নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
[email protected] ০১৯১১৩৮০৭২৮গল্প ও রান্না udrajirannaghor.wordpress.comপ্লে স্টোরে ‘গল্প ও রান্না’ এন্ড্রয়েড এপ্লিকেশন! আনন্দ সংবাদ! বাংলা রেসিপি নিয়ে এই প্রথম প্লে স্টোরে এন্ড্রয়েড এপ্লিকেশন! ‘গল্প ও রান্না’ এখন Play Store এ Apps হিসাবে আপনার হাতের কাছে। নেট কানেশন বা WiFi জোনে থেকে Play Store এ যেয়ে golpo o ranna বা “Golpo O Ranna” বা “com.udraji.rannaghor” লিখে সার্চ করলেই পেয়ে যাবেন। খুব সহজেই আপনি আপনার এন্ড্রয়েড মোবাইলে ‘গল্প ও রান্না’র আইকন ইন্সটল করে নিতে পারেন। ফলে আপনাকে আর মোবাইলে আমাদের সাইট দেখতে লিঙ্ক বা কোন ব্রাউজার ব্যবহার করতে হবে না। নেট কানেশন বা ওয়াইফাই জোনে থাকলেই আপনি ওয়ান ক্লিকেই গল্প ও রান্না দেখতে পাবেন।
মিঃ হানিফ সংকেতের অনুষ্ঠান কিংবা মাওলানা আজহারী সাহেবের অনুষ্ঠানের ঘটনা গুলো খুব সাধারন এবং নিয়মিত ব্যাপার, উনারা বড় মাপের বলে আলোচনা হচ্ছে এই আর কি! আমি করি, এই সব নিয়ে সিরিয়াস হবার কোন কারন নেই, এই সব মানুষ্য চরিত্রের ব্যবস্থা, অনেক পুরানো! এই সব অনুষ্ঠানের এমন দশা হয় যখন আগ্রহী শ্রোতা দর্শককে এমন ল্যাটকা বা গণ বসার ব্যবস্থা করা হয়, কিছু পর পর বাঁশ দিয়ে বেড়া না দেয়া হলে এমন হতে বাধ্য!
যাই হোক, এবার নিজের জীবনের একটা ঘটনা বলি! সাল ১৯৮৫, তখন কমলাপুরে অনেক বড় বড় খোলা মাঠ ছিলো, এই মাঠ গুলোতে শীতে সার্কাস, যাত্রা, পুতুল নাচ, মেলা ইত্যাদি হত। আমরা স্কুলের পাড়ার কয়েকজন বন্ধু মিলে সিধান্ত নিলাম, যাত্রা কি বিষয় তা দেখবো, সারা রাতের অনুষ্ঠান যাত্রা। শুনেছি অনেক মজা, নাটকের মত হয় এবং মাঝে মাঝে চলে বেশ উদাম নৃত্য, তখন এই নৃত্যে কেহ মাইন্ড করত না! একদিন আমরা ৫ বন্ধু প্রবেশ করলাম রাত ১১টার দিকে, টিকেট কয়েক পদের ছিলো, সর্ব নিম্ম ছিলো ১০টাকা, আমরা ভাবলাম ১০টাকার টিকেটে মাদুরে মাঠিতে বসেই যাত্রা দেখবো, পরে টাকা বাছলে সকালের নাস্তা করে বাসায় ফেরা যাবে।
যাত্রা শুরু হল, ঘন্টাখানেক বেশ ফাঁকা, আমরাও চাঁটাইতে বসে মোটামুটি ষ্টেজের কাছাকাছি গল্পগুজব করে দেখছিলাম, আমাদের জুতা স্যান্ডেল চাঁটাইইয়ের নীচে রাখলাম। কতক্ষন পর পর মাইকে ঘোষণা আসছিলো, এবার আসছেন, প্রিন্সেস লাকী, প্রিন্সেস লাকী! প্রিন্সেস জিরো জিরো সেভেন লাকী! সেই সময়ে মনে হয় যাত্রা নৃত্যে তিনি বিশাল কারিতকর্মা ছিলেন! কিন্তু ধীরে ধীরে রাত ১২টা নাগাত এই ১০টাকার সিটে অনেক মানুষ এসে গেল এবং দেখলাম আরো আসছে। এভাবে চলছে, মাঝে মাঝে যাত্রার ফাঁকে কয়েকটা নৃত্য হয়ে গেল, শীতের রাত কিন্তু মানুষের চাপে পুরা প্যান্ডেল গরম!
এভাবে আরো মানুষ প্রবেশ করলো, বার বার সেই একই ঘোষণা, এবার আসছেন, প্রিন্সেস জিরো জিরো সেভেন লাকী! কিন্তু যাত্রা চলে, হালকা পাতলা নাচ চলে কিন্তু প্রিন্সেস আর আসে না! এদিকে রাত মনে হয় তিনটে, তখনো সেই প্রিন্সেসের দেখা নেই। আয়োজকেরা কিন্তু থেমে নেই, বার বার ১৫/২০ মিনিট পরেই বলেন আবারো সেই কথা! এদিকে আমাদের ১০টাকার দর্শকেরা আর সইতে পারছিলেন না, শুরু হল পিছন থেকে ঠেলা আর ঠেলা, এখন আমরা সামনের পাব্লিকেরা কই যাবো। আমাদের মধ্যে থেকেও শুরু হল পিছনে ঠেলা, কিন্তু পিছনের স্রোতের মত মানুষকে কি সামাল দেয়া যায়, বের হবার কোন উপায় নেই। এদিকে যাত্রাদলের আয়োজকেরা বার বার বলেই যাচ্ছেন, থামেন থামেন ঠামেন, তিনি আসছেন! কিন্তু কে শুনে কার কথা! আমরা অনেকে সেই দিন অনেকের পদপদলিত হয়ে পড়ছিলাম, বন্ধুদের কে কোথায় জানি না, আমিও প্রাণ বাঁচাতে চেষ্টায় ছিলাম, ঢাকা স্টেডিয়ামে ফুটবল খেলা দেখা ও দর্শকের মারামারি দেখা পাব্লিক বলে জুতা হারিয়ে কোনমতে বের হয়ে আসছিলাম। তবে যাত্রা আর চলে নাই, বন্ধ হয়েছিল।
পরে কমলাপুরের বাবুর হোটেলে ভোরে আমাদের সব বন্ধু উপস্থিত হয়েছিলাম, কারোই জুতা স্যান্ডেল ছিল না, সবার কাপড়ে ধুলো ময়লা! বন্ধু নিয়াজ, বন্ধু মুন্না হাসছিলো, ওরা বলছিলো, 'আর যাবি যাত্রা দেখতে, আগে কইছিলাম, যাইস না, যাত্রা দেখে ফাত্রারা'!
আজও এই ঘটনা মনে পড়লে আমরা বন্ধুরা হাসি, বন্ধু নিয়াজ এখনো বলে, প্রাণে বেঁচে ফিরেছিলাম সেইদিন, এটাই বড় বিষয়। তবে এখন সেই রাত রিয়েলাইজ করি। আয়োজকেরা সেদিন বসার জায়গার তুলনায় বেশী সিটের টিকেট বিক্রি করেছিল, ব্যবস্থাপনা দূর্বল ছিলো। তারা বার বার সেই নৃত্য প্রিন্সেসের কথা বলে বেশী টিকেট বিক্রি করে কিন্তু সেই প্রিন্সেসকে স্টেজে আনে নাই, মানুষ অপেক্ষা করতে রাজি ছিলো না! বা ইত্যাদি।
যাই হোক, ঠাকুরগাঁও ইত্যাদির অনুষ্ঠান কিংবা মাওলানা সাহেবের ওয়াজের অনুষ্ঠান আমার কাছে একই সুতায় গাঁথা বলে মনে হচ্ছে, আমাদের সেই যাত্রা দেখা রাতের মত! এতে নানান কুট কৌশল খোঁজার কিছু দেখি না! এমন হতেই পারে, দেশে জায়গার তুলনায় মানুষ সেই পুরানো আমল থেকেই বেশী!
তবে, এর পরে আমি আর কখনো এমন ভীড়ের কোন অনুষ্ঠানে যাই না, আমার সেই রাতের কথা মনে পড়ে, কেয়ামতের রাত ছিলো! সেই যাত্রা দেখার রাতে মানুষের পায়ের নিচে পড়ে বিধাতার কাছে আমার একটা কথা/প্রমিজ এখনো বার বার মনে পড়ে, 'আল্লাহ, তুমি যদি এই যাত্রা থেকে বাঁচিয়ে ফেরাও তবে আর কোনদিন যাত্রা দেখতে আসব না'!
নয়াপল্টন থেকে।
২| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ৮:২৭
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: আমিও এমন বিব্রতকর পরিবেশে কয়েকবার পড়েছিলাম। আপনার ভাবনাটা একদম সঠিক।
৩| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ৮:৪৫
মাহদী হাসান শিহাব বলেছেন: এখন তো ইউটিউবেই মাওলানা সাহেবদের বক্তৃতা শোনা যায়। ভিড় ঠেলে শীতের রাতে মাঠে বসে তাদের কথাবার্তা শোনার এই হাইপ বন্ধ হওয়া দরকার।
©somewhere in net ltd.
১| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ৮:১৫
নাহল তরকারি বলেছেন: আপনার অভিজ্ঞতা পড়ে মনে হলো, সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাব কীভাবে একটি সাধারণ আনন্দদায়ক অনুষ্ঠানকে ভয়ানক স্মৃতিতে পরিণত করতে পারে। এটি শুধু ১৯৮৫ সালের যাত্রাপালা নয়, আজকের বড় বড় জনসমাগমেও আমরা একই সমস্যা দেখতে পাই। আয়োজকদের অতিরিক্ত টিকিট বিক্রি ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাব দর্শকদের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে। ব্লগে যে সরল কিন্তু গভীর বার্তাটি উঠে এসেছে, তা হলো—কোনো অনুষ্ঠান আয়োজনের আগে স্থান, দর্শকসংখ্যা, এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রতি আয়োজকদের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া উচিত। আপনার ঘটনাটি শুধু বিনোদনের নয়, দায়িত্বহীন আয়োজন থেকে শিক্ষা নেওয়ার সুযোগও। সেই অভিজ্ঞতা থেকে আপনি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন—ভিড়ের অনুষ্ঠান এড়িয়ে চলা—তা সত্যিই প্রাসঙ্গিক। লেখাটি বিনোদনমূলক হলেও এর সামাজিক দিকটি আমাদের অনেক কিছু শেখায়। ধন্যবাদ, এমন অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য!