসাহ পান না। হাটে গিয়ে আবার নতুন কোন তত্ত্ব তাকে দেখতে হয় সে আশংকায় তার বুক কাঁপে। ঘরের ভেতর ছেলের আচরনে তার নাক কাটা যায় না। কিন্তু বাইরের ভরা মজলিশে যদি ছেলেটা তার নাক কাটায়? তারপরও ছেলেকে নিয়ে হাঁটতে থাকেন তিনি। আগ্রহ থেকে এ হাঁটায় প্রয়োজনটা বড়।

যতটা আশংকা করছিলেন তেমনটা হয় না। কেবল গরু-খাসির গলায় ছেলেটা মালা দিতে দেয় না। এইগুলা নাকি পশু পূজার সমর্থক। তারপরও সরফরাজ খান ফুলের মালা কিনেন। ফুল কিনেন। কাগজের ফুল। লাল কাগজের ফুল। সেই সাথে মালাতে আছে কিছু জরির কাজ। গরু-খাসির গলায় মালা দুটো পরিয়ে হাঁটতে শুরু করে তারা। একা একা গরু নেওয়া কষ্টকর। অনেকদূর হাঁটতে হয়। গরুর বেপারীকে সাথে নিয়ে নেয় তারা। ছেলেটা গরুর সাথে সাথে আসে আর সারফরাজ খান রিকশায় উঠিয়ে ছাগলটাকে নিয়ে বাসায় চলে আসেন।



বাসার সামনের খোলা জায়গায় গরু- খাসী দুটোকেই বাঁধা হয়। রাত হয়ে যাওয়ায় তিনি ভাল করে খেয়াল করেন নাই। সকালে দেখেন গরুর গলায় মালা নাই। পথে আসতে তার ছেলে ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছে। বিকেলে দেখেন ছাগলের গলারটাও উধাও। চুপচাপ একটা দীর্ঘশ্বাস বের হয়ে আসে তার। কোরবানীর ইচ্ছাটা কেমন জানি মরে আসে তার। গরুটা তাদের একার না। সারফরাজ খানের ছোট দু ভাইও আছে সাথে। একজন ডাক্তার । একজন ইঞ্জিনিয়ার। বড় ভাই হিসেবে পরিবারের প্রধানের কাজগুলো তিনিই সারেন। ডাক্তার ভাইটা তাবলীগে সময় দেয়। দুনিয়াদারির কাজে তার অনিহা। ইঞ্জিনিয়ার চাচাকে নিয়ে আকরাম এবার আপত্তি তুলছে। দু’নম্বরী পয়সা খাওয়া নিয়ে তার কুখ্যাতি আছে। উনার সাথে কুরবানী দিলে কুরবানী হবে না। বাবা না হয় খাসীটা নিজ নামে দিক। অন্তত একটা কুরবানী সহি হোক। তবে বাবার ইনকাম তো পুরো স্বচ্ছ না। কুরবানী কবুল না হবারই কথা। ছেলের কথা শুনে সারফরাজ খানের মনটা ভাঙ্গতে থাকে। ছেলেটা কিভাবে এসব কথা বলে?



দু-চারদিন আগে কুরবানীর গরু কিনলে পছন্দ করে দর দাম করে কেনা যায়। হাঙ্গামাটা হল দু-চারদিন ওটার পেছনে থাকবে কে? গরুর ব্যাপারটার একটা ফয়সালা করা আছে। যে কসাই প্রতিবার গরুটা বানিয়ে দেয় ওদের কাছেই রাখা হয়। কিছু বকশিস বাড়িয়ে দিলেই চলে। ছাগলটাও ওখানে রাখা যায়। কিন্তু বোধ করি খোদার ইশারায় সারফরাজ খান এবার ওটা ওদের কাছে রাখতে দিলেন না। বিকেল করে কিছু কাঁঠাল পাতা আর ভূষি নিয়ে এসে আকরামকে ডেকে পাঠান তিনি। এগুলো ধর। ঈদের আগ পর্যন্ত ছাগলের দায়িত্ব তোর। আমরা তো ছাগলরে পূজা করি। দেখি তুই কেমনে রাখিস।



আকরাম ছাগলের দায়িত্ব পালন শুরু করে। কাঁঠাল পাতার ব্যবস্থা রাখা । পানি খাওয়ানো। ঠান্ডা পানি খায় না দেখে গরম পানির ব্যবস্থা করা। কেউ যেন ছাগলের রশি খুলে নিয়ে ওটাকে চুরি না করে সে জন্য তীক্ষè নজর রাখা। ফকিরের আওয়াজ শুনলেই উঁকি দিয়ে দেখা ছাগল আছে না ওটাকে নিয়ে চলে গেছে তারা। সে রাতে মানুষের কাশির শব্দ শুনে আকরাম লাফ দিয়ে উঠে। ঘটনা কি ? কে আসল? চোর?



হৈ-চৈ করে লাইট জ্বেলে দেখে কেউ না। ছাগলের ঠান্ডা লাগছে। অবিকল মানুষের গলার স্বর। পরদিন ফার্মেসী থেকে ওষুধ আনা। আকরামের ভয় হয় এবার। মোটা তাজা করে অসুস্থ ছাগল গছিয়ে দিল না তো তাদের? এখন ছাগল যদি কোরবানীর আগেই মারা যায়? দুশ্চিন্তা করতে করতে কোরবানী দিন গুনতে থাকে সে। আর মাত্র দু’দিন। সময় গড়াতে থাকে। কখন যে ছাগলটার মায়ায় জড়িয়ে পড়ে আকরাম তা সে টের পায় না। টের পায় ঈদের দিন। ঈদের জামাতে যে রাস্তায় যাওয়া হয় ফেরার সময় সে রাস্তায় না এসে অন্য রাস্তা দিয়ে আসলে দ্বিগুন সওয়াব। এই পালন করতে গিয়ে অনেকটা ঘুর পথে বাসায় আসে আকরাম। এসে দেখের ছাগলটা পাথরের মত দুটো চোখ দিয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে। কোরবানী শেষ। মনটা কেন জানি খারাপ হয়ে যায় তার। ছাগলটার পরে থাকা দেহটা এক সময় ঝাপসা হয়ে আসে তার চোখে। ইশ! ছাগলটাকে একটু গোসলও করাতে পারল না আজ সে। আল্লাহর রাস্তায় চলে যাওয়া জন্তুটাকে একটু সাজিয়ে রাখলে খোদা নিশ্চয়ই নারাজ হতেন না। নিতান্তই অপ্রাসঙ্গিকভাবে ড্রেনে ফেলা দেয়া কাগজের ফুলের কথা মনে আসে তার।



সেদিন রাতে এশার নামাযের জামাত শেষে ইমাম সাহেব ঘোষনা দেন , নামায শেষে মিলাদ হবে। যারা পারবেন, থাকবেন। আকরাম নামায শেষে অন্যদিনের মত বেরিয়ে যায় না। বসে থাকে। মিলাদ শুরু হয়। এক পা, দু’পা করে এগিয়ে আসতে থাকে সে।



সারফরাজ খানএখনও কেঁদে চলেছেন।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:৫৪

শুকনোপাতা০০৭ বলেছেন: ভালো লাগল গল্পটা :)

১৯ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:২০

toysarwar বলেছেন: B-) B-) B-)

২| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:০৫

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: দারুণ গল্প।

দুই একটা বানান ভুল আছে, ঠিক করে দিয়েন।

১৯ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৮:৫০

toysarwar বলেছেন: ধন্যবাদ প্রোফেসর শঙ্কু। ঠিক করে নেব।

৩| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:২৩

বিনম্র বলেছেন: ভাল লাগল

১৯ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৮:৫০

toysarwar বলেছেন: থ্যাংকু।

৪| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৮:৪৩

মামুন রশিদ বলেছেন: ভাল লেগেছে ।

১৯ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৮:৫১

toysarwar বলেছেন: ধন্যবাদ মামুন ভাই।

৫| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ২:৩১

ইমরাজ কবির মুন বলেছেন:
ভাল লিখসেন ||

১৯ শে অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৩:১৫

toysarwar বলেছেন: থ্যাংকু ।।

৬| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৩:০৭

অস্পিসাস প্রেইস বলেছেন:
ভাল লিখসেন ||

১৯ শে অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৩:২৭

toysarwar বলেছেন: থ্যাংকু ।।

৭| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫৫

সুমন কর বলেছেন: অনেক সুন্দর হয়েছে। +++

১৯ শে অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০৮

toysarwar বলেছেন: ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা নিন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.