![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পৃথিবীর সকল উদ্বাস্তুর মতই আমি নিজেও একজন উদ্বাস্তু। জীবন আমাকে তেমন কিছুই দিতে পারেনি কেড়ে নেয়া ছাড়া....শত শত উদ্বাস্তুদের ভীড়ে আরো একজন উদ্বাস্তু।
বাসার সবাই ঘুম কাতুরে হওয়ায় সবারই সকাল শুরু হয় ৯/১০ টার দিকে।বাবা আবার নামাযী মামুষ কিন্তু সকালের ঘুমটা বোধয় উনিও মিস করতে চাননা,তাই উনিরও ৮টার আগে ঘুম ভাঙ্গে না।ঘুম থেকে উঠেই শুরু হয় চেচামেচি...
কেন উনিকে নামাযের জন্যে ডাকা হল না,অফিসে যাওয়ার জন্যে শার্ট,জামা কাপড় পাওয়া যাচ্ছে না.....ইত্যাদি ইত্যাদি।অথচ মা প্রতিদিনই বাবার অফিসে যাওয়ার সরন্জাম আগে গুছিয়ে তারপর কাজ শুরু করেন।
পরিবারের একমাত্র ব্যাতিক্রম সদস্যটি মা।ফযরের নামায দিয়ে উনির দিন শুরু হয়।মা,বাবার ব্যাপারটা ভালই বোঝেন,ভোরে বাবাকে যতই ডাকাডাকি করা হোক উনি উঠবেন না কিন্তু সকালে অফিসে যাওয়ার সময় ঠিকই সারাবাড়ি মাতিয়ে যাবেন।এটা নিত্য দিনের ঘটনা।
বাবার ছোট পদে কম টাকার বেতনের পুরো সংসারটাই মা সামাল দেন।বাসা ভাড়া,তিন ভাই বোনের পড়াশুনার খরচ,বাজার,বাবার হাত খরচ.....মাস শেষে বাবা,মার হাতে বেতনের পুরো টাকাটাই তুলে দেন বাকিটা মার দায়িত্ব।এই অল্প টাকায় মা কিভাবে পুরো সংসারটা সামাল দেন তা মা ই ভাল জানেন।
মায়ের মুখে কখনো কোন কিছুর অভিযোগ শুনিনি।প্রচন্ড গরমে যা পরে থাকেন প্রচন্ড শীতেও তাই।আমার এটা লাগবে সেটা লাগবে এই ধরনের কোন আবদারও না।আমাদের সকল আবদার মিটাতেই পান্তা ফুরিয়ে যায় নিজের জন্য আর কি ই বা আবদার করবেন!!
অভাব আর দায়িত্ববোধ মায়ের কাছ থেকে তার কোমলতার অনেকটুকুই কেড়ে নিয়েছে।আমাদের সাথে কবে তিনি হাসি মুখে কথা বলেছিলেন সেটা এখন গবেষনার বিষয়।
আমার বাবা মানুষ হিসেবে অসাধারণ।
আমার এই অসাধারণ বাবাও দিন দিন কেমন খিটখিটে স্বভাবের হয়ে যাচ্ছেন।বাবা এবং মা দুই জনেরই এই বয়সটায় সমস্ত দায়-দায়িত্ব থেকে অবসরে যাওয়ার কথা কিন্তু আমরাই তাদের ছুটি দিতে পারছিনা।
আমি জানি বাবা,মা ছোট দুটি ভাই বোন সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে।আর আমি তাকিয়ে আছি আমার রেজাল্টের দিকে।সামনের মাসেই আমার ফাইনাল ইয়ারের রেজাল্ট হওয়ার কথা,হয়ত ভার্সিটিতে আমাকে রেখেও দিতে পারে।
আমি কিছু একটা করতে পারলে সবচেয়ে খুশি হবেন মা,বাবা পাবেন স্বস্তি।ছোট দুটি ভাই বোনের আবদার মেটাতেও আমার কোন আপত্তি থাকবে না।
পাশের বাড়ির তিশাকেও হয়ত মনের কথাটা খুব সহজেই বলতে পারব।আমার ছোট বোন শামার বান্ধবী তিশা,শ্যামলা রঙ্গের গোলগাল চেহারার মেয়ে,হাসি দিলে দুই পাশের গালে টোল পড়ে,এটাই বোধয় ওর সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে দেয়।ভার্সিটির চাকরিটা হয়ে গেলে ওর এডভোকেট বাবার সামনে দাড়াতেও আমার পা কাপবে না!!
আমি নিজে কিছুটা চাপা স্বভাবের হওয়ায় নিজের ভিতরে থাকতেই পছন্দ করি।একমাত্র মা ই আমাকে কিছুটা বুঝতে পারেন।অবশ্য শামা আর শাওনের কাছে আমি শুধুই তাদের দাদা নই,ভাই বন্ধু সব কিছু....আমি যা বলি বা করি সেটাতেই তারা মুগ্ধ হয়,যেখানে মুগ্ধ হওয়ার মত কিছুই নাই সেখানেও তারা মুগ্ধ হয়,কেউ কেউ বোধয় মুগ্ধ হওয়ার ক্ষমতা নিয়েই জন্মায়।
বাবা মার পাশের রুমটাই আমার হওয়ায় প্রায়ই মায়ের চাপা স্বরে কান্না আর বাবার শান্তনার সুর শুনি।বালিশ দিয়ে নিজের দুকান চেপে ধরে রেখে বলি এইতো মা আর কটা দিন,তারপর সব ঠিক করে দিব আমি।যে গভীর মমতায় যে গভীর ভালবাসায় আমাদেরকে বড় করেছ তার একভাগও যেন তোমাদেরকে দিতে পারি।
২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:০৬
উদ্ধাস্ত৬১ বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ।লিখতে লিখতেই ঠিক হয়ে যাবে ইনসাল্লাহ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৫
পথে-ঘাটে বলেছেন: ভাল লাগল। কিন্তু যতি চিহ্নের ভুল গুলো চোখে পড়ার মত। যেমন, আপনি দাড়ি না দিয়ে কমা দিয়েছেন। আপনি লিখেছেন "ফযরের নামায দিয়ে উনির দিন শুরু হয়"। এখানে 'উনির' না লিখে 'উনার' লিখলে ভাল হবে।