নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাহাদাত উদরাজী\'র আমন্ত্রণ! নানান বিষয়ে লিখি, নানান ব্লগে! নিজকে একজন প্রকৃত ব্লগার মনে করি! তবে রান্না ভালবাসি এবং প্রবাসে থাকার কারনে জীবনের অনেক বেশী অভিজ্ঞতা হয়েছে, যা প্রকাশ করেই ফেলি - \'গল্প ও রান্না\' সাইটে! https://udrajirannaghor.wordpress.com/

সাহাদাত উদরাজী

[email protected] ০১৯১১৩৮০৭২৮গল্প ও রান্না udrajirannaghor.wordpress.comপ্লে স্টোরে ‘গল্প ও রান্না’ এন্ড্রয়েড এপ্লিকেশন! আনন্দ সংবাদ! বাংলা রেসিপি নিয়ে এই প্রথম প্লে স্টোরে এন্ড্রয়েড এপ্লিকেশন! ‘গল্প ও রান্না’ এখন Play Store এ Apps হিসাবে আপনার হাতের কাছে। নেট কানেশন বা WiFi জোনে থেকে Play Store এ যেয়ে golpo o ranna বা “Golpo O Ranna” বা “com.udraji.rannaghor” লিখে সার্চ করলেই পেয়ে যাবেন। খুব সহজেই আপনি আপনার এন্ড্রয়েড মোবাইলে ‘গল্প ও রান্না’র আইকন ইন্সটল করে নিতে পারেন। ফলে আপনাকে আর মোবাইলে আমাদের সাইট দেখতে লিঙ্ক বা কোন ব্রাউজার ব্যবহার করতে হবে না। নেট কানেশন বা ওয়াইফাই জোনে থাকলেই আপনি ওয়ান ক্লিকেই গল্প ও রান্না দেখতে পাবেন।

সাহাদাত উদরাজী › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ সন্তান

৩০ শে মে, ২০২০ দুপুর ১২:৩২

গল্পঃ সন্তান

১।

সাইফুল ইসলাম প্রমানিক, গ্রামের বাড়ি পাবনার শাহজাদ পুরে, রেল স্টেশন থেকে হাঁটা পথ, বর্তমানে ঢাকায় বসবাস, ইকোনমিক্সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ দিয়ে দেশের নানান ব্যাংকে কাজ করে এখন একটা বেসরকারী ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিড্রেন্ট, সব কিছু মিলিয়ে, ফ্লাট গাড়ি বেতন নিয়ে বলা চলে সুখেই আছেন, বাস্তব ও চাকুরী জীবনে একদম ছোট থেকে তিনি বড় হয়েছেন নিজের কঠোর অধ্যবসায়, নিয়মানুবর্তিতায় ও নিষ্ঠায়, অফিসে তিনি দ্বায়িত্ব ও নিষ্ঠার জন্য সকলের কাছে অনুপ্রেরনা হয়ে আছেন। আরো কিছু কথা না বললেই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুরা তার প্রমানিক নামটা ছোট করে 'প্রমান' বলেই ডাকত! জীবনের এই পর্যায়ে তিনি এখনো প্রমান দিয়েই যাচ্ছেন!

পারভীন আক্তার পারু, গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার হোমনা উপজেলার ঘাগুটিয়া ইউনিয়নে, ছাত্রী হিসাবে খুব একটা জ্ঞানী ছিলেন না তবে নজরকাড়া সুন্দরী ছিলেন। ঢাকায় জন্ম, বাবার খুব আদুরে মেয়ে ছিলেন। বিবাহের পর তিনি এম এ পাস করেছেন, সে অনেক কষ্টকর কাহিনী, আর একদিন জানানো যাবে। তবে চাকুরীর কোন প্রয়োজনীয়তা মনে করেন নাই এবং ব্যবসাহের একটা চিন্তা মাথায় সব সময়েই আছে, সাজ বিষয়ে কয়েকটা কোর্স করেছেন, চাইলেই মহিলাদের জন্য একটা বিউটি ক্লিনিক খুলে ফেলতে পারেন, যদিও এখনো সেই সাহস করছেন না!

উপরের দুই চরিত্রের কথা গুলো পড়ে আপনাদের নিশ্চয় এখন বোঝার বাকী নেই যে, উনারা স্বামী ও স্ত্রী! আপনারা এখনো সঠিক লাইনে আছেন, হ্যাঁ, সঠিক! প্রমানিক তখন একটা ব্যাংকের অফিসার মাত্র, পারুর বাবার চোখে পড়েন! অভিজ্ঞতার আলোকে পারুর বাবা বুঝেছিলেন যে, এই ছেলে একদিন উন্নতি করবে, ফলে তিনি শুধু বলা চলে চেহারা দেখেই মেয়েকে বিবাহ দিয়ে দিয়েছেন! সেই থেকে সাইফুল ইসলাম প্রমানিক ও পারভীন আক্তার পারুর সংসার যাত্রা। নিশ্চিত চাকুরী বলে সাইফুল ইসলাম প্রমানিক কখনো তেমন দুঃখ দেখে নাই, তবে ছোট বেলার কিছু দুঃখের স্মৃতি আছে, পিতার অভাবের সংসারের কথা কখনো ভুলেন না!

সাইফুল ইসলাম প্রমানিক ও পারভীন আক্তার পারু দম্পতির এক ছেলে, এবার ইন্টারমেডিয়েট পরীক্ষা দিল, মেটিক পাশের রেজাল্ট তেমন নয়, টেনে টুনে পাশ অথচ এই ছেলের পিছনে বলা চলে পানির মত টাকা ঢালা হয়েছে, ভাল রেজাল্ট করার জন্য বা ছেলের পড়াশুনার জ্ঞান বাড়ানোর জন্য, কিন্তু কেন জানি ওর পড়াশুনাতেই অনীহা, বাকী সব মাশাআল্লাহ! এদিকে, এই বয়সেই বেশ সুদর্শন, বিধাতার নিজ হাতে গড়া যেন। সাইফুল ইসলাম প্রমানিক ছেলেকে দেখেন আর ভাবেন, ছেলের এই বয়সে তিনি কত কালাছালা ছিলেন, সঠিক পুষ্টি ছিল না দেহে! ছেলেকে দেখে তিনি আনন্দিত হন। পড়াশুনা না করলেও যদি সামান্য পরিশ্রমিও হয় তবে জীবন আনন্দে কাটাতে পারবে কিংবা এই ভাবেন নিজের রেখে যাওয়া টাকা সম্পত্তিও যদি দেখবাহাল করতে পারে তবুও আনন্দে থাকতে পারবে!

তবে যাই হোক, গত চার বছরে ছেলের ব্যক্তি আচরণে তিনি বলা চলে ভরসা হারিয়েছেন, সেই সব ঘটনা এখানে তুলে দিলে আপনারাও কষ্ট পাবেন, ফলে গোপন রাখা হল, এখন বার বার মনে হয় এঁকে দিয়ে আর যাই হোক পড়াশুনা হবে না, বা এটা নিশ্চিত বলা চলে। তবে কাউকে কিছু বলাও যায় না আবার সহ্য করে থাকাও মুস্কিল হয়ে পড়ছে, বুকের ব্যাথ্যা বেড়ে যায়! নানান মনো বিশ্লেষনে সাইফুল ইসলাম প্রমানিকের বার বার মনে হতে থাকে ছেলেটা এই কোথায় যাত্রা শুরু করলো! আজকাল তিনি ছেলেকে নিয়ে বসতে চান এবং তাকে কিছু কথা বলতে চান কিন্তু তার মায়ের কারনে সেটা হয়ে উঠে না!

২।

প্রমান - ছেলেতো খুব সিগারেট টানে, আজকাল কাছে গেলে গন্ধ পাই।
পারু - তুমিও তো সারা জীবন সিগারেট টেনে টেনে পার করছো!

প্রমান - ছেলে তো মনে হয় প্রেম করে।
পারু - তা তোমার স্বভাব পাবে না, বাপের নাম রওশন করবে না!

প্রমান - ওকে কিছু আইন কানুন নিয়ম শৃংখলা শেখাও।
পারু - ভুল ধরতে পারলেই তুমি আনন্দ পাও!

প্রমান - লেখাপড়াতে কখনো দেখি না।
পারু - তোমার চোখ আন্ধা, ও যখন পড়ে তখন তুমি দেখ না!

প্রমান - নিজের কাজ গুলো তো নিজে করবে, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন চলবে, গোসলে অনীহা।
পারু - ও রাতে গোসল করে!

প্রমান - সময় মত সব কিছু করা শেখাও, জীবনে এখন না শিখলে আর শিখতে পারবে না।
পারু - তুমি বেশি কথা বলো, কথা না বলে থাকতে পার না! অ্যাজাইরা কথা বলাই তোমার অভ্যাস!

প্রমান - গত কয়েক বছরে ও তো খাবার টেবিলে বসলোই না, এক সাথে কখনো খেয়েছে মনে করতেও পারি না।
পারু - তোমার খাবার তুমি খেয়ে ঘুমাতে যাও!

প্রমান - ওর পিছনে যে টাকা খরচ করছি, তা রেখে দিলে বৃদ্ধকালে কারো কাছে হাত পাততে হত না, মনে হয় টাকা গুলো নষ্ট হচ্ছে।
পারু - কিছু করে খোটা দেয়া তোমার অভ্যাসে পরিনত হয়েছে!

প্রমান - বসে বসে নিজের সন্তানের গোলায় যাওয়া দেখছি।
পারু - তোমার নজর লাগছে!

৩।

বাইরে খুব বৃষ্টি হচ্ছে, মুশলধারে। সাইফুল ইসলাম প্রমানিক অফিসে বসে আছেন, জানালা দিয়ে অনেক দুরের গাছগাছালি দেখা যায়, বাতাস ঢেউ খাচ্ছে! কয়েক ঘন্টা পরে বোর্ড অফ ডিরেক্টর্সদের একটা মিটিং আছে, ব্যাংক লোন ডিসভার্স্মেন্ট অফ মিডল ক্লাস! আজকাল দেশের মিডল ক্লাসকে ব্যাপক হারে ব্যাংক লোনে আটকাতে না পারলে ব্যাংক চালানো কঠিন হয়ে পড়ছে। ধনীদের লোন দিলে ফেরত দেয় না, গরীবদের দিলে মরে যায় বা যাচ্ছে! বাকী থাকে মধ্যবিত্ত শ্রেণী, সমাজে এরা এখনো দুই কুলে, দুই নৌকায় পা দিয়ে বসে আছে, এদের এখনো লাজলজ্জা কিছু বাকী আছে মাত্র!

অপরিচিত মোবাইল কলে সাইফুল ইসলাম প্রমানিক নড়ে উঠেন। এখন আর তেমন কোন অপরিচিত কল তার কাছে আসে না, সবাইকে মোটামুটি একটা ক্লাসিফাইড লিষ্টে নিয়ে এসেছেন।
তবে ব্যাংকের চাকুরী, অপরিচিত নাম্বার গুলো ধরে অধিক সন্মানের সাথে কথা বলতে হয়, কেন ডাইরেক্টর কখন ফোন করে কি জানতে চায়, কে জানে! এদের সাথে কখনো অসন্মান করে কথা বলা যায় না, এদের যে কোন একজন বাজে রিপোর্ট দিলে, চাকুরীতে আর টিকে থাকা যাবে না। এদের তেল ঘি দিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। এই বয়সে আর নুতন করে চাকুরী খোঁজা যাবে না!

- হ্যালো, প্রমানিক বলছি, কিভাবে আপনাকে হেল্প করতে পারি।
; আমি গুলশান থানা অফিস ইন চার্জ বলছি, আপনাকে এখন একটু থানায় আসতে হবে। রিশাত তো আপনার ছেলে, মটরসাইকেল দূর্ঘটনায় সব শেষ হয়েছে।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে মে, ২০২০ দুপুর ১:৩৫

নেওয়াজ আলি বলেছেন: মুগ্ধ হলাম।

৩০ শে মে, ২০২০ রাত ৮:৫৩

সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।

২| ৩০ শে মে, ২০২০ দুপুর ২:১৮

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: যদিও গল্প, তবে ডিটেইলস দেখে সত্য থেকে তোলা গল্পই মনে হলো। রিশাতদের পরিণতি এমনই হয়ে থাকে। অতি আদুরে সন্তান, মটরসাইকেলে (হয়ত ড্রাঙ্ক্‌ ছিল তখন বা এম্নিতেই ড্রাগ এডিক্টেড) দুর্ঘটনা তো ঘটবেই, মাদক ব্যবসায় ধরা খেয়েও থানা-হাজতে যেতে পারে, আন্ডার ওয়ার্ল্ডে জড়িয়ে যেতে পারে, আরো অনেক অপকর্মে জড়িয়ে পড়া স্বাভাবিক ব্যাপার। আর এর সবকিছুর জন্যই যাকে দায়ী করা যায়, সে হলো এ সন্তানের মা। ২ নাম্বার সিকোয়েলে মায়ের যে ডায়লগ শোনালেন, তা আমাদের সোনার বাংলার প্রতিঘরের মায়েদের ডায়লগ, যাদের কারণে এই আদুরে দুলাল টাকাকে টাকা মনে করে না, বাবার কষ্টকে দায়িত্ব মনে করে আর নিজের লাগামহীনতাকে মনে করে বেড়ে ওঠার এটাই স্বাভাবিক নিয়ম। অথচ, একজন মাই সন্তানকে কড়া শাসনে রেখে তার ভবিষ্যত গড়ে তোলার জন্য কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

৩০ শে মে, ২০২০ রাত ৯:০১

সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। গল্পটা আপনি সময় নিয়ে পড়েছেন বলে বোঝা যাচ্ছে।
হ্যাঁ, আমার কাছে এখন এই সময় এমনি মনে হচ্ছে। ঢাকার মধ্যবিত্ত বা যারা তাদের আর্থিক সমস্যা পার করতে পেরেছে তাদের ছেলে মেয়েরা আর মানুষ হচ্ছে না কারন এমনি বলেই আমার কাছে মনে হচ্ছে। আমি নিজেও মাঝে মাঝে এমন চিন্তায় পড়ে যাই।

এদের জ্ঞান কোথায় যেয়ে ঠেকছে, তা নিয়ে ভাব্বার সময় এসেছে হয়ত! এই ছেলে মেয়েগুলো যদি বেচেও থাকে এই মা'দের ওরা কখনোই দেখবে বলে মনে হয় না! মা বৃদ্ধ হলে এরাই ফেলে চলে যাবে বা নির্যাতনের স্বীকার হবেই, অবশ্য সেদিনেও এরা বুঝতে পারবে কি না সন্দেহ হয়, বিবেক জাগবে কি না আমার ধারনা হয় না!

শুভেচ্ছা নিন।

৩| ৩০ শে মে, ২০২০ দুপুর ২:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: মটর সাইকেল খুব খারাপ জিনিস। আর চেংড়া পোলাপান মটর সাইকেল চালায় বিছছিরি ভাবে। কোনো নিয়ম কানুন মানে না। গত এগারো বছরে সবচেয়ে বেশি মটর সাইকেল বিক্রি হয়েছে।

৩০ শে মে, ২০২০ রাত ৮:৫৩

সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.