নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাতাল ঋত্বিক আমি, প্রেমকথা আমার ঋগ্বেদ

আরণ্যক রাখাল

মাতাল ঋত্বিক আমি, প্রেমকথা আমার ঋগ্বেদ

আরণ্যক রাখাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

যাচ্ছেতাই গল্পগুচ্ছ

০১ লা জুলাই, ২০১৫ রাত ১:২৭

ভয়
ঘরে বসে চরম উদাসের এর গল্প পড়ছি- মারাত্মক জমজমাট গল্প আর সিগারেট টানছি।
“প্রেরণাকে একটু একাডেমী রেখে আয় তো”। আম্মু বলল দরজার ওপাশে দাঁড়িয়ে।দরজা লাগিয়ে দিয়েছি আর ফ্যানটা চালু যাতে গন্ধ জানালা দিয়ে বেরিয়ে যায়। এখন আম্মুর সামনে যাওয়া মানে ধরা খাওয়া ।
আর মা তো আগে থেকেই আমাকে সন্দেহ করে যে আমি সিগারেট ধরেছি। একদিন টেনে একটা সেন্টার ফ্রুট খেয়ে মার সামনে গেছিলেম তবুও বুঝতে পারল কিভাবে সেটা বিস্ময়ের ব্যাপার।
“তুই সিগারেট খাইছিস?”
আমি তো একবাক্যে অস্বীকার করেছিলাম। তারপর আর কথা বাড়ায় নি।সেই থেকেই আমি মেয়েদের নাককে বিশ্বাস করি না বিশেষত আম্মুর।
তো যাই হোক, এখন আর আমি মার সামনে যাচ্ছি না। তাছাড়া ওকে রেখে আসার কি আছে! এখনো এমন কোন বড় হয় নি যে ওকে রাস্তায় কেউ টিস করবে- কেবলি টু তে পড়ে। আর ওকে তো এখন থেকেই স্বাবলম্বী হতে হবে। আমাদের ডিমলার পরিবেশ এখনো এতোটা খারাপ হয়নি যে কেউ কিডন্যাপ করবে।
আমি অনেকটা বিরক্তি মিশিয়ে বললাম, “ এইটুকু তো রাস্তা নিজেই যাইতে পারবে। আমি এখন ঘুমাব। ডিস্টার্ব করবা না”।
আম্মু চলে গেল। গল্পটাও শেষ করলাম- ছোট গল্প; আক্ষরিক অর্থেই ছোট- বনফুলের গল্পের মত অনেকটা। আর কিছু ভাল লাগল না।
সমকালে ডুকলাম। কিছুক্ষন scroll করার পর একটা খবরে চোখ আটকে গেল- “আট বছরের মেয়েকে ধর্ষণের পর খুন”।
আর ঠিক থাকতে পারলাম না। বের হয়ে আসলাম ঘর থেকে। আম্মুকে বললাম, “মা প্রেরণা গেছে?”
“ এই এখোনে গ্যাল”।
আমি দৌড়িয়ে ওকে ধরলাম- প্রায় ৫০০ মিটার। লাফাতে লাফাতে যাচ্ছিল। আমাকে দেখে থামল।
“ লাফাচ্ছিস কেন? এক সাইড দিয়া হাঁট” বলে ওর সাথে হাঁটতে লাগলাম।
তারিখ :- ১৪ নভেম্বর ২০১৪। দুপুর ৩.৩০-৪.০০


বার্ষিক সাহিত্য ম্যাগাজিন

নতুন হেডমাস্টার আসার পর যা করলেন তা আর,বি,আরের ইতিহাসে আগে ঘটে নি। কেউ চিন্তাও করেনি কোনদিন। এতো যে আমাদের জাহাঙ্গির স্যার সাহিত্য সাহিত্য করেন তিনিও না।এবার থেকে নাকি প্রতি বছর সাহিত্য ম্যাগাজিন বের হবে। অনেকে যেমন জাহাঙ্গির স্যার সাদরে ব্যাপারটা গ্রহন করলেন।
কেউ কেউ বললেন, ‘এটা বারাবারি”।
কেউবা, “নতুন এসেছেন তো তাই একটু...বুঝলেন না” বললেন। তিনি কিন্তু কারো কথায় কান দিলেন না। একবার যখন বলেছেন হবে তো হবেই।
যা ভাবছিলাম তাই জাহাঙ্গির স্যারকে দেয়া হোল সম্পাদনার দায়িত্ব।
বেশ জোরেশোরেই শুরু হোল ম্যাগাজিনের কাজ। প্রতি ক্লাসে নোটিশ দেয়া হোল ম্যাগাজিনের জন্য লেখা জমা দেয়ার। আর প্রকাশিত হওয়ার পর সব্বাইকে তা কিনতে হবে- বাধ্যতামূলক। দাম রাখা হয়েছে ৩০ টাকা। যাদের লেখা ছাপানো হবে তারা সম্মানি হিসেবে এক কপি ফ্রি পাবে। স্কুলের লেখক- আঁতেল- ভালো ছাত্ররা এতেই খুশি।
আমি ওই ভালো ছাত্রদের দলে পড়ি- ভালো না হলেও খারাপ কেউ বলেছে শুনিনি। তবে যাই হোক আমি ওই আঁতেলদের মত না- ওরা মানে যারা ভালো ছাত্র- সারাজীবন highest নাম্বার পেয়েছে-তাদের মত না। আমি পরীক্ষায় ভালো নাম্বার পাই ঠিকই আবার সিগারেটও ফুকি দিনে পাঁচবার- এমনকি স্কুলে আসলেও। লাস্ট বেঞ্চের ছাত্রদের সাথে ক্লাসে বসে এক্স মুভিও দেখি।

আমারা ব্যাপারটা সিরিয়াসলিই নিলাম- সারাদিন টৈ টৈ করে বেরালেও সন্ধায় ঠিকি পড়ার টেবিলে বসি। আর চলে আমার সাহিত্য চর্চা। হাতে একমাস আছে- বহু সময়; অনায়ায়ে তিন-চারটা গল্প লেখা যায়। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়, হুমায়ন আহমেদ আর ফেসবুকের গল্পের পেজগুলা থেকে কেটেসেটে দাঁর করালাম দুইটা টসটসে গল্প। একটায় হিন্দু মেয়ে মুসলমান ছেলের প্রেম আরেকটা ভূতের গল্প।
বন্ধুদের দেখালাম। ওরা তো মারাত্মক খুশি। যেন পারলে এখনে আমাকে সাহিত্যে নোবেলটা দিয়ে দেয়। তারিফ সিগারেট ফুকতে ফুকতে বেশ বিজ্ঞের ভঙ্গিতে তারিফ করল, “ভূতেরটা যেমনি হোক, তোর প্রেমের গল্পটা যোশ হইছে। পড়লে কান্না বেড় হয়ে যায়। জটিল হইছেরে দোছ”।আমারও তাই মনে হয়। ভূতেরটা ভুত এফেম শুনে লেখা- সবাই এরকম লিখতে পারে। কিন্তু প্রেমেরটা আসলেই মন থেকে লিখেছি- এমনকি একটা কবিতার লাইন পর্যন্ত তুলে দিয়েছি আবুল হাসানের-“ অতটুকু চায়নি বালিকা, অত শোভা, অত স্বাধীনতা! চেয়েছিল আরও কিছু কম!” আর সুনীলের গল্পের একটা গোটাল প্যারা!
ঠিক করলাম এটাই জমা দেব। সবাই যখন এতো করে বলল আর আমারও পক্ষপাতিত্ব এটার প্রতিই।
গল্পটার নাম ছিল ‘অসম প্রেম’। ‘অসম প্রেম’ ই জমা দিলাম। ম্যাগাজিন প্রকাশিত হলে বুঝতে পারব লেখা ছাপা হয়েছে কিনা আর লেখাটার মানও বুঝতে পারব।

ঝালমুড়ি খাচ্ছিলাম নেন্দুদার দোকানে। তানিয়া এসে বলল, “ কিরে তোর গল্প জমা দিছিস?”
বললাম, “দিছি”।
আরও হাবিজাবি অনেক গল্প হোল। হঠাত্‌ বলল, “ আমাকে একটা গল্প লিখে দেনা”।
টাস্কি খেলাম- এইবার বুঝলাম আমার সাথে এতক্ষণ গাজুর গুজুরের কারণ। আর হলে তো পাত্তাই দেয় না। একবার প্রাকটিকাল খাতার জন্য ওর বাড়ি গিয়েছিলাম। দেয় নি- মনে আছে। আর এখন কিনা গল্প চাচ্ছে!
আমি এককথায় বললাম, “ পারব না। তোর প্রাকটিকাল একবার চাইছিলাম, দিছিলি?”
আর বেশিক্ষণ কথা এগুল না। আমি নেন্দুকাকে ঝালমুড়ির দাম দিয়ে কেটে পরলাম।

কিন্তু ওকে গল্প দিতেই হোল। কার কাছে নাকি শুনেছে আমি খুব ভালো লিখি- তারপর থেকে প্রতিদিন এসে ঘ্যানঘ্যান করতে থাকে। বিরক্ত হয়ে ওকে ভূতের গল্পটা দিয়ে দিলাম। ওটা গিয়ে ও জাহাঙ্গির স্যারের কাছে জমা দিল। অবশ্যই নিজের নামে।

বার্ষিক পরীক্ষা আজ শেষ হবে। ক্লাস টেনে উঠে গেলাম। তার চেয়ে বড় কথা আজ প্রকাশিত হচ্ছে আমাদের স্কুলের প্রথম সাহিত্য ম্যাগাজিন “প্রগতি”- কে নামটা রেখেছে জানিনা কিন্তু ভালই রেখেছে; ও নিশ্চয়ই নিজেকে বুদ্ধদেব বসু ভাবছে!
বাড়ি থেকে ৫০টাকা- ৩০ টাকা ম্যাগাজিন- নিয়ে এসেছিলাম। যদিও বিশ্বাস আছে নিজের লেখা ছাপা হবে । তবুও।
পরীক্ষা শেষে হেডস্যার সবাইকে অফিস রুমের সামনে অপেক্ষা করতে বললেন। আমরা তাই করছি। স্যার বের হয়ে এলেন সঙ্গে জাহাঙ্গির স্যার- হাতে এক বান্ডিল ম্যাগাজিন। স্যার উদ্বোধন করলেন, আমরা তালি দিলাম। এরপর স্যার যাদের লেখা ছাপা হয়েছে তাদের নাম ঘোষণা করবেন- তাদের এক কপি সম্মানি দেয়া হবে।
আমার বুক ধুকপুক করছে- আমার নাম যদি না থাকে- এতো কষ্ট করে লিখলাম!
স্যার পড়া শুরু করলেন-“ প্রথমে কবিতা- অবাক পৃথিবী-অনিকেত বড়ুয়া, চলে এসো অনিকেত- তোমার জন্য পরস্কার এক কপি”
স্যার বলে যেতে লাগলেন। কবিতা শেষে ধরলেন গল্প। মোট ছয়টা গল্প ছাপানো হয়েছে। আমারটা কি ষষ্ঠও হবে না? স্যার পাঁচ জন গল্পকারের নাম বললেন- আমার নাম নেই। আমি চুপ করে আছি- নড়ারও ক্ষমতা নেই যেন। ষষ্ঠ জনের নাম শুনে আত্মারাম খাঁচাছাড়া হয়ে গেল! “মনিরা আকতার তানিয়া!”

৩০ টাকা দিয়ে ম্যাগাজিনটা কিনলাম- তানিয়ার মানে আমার গল্পটা প্রথমেই ছাপানো হয়েছে।১০ থেকে ১৬ পৃষ্ঠায়। তানিয়া এসে বলল, অনেকটা লাফাতে লাফাতে, “ দোছ কি খাবি বল?”

প্রগতিশীলতার দৌর

ধর্ম পড়ছিলাম। পড়ছি আর হাসছি। আব্বু আর মুক্তমনার দাপটে ধর্ম আমাদের বাড়িতে , আমার মস্তিস্কে জায়গা পায়নি।নাস্তিকতার জন্য আব্বুকে একবার জামাতিরা শিবিরেরা হুমকি পর্যন্ত দিয়েছিল।
তবুও ধর্ম আমাকে পড়তে হচ্ছে- এসএসসি দিব আর মাধ্যমিকে তো ধর্মের যা মুল্য কেমিস্ট্রিরও তা।
পড়ছি- জোরে জোরে; জোরে না পড়লে না কি পড়া হয় না। কখন জানিনা আব্বু এসে পিছনে দাঁড়িয়েছে। “ এই দেশটা ধর্ম ধর্ম করতে করতেই ডুবল।বিজ্ঞান চর্চা একেবারে হয় না। দেশে যতগুলা মৌলবি আছে সব জঞ্জাল- কোরান মুখস্ত করতে যতটুকু বুদ্ধি খরজ(খরচ) হয় সেটা ১৫-২০ টা আইনেস্তাইনের সমান”
আব্বু লেকচার দেয়া শুরু করেছেন- যেভাবে এগুচ্ছেন তাতে আধাঘণ্টার মধ্যে থামবেন বলে মনে হয় না।
“আর দেশের শিক্ষাব্যাবস্থা দ্যাখ। যারা সাইন্স পড়ে তাদেরও নাকি ধর্ম কম্পালসরি- আরে বাবা সাইন্স তো ধর্মকে কবেই টাটা বাই বাই করে দিছে- বিজ্ঞানের ছাত্ররা আবার ধর্ম পড়বে কি?”
এসব ভাষণ আমরা অনেকবার শুনেছি। আমি যখন ছোট্ট- এই এতটুকু তখন থেকেই।ফল যা হওয়ার তাই হয়েছে-আমি নাস্তিক- জেনেশুনেই কিন্তু মা এখনো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে; আব্বু শত চেষ্টাতেও ছারাতে পারেননি।
না-আব্বু লেকচার শোনানোর সুযোগ পেলেন না- কে যেন কল দিয়েছে- রিংটোন বাজছে; ফোন টা ধরলেন, আমি পড়ায় মনোযোগ দিলাম।

আমার টেস্ট চলছে। ভালই হচ্ছে পরীক্ষাগুলো। আজ ইংরেজি পরীক্ষা ছিল। সবাই বলছে প্রশ্ন নাকি খুব হার্ড হয়েছে- আমার কিন্তু তা মনে হোল না। সোজাই তো। আমার কাছে কোনদিন ইংরেজি কঠিন মনে হয় নি, আসলে যারা ভয় পায় তাদের কাছে সব কিছুই কঠিন। আমার দৃঢ় বিশ্বাস আমি প্লাস পাবই- তা ম্যাডাম যত হার্ড করে খাতা কাটুক না কেন।
পরের দিন শুক্রবার। শনিবার সাধারণ গনিত পরীক্ষা। আমার প্রস্তুতি মোটামুটি ভালই; চিন্তার কোন কারণ নেই। হেসেখেলেই প্লাস পাব। তাই বসে বসে হুমায়ন আজাদের “আমরা কি এই বাংলাদেশ চেয়েছিলাম” পড়ছি। কিছুক্ষণ পর আম্মুর উত্তেজিত আওয়াজ শুনতে পেলাম- আব্বু নাকি গাড়ি ( আসলে মোটরসাইকেল- আব্বু মোটরসাইকেলকে গাড়ি বলে সেই সুবাদে আম্মুও) থেকে পড়ে গেছে- এখন মেডিকেলে। থানা মেডিকেল বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটারও হবে না; আসলে আমাদের বাড়িটা এমন জায়গায় যে আশেপাশের এক কিলোমিটারের মধ্য স্কুল, কলেজ, বাজার, থানা,মেডিকেল সব- যেসব প্রতিষ্ঠান থাকলে জীবনকে সহজ মনে হয়-আছে। মেডিকেলের দিকে দৌড় দিলাম। দেখছি আব্বু ভালই আছে। কথা বলছে। আমি তো ভাবলাম সিরিয়াস কিছু। পড়ে শুনলাম, আব্বুর নাকি শরীরের উপর কোন নিয়ন্ত্রণ ছিলনা যখন চালাচ্ছিল। তাই মোটরসাইকেল থামায় আর সেই সময় একজন পরিচিতের দেখা পান যিনি তাকে মেডিকেলে নিয়ে আসেন। বুঝতে পারলাম ব্যাপারটা হৃদয় কেন্দ্রিক মানে হার্টের প্রবলেম আর কি। ডাক্তার আব্বুকে আজ রাতে সেখানেই মানে মেডিকেলেই থাকতে বললেন।আমি বাড়ি ফিরে এলাম আব্বুর জন্য কম্বল, বিছানা আর লুঙ্গি আনার জন্য।
নিয়ে এলাম- এসে দেখই আব্বুর অবস্থা খুব খারাপ- ঠিক মত নিশ্বাস নিতে পারছে না, মাঝে মাঝে বিকট চিৎকার করে উঠছে। দুই-তিন বার দাত-মুখ এমন ভাবে খিঁচিয়ে উঠল যে মনে হোল অন্তিম মুহূর্ত এসে গেছে। আমার মনে হোল আমি যেন একজন মানুষের সামনে দাঁড়িয়ে আছি যে আর কিছুক্ষণের মধ্যেই স্বর্গে ভুল বললাম নরকে যাবে। আমি মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখতে পারছি। আম্মু এমন অবস্থা যে যেকোনো সময় টলে পড়ে যেতে পারেন- সবাই দোয়া পড়ছে। শুনতে পেলাম আম্মু জোরে জোরে দোয়া পড়ছে-“ আল্লাহ্‌ আমি জীবনের বদলে জীবন দিব আল্লাহ্‌। তুমি ওকে বাঁচাও, আল্লাহ্‌ তার বদলে আমাকে নাও”। আমি কিন্তু দোয়া একদম পড়িনি- আমার বিশ্বাস ছিল প্রযুক্তির উপর- প্রযুক্তি যদি ঠিকমত কাজ করে তবে আব্বু বাঁচবে নয়তো মৃত্যুর পর শুধু অন্ধকার............আমি ব্যস্ত ছিলাম ambulance যোগার করতে আর অন্যান্য সব ব্যাবস্থা করতে।
এরপরের ঘটনা খুব দ্রুত ঘটে গেল। আব্বুকে রংপুরে নেয়া হল। ডিমলা মেডিকেলের ambulance নষ্ট হয়ে পড়ে আছে- পাশের থানারটা আনান হোল। প্রায় চার ঘণ্টা পর আব্বু রংপুরে পৌছাল। অবস্থা খুব খারাপ ছিল- কিন্তু যমে মানুষে টানাটানি যাকে বলে আরকি সেটা করে আব্বু জিতল।

এর পরের ঘটনা খুব বিস্ময়কর।আব্বু যদি মারাও যেতেন তবুও আমি এতোটা বিস্মিত হতাম না ।
আব্বু একমাস পর সুস্থ হোলেন। কিন্তু পাল্টে গেছেন আমূল। এখন তার হাতে সবসময় তসবি, মাথায় টুপি। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন থুড়ি আদায় করেন ( আগে তুমি বলতাম এখন আপনি বলি)। দাড়িও রেখেছেন। সবচেয়ে বড় কথা এখন তিনি জামাত শিবিরের পাঁড় সমর্থক আর সময়ে সময়ে অর্থ দিয়েও সাহায্য করেন।আর বিজ্ঞান? সে তো জেলে।এমন কথাও আমাকে বলেছেন যে আমাকে নাকি ইন্টারে আর্টস নিতে হবে!
২৭ ডিসেম্বর ২০১৪
শনিবার

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা জুলাই, ২০১৫ সকাল ১১:২০

জেন রসি বলেছেন: সবগুলো গল্পেই সামাজিক প্রেক্ষাপটের প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছি।যৌনসন্ত্রাস থেকে শুরু করে লেখা চুরি কিংবা চাপিয়ে দেওয়া ধর্মীয় মতবাদ সবকিছুই এসেছে এই গল্পগুলোতে। তবে আপনার শেষ গল্পটা বেশী ভালো লেগেছে।এ দেশে শিশুকাল থেকেই শিশুদের মনে ধর্মীয় মতবাদের ভ্রান্তি চাপিয়ে দেওয়া হয়।তাই সেই প্রক্রিয়ার মধ্যে বড় হতে হতে তারা একসময় যৌক্তিকভাবে চিন্তা করার ক্ষমতা হায়িয়ে ফেলে।

০২ রা জুলাই, ২০১৫ সকাল ৯:০৫

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: আমাদের দেশের এই ঘটনাগুলো খুব সাধারণ। দ্বিতীয়টি হয়তো নয়। ১ম টি এতোটাই সত্যি যে এ নিয়ে আমাদের চিন্তার অনেক কিছু আছে। আর ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি আমাদের ধর্মে পরিণত হয়েছে- বাঙালির ধর্মই বাড়াবাড়ি। ৩য় গল্পটি সেটা নিয়েই লিখেছি।
অনেক ধন্যবাদ জেন রসি আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য

২| ০১ লা জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:২৭

হাসান মাহবুব বলেছেন: ভালোই। আপনার অন্যান্য গল্পগুলার মত প্যাচপুচ নাই।

০২ রা জুলাই, ২০১৫ সকাল ৯:০৭

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ধন্যবাদ হামা ভাই। এগুলো গতবছরে লেখা- একদম সোজা সাপটা লিখতাম তখন। এখন আর এরকম কেন জানি লেখার ইচ্ছা করে না।
ভালো থাকুন হামা ভাই

৩| ০১ লা জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৬

প্রামানিক বলেছেন: গল্পগুলো পড়তে ভালই লাগল। শেষের কাহিনীটা আরও ভাল লাগল। ধন্যবাদ

০২ রা জুলাই, ২০১৫ সকাল ৯:০৮

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। আপনার নিয়মিত উপস্থিতি আমাকে অনুপ্রেরণা দেয়

৪| ০১ লা জুলাই, ২০১৫ রাত ৮:১৭

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: তিনটি গল্পই ভালো হয়েছে, যথেষ্ট ভাবনার অবকাশ আছে প্রতিটি গল্পের সামাজিক প্রেক্ষাপটগুলো নিয়ে। বিশেষ করে প্রথম আর তৃতীয়টি। আর দ্বিতীয়টির মত কাহিনী আমার ক্ষেত্রেও হয়েছিল, তবে দুইটা ব্যতিক্রম ছিল। এক, আমার আরেক ছেলে বন্ধুকে লেখাটা দিয়েছিলাম এবং দুই, দুজনার লেখাই ছাপা হয়েছিল। :)

ভালো থাকুন সবসময়, শুভকামনা রইল।

০২ রা জুলাই, ২০১৫ সকাল ৯:১২

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ বোকা মানুষ।
দ্বিতীয়টি অনেকের ক্ষেত্রেই হয়েছে দেখছি। একবার আমার স্যারের বেলা এরচেয়ে এক্সট্রিম একটা ঘটনা ঘটেছিল। তিনি পত্রিকা অফিসে কবিতা নিয়ে যেতেন কিন্তু কোন কবিতাই সম্পাদকের মনমতো হতো না। একদিন তিনি জীবনানন্দের একটা কবিতা নিয়ে গেলেন। সম্পাদক সাহেব সেটাও গ্রহণ করলেন না, সেটা নাকি কবিতাই হয়নি! ভাবুন একবার

৫| ০১ লা জুলাই, ২০১৫ রাত ৮:১৭

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: তিনটাই ভালো হইছে। সেকেন্ডটা বেশি ভালো।

০২ রা জুলাই, ২০১৫ সকাল ৯:১২

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকুন

৬| ০১ লা জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:০৪

দীপংকর চন্দ বলেছেন: চরম লাগলো!!

চরম উদাসের লেখার মতোই চরম!!

অনিঃশেষ শুভকামনা।

অনেক ভালো থাকবেন। সবসময়।

০২ রা জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৬

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ প্রিয় কবি।
চরম উদাস আমার অত্যন্ত প্রিয় ব্লগার। যেমন প্রিয় হামা ভাই আর নোমান নমি। জানি তাদের মতো লিখতে পারবো না কোনদিন। কিন্তু তাদের ছিটেফোঁটা লিখতে পারলেও আমি খুশী।
অনেক ভালো থাকুন আর লিখতে থাকুন

৭| ০১ লা জুলাই, ২০১৫ রাত ১১:৫২

সৌরভ ঘোষ শাওন বলেছেন: তানিয়ার কাহিনীটা খুবই দূঃখজনক। দূঃখ আমার ভিতর পর্যন্ত চইলা আসছে :(

০২ রা জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৮

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ভাই সত্যি কথা কাউকে কাঁদাতে গল্পগুলা লিখিনি। সরি ভাই। আপনার কাছাকাছি থাকলে আপনাকে নিশ্চয়ই টিসু দিয়ে হেল্প করতাম :)

৮| ০২ রা জুলাই, ২০১৫ রাত ৩:৪০

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: প্রথম ৭জনের উত্তর না দেখে আমিও ভয়ে আছি বোধহয় আমারও।। তাই বিরত মন্তব্য থেকে।। ধন্যবাদ।।

০২ রা জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৪:০১

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ধন্যবাদ গল্পগুলো পড়ার জন্য সচেতনহ্যাপি।
ভালো থাকুন সর্বদা

৯| ০৫ ই জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪৫

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: লেখাগুলো খুব ভাল লাগল। অনেস্ট স্টোরিটেলিং কিংবা জীবন কাহিনী।

২৪ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ১১:০০

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.