নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

উননুর

সামাইশি

সময় বয়ে যায়, ক্ষয়ে যায় জীবন, মন, সৃষ্টি, ক্লেদের গ্লানি জমা হোল যত যথাপি ঝরে যায় বৃষ্টি।

সামাইশি › বিস্তারিত পোস্টঃ

কানাডা

২৮ শে জুন, ২০১৭ সকাল ৭:২৫




(পূর্বের পর)

১৫৫০ সালের মধ্যে অত্র অঞ্চলের ম্যাপে কানাডা নাম ব্যবহার হতে থাকে.১৬০৪ সালে আক্ষরিক অর্থে পুরোমাত্রায় ইউরোপীয় অভিবাসন শুরু হয়। ফরাসী আবিস্কারক পিয়েরে দু মন্টস এবং স্যামুয়েল দু চ্যাম্প্লান ফ্লোরিডার উত্তরে সেন্ট ক্রয়েক্স দ্বীপ এবং নোভা স্কোশিয়া এর পোর্ট রয়াল এ উপনিবেশ স্থাপন করে। ১৬০৮ সালে চ্যাম্প্লান বর্তমান কুইবেক সিটিতে একটি দুর্গ নির্মান করেন। তাদের লোকদের অত্র অঞ্চলের কঠোর বিরূপ প্রতিকুল পরিবেশের সাথে সংগ্রাম করতে হয় প্রতিনিয়ত। টিকে থাকার জন্য চ্যাম্প্লান ইরোকুইওস দের শত্রু অল্গোন্কুইন, মন্তাগায়নাস হুরোনদের সঙ্গে হাত মেলান। ইন্ডিয়ানরা কখনই উপনিবেশ কারিদের সঙ্গে হাত মেলায়নি। তারা শত বছর ধরে তাদের অঞ্চলের জন্য ইউরোপীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করে গ্যাছে। ১৭০১ সালে ইরোকুইওসরা ফরাসীদের সাথে সন্ধি করে। ফরাসী ও আদিবাসীরা মিলে ফারের ব্যবসা করতে থাকে। সেই সময় ইউরোপে ফারের চাহিদা ছিলো আকাশচুম্বী। এরই মধ্যে শীর্ষস্থানীয় ফরাসী নেতা জিয়ান ট্যালন বিশপ লাভাল, কাঅন্ট ফ্রন্তেনাক উত্তর আমেরিকায় হাডসন সাগর থেকে মেক্সিকো উপসাগর পর্যন্ত এক ফরাসী সম্রাজ্য গড়ে তোলে।

ফরাসী এবং ইংরেজ উপনিবেশকারিদের মধ্যে এক অলিখিত প্রতিযোগিতা চলতে থাকে এই মহাদেশের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার লক্ষে। ১৬৭০ সালে ইংল্যান্ডএর রাজা দ্বিতীয় চার্লস হাডসন বে কোম্পানিকে সাগর সংলগ্ন পুরো এলাক ব্যবসা করার একচ্সত্র অনুমতি দেয়। পরবর্তী ১০০ বছর তারা মন্ট্রিয়েল ভিত্তিক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তুমুল প্রতিযোগিতা করে টিকে থাকার প্রয়াসে। দক্ষ এবং সাহসী ইংরেজ অভিযাত্রীরা ইন্ডিয়ানদের সঙ্গে সুদৃঢ় মিত্রতা গড়ে তোলে। লক্ষনীয় তারা (ফার্স্ট নেসন) ফরাসীদের সঙ্গে তখন যুদ্ধ করে চলেছে। এরই মধ্যে আটলান্টিক উপকুলের ইংরেজ উপনিবেশ সমূহ ক্রমান্নয়ে ধনী, শক্তিশালী এবং ঘন বসতিতে ভরে যেতে থাকে ফরাসী অঞ্চল সমূহের তুলনায়। অষ্টাদশ শতাব্দীর শুরু থেকে ফ্রেন্চ এবং গ্রেট ব্রিটেন উত্তর আমেরিকায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার লক্ষে যুদ্ধ শুরু করে দেয়। বছরের পর বছর তাদের মধ্যে যুদ্ধ চলতেই থাকে। ১৭৫৯ সালে ব্রিটিশরা কুইবেক শহরের নিকটে প্লেন অফ আব্রাহামের যুদ্ধে ফরাসীদের পরাজিত করে। যুদ্ধে উভয়পক্ষের সেনাপতিই যথাক্রমে ব্রিগেডিয়ার জেমস উলফ এবং মারকুইস দু মন্টকাল্ম নিহত হন নেতৃত্ত্ব দিতে গিয়ে। এই যুদ্ধের ফলে আমেরিকাতে ফরাসী সম্রাজ্যের অবসান হয়ে যায়।

যুদ্ধ পরবর্তিতে গ্রেট ব্রিটেন উপনিবেশের নামকরণ করে প্রভিন্স অফ কুইবেক। ফরাসী ভাষী কাথলিকেরা যারা নিজেদের ক্যানাডিয়েন নামে অভিহিত করতো, হঠাত করে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার দুরুহ পরিস্থিতিতে পরে যায়। ব্রিটিশ রাজের ইংরেজ ভাষী লোকেরা ছিল প্রটেস্টান্ট খ্রীষ্টান যারা কিনা ক্যাথলিকদের নিচু, অবজ্ঞার চোখে দেখত। তাই বলে ব্রিটিশরা ফরাসীদের নির্মূল করে দেয়ার সাহস কখনই পায়নি, কেননা তারাই ছিলো তখন সংখ্যাগরিষ্ঠ। চতুর ইংরেজরা তাই যা নিজেরা ওদের মূল ভুখন্ডে মেনে চলে না তাই করে বসলো। সংখ্যাগুরু ফরাসী রোমান ক্যাথলিকদের উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ এবং শক্ত হাতে শাসনের জন্য ১৭৭৪ সালে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট কুইবেক এক্ট পাশ করে। কুইবেক এক্টকে কানাডার সংবিধানের ভিত্তি ধরা হয়। ওই এক্টএর মাধ্যমে ফরাসী ক্যাথলিকদের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত এবং অফিস আদালতে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয়। মজার ব্যাপার হলো যদিও ওই সময়ে ইংরেজরা মূল ভুখন্ডে তা অনুসরণ করতোনা। কুইবেক এক্ট এই দেশে ইংলিশ ক্রিমিনাল ল এবং ফরাসী বেসামরিক আইন প্রতিষ্ঠা করে।

এরই মধ্যে ১৭৭৬ সালে কুইবেকের দক্ষিনের ১৩ টি ব্রিটিশ কলোনি স্বাধীনতা ঘোষণা করে ইউনাইটেড এস্টেটস গঠন করে। এবং উত্তর আমেরিকাতে আবার যুদ্ধ লেগে যায়। ব্রিটিশ রাজের ৪০০০০ অনুগামী ওই সমস্ত অঞ্চল থেকে পালিয়ে এসে নোভা স্কোশিয়া এবং কুইবেকে আশ্রয় নেয়। বৃটিশের পক্ষ অবলম্বন কারীদের মধ্যে কিছু ইন্ডিয়ান, কৃস্নাঙ্গ মুক্ত ও ক্রীতদাস, স্বল্প সংখ্যক ইহুদি উন্নত জীবনের আশায় এই দেশে চলে আসে। এই দেশে আস্তে আস্তে গণত্রন্ত প্রতিষ্ঠানিক বিকাশ হতে থাকে। ১৭৫৮ সালে প্রথম নোভা স্কোসিয়ার হালিফাক্সে প্রতিনিধিত্বমূলক আসেম্বলি নির্বাচিত হয়। পরবর্তিতে প্রিন্স এডওআরড আইলান্ডে ১৭৭৩ সালে এবং নিউ বার্নসউইকে ১৭৫৮ সালে তা প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৭৯১ সালে ব্রিটিশ সরকার কুইবেককে দুই ভাগে আপার কানাডা (পরবর্তিতে অন্টারিও) এবং লোয়ার কানাডা (কুইবেক) এ ভাগ করে ফেলে। আপার কানাডাতে প্রধানত:ইংরেজিভাষী লয়ালিস্ট প্রটেস্টান্ট এবং লোয়ার কানাডাতে ফরাসী ভাষী ক্যাথলিকদের আধিক্য ছিলো। ১৭৯১ এক্টএর মাধ্যমে প্রথমবারের মত কানাডায় জনপ্রতিনিধিত্তমূলক আইন সভার অনুমোদন দেওয়া হয়. এবং কানাডা নামটিও সরকারিভাবে তখন থেকে ব্যবহৃত হতে থাকে। আটলান্টিক কলোনি সমূহ এবং দুই কানাডাকে যৌথ ভাবে ব্রিটিশ নর্থ আমেরিকা নামে অভিহিত করা হয়। (ক্রমশ)

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জুন, ২০১৭ সকাল ৮:০৯

পয়গম্বর বলেছেন: চমৎকার! আপনার সাথে কি ইমেইলে যোগাযোগ করা সম্ভব? [email protected]

২৯ শে জুন, ২০১৭ রাত ১:৫৮

সামাইশি বলেছেন: আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

২| ২৮ শে জুন, ২০১৭ সকাল ৮:২৭

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ভালো লাগল।

২৯ শে জুন, ২০১৭ রাত ১:৫৯

সামাইশি বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ।

৩| ২৮ শে জুন, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৮

মক্ষীরাজা বলেছেন: ভাইয়ুমণিতা!!!!!!!!!

বাহ!!!!!!!!

মুগ্ধ মুগ্ধ মুগ্ধ!!!!!!!!

ঠিক পরীর দেশের রাজণ্যদের লেখা !!!!!!!!

উলে জাদুরে। উম্মা :>

৪| ২৯ শে জুন, ২০১৭ রাত ২:০০

সামাইশি বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.