![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একটু হাসুন
আমি মাহিন। এলাকার সবচেয়ে শান্ত ছেলে আমি। তাই কেউ আমাকে কিচ্ছু বলেনা। আমাকে দেখলেই দূরে চলে যায়, অনেকেই আবার অন্যপথে হাটা দেয়। আমি জানি, তারা আমাকে কিছু বলতে চায়না বলেই আমার থেকে দূরে দূরে থাকে।
আমার বয়স এখন ষাট বছর্। আজ আমি আমার জীবনের কিছু ঘটনা শেয়ার করবো আপনাদের সবার সাথে।
তখন স্কুলে পড়তাম। ক্লাসের সবচেয়ে সেরা ছাত্রটি বোধহয় আমিই ছিলাম, তাই কেউই আমাকে সহ্য করতে পারতোনা। শুধু রোলে নম্বরের দিক দিয়ে সবার লাস্টে আমার নাম ছিল এই আর কি!
আমার এক বন্ধু ছিল, তার নাম কুজি। আমরা ভেবে পেতাম না, দুনিয়াতে এত সব সুন্দর সুন্দর নাম থাকতে তার নাম কুজি রাখতে গেল কেন তার পরিবার?
প্রথম যেদিন কুজির সাথে সেদিন তার নাম শুনে আমি সহ পুরো ক্লাসের সবাই এক চোট হো হো করে হেসে নিয়েছিলাম। তারপর হঠাত স্যারের এক রাম ধমক খেয়ে সবাই একদম চুপ! কুজির চোখে সবসময় হ্যারি পটার সাইজের মোটা গ্লাসওয়ালা একটা চশমা লাগানো থাকতো। কুজি বলেছিল, তার নাকি ভিটামিন এ এর অভাব, তাই সে চোখে কম দেখে।
এরপর স্যার আমাদের বুঝিয়ে দিয়েছিল, ভিটামিন এ এর অভাবে চোখের জ্যোতি নস্ট হয়ে যায়।
তারপর দিনই আমি কুজির চোখ ভাল করার জন্য এক ফর্মুলা প্রয়োগ করলাম। কুজি সম্ভবত আমার ফর্মুলা পছন্দ করেনি, তাই কাদতে কাদতে স্যারকে বলে দিয়েছিল।
তারপর, ক্লাসের সবার সামনে আমার বিচার বসলো। আমাদের হেডস্যার, কুত্তার মত চেচিয়ে উঠল,
–মাহিন্যা……
আমি থতমত খেয়ে ভেড়ার মত উত্তর দিলাম, “জ্বী স্যার?…
–তুই কুইজ্যার চোখে মরিচ দিয়া ডলা মারছত ক্যান?
–আমার কুনু দোষ নাই ছ্যার্। সব দোষ কামাল স্যারের্।
আমার কথায় কামাল স্যার চমকে গিয়েছিল বলে মনে হয়। কামাল স্যার আমাদের বিজ্ঞান পড়াতেন। আমার কথায় তিনি যথারীতি রেগে গিয়ে হুঙ্কার ছাড়লেন,,
–কীহ! আমার দোষ মানে?
–ছ্যার, আপনিই তো কইছিলেন, কুজির চোখের জ্যোতি কম। আমার কাচা মরিচে নাকি চোখের জ্যোতি বাড়াই। তাই আমি ভাবলাম………
ঊহ! পরের ঘটনা আর নাই বললাম! তবে সেদিন হেডস্যারের সতের প্রজন্ম উদ্ধার করেছিলাম।
একদিন আমাদের স্কুলে নতুন ম্যাম আসলো। প্রথমদিন আমাকে দেখেই প্রশ্ন করলো,
–ইশ! তুমি এত শুকনো কেন?
আমি থতমত খেয়ে জবাব দিয়েছিলাম, “আমি আবার ভিজা ছিলাম কবে?”
আমি বুঝতে পারিনি ম্যাডাম আমার সাস্থের কথা বলেছিলেন।
ম্যাডাম আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন,
–এই ছেলে তোমার বাবা কী করে?
–মা যাই বলে, আমার বাবা তাই করে।__চটপট জবাব দিয়েছিলাম। আমি আবার সেরা ইস্টুডেন্ট।
ম্যাডাম আমার প্রশ্নে সন্তুষ্ট হয়েছেন বলে মনে হলোনা, আবার জিজ্ঞাসা করলো,
–আচ্ছা বলো, মাটিতে আপেল পড়ে কেন?
–ম্যাডাম, এটা তো নিউটন নামের মানুষটার জন্য।
এবার নিশ্চয় আমার প্রশ্নে ম্যাডাম খুব সন্তুষ্ট। তাই এক চোট হেসে আমায় জিজ্ঞাস করলেন,
–বলোতো ঐ তে কী?
–ঐরাবত!
–একটা বাক্য বলো “ঐরাবত” দিয়ে।
–পারবোনা ম্যাডাম!
–ঐরাবতের শুড় আছে!
–ধুর গাধী! তাহলে তো ঐরাবত গান গাইতে পারতো।
ম্যাডাম এবার বেজায় চটলেন! গাধী বলাতে আমার শাস্তি বিশবার কান ধরে উঠবস করা!
আমি উনিশ বার উঠবস করে সাঙ্গ করলাম। সাথে সাথে ম্যাডাম চেচিয়ে উঠলেন, এই ছেলে উনিশ বার কেন!
–ম্যাডাম! স্যার বলেছেন, উনিশ-বিশ হলে সমস্যা নেই, নয় ছয় হলেই খবর আছে!
তারপর প্রথমদিনেই ম্যাডামের হাতে উড়াধুরা মাইর খেয়ে স্কুল জীবন ছাড়লাম। আজো জানিনা, আমার দোষ কী ছিল?
লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে পড়লাম মহা বিপদে! বাবা আর টাকা-টুকা দেয় না। একদিন এক বন্ধুকে বললাম,
–দোস্ত, আম্রে কিছু ট্যাহা দে! আই তোর কাছে আজীবন ঋণী থাকুম।
–এই লাইগাই তোরে ট্যাহা দিতাম না। তোরে ঋণী রাখার ইচ্ছা আমার নাইক্কা।
এর কয়েকদিন পর প্রেমে পড়লাম এক সুন্দরী ললনার্।
তো একদিন প্রেমিকারে নিয়া লং ড্রাইভে বের হবো। বন্ধুর এক গাড়ি ধার করে বেরুলাম। খুব জোড়ে গাড়ি চালাচ্ছি।
হঠাত, প্রেমিকা পিছন থাইকা কইলো,
–এই! একটু আস্তে চালাও না। আমার ভয় লাগছে তো।
আমি কইলাম, “ভয় পাইলে আমার মত চোখ বন্ধ কইরা রাখো।”
জানিনা কেন? সেদিনই মেয়ে আমার সাথে ব্রেকাপ কইরা দিল।
প্রেমিকা নাই! টাকাও নাই। বাধ্য হইয়া বাবার কাছে গিয়া টাকা চাইলুম। বাবায় কইলো,
–ট্যাহা দিয়া তুই কী করতে পারবি?
–গুনতে পারুম বাবা।
বাবায় আম্রে লাত্থি দিয়া বাহির কইরা দিল।
কয়েকদিন পর দুর সম্পর্কের এক ডাক্তার মামার মারফতে হাসপাতালে আমার চাকুরী হইলো। আমি ছেলে হইয়াও নার্স হইলাম।
একদিন এক রোগীকে ঔষধ খাওয়ানোর পর ডাক্তার এসে জিজ্ঞাসা করলো,
–ঔষধ খাওয়ানোর আগে বোতল ঝাকিয়েছিলে তো।
–না স্যার্।
–ঝাকালেনা কেন?
–সমস্যা নাই স্যার্। খাওয়ানোর পর যখন মনে পড়লো ঝাকাতে হবে সাথে সাথে রোগীকে কয়েকবার ঝাকিয়ে নিয়েছি।
আরেকটা বেডে, ডাক্তার জিগাইলো,
–ঘুম থেকে উঠিয়ে এই রোগীকে কীসের ঔষধ খাওয়ালে?
–ঘুমের ঔষধ স্যার্।
ব্যাস! ক্যান জানি সেখানেও আমার চাকরীটা গেল।
ও হ্যা! এই ফাকে আমার বিয়েটাও হয়ে গিয়েছিল! আমার বউটা ছিল দুনিয়ার বজ্জাত! খালি আমার পিছু লাগতো। এরই মধ্যে একদিন বউ আমারে জিজ্ঞাস করলো,
–আমি মইরা গেলে তুমি কি লগে লগেই বিয়া করবা?
–উহু! এমনিতেই যা যন্ত্রনা পাইতাছি। আগে কয়দিন জিরাইয়া নিয়া তারপর করমু।
বউয়ের জনমদিনে বউরে জিগাইলাম,
–কেকটা চার টুকরা করুম নাকি আট টুকরা?
বউ কইলো, –চার টুকরাই করো। আমি ডায়েট কন্ট্রোল করতাছি।
খাইছেরে! এরেই কয় ডায়েট কন্ট্রোল!
একদিন অনেক গাট্টি গুট্টি লইয়া রাস্তা দিয়া হাটতাসি। একজন আম্রে দেইখা অবাক হইয়া জিগাইলো,
–কী মিয়া ভাই! এভারেস্ট জয়ে যাচ্ছেন নাকি?
–না ভাই! এই গুলান আমার বউয়ের শপিং!
যাই হোক! কিছু তো করা লাগবো। আমি বাস ড্রাইভারি শিখলাম। একদিন এক এক্সিডেন্টে আদালতে হাজির আমি।
আমাকে জিগাইলো,
–দেখলেন লোকটা রাস্তায় পড়ে গেছে! তারপরেও আপনি গাড়িটা চড়িয়ে দিলেন কেন?
–কী করুম স্যার? গাড়িটা যে বিরতিহীন ছিল!
আর পারছিনা বস! মাথায় আর কিছু নাইক্কা। টাটা।
লেখক: jeffy mahin
২৫ শে জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:৩৯
উমর আই এস বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ৯:০৮
বটের ফল বলেছেন:
