![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন গবেষক..চিন্তা করাই আমার কাজ...চিন্তিত ভাই ব্রাদারদের আমার পেজে স্বাগতম। [email protected] https://www.facebook.com/bangal.miya
বিদেশে প্রায় সমস্ত নিউজ মিডিয়াতে গোলাম আযমের রায়কে কভার করা হয়েছে। সবাই সংবাদ শিরোনাম দিসে 'ইসলামিস্ট জেইল্ড', ' টপ ইস্লামিস্ট সেন্টেন্সড', 'ইস্লামিস্ট লিডার ফাউন্ড গিলটি'। আমেরিকা, ইউকে, ফ্রান্স, জার্মানী- সবাই প্রায় একি ভাবে 'ইসলামিস্ট' টার্মটি ব্যবহার করেছে। বাংলাদেশে ইসলামী রাজনীতির সবচেয়ে বড় দৈন্যতা হচ্ছে এর 'টপ' ইস্লামিস্ট একজন ভয়ংকর যুদ্ধাপরাধী। জামাতে ইসলামির বাইরে আমাদের রাজনীতিতে ইসলামিক স্কলার নাই বললেই চলে। যাও আছে তারা জামাতের ছায়া থেকে বের হতে পারছে না কারণ মিডিয়াগুলো সবই জামাত ও জামাতবিদ্বেষী এই দুই কাতারে বিভক্ত। বিদেশী মিডিয়া তাই চামে ইস্লামিস্টদের যুদ্ধাপরাধী দেখিয়ে ব্যাপক আনন্দ পেল। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে জামাত যেভাবে ইসলামী রাজনীতি ব্যবহার করে খুন ধর্ষন লুট চালিয়েছে তার ফলাফল হয়েছে যে বাংলাদেশে ইসলামী রাজনীতির প্রতি একটা ভয়াবহ ক্ষোভের জন্ম। জামাত যেভাবে ৭১ সালে ইসলামকে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে দাড় করিয়ে নিজেদের সুবিধা হাসিল করতে চায়েছিল পাকিস্তানিদের সাথে সেই কায়দা এখনও জামাতি মিডিয়া জারি রেখেছে। দেশের আপামর তৌহিদি জনতা ইসলামিক মিডিয়া আউটলেটের উপর সংবাদের জন্য নির্ভর করায় এবং কারওয়ান বাজারী মিডিয়াহাউসগুলো সেভাবে ইসলামিক চিন্তাধারার রিপ্রেসেন্ট না করায়- জামাতের হাতে ধর্মীয় উস্কানি দেয়ার অস্ত্র ঠিকই থাকছে। তারা সেটা চমৎকার ব্যবহার করে হেফাজতকে বিভ্রান্ত করে আবারো ৭১ এর বিরোধী শক্তি হিসাবেই দাড় করিয়েছে। শাহবাগের জন্মের পর এমন কমন এনিমি তৈরির দরকার ছিল জামাতের। কিন্তু দেশের ইসলামী চিন্তাধারার দলগুলো জেনে বুঝেই সেপথে পা দিয়েছে। অপরদিকে শহুরে বাঙালি জাতীয়তাবাদী চিন্তায় মশগুল জনতা তখন টুপি মাত্রই জামাত, জামাত মাত্রই রাজাকার, রাজাকারের বাংলাদেশে রাজনীতির অধিকার নাই, তাই ইসলামী রাজনীতির দরকার নাই- এমন সরলচিন্তায় ক্রমাগত ইসলামী মূল্যবোধে আঘাত দিয়ে গেছে। মাদ্রাসায় শহীদ মিনার খাড়া করার আবদার করেছে। এমন সাংঘর্ষিক অবস্থান তৈরির জন্য বাঙ্গালী বুদ্ধিজীবী সমাজের দায় কম নয়। এরাই ক্রমাগত ইসলামী রাজনীতির নামে বিষেদাগার করে এসেছে জামাতকে ঘায়েল করতে। যেহেতু রাসুলুল্লাহ (সাঃ) নিজেও ইসলামী রাজনিতীবিদ ছিলেন সেহেতু পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা থেকে সংবিধানের এক খোচায় ইসলামী রাজনীতি বাদ দেয়ার এমন তৎপরতা চিন্তাশীল কোন মুসলিমের পক্ষে মানা সম্ভব না।
কিন্তু চিন্তাশীল মুসলিম সমাজকে এইটাও ভাবতে হবে জামাতকে তীব্রভাবে বর্জন না করে তাদের দাড় করানো ইসলাম বনাম মুক্তিযুদ্ধের সাংঘর্ষিক অবস্থান থেকে সরা যাবে না। সেজন্যই যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবিটি আরো জরালোভাবে অপেক্ষাকৃত আস্তিকদের কাছ থেকেই আসা উচিৎ ছিল। আফসোসের কথা সেই দাবি হাটহাজারী থেকে আসে নাই। বায়তুল মোকাররাম থেকে আসে নাই। কোন ইসলামিক দল থেকে জোড়ালভাবে আসে নাই। যদিও অনেকেই জামাতের রাজনীতিকে প্রত্যাখান করেন। সেকারনেই ভোটের রাজনীতিতে জামাতভিন্ন দলগুলো জামানত হারায় ৯০%মুস্লিমের দেশে। এক্ষনে দেশের ইসলামী রাজনীতিকে জামাতের ছায়া থেকে বেরিয়ে নিজস্ব চিন্তাচেতনা, সমাজভাবনা ছড়ানোর পরিকল্পনা করতে হবে। শুধু আস্তিক নাস্তিক মুরতাদ গালি দিয়ে তসলিমা আর থাবা বাবাদের ধাওয়া করলে কাজে আসবে না। জনগুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে অবস্থান নিতে হবে জনতার কাছে আসতে, ভোট জিততে। কওমী মাদ্রাসার আন্দোলনটা চাইলেই সেটার শুরুয়াদ করতে পারতো। কিন্তু তারা কেবল শাহবাগের বাই-প্রডাক্ট হিসাবেই অবস্থান নেয়ায় বাংলাদেশের রাজনীতিতে আরেকটু নতুন মেরু তৈরির সুযোগ হারালো। দুই রাজনৈতিক দল সচেতনভাবে ইসলামিক রাজনীতিকে আহলে সুন্নাত, মাজারি, হেফাজতি, নেজামি আরো নানান ভাগে বিভক্ত করে নিজেদের জোটে টানতে চাইবে। কিন্তু নিজেদের দখলদারিত্ব টিকিয়ে রাখতেই ইসলামী রাজনীতির নিজস্ব স্বকীয় চিন্তাধারা বিকাশে এরা কোন ছাড় দিবে না।
©somewhere in net ltd.