নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পরিচয়পর্ব পরে সেরে নেবো।

উল্টা দূরবীন

কেন এক অচিন মানুষের বাস মানুষের ভিতর? জর্জরিত বোধ তবু অভিনয় যেন সুখের সাঁতার!!

উল্টা দূরবীন › বিস্তারিত পোস্টঃ

রম্য রন্ধন (খিচুড়ি+ঝাল গরুর মাংস)

১১ ই জুন, ২০১৫ বিকাল ৫:০২

রান্নার নামঃ ভুনা খিচুড়ি উইথ ঝাল দেওয়া গরুর গোস্ত।

উদ্দেশ্যঃ
১. বৃষ্টির দিনে ঝাল গরুর গোস্তের সাথে ভুনা খিচুড়ি খাওয়া।
২. কাউকে দাওয়াত করে খাওয়ানো।
৩. আগত বর্ষাকে উপভোগ্য করে তোলা।
৪. রান্না করে নিজের দক্ষতা যাচাই করা।
৫. এবং উপযুক্ত রন্ধন প্রণালী সম্পর্কে হাতে কলমে জ্ঞান লাভ করা।

প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও মালামালঃ

১. বড় পাতিল (ঢাকনা সহ) - ১ টি
২. মাঝারি পাতিল (ঢাকনা সহ) - ১ টি
৩. ধারালো বটি - ১ টি
৪. প্লেট - মাথাপিছু ১ টি
৫. বাটি - অনেকগুলা
৬. হটপট অথবা টিফিন ক্যারিয়ার - ১ টি
৭. পানির জগ, গ্লাস - ২ টি, মাথাপিছু ১ টি
৮. ডলফিন মার্কা দিয়াশলাই - ১ টি
৯. জ্বালানী সহ চুলা - ১ টি
১০. চিনিগুড়া চাল - ৫ কেজি
১২. গরুর গোস্ত (ইন্ডিয়ান হলেও সমস্যা নাই) - ৫ কেজি
১৩. তীর খাঁটি সয়াবিন তেল - ১ লিটার
১৪. দেশী পেয়াজ - ২ কেজি
১৫. দেশী রসুন - এক পোয়া
১৬. ছোট সাইজের কাচামরিচ - আধা কেজি
১৭. দেশী আদা - ১০০ গ্রাম
১৮. গরম মশলা (প্যাকেট) - প্রয়োজন মত
১৯. আয়োডিন যুক্ত লবন - এক প্যাকেট
২০. গুড়া হলুদ, গুড়া মরিচ (রাধুঁনী) - ১০০ গ্রাম করে
২১. অষ্ট্রেলীয়ান গাভীর দুধের তৈরী ঘি - ১ কৌটা
২২. শশা, গাজর, লেবু (সালাদের জন্য) - প্রয়োজন মত
এবং রান্নার জন্য খুন্তি, চামচ, গরম পাতিল নামানোর জন্য মুচনি, পানি ইত্যাদি।
(কোন উপকরণ বাদ গেলে অভিজ্ঞরা কমেন্টে জানান)

কার্যপ্রণালীঃ

১. প্রথমে উপকরণের লিষ্ট কাগজে লিখে নিন।
২. বাসা থেকে জামাকাপড় পরে ছাতা নিয়ে বের হোন।
৩. বাজার কাছে হলে হেঁটে আর দূরে হলে রিক্সা নিয়ে চলে যান। মেয়ে হলে নিজে যাবেন না। জামাই অথবা বয়ফ্রেন্ডকে পাঠান।
৪. লিষ্ট ধরে ধরে সব যন্ত্রপাতি ও মালামাল কিনুন।
৫. যেই রাস্তায় বাজারে গিয়েছেন সে রাস্তা ধরে রিক্সা করে বাসায় ফিরে আসুন।
৬. লিফট অথবা সিড়ি দিয়ে উপরে উঠুন। বাসার পাশের গাছ বেয়ে উঠতে যাবেন না। নিজের ফ্লাটে ঢুকার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন বাসায় পানি আছে কিনা। না থাকলে বাড়িওয়ালাকে বলুন।
৭. ব্যাচেলর হলে নিজে রান্নার প্রিপারেশান নিন। বিবাহিত হলে বৌকে কুটাকুটি, ধোয়ামোছায় সাহায্য
করুন।
৮. এবার যেভাবে খিচুড়ি আর গরুর মাংস রান্না করতে হয় সেভাবে রান্না করে ফেলুন।
৯. রান্না ঘরের জানালা খুলে দিন যাতে প্রতিবেশীরা আপনার রান্নার সুঘ্রাণ পায়।
১০. রান্নার ফাঁকে ফাঁকে কানে হেডফোন লাগিয়ে রবীন্দ্রনাথের বৃষ্টির গান শুনুন। ফেসবুকে দুই একটা স্ট্যাটাস দিতে পারেন।
১১. রান্না শেষ হয়ে গেলে পাতিল নামিয়ে চুলা অযথা জ্বালিয়ে না রেখে বন্ধ করে দিন। গ্যাস একটি জাতীয় সম্পদ।

সতর্কতাঃ

১. যেসব যন্ত্রপাতি ও মালামাল বাসায় আছে সেগুলা কিনার দরকার নাই।
২. গরুর মাংস কিনার সময় কৌশলী হোন। নইলে ঠকবেন। হাড় ছাড়া মাংস কিনলে ভালো হয়।
৩. ভিজা দিয়াশলাই কিনবেন না।
৪. উপকরণের লিষ্ট তৈরীর পর উপযুক্ত স্থানে রাখুন। বাজারে যাওয়ার পথে যেন হারিয়ে না যায়।
৫. বাসা থেকে অবশ্যই জামাকাপড় পরে বের হবেন। ছাতাও নিয়ে গেলে তার উপর গভীর মনযোগ রাখুন। ছাতা এবং গার্লফ্রেন্ড/বয়ফ্রেন্ড হারিয়ে গেলে খুঁজে পাবেন না।
৬. বাজার কাছে হওয়া সত্ত্বেও রাস্তায় পানি জমে থাকলে রিক্সা নিবেন।
৭. ফ্লাটের সামনে এসে প্রথমে কলিংবেল চাপুন তারপর দরজায় টোকা দিন। কারেন্ট না থাকলে কলিংবেল বাজবে না।
৮. লিষ্ট অনুযায়ী সব সব মালামাল কিনুন। নইলে আরো কয়েকবার বাজারে বা দোকানে যাওয়া লাগতে পারে।
৯. রান্নার ক্ষেত্রে বিশেষ কৌশলী হোন। লবন, হলুদ যেন বেশী না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন। মনে রাখবেন, আপনার পোশাক, মেকাপ, প্লে লিষ্টের গান আর রান্না এগুলোই আপনার রুচির পরিচয় দেয়।
১০. গরুর মাংস অবশ্যই ভুনা করতে হবে এবং বেশি করে ঝাল দিতে হবে। মাংসের সাথে আলুও দিতে পারেন। তবে অবশ্যই গোল আলু দিবেন। সাক্কুর আলু অর্থাৎ মিষ্টি আলু দিয়েছেন তো মরেছেন।
১১. চুলা জ্বালানোর আগে অবশ্যই দিয়াশলাইয়ের কাঠি জ্বালাবেন। তা না হলে চুলায় আগুন জ্বলবে না।
১২. ঘরে বৌ থাকলে রান্নার সময় যদি উনি উচ্যবাচ্য করে তাহলে চুপ করে থাকুন। জবাব দিয়েছেন তো মরেছেন।
১৩. খাওয়ার সময় যদি সেলফি তোলার ইচ্ছা থাকে তাহলে খেয়াল রাখবেন আপনার মুখ যেন হা করা না থাকে। হাসিমুখে সেলফি তুলে ফেবুতে দিয়ে দিন। সেলফিতে যেন খিচুড়ি মাংস আসে সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন।
১৪. খাওয়ার সময় পরিমাণ মত খাবেন। পেট ভরার পরেও খেলে তা গলা অবধি উঠে যাবে।
১৫. খাওয়ার পরে গ্যাস্ট্রিক, পাতলা পায়খানা, কোষ্ঠকাঠিন্য হলে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।
১৬. খাবার যেন অপচয় না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন।

মন্তব্যঃ খাবার খেয়ে কেমন লাগছে তা রাঁধুনীকে জানান। খারাপ হলেও পজিটিভ মন্তব্য করুন। খাওয়ার আগে বন্ধুবান্ধব, আত্মীয় স্বজনকে দাওয়াত দিন। আমি আসতে পারবো না। আমার জন্যে হটপট অথবা টিফিন ক্যারিয়ারে করে পাঠিয়ে দিবেন। অথবা এতো গ্যাঞ্জাম না করে নান্নায় গিয়ে খেয়ে নিন।

(একাডেমিক এসাইনমেন্টের অনুপ্রেরণায় একটি রম্য রন্ধন পদ্ধতি)

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জুন, ২০১৫ বিকাল ৫:১৩

ইমতিয়াজ ১৩ বলেছেন: প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও মালামালঃ


অংশটা বেশ লেগেছে।

১১ ই জুন, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৪

উল্টা দূরবীন বলেছেন: )

এবার কারো বাসায় গিয়ে মেজবান খেয়ে আসুন।

২| ১১ ই জুন, ২০১৫ বিকাল ৫:৩১

আমি মিন্টু বলেছেন: কিছু টাকা পাঠাইয়া দিয়েন বৃষ্টির দিন আছে বাজার করে এনে খিচুড়ি রান্না করে খামু

১১ ই জুন, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৩

উল্টা দূরবীন বলেছেন: কেউ একজন আপনাকে টিফিন ক্যারিয়ারে করে নিশ্চিত টাকা পাঠিয়ে দিবে। আশা রাখেন ..

৩| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩৪

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: হাহা! "খারাপ হলেও পজিটিভ মন্তব্য করুন" - এই উপদেশ শিরোধার্য! এটা কোন সাবজেক্টের অ্যাসাইনমেন্ট জানতে পারি কি?

১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ২:০৬

উল্টা দূরবীন বলেছেন: আমাদের সকল এসাইনমেন্ট এই ফরমেটেই ছিলো। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ এবং আমার ব্লগে স্বাগতম।

৪| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:৪২

নাঈফা চৌধুরী (অনামিকা) বলেছেন: আমি জানতে চাইছিলাম কোন কোর্সের অ্যাসাইন্টমেন্ট? আশা করি আপনি ভাল আছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.