নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাতাল ঋত্বিক আমি, প্রেমকথা আমার ঋগ্বেদ

আরণ্যক রাখাল

মাতাল ঋত্বিক আমি, প্রেমকথা আমার ঋগ্বেদ

আরণ্যক রাখাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

বঙ্গবন্ধুর কবর, জানাজা ও দাফন: কেন তাঁর জানাজায় মাত্র ৩৫ জন উপস্থিত ছিল

১৩ ই জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৩

বঙ্গবন্ধুর দাফন নিয়ে অনেক বিভ্রান্তি আছে। বিশেষ করে, অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা লেখাগুলোয়। এক জায়গায় তো লিখেছে তাঁকে নাকি রাতদুপুরে কবর দেয়া হয়েছে!
আসলে নির্ভরযোগ্য সূত্রের অভাবে, হয়েছে এমনটা। এমন বিভ্রান্তির ভিতর আমিও ছিলাম কয়েকদিন। পরে, “বঙ্গবন্ধু হত্যার দলিল” হাতে পেয়ে, আলোর একটা স্পষ্ট রেখা খুঁজে পাই।
সেখান থেকে, যতটা পারি, নিজের ভাষায় লিখছি-
বঙ্গবন্ধুর কবর, জানাজা- এসব নিয়ে প্রথম চিন্তা করেন, মেজর জেনারেল কে এম শফিউল্লাহ। তিনি তখন বঙ্গভবনে বন্দী অবস্থায় ছিলেন অনেকটা। তিনি খন্দকার মোসতাককে বঙ্গবন্ধুর দাফন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে, সেই বিশ্বাসঘাতক বলেন, “রাস্তাঘাটে তো কতো মানুষ মারা যায়, তাদের সবার দিকে দিকে কি আমার খেয়াল রাখতে হবে? গ্রেভ হিম এনি হোয়ার, বাট নট ইন ঢাকা”। (সুত্রঃ বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গ/কে এম শফিউল্লাহ/ ঐ/ পৃষ্ঠা ১৬৯)
তখন তিনি ও এয়ার ভাইস মার্শাল এ কে খন্দকার ঠিক করেন যে বঙ্গবন্ধুকে তার বাবা মায়ের পাশে শায়িত করা হবে। আর খালেদ মোশারফকে তিনি ব্যাবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন।

“বুকে ছিল তার চব্বিশটি গুলি। ডান হাতের তালুতে একটি। বাঁ পায়ের গোড়ার পাশে একটি। দুই রানের মধ্যখানে দুইটি গুলি। গোসলের আগে তার গায়ের গেঞ্জি, পাঞ্জাবী, প্লেকার্ড লুঙ্গি, পাঞ্জাবীর পকেটে রুমাল, তামাকের কৌটা, পাইপ, একটি তোয়াইলা, একটি চাদর, এগুলি পাওয়া যায়। জিনিসগুলি ধুয়ে যত্ন কইরা রাখি। ধুইতে গিয়া খালি গেঞ্জিটা হারাইয়া ফেলি।”
কথাগুলো বলেছেন আব্দুল মান্নান শেখ। বঙ্গবন্ধুর কবর খুঁড়েছিলেন এই ব্যক্তি। গোসলও করিয়েছিলেন তিনি।
১৬ আগস্ট সকাল ন’টার দিকে টুঙ্গিপাড়ার পোস্ট মাস্টারের কাছে বার্তা আসে, “পাঁচ ছয়টি কবর খুঁড়তে হবে, লাশ আসছে ঢাকা থেকে”। পরে জানানো হয় ফোন করে, একটি কবর খোঁড়ার জন্য।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে, সপরিবারে, একথা গ্রামবাসী জেনে গিয়েছিলো আগেই, রেডিওর মাধ্যমে। তাই হেলিকাপ্টারে বঙ্গবন্ধুর লাশ দুপুর ২টায় থানার মাঠে আনা হলে, অনেক লোক আসে দেখতে। কিন্তু কাউকেই কাছে ঘেঁষতে দেয়া হয়নি। শুধু ১৫/১৬ জনকে তার কফিন বহন করার জন্য রাখা হয়। কফিনের ভেতরে ছিল বড় বড় কিছু বরফের টুকরা, তাই সেটা হয়েছিলো আক্ষরিক অর্থেই খুব ভারী।
কফিন বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে আনা হলে, কফিন খোলা নিয়ে ফ্যাসাদ দেখা দেয়। এমনভাবে কফিনটা লাগানো হয়েছিলো যে সেটা খুলতে মিস্ত্রী পর্যন্ত আনতে হয়েছিলো। এতো ঝামেলায় না গিয়ে সেনারা কফিনসহ কবর দিতে চাইলে, তাড়াতাড়ি মিস্ত্রী ডেকে কফিন খোলা হয়।
এরপরে হালিম মৌলবিকে ডেকে বলা হয়, তাড়াতাড়ি কবর দেয়ার জন্য। কিন্তু তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধু একজন মুসলমান, ওনাকে গোসল করাতে হবে, কাফন পরাতে হবে এবং জানাজা পরাতে হবে, আর যদি আপনারা বলেন যে বঙ্গবন্ধু শহীদ হয়েছে তাহলে এসবের দরকার নেই।”
তখন তাদের ২০ মিনিট দেয়া হয় মাত্র- গোসল, কাফন, জানাজা’র জন্য।
শেখ সাহেরা খাতুন রেডক্রিসেন্ট হাসপাতালের রিলিফের জন্য রাখা শাড়ি দিয়ে কাফন বানানো হয়েছিলো বঙ্গবন্ধুর। আর গোসল করানো হয়েছিলো ৫৭০ কাপড়কাচা সাবান দিয়ে! অনেক লোক জমা হয়েছিলো ততোক্ষণে কিন্তু তাদের কাছে আসতে দেয়া হয়নি। আনুমানিক ৩৫ জন লোক উপস্থিত ছিলেন (তিন সারি) বাংলার এই সর্বশ্রেষ্ঠ নেতার জানাজায়। এ বিষয়ে, রজব আলী, যিনি বঙ্গবন্ধুর শেষ গোসলের জন্য সাবান কিনে এনেছিলেন দোকান থেকে, বলেন- “বঙ্গবন্ধুর যখন দাফন কাফন চলছিল তখন এতে অনেক সাধারণ মানুষ সরিক হতে চাচ্ছিল, কিন্তু আর্মিরা প্রচণ্ড বাঁধা দেয়। তারা ভাবছিল বেশি মানুষ এসে যদি লাশ ছিনিয়ে নেয়! সেদিন মানুষ যেমন আর্মিদের ভয় পাচ্ছিল, আর্মিরাও ভয় পাচ্ছিল সাধারণ মানুষদের, কখন জানি তারা ক্ষেপে ওঠে!”
আর্মিরা যে ভয় পাচ্ছিল সেটা বুঝতে পারা যায়, কর্ণেল কাজী হায়দার আলীর বক্তব্য থেকে। তিনি সেদিন বঙ্গবন্ধুর লাশ টুঙ্গিপাড়ায় নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব পেয়েছিলেন। তিনি লিখেছেন-
“হেলিকপ্টারের মধ্যে কারো মুখে কথা নাই, সবাই হয়তো আমার মতোই ভাবছিল, এই কঠিন দায়িত্বে আল্লাহ কেন আমাদের সোপর্দ করলেন? দায়িত্ব পালন করে নিজেরা ফিরতে পারবো কি? দেশের প্রেসিডেন্টের মৃতদেহ তাঁর বাড়িতে যাচ্ছে, লোকেরা কতো কিছু জিজ্ঞাসা করবে, তার জবাব কী দেব? সবাই মনে করবে আমরাই এই অঘটন ঘটিয়েছি, তখন লোকাল এরিয়া থেকে পাল্টা আঘাত আসতে পারে, নিজেরা সামলে ফিরে আসতে পারবো কি?” (সুত্রঃ-বঙ্গবন্ধু হত্যার দলিল/ পৃষ্ঠা- ৮৪)
সেদিন কর্ণেক কাজী হায়দারের সঙ্গে ছিল ১৪ জন সৈনিক। মাত্র ১৪ জন সৈনিক নিয়ে এতো বড় একটা কাজ করা সত্যিই ছিল বিপদজনক। যে কোন কিছুই ঘটতে পারতো। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে আক্রমণ ছিল স্বাভাবিক। সেজন্য সেখানে পূর্ণ নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখার কথা ছিল। কিন্তু ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট কাইয়ুম বলেন-
“...টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছে একহাজার ফিট মাটির কাছাকাছি নেমে দেখলাম সেখানে আমাদের অপেক্ষায় কোন ফোর্স নেই। এ অবস্থায় আমরা দুই হাজার ফিট উপরে উঠে যাই। সিদ্ধান্তহীন অবস্থায় আমরা কখনো একহাজার ফিট কখনো দুই হাজার ফিট উপরে হেলিকপ্টার নিয়ে চক্কর খেতে থাকি। কিছুক্ষণ পর আমরা ল্যান্ড করি।” (সুত্রঃ ঐ/ পৃষ্ঠা- ৮৫)
এই ভয়ের কারণেই কাউকেই, কয়েকজন ছাড়া, আসতে দেওয়া হয়নি বঙ্গবন্ধুর লাশের কাছে।

একজন রাষ্ট্রপ্রধানের মৃত্যুর পর যে রাষ্ট্রীয় সম্মান পাওয়ার কথা ছিল, সেটা বঙ্গবন্ধু পাননি। দাফন শেষ হওয়ার পর আর্মি অফিসারেরা সারিবদ্ধ হয়ে তাকে তিনবার স্যালুট করে চলে যায়।
তার জানাজায় হাজার হাজার মানুষ সামিল হতে পারেনি, কিন্তু কোটি কোটি মানুষ হয়েছিলো শোকে স্তব্ধ। তারা কাঁদেনি। তারা পাথর হয়ে গিয়েছিলো।
এরপর পুরো দুই দশক তার নাম উচ্চারণ ছিল নিষিদ্ধ। না রেডিও, না টেলিভিশন, না সংবাদপত্র- কোথাও ছিলেন না তিনি। শুনেছি, ১৫ আগস্ট এলে নাকি তখন টিভিতে বলা হতো, খবরের এক কোণে, “আজ মরহুম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবের মৃত্যুবার্ষিকী”! হায়, তিনি কি শুধুই ছিলেন একজন রাষ্ট্রপতি?
আজ মাঝেমাঝে বলতে দেখা যায় অনেককে, ৭৫ এ খুন করা হয়েছে একজন স্বৈরশাসককে। শেখ মুজিব গণমানুষের নেতা থেকে উঠেছিলেন গুটিকয়েক মানুষের নেতা। হত্যাকারীরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেনি, হত্যা করেছে গনত্রন্ত্র বিরোধী হয়ে যাওয়া একনেতাকে।
তাদের জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করে, তাঁকে হত্যার পর হত্যাকারীরা আমাদের কী দিয়েছে? দুই দশকের সামরিক শাসন আমাদের মাথার উপর ছিল না? তারা আমাদের জীবন যাত্রা করতে পেরেছে উন্নত? পেরেছে এনে দিতে শান্তি? বন্ধ করে দিতে পেরেছে দুর্নীতি, সুদ, ঘুষ?
আপনার উত্তর যদি “হ্যাঁ” হয়, তবে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা ঠিক হয়েছে; ঠিক হয়েছে তার পরিবারকে নিঃশেষ করে দেয়ার প্রচেষ্টা। আর যদি হয় “না”- তবে ঘৃণা রাখুন মনে সেই হত্যাকারীদের প্রতি।

আজ, মাঝেমাঝে ভাবি, যতটা ঘৃণা করা উচিৎ সেই হত্যাকারীদের, ততোটা কি আমরা করি? মীরজাফরের মতো তবে কেন বলি না, “শালা তুই একটা খন্দকার মোসতাক”, কেউ বিশ্বাসঘাতকতা করলে?
এতো দূরের কথা, আমরা ৩০ লাখের খুনে যাদের হাত ভেজা, সেই পাকিস্তানকেও ঘৃণা করি না।
প্রজন্ম, কিছু ঘৃণা রেখো মনে।
০৫/০৬/২০১৬

মন্তব্য ৯৬ টি রেটিং +৩১/-০

মন্তব্য (৯৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৬

গেম চেঞ্জার বলেছেন: :( :(

জাতির জনকের সাথে এই আচরণ বাঙালিরা করেনি। করেছে একদল পাপিষ্ট মিলিটারি।

১৩ ই জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪৪

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: বঙ্গবন্ধু হত্যার পটভূমি কিন্তু বাঙালিরাই করেছিল

২| ১৩ ই জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৮

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: ভালো লিখেছেন ভাই। “লাইক” দিয়ে গেলাম তাই।
ধন্যবাদ আপনাকে।

১৩ ই জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪৫

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে

৩| ১৩ ই জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪৭

বিজন রয় বলেছেন: সত্য সবসময় চিরজাগরূক থাকবে।
বঙ্গবন্ধুকে মিথ্যা দিয়ে কোন দিন ছোট করা যাবে না।
আপনার এই পোস্টের জন্য আপনাকে স্যালুট।

১৩ ই জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৫

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে

৪| ১৩ ই জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪৮

বিজন রয় বলেছেন: তার জানাজায় হাজার হাজার মানুষ সামিল হতে পারেনি, কিন্তু কোটি কোটি মানুষ হয়েছিলো শোকে স্তব্ধ। তারা কাঁদেনি। তারা পাথর হয়ে গিয়েছিলো

পাকি দালালেরা এসব কোনদিন বুঝবে না।

১৩ ই জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৭

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: পাকি দালালেরা বুঝবে না। ওদের কাঠাঁল পাতা দিতে হবে

৫| ১৩ ই জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৩

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: বঙ্গবন্ধুর সমালোচনা করতে গিয়ে অনেকেই তাঁকে রীতিমত অস্বীকার করে বসে, ভুলে যায় একদিন এই নেতার ডাকেই জেগেছিলো সারা বাংলা; বাঙালি ছিনিয়ে এনেছিলো স্বাধীনতা । বিনম্র শ্রদ্ধা জাতির জনকের প্রতি ।

১৩ ই জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২২

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ইষ্টিশনে লিখেছিলাম এটা নিয়ে। ওখান থেকে একটা অংশ তুলে দিচ্ছি
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী মেজর রশিদ এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “ তিনি (মুজিব) সবাইকে দুর্নীতিপরায়ণ হওয়ার সুযোগ দিয়েছিলেন। তিনি অমানবিক ও নীতিবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগের জন্য নিজের দলীয় সদস্য এবং অন্য কারও বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থাই গ্রহণ করেননি।”
স্বাধীনতা লাভের পর অরাজক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিলো। দুর্নীতি বেড়ে গিয়েছিলো, সুবিচারের অভাব ছিল, সুদ ঘুষ বেড়েছিল- একথা আজ আমরা সবাই জানি। আর এসবের জন্য সবাই দায়ী করেছিল একমাত্র বঙ্গবন্ধুকে। যেন সব দোষ তারই!
এসব কথা যে বঙ্গবন্ধুর কানে যায়নি তা নয়। শামসুজ্জামান খানের সাথে এক আলাপচারিতায়, তিনি, বঙ্গবন্ধু, বলেছিলেন-
তোমরা তো অনেক পড়াশুনা করেছো, অনেক কিছু বোঝো। কিন্তু নিজ দেশের কতগুলি বাস্তব ব্যাপার তোমরা যেন দেখতে পাও না। দেশে এতবড় একটা যুদ্ধ হয়ে গেল। যুদ্ধ মানুসের মূল্যবোধ আমূল বদলে দেয়। মানুষকে বেপরোয়া, লাগামহীন করে। আমাদের দেশেও সেটা হয়েছে। হাইজ্যাক, ডাকাতি বেড়েছে, ‘চাটার দল’ বেড়েছে। এই সব একদিনে দমন করা যাবে না। এটা একটা নতুন পরিস্থিতি। অনেকে অস্ত্র জমা দেয় নাই। ইসলামী দলগুলি আগাগোড়া আমার বিরুদ্ধে গোপন প্রচার করছে, বেনামা পুস্তিকা ছাপছে। জাসদ-এর বিভ্রান্ত অংশ বিপ্লবের নামে কি না করছে? ...থানা আক্রমণ করে অস্ত্র লুটে নিচ্ছে। আমার লোকেদের হত্যা করছে। অথচ তিন বছরে আমরা যা করেছি আমাদের মতো বিধ্বস্ত অন্য কোন দেশ তা পারতো না। এজন্য আমাদের প্রশংসা করে না। কী অবস্থা করে রেখে গেছে পাকিস্তানী হানাদাররা? দেশটা ছিল ভাঙাচুরা; একটা শ্মশান যেন। কি আর বলবো, হুজুর(মওলানা ভাসানী) মুরুব্বী মানুষ, তিনি যে সব বক্তৃতা বিবৃতি দিচ্ছেন তাকে লুফে নিচ্ছে সাম্প্রদায়িক দল ও ব্যক্তিরা। তারা তাঁকে শিল্ড হিসাবে ব্যবহার করে শয়তানের হাসি হাসছে। এই সব দেখেশুনে মনে হয় তাজউদ্দীনের হাতে ক্ষমতা দিয়ে ভোলা বা মনপুরায় গিয়ে ছোট ঘর বানিয়ে থাকি।” (সুত্রঃ বঙ্গবন্ধুর সাথে আলাপ/ শামসুজ্জামান খান/ বঙ্গবন্ধু হত্যার দলিল/ পৃষ্ঠা ১৩০)
আরও বলেন তিনি-
“তোমরা(শামসুজ্জামান খান) তো সেই দিনের ছাওয়াল। এরা বুঝবে না। ...বাঙালির, বিশেষ করে কৃষিজীবী মুসলমান বাঙালির হাতে কোন কাঁচা পয়সা থাকতো না। ধান কাটার মরশুমে পেট পুরে গরম ভাত খেতাম। আর পাটের সময় হলে পাট বিক্রি করে কিছু নগদ টাকা জুটত...... এইতো বাঙালি মুসলমানের অর্থনৈতিক অবস্থা। ......... এই অবস্থাটা মনে রেখে ভাবো স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের কথা। প্রকৃত অর্থে এই প্রথম বাঙালিরা সত্যিকার অর্থে স্বাধীন হয়েছে। এবং এই প্রথম বাঙালির হাতে কিছু নগদ পয়সা আসছে। ব্যাপারটা খুব বড়, তাৎপর্যপূর্ণ। এর একটা উত্তেজনা আছে। বাঙালি, বিশেষ করে তরুণেরা এখন বাঁধনহারা। সমাজ পরিবর্তনের প্রবল ও আকস্মিক ধাক্কায় দিশাহারা। কেউ গাড়ি কিনছে, কেউ ফাইভ ফিফটি ফাইভ ফুঁকছে, কেউ ছিনতাই হাইজ্যাকসহ নানা আকাম-কুকাম করছে। অবাধ স্বাধীনতার এই আকস্মিক স্বাদ ও হাতে আসা নগদ অর্থ দিশাহারা করেছে অনেককে।” (সুত্রঃঐ/ পৃষ্ঠা- ১৩১)
কিন্তু তিনি আশা হারাতে নারাজ। তিনি বলেন, “আপনারা সাহায্য করেন, সোনার মানুষ দেন, আমি সোনার বাংলা গড়ে তুলি।”
কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, তিনি সোনার মানুষ পাননি। তিনি পেয়েছিলেন কিছু পা-চাটা চাটুকার, কিছু চতুর, নৃশংস, স্বার্থান্বেষী আমলা। তাই তার স্বপ্ন সত্যি হয়নি আজও। তিনি সোনার বাংলা গড়ার আগেই কেড়ে নেয়া হলো তার অমূল্য জীবন।
অনেকে, এতো কিছু বলার পরও বলবে, তাঁকে মারা ঠিক হয়েছে। বলবে, হত্যা করা হয়েছে একজন স্বৈরাচারী শাসককে; নেতা থেকে শোষক হয়ে যাওয়া একজনকে।
তাদের জিজ্ঞেস করতে চাই, তাঁকে হত্যার পর হত্যাকারীরা আমাদের কী দিয়েছে? দুই দশকের সামরিক শাসন আমাদের মাথার উপর ছিল না? তারা আমাদের জীবন যাত্রা করতে পেরেছে উন্নত? পেরেছে এনে দিতে শান্তি? বন্ধ করে দিতে পেরেছে দুর্নীতি, সুদ, ঘুষ?

৬| ১৩ ই জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৪

প্রন্তিক বাঙ্গালী বলেছেন: আমি চরম ঘৃনা করি তাদের যারা হত্যা করেছে বাঙ্গালী জাতির জনক কে।

১৩ ই জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৩

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: :)

৭| ১৩ ই জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৬

বৈশাখের আমরণ নিদাঘ বলেছেন: বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে বড় গুন আর সবচেয়ে বড় দুর্বলতার একটা ছিল মানুষকে বিশ্বাস করা। খন্দকার মোশতাক এক নাটের গুরু, সেই ছিল বঙ্গবন্ধুর আমলের শেষদিকে তার প্রিয়পাত্রদের একজন। উনি তাকে চিনতে পারেন নাই। উনি তার আশেপাশে ঘিরে থাকা আরও অনেককেই চিনতে পারেন নাই। সাধারণ মানুষের সাথে তার আড়াল তৈরী হয় অনেকটাই। একমাত্র কর্নেল জামিল ছাড়া কেউ তার জন্য সেভাবে এগিয়ে যায়নি। কর্নেল জামিল নিজের জীবন দিয়ে তবু কিছুটা দায় মিটাইছেন বাঙ্গালী জাতির।

জনগনের জন্য বিঙ্গবন্ধু হত্যার ব্যাপারটা সম্ভবত ছিলো বড় ধরনের একটা শক। বঙ্গবন্ধু তখনও নিজেই একটা প্রতিষ্ঠান, তার জন্য কোন দল বা অন্যকিছুর তখনো দরকার ছিল না। জাতির অধিকাংশ মানুষের তার দলের প্রতি কিছুটা অভিমান হয়তো থাকতে পারে সে সময়, কিন্তু তিনি ডাক দিলে সারা জাতিই উনার কথা শুনতো। সামনে দাড়াবার মত কেউ ছিল না। সেই বঙ্গবন্ধুর মারা যাবার কথাই যখন মানুষ শুনলো, তখন তারা সম্ভবত ঘোরের মধ্যে ছিল, বিশ্বসই করতে পারছিলো না। হয়তো তারা ভাবছিলো যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতে পারে, তারা কোনও বড় শক্তি। আর সেইসময় তো এত মিডিয়াও ছিল না, মানুষ কানাঘুষার মত শুনতো সবকিছু। তা যাই হোক, নিজে গলা বড় করি কি করে? জানের মায়া সবারই থাকে। নিজে থাকলে কি করতাম তাও জানি না। দুঃখের ব্যাপার এটাই যে, যেই দেশের নামটা পর্যন্ত উনার দেয়া, সেই দেশের মানুষই তাকে হত্যা করলো। হত্যাকারীদের সবার জাতিগত পরিচয়ও বাঙ্গালী।

বিরোধী পক্ষ একটা দেশে সবসময় থাকেই। কিন্তু যারা উনার আদর্শের কথা বলে, যারা উনার দল করেন, তারাও উনার দাফন কিভাবে হলো সেটা নিয়ে সেভাবে বলে না। এটাও সবার জানা দরকার। ইতিহাস থেকে মানুষ শিক্ষা নেয়না, কিন্তু নিতেও পারবে না এমন কোন কথাও নাই।

শেষ কথা হইলো এইদেশে মনে হয় ভালো মানুষ হয়ে জন্মানো পাপ। তাই গোলাম আজমের জানাজায় হাজার মানুষ হয় আর জাতির সেরা সন্তানের জানাজায় মাত্র ৩৫ জন। দেশের রাজনীতিও জীবনে শোধরাবে না। এই কারণেই বঙ্গবন্ধু হত্যায় উল্লাসকারী ইনু মন্ত্রী হন, লুল শিরোমনি এরশাদ হন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দুত। জামাতরে জেলে ভরতে কিসের এত জবাবদিহীতা লাগবে? টকাইয়া টোকাইয়া মারা উচিত ছিল, এখনও এদের বিচার হওয়া উচিত ক্যাঙ্গারু কোর্টে। এরশাদরে দুই দলেরই কিসের জন্য এত তেল? না, আমি শালার রাজনীতির চ্যাটের বাল কিছুই বুঝলাম না। আমি কেবল চাই হাসিনা আর কয়েক বছর যেইভাবেই হোক ক্ষমতায় থাকুক, জাতির কিছু ব্যাপারে দায়মুক্তি দরকার। অন্য কোনও দল এইটা করবে না, হাসিনা না থাকলে ওর দলও এইটা করবে না।

পোস্ট শেয়ার করবার জন্য ধন্যবাদ।

১৩ ই জুন, ২০১৬ রাত ৮:২০

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: অসাধারণ বলেছেন।
তিনি ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু সেগুলো ধরিয়ে দেয়ার মত কেউ ছিলেন না।
তাজউদ্দিন আহমেদ বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে বড় এসেট। তাকেও ততোদিনে ভুল বুঝেছিলেন তিনি

৮| ১৩ ই জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩৩

চাঁদগাজী বলেছেন:




দুর্বল আওয়ামী লীগের কারণে হত্যাকারীরা রক্ষা পেয়ে দেশ দখল করেছিল, বাংলাকে বিপথে নিয়ে গেছে; উনাকে হত্যা করে, ক্ষমতায় এসে পার্টি গঠন করেছে; সেই পার্টি আজও আছে, এবং বাংলার ২য় বৃহত্তম পার্টি হিসেবে; সবই আওয়ামী লীগের ভুল, অসততা ও দুর্বল রাজনীতির কারণে।

১৪ ই জুন, ২০১৬ সকাল ৯:৩৯

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: যা বলেছেন।

৯| ১৩ ই জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৫

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বঙ্গবন্ধু সবসময়ই শ্রদ্ধার।
কিন্তু আজকের আওয়ামী চালচিত্র দেখে সেদিনের সেই অবস্থার কিছুটা আঁচ করা যায়। বঙ্গবন্ধুকে যদি কেউ মেরে থাকে তার নিজের দলের লোকেরাই। লুটপাট, দূর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, লালঘোড়া দাবাড়ানো, সহ কমেন্ট ৫ এর উত্তরে লেখকের ইষ্টিশনে লেখায় যে সব কারণ বণির্ত হয়েছে সব মিলেই।

অথচ তারা যদি দেশকে ভালবাসতো, দেশেরপ্রতি কমিটেড থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতি প্রেম এবং ভালবাসা থেকে স্রেফ সৎভাবে কাজ করতো আজ বাংলাদেশ অন্য উচ্চতায় চলে যেত। তখনতো বিএনপি ছিলও না। জন্মই হয় নি।
বঙ্গবন্ধুর জানাজা না করার দায়ও শতভাগ আওয়ামীলীগেরই।
যারা নেতার রক্তাক্ত লাশ সিড়িতে রেখেই বঙ্গবভনে মন্ত্রীত্বের শপথ নিয়েছিল। তারা কেউ কিন্তু অন্যকোন দলের ছিল না।
আমাদের দায় স্বীকারের সংস্কৃতি নেই বলেই একের দোষ অন্যর ঘাড়ে চাপিয়ে নিজেরা আরো বেশি ভুলের মাঝে ডুবে যাই।

সামষ্টিক ভাবনায় দেশকে এগিয়ে নেবার আজকেও মানসিকতার যে অভাব, একনায়কত্বের যে কুফলে শত শত আম নাগরিকের মৃত্যুর মিছিল ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছে- তা থেকেও শিখছে কই? সতর্ক হচ্ছে কই? আত্মঘাতি বাঙালীর শতভাগ পূর্ন করতেই আমরা যেন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। যেমন তখন তেমনি এখন!

১৫ ই জুন, ২০১৬ সকাল ৯:১৫

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: আজ যেটা সবাই জানি, তা হলো বঙ্গবন্ধু হত্যার পটভূমি তৈরি করেছিল আওয়ামিলিগের নেতারাই।
তাদের দুর্নীতি জনগনের মধ্য শঙ্কা জাগিয়ে তোলে।
আপনার মন্তব্যের সাথে পুরো সহমত

১০| ১৩ ই জুন, ২০১৬ রাত ৮:১০

কল্লোল পথিক বলেছেন:




যারা এই মহান বাঙ্গালী নেতাকে হত্যা করেছে,
জাতি তাদের কোন দিনও ক্ষমা করবে না।

১৫ ই জুন, ২০১৬ সকাল ৮:১৬

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: অবশ্যই

১১| ১৩ ই জুন, ২০১৬ রাত ৯:০১

কোলড বলেছেন: After the BAKSAL amendment, there was no other way to remove him from power and if we take current Awami league rule as an example then Sk Mujib's killing was a natural outcome.

১৫ ই জুন, ২০১৬ সকাল ৯:১৭

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: I have a question for u in the post...
Would you plz answer?

১২| ১৩ ই জুন, ২০১৬ রাত ৯:২৪

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: তখন আমি ক্লাস ফাইভে বা সিক্সে পড়ি। আচমকা একটা র‍্যাপ শুনে পিলে চমকে গেল। র‍্যাপটা বাজারে এসেছিল ঠিক বিজয় দিবসের দিন। নাম “সারাদেশে শান্তি নাই”।
সেখানকার কয়েকটা লাইন মনে আছে এখনো, আপনি ইচ্ছা করলে সে র‍্যাপটা অনলাইনে শুনতে পারেন।
“শহীদ জিয়ার স্মৃতিস্বরূপ কিছু কথা লিখবার চাই।
হঠাৎ কইরা কি যে হইল কাগজ আছে কলম নাই।
পঁচাত্তরের মীরজাফর বাঙালিরা ভুলে নাই...
হুমকি দিয়া কী লাভ মিয়া ফকীরের আর কীসের ভয়?
রক্ত হাতে চশমা চউখে খুনি কেমনে শহীদ হয়?”
আমরা ভুলে গেছি বিএনপি কী করে ক্ষমতায় এসেছে। তার জন্মই হয়েছে সেনাবাহিনীর আঁতুড়ঘরে। তাই তাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা শুনলে হাসি পায়।
জিয়া বঙ্গবন্ধুকে যে হত্যা করা হবে, সে ব্যাপারে অনেক আগে থেকেই জানতেন। এমনকি প্লানের আগে থেকেই। কিন্তু কোন ব্যাবস্থা তিনি নেননি।
অ্যান্থনি ম্যাসকার্নহাস সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন রশিদ এবং ফারুকের যাদের হাতেই নিহত হন মুজিব। সেখান থেকে সরাসরি তুলে দিচ্ছি।
অ্যান্থনিঃ মুজিবকে সরাবার প্রক্রিয়া শুরু হলে, তার স্থলাভিষিক্ত কাকে করা হবে সেই ব্যক্তিত্বকে খুঁজে বের করতে হয়, তা কীভাবে করা হয়?
রশিদঃ আমাদের প্রথম পছন্দ ছিল জেনারেল জিয়া, এজন্য অনেক চেষ্টার পর ১৯৭৫ সালের ২০শে মার্চ সন্ধ্যায় আমি তার সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করতে সক্ষম হই। জেনারেল জিয়া বললেন, “আমি একজন সিনিয়ার অফিসার। এ ধরনের কর্মকাণ্ডে আমি জড়িত হতে পারি না। কিন্তু তোমরা, জুনিয়ার অফিসাররা আগ্রহী হলে, এগিয়ে যেতে পার।”
অ্যান্থনিঃ আপনি কি একথা জেনারেল জিয়াকে পরিষ্কারভাবে বলেছিলেন যে, আপনারা শেখ মুজিবুর রহমানকে উৎখাতের পরিকল্পনা করছেন?
রশিদঃ আপনার মনে রাখা দরকার যে, এ সময় আমি সামরিক বাহিনীর উপ-প্রধান একজন মেজর জেনারেলের সঙ্গে কথা বলছিলাম। যদি আমি সরাসরি তাকে বলতাম যে আমি দেশের প্রেসিডেন্টকে সরাতে চাই, সে ক্ষেত্রে তার নিজের সান্ত্রীদের দিয়ে সেখানেই আমাকে গ্রেফতার করে সরাসরি জ্বেলে পাঠিয়ে দেয়ার সম্ভাবনা ছিল, তাই আমাকে কিছুটা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কথাটা পাড়তে হয়েছে।
...............
অ্যান্থনিঃ তাহলে আপনার এধরনের কথা তিনি প্রেসিডেন্টকে জানননি?
রশিদঃ না। তবে তিনি নিজের এডিসিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, আর যেন সাক্ষাৎকার দেয়া না হয়।
*******************
এখানে বোঝাই যাচ্ছে, জিয়া জানতেন। কিন্তু সামরিক বাহিনীর উপপ্রধান হওয়া শর্তেও তিনি কিছুই করেননি।
আর কেন করেননি, সেটা আমরা আজ বুঝতে পারি।
বঙ্গবন্ধুর অসংখ্য ভুলের মধ্যে একটা ছিল, তাজউদ্দীন আহমেদ এর সাথে গ্যাপ সৃষ্টি করা। বঙ্গবন্ধু তাজউদ্দীনের কথা মতো চললে, আজ ইতিহাস অন্যরকম হতে পারত।

১৩| ১৩ ই জুন, ২০১৬ রাত ১০:৪০

বাঘ মামা বলেছেন: মরণের পরে যদি কবরে হেটে যাওয়ার সুযোগ থাকতো তবে বঙ্গবন্ধু একাই যেতেন,নির্বোধ জাতীর কাঁধে ভর করে যেতেননা।জানাজায় লোক দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে বিচার করা কি ঠিক? সবার জন্য দলিল লাগেনা, সব কথার প্রতিবাদ হয়না।

১৫ ই জুন, ২০১৬ সকাল ৯:২০

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: জানাজায় লোক দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে বিচার করা কি ঠিক?
কোনদিন ঠিক নয়।
নেতাজির মৃত্যু সম্পর্কেই আমরা জানি না, অার কবর!! চে গুয়েভারার ক্ষেত্রেও তা

১৪| ১৩ ই জুন, ২০১৬ রাত ১০:৪৪

সুমন কর বলেছেন: শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। অনেক কিছু জানতে পারলাম।

১৫ ই জুন, ২০১৬ সকাল ৯:২১

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ধন্যবাদ

১৫| ১৪ ই জুন, ২০১৬ রাত ১২:১২

মোস্তফা ভাই বলেছেন: কবর শুধু বাংলাদেশের হইনি, কবর হয়েছিলো পুরা বাংলাদেশের।

১৫ ই জুন, ২০১৬ সকাল ৯:২২

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: :)

১৬| ১৪ ই জুন, ২০১৬ রাত ১২:৩৪

অন্তু নীল বলেছেন: অনেক কিছু জানলাম। ধন্যবাদ।

আর, "পাকিস্তান" শব্দটিকে একটি নিকৃষ্টতম গালির মর্যাদা দিয়ে বাংলা ডিকশনারিতে অন্তর্ভূক্ত করা হোক।

১৫ ই জুন, ২০১৬ সকাল ৯:২৩

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: pakistan তো একটা গালিই!!
আমারও এক দাবি

১৭| ১৪ ই জুন, ২০১৬ রাত ২:০৬

দ্বীন মুহাম্মদ সুমন বলেছেন: আমি কোন বিতর্কে যেতে চাই না । তবে লেখা সম্পর্কে ২ টা কথাই বলব । কথা এক) মানুষকে হত্যা কখনও সমর্থন যোগ্য নয় । যারা উনাকে হত্যা করেছে তারা অবশ্যই ঘোর পাপী । আর মানুষকে কখনও মানুষ হত্যা করে না । মানুষকে হত্যা করে অমানুষ ।

আর কথা দুই) মুগ্ধ হয়ে আমি লেখাটি পড়েছি । কখন শেষ হয়ে গেল টেরই পাই নাই । বরং মনে হল ধুর, এত ছোট কেন আরও বড় হল কেন লেখাটা ? লেখাটি পড়ে এই ঐতিহাসিক ঘটনা সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারলাম যা আগে জানতাম না । সত্যি অনেক অসাধারণ লেখা সেই সাথে পড়ে কষ্টও পেয়েছি । যে লোকটা আমাদের স্বাধীন করে গেল আমরা তাকে কি দিলাম ? একটা অনিশ্চিত মৃত্যু ? আমরা তার দাফন কাজটাও এমন ভাবে করলাম ? এই লজ্জা কি আমাদের কখনও যাবে ? অনন্তকাল আমাদের পিছু নেবে ।

আর লেখক-কে ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করতে চাই না । এমন ঐতিহাসিক লেখা আরও চাই । আর আজ থেকে কিনতু আমি আপনাকে অনুসরন করা শুরু করলাম । আল্লাহ পাক আপনাকে ভালো রাখুন।

১৫ ই জুন, ২০১৬ সকাল ৯:২৪

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ধন্যবাদ বস

১৮| ১৪ ই জুন, ২০১৬ ভোর ৪:১১

জাকেল বলেছেন: বংগবন্ধু ১৯৭১ সালের পরপরই এদের ব্যাপারে সঠিক চিন্তা করা উচিত ছিল। পাকিস্থান থেকে ফেরত আসা এইসব শয়তানরাই দেশটাকে এখনো ভোগাচ্ছে।

১৫ ই জুন, ২০১৬ সকাল ৯:২৫

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: সহমত

১৯| ১৪ ই জুন, ২০১৬ সকাল ৭:২৫

কলাবাগান১ বলেছেন: "গ্রেভ হিম এনি হোয়ার, বাট নট ইন ঢাকা" আজ সবাই টুঙ্গিপাড়া চিনে....কয়জনে জানে মীরজাফর মোশতাকের কবর কোথায়??? কিছু রাজাকার ছাড়া কেউ ই জানে না মোশটাকের কবর কোথায়।

২৯ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৮:৩২

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: কোথায় মোস্তাক আর কোথায় বঙ্গবন্ধু!!

২০| ১৪ ই জুন, ২০১৬ সকাল ৯:৪৯

হাসান মাহবুব বলেছেন: দারুণ পোস্ট। পোস্টে কেউ ম্যাৎকার করতে আসে নাই দেইখা ভালো লাগলো। এই পোস্টের কনটেন্ট প্রতিটা মুক্তিযুদ্ধপন্থী মানুষের মুখস্থ রাখা উচিত।

২৯ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৮:৩৪

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: আসছে কয়েকটা, তয় খুব গা ঢাকা দিয়ে :(

২১| ১৪ ই জুন, ২০১৬ সকাল ১১:৩৭

মাগুরগিয়াসাইবারফোর্স বলেছেন: সোফি হুগুর কে ডাকবে

২৯ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৮:৩৬

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: :) :)

২২| ১৪ ই জুন, ২০১৬ সকাল ১১:৪৯

আহমেদ জী এস বলেছেন: আরণ্যক রাখাল ,



প্রজন্ম, কিছু ঘৃণা রেখো মনে।

প্রজন্ম, কিছু ঘৃণা নয়, সকল ঘৃনা-ই রেখো মনে।..........

২৯ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৮:৩৯

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: প্রজন্ম, কিছু ঘৃণা নয়, সকল ঘৃনা-ই রেখো মনে।
এইটাই বলতে চাইছিলাম। কিন্তু সাহস করি নাই

২৩| ১৪ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৭

নিপীড়িতের দীর্ঘশ্বাস বলেছেন: সুন্দর পোস্ট। এমন ঐতিহাসিক লেখা আরও চাই । আর আজ থেকে কিনতু আমি আপনাকে অনুসরন করা শুরু করলাম । আল্লাহ পাক আপনাকে ভালো রাখুন।

২৯ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৮:৪৩

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ধন্যবাদ

২৪| ১৪ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ১:২৯

ভোরের স্বপ্ন বলেছেন: অনেক অজানা তথ্যই জানালেন। মজিবের শাসনামল নিয়েও অনেক কটু কথা শুনা যায়। সে ব্যাপারে কিছু জানালে উপকৃত হব।

২৯ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৮:৪৮

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ৫ নং কমেন্টের জবাব পড়ে দেখতে পারেন

২৫| ১৪ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ১:৩৬

নীলপরি বলেছেন: বিষয়টা এতো সবিস্তারে জানতাম না । ধন্যবাদ পোষ্টের জন্য । ++

২৯ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৮:৫০

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: থ্যাঙকু পরি

২৬| ১৪ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ১:৫১

জেন রসি বলেছেন: বঙ্গবন্ধু খুব একটা ভালো শাসক ছিলেন না। তিনি তাজউদ্দিনের মত নেতাকে দূরে সরিয়ে মোশতাকের মত ষড়যন্ত্রকারীকে কাছে টেনে নিয়েছিলেন। রক্ষী বাহিনী এবং তার দূর্নীতিবাজ নেতাদের উপর সাধারন মানুষের ক্ষোভ ছিল। তবে বঙ্গবন্ধুকে মানুষ ভালোবাসত। কিন্তু আওয়ামিলীগের উপর ছিল প্রচন্ড বিরক্ত। তাই সেই হত্যাকান্ডের পর মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে যায়।

কার জানাযায় কত মানুষ হলো সেটা দিয়ে কারো ভ্যালু জাজ করা যায়না। বাংলাদেশ নামটাই জানান দেয় বঙ্গবন্ধু কে ছিলেন।

একবার রাস্তায় নেমে দেখি লাখ লাখ মানুষ কোন এক দিকে যাচ্ছে। শুনলাম সাইদী এসেছে। সেসব মানুষদের মধ্যে আওয়ামী জামাতী বিএনপি সবই ছিল। এখন ব্যাপার হচ্ছে এসব মানুষ কেন যাচ্ছে? এসব মানুষের চেতনার বিরুদ্ধেও আজ আমাদের লড়াই করতে হবে। সেদিন সেই লাখ মানুষের ভীরেও আমি সাইদির প্রতি ঘৃনা নিয়ে ভাবছিলাম ওরা সংখ্যায় লাখ লাখ হলেও ওদের বিশ্বাসের ভিত্তি হচ্ছে অন্ধ বিশ্বাস। আমার বিশ্বাস এসেছে আমার ইতিহাস, আমার পূর্বপুরুষের আত্মত্যাগ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উন্নত জীবনবোধের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে। সুতরাং সবসময় সংখ্যা দেখে বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই।

২৯ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৮:৫৬

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: আপনার কমেন্টের বিশাল একটা জবাব লিখছি।
শেষ করে দিয়ে দিব :)

২৭| ১৪ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ২:০৭

জানা বলেছেন: ইতিহাস সত্য বলে, সৎ শিক্ষা দেয়। যারা ইতিহাসকে অস্বীকার করে, বিকৃত করে তারা নিজের অস্তিত্বকেই কলুষিত করে। তারা যেভাবেই হোক মানুষের ঘৃণা এবং করুণায় বাঁচে।


বাংলাদেশের সঠিক ইতিহাস প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে প্রথিত হোক। মিথ্যাচার আর প্রপাগান্ডার ধ্বংস নিশ্চিত হোক।

পোস্টের জন্যে ধন্যবাদ প্রিয় আরণ্যক রাখাল।

২৯ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৮:৫৩

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ওয়েলকাম :)

২৮| ১৪ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ২:২৮

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: আপনার এই লেখাটি সামহোয়্যারইন ব্লগের অফিসিয়াল পেইজে শেয়ার করা হয়েছে।

২৯ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৮:৫৮

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ

২৯| ১৪ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ২:৪৪

সাহসী সন্তান বলেছেন: রাখাল ভাই, আপনার পোস্ট সম্পর্কিত বিষয়ে বলার কিছু নাই! প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই চমৎকার এই পোস্টটা শেয়ার করার জন্য! আমার মনে হয় আমাদের মত তরুন প্রজন্মের অবশ্যই আপনার পোস্টটা পড়া উচিত!

কিন্তু বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলে খুব খারাপই লাগে! এক সময়ে জাতির শ্রেষ্ট সন্তানকে হত্যাকারীরা আজ আওয়ামীলিগের সব থেকে কাছের বন্ধু, সত্যিই এটা মেনে নেওয়া যায় না! কি স্বার্থের কারণে তাদেরকে ঠিক বন্ধু বানানো হয়েছে আমি জানি না, তবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অবশ্যই বোঝা উচিত শত্রু কখনো বন্ধু হতে পারে না!

ওমর খৈয়ামের একটা কথা পড়েছিলাম- 'তুমি তোমার দুঃখের কথা কখনো শত্রুর কাছে প্রকাশ করো না। কারণ সে হয়তো মুখে মুখে খুব ব্যাথিত হবে, কিন্তু অন্তরে উল্লাস বোধ করবে!'

আজ আওয়ামীলিগের অবস্থা হয়ে গেছে অনেকটা সেই রকম! তারা শত্রুকেই বন্ধুভেবে নিজেদের অন্দরমহলে ঠাই দিয়েছে! জানি না, এটার ভবিষ্যৎ ঠিক কি হবে!

পোস্টে ভাল লাগা রইলো! শুভ কামনা জানবেন!

২৯ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৯:০২

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: আজকের আওয়ামিলিগ অবশ্য আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী
তয় এটা চাই না। কুশাসন

৩০| ১৪ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৩:২৮

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: সালাম,
ঐ ঘটনা ঘটেছিল একটি বিশেষ সময়ে যেখানে সাধারণ মানুষ ছিল বাঁধা। বাট মন ছিল খোলা।
কিন্তু সেই সময়কার রাজনীতিবিদরা কুটিল মনের পরিচয় দিয়েছেন।
তারা (রাজনীতিবিদরা!) এখন আবার চেতনার ফেরি করে বেড়ায় আর বঙ্গ বন্ধুর নামে সালাম পাঠায় যা হাস্যকরও বটে।
এদের আওয়ামীলীগ থেকে বের করা উচিত।

২৯ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৯:০৪

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: সহমত

৩১| ১৪ ই জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৪

ঈশান আহম্মেদ বলেছেন: আমারো একই প্রশ্ন।বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে কি দিতে পেরেছে তারা আমাদের?এখনই তো রাষ্ট্রে আরো বেশি অরাজকতা চলছে।এর জন্যই মানুষকে বিশ্বাস করতে নেই।মানুষ বিশ্বাসের দাম দিতে পারে না।

২৯ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৯:০৬

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: :)

৩২| ১৪ ই জুন, ২০১৬ রাত ১১:১৪

কালনী নদী বলেছেন: অনেকদিন পর আপনার লেখা পেয়ে ভালোলাগা অনিমেস ভাইয়া। যদিও সময় স্বল্পতায় সম্পূর্নটা পড়া হয়নি। যতটুকু পড়েছি আপনার সাথে সহমত।

সামহোয়্যারইন ব্লগের অফিসিয়াল পেইজে লেখাটি শেয়ার হওয়ার অভিনন্দন জানবেন :)

অবশ্যই সময় করে সম্পূর্নটা পড়ে নেব।
অসংখ্য শুভ কামনা রইল!

২৯ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৯:০৭

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: :)

৩৩| ১৪ ই জুন, ২০১৬ রাত ১১:৪৭

রাকিবুল ইসলাম শ্রাবণ বলেছেন: তাদের জিজ্ঞেস করতে চাই, তাঁকে হত্যার পর হত্যাকারীরা আমাদের কী দিয়েছে? দুই দশকের সামরিক শাসন আমাদের মাথার উপর ছিল না? তারা আমাদের জীবন যাত্রা করতে পেরেছে উন্নত? পেরেছে এনে দিতে শান্তি? বন্ধ করে দিতে পেরেছে দুর্নীতি, সুদ, ঘুষ?

২৯ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৯:০৯

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: :)

৩৪| ১৫ ই জুন, ২০১৬ ভোর ৪:৩৬

কালনী নদী বলেছেন: Mujib and zia both are the creator of bangla nation sadly both were murdered by armi! may allah bless our leaders and khondokar mustak go to hell. . i really feel sorry for our honorable late minister seikh mujib' thank u bro for your great article.

৩৫| ১৫ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৫:২৮

গেম চেঞ্জার বলেছেন: লেখক বলেছেন: বঙ্গবন্ধু হত্যার পটভূমি কিন্তু বাঙালিরাই করেছিল

ভুল, বংবন্ধু হত্যার পটভূমি জাসদ করেছিল সবচেয়ে বেশি। আর আওয়ামীলীগের চাটা'রা তো অবশ্যই!!!!!!

গুটিকয়েক লোভীরা এই দেশটাকে জাহান্নাম বানিয়ে রেখেছিল।

৩৬| ১৬ ই জুন, ২০১৬ রাত ২:২৬

শাহিবযাদা সোহান বলেছেন: বাংলাদেশের নিজস্ব ইতিহাসে মুজিবের আসল পরিচয় পাওয়া মুশকিল। আওয়ামী বাকশালীদের রচিত ইতিহাসে রয়েছে নিছক মুজিবের বন্দনা। তাই তাঁর এবং তাঁর শাসনামলের প্রকৃত পরিচয় জানতে হলে পড়তে হবে সে আমলের বিদেশী পত্র-পত্রিকা। বাংলাদেশ সে সময় কোন ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-সাহিত্য,জ্ঞান-বিজ্ঞান বা খেলাধুলায় চমক সৃষ্টি করতে না পারলেও বিশ্বব্যাপী খবরের শিরোনাম হয়েছিল দুর্ভিক্ষ, দুর্নীতি, হত্যা, সন্ত্রাস, ব্যর্থ প্রশাসন ও স্বৈরাচারের দেশ হিসাবে। ১৯৭৪ সালের ৩০ শে মার্চ গার্ডিয়ান পত্রিকা লিখেছিল,“আলীমুদ্দিন ক্ষুধার্ত। সে ছেঁড়া ছাতা মেরামত করে। বলল, যেদিন বেশী কাজ মেলে,সেদিন এক বেলা ভাত খাই। যেদিন তেমন কাজ পাই না সেদিন ভাতের বদলে চাপাতি খাই। আর এমন অনেক দিন যায় যেদিন কিছুই খেতে পাই না।” তার দিকে এক নজর তাকালে বুঝা যায় সে সত্য কথাই বলছে। সবুজ লুঙ্গির নীচে তার পা দু'টিতে মাংস আছে বলে মনে হয় না।
ঢাকার ৪০ মাইল উত্তরে মহকুমা শহর মানিকগঞ্জ। ১৫ হাজার লোকের বসতি। তাদের মধ্যে আলীমুদ্দিনের মত আরো অনেকে আছে। কোথাও একজন মোটা মানুষ চোখে পড়ে না। কালু বিশ্বাস বলল,“আমাদের মেয়েরা লজ্জায় বের হয় না-তারা নগ্ন।” আলীমুদ্দিনের কাহিনী গোটা মানিকগঞ্জের কাহিনী। বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষের কাহিনী,শত শত শহর বন্দরের কাহিনী। এ পর্যন্ত বিদেশ থেকে ৫০ লাখ টনেরও বেশী খাদ্যশস্য বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু যাদের জন্য পাঠানো হয়েছে তারা পায়নি।” ১৯৭৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর তারিখে লন্ডনের নিউ স্টেট্সম্যান লিখেছিল,“বাংলাদেশ আজ বিপদজনক ভাবে অরাজকতার মুখোমুখি। লাখ লাখ লোক ক্ষুধার্ত। অনেকে না খেতে পেয়ে মারা যাচ্ছে। .. ক্ষুধার্ত মানুষের ভীড়ে ঢাকায় দম বন্ধ হয়ে আসে।.. বাংলাদেশ আজ দেউলিয়া। গত আঠার মাসে চালের দাম চারগুণ বেড়েছে। সরকারি কর্মচারিদের মাইনের সবটুকু চলে যায় খাদ্য-সামগ্রী কিনতে। আর গরীবরা থাকে অনাহারে। কিন্তু বিপদ যতই ঘনিয়ে আসছে শেখ মুজিব ততই মনগড়া জগতে আশ্রয় নিচ্ছেন। ভাবছেন, দেশের লোক এখনও তাঁকে ভালবাসে;সমস্ত মুসিবতের জন্য পাকিস্তানই দায়ী। আরো ভাবছেন,বাইরের দুনিয়া তাঁর সাহায্যে এগিয়ে আসবে এবং বাংলাদেশ উদ্ধার পাবে। নিছক দিবাস্বপ্ন.. দেশ যখন বিপর্যয়ের দিকে যাচ্ছে,তখনও তিনি দিনের অর্ধেক ভাগ আওয়ামী লীগের চাইদের সাথে ঘরোয়া আলাপে কাটাচ্ছেন। .. তিনি আজ আত্মম্ভরিতার মধ্যে কয়েদী হয়ে চাটুকার ও পরগাছা পরিবেষ্টিত হয়ে আছেন।…সদ্য ফুলে-ফেঁপে ওঠা তরুণ বাঙালীরা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের শরাবখানায় ভীড় জমায়। তারা বেশ ভালই আছে। এরাই ছিল মুক্তিযোদ্ধা- বাংলাদেশের বীর বাহিনী। .. এরাই হচ্ছে আওয়ামী লীগের বাছাই করা পোষ্য। আওয়ামী লীগের ওপর তলায় যারা আছেন তারা আরো জঘন্য। .. শুনতে রূঢ় হলেও কিসিঞ্জার ঠিকই বলেছেনঃ “বাংলাদেশ একটা আন্তর্জাতিক ভিক্ষার ঝুলি।”
১৯৭৪ সালে ২রা অক্টোবর,লন্ডনের গার্ডিয়ান পত্রিকায় জেকুইস লেসলী লিখেছিলেন,“একজন মা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে,আর অসহায় দৃষ্টিতে তার মরণ-যন্ত্রণাকাতর চর্মসার শিশুটির দিকে তাকিয়ে আছে। বিশ্বাস হতে চায় না, তাই কথাটি বোঝাবার জন্য জোর দিয়ে মাথা নেড়ে একজন ইউরোপীয়ান বললেন, সকালে তিনি অফিসে যাচ্ছিলেন,এমন সময় এক ভিখারি এসে হাজির। কোলে তার মৃত শিশু। ..বহু বিদেশী পর্যবেক্ষক মনে করেন বর্তমান দুর্ভিক্ষের জন্য বর্তমান সরকারই দায়ী। “দুর্ভিক্ষ বন্যার ফল ততটা নয়,যতটা মজুতদারী চোরাচালানের ফল”-বললেন স্থানীয় একজন অর্থনীতিবিদ।.. প্রতি বছর যে চাউল চোরাচালন হয়ে (ভারতে) যায় তার পরিমাণ ১০ লাখ টন।” ১৯৭৪ সালের ২৫ অক্টোবর হংকং থেকে প্রকাশিত ফার ইস্টার্ণ ইকোনমিক রিভিয়্যূ পত্রিকায় লরেন্স লিফসুলজ লিখেছিলেন,“সেপ্টেম্বর তৃতীয় সপ্তাহে হঠাৎ করে চাউলের দাম মণ প্রতি ৪০০ টাকায় উঠে গেল। অর্থাৎ তিন বছরে আগে -স্বাধীনতার পূর্বে যে দাম ছিল - এই দাম তার দশ গুণ। এই মূল্যবৃদ্ধিকে এভাবে তুলনা করা যায় যে,এক মার্কিন পরিবার তিন বছর আগে যে রুটি ৪০ সেন্ট দিয়ে কিনেছে,তা আজ কিনছে ৪ পাউন্ড দিয়ে। কালোবাজারী অর্থনীতির কারসাজিতেই এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ঘটে।..২৩শে সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাওয়ার প্রাক্কালে শেখ মুজিব ঘোষণা করলেন,“প্রতি ইউনিয়নে একটি করে মোট ৪,৩০০ লঙ্গরখানা খোলা হবে।" প্রতি ইউনিয়নের জন্য রোজ বরাদ্দ হলো মাত্র দুমন ময়দা। যা এক হাজার লোকের প্রতিদিনের জন্য মাথাপিছু একটি রুটির জন্যও যথেষ্ট নয়।” নিউয়র্ক টাইমস পত্রিকা ১৯৭৪ সালের ১৩ ডিসেম্বর তারিখে লিখেছিল,“জনৈক কেবিনেট মন্ত্রীর কথা বলতে গিয়ে একজন বাংলাদেশী অর্থনীতিবিদ বললেন, “যুদ্ধের পর তাঁকে (ঐ মন্ত্রীকে) মাত্র দুই বাক্স বিদেশী সিগারেট দিলেই কাজ হাসিল হয়ে যেত,এখন দিতে হয় অন্ততঃ এক লাখ টাকা।” ব্যবসার পারমিট ও পরিত্যক্ত সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য আওয়ামী লীগারদের ঘুষ দিতে হয়। সম্প্রতি জনৈক অবাঙালী শিল্পপতী ভারত থেকে ফিরে আসেন এবং শেখ মুজিবের কাছ থেকে তার পরিত্যক্ত ফার্মাসিউটিক্যাল কারখানাটি পুনরায় চালু করার অনুমোদন লাভ করেন। শেখ মুজিবের ভাগিনা শেখ মনি -যিনি ঐ কারখানাটি দখল করে আছেন-হুকুম জারি করলেন যে তাকে ৩০ হাজার ডলার দিতে হবে। শেখ মুজিবকে ভাল করে জানেন এমন একজন বাংলাদেশী আমাকে বললেন,“লোকজন তাকে পায়ে হাত দিয়ে সালাম করুক,এটা তিনি পছন্দ করেন। তাঁর আনুগত্য নিজের পরিবার ও আওয়ামী লীগের প্রতি। তিনি বিশ্বাসই করেন না যে, তারা দুর্নীতিবাজ হতে পারে কিংবা তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারে।”
দেখা যাক,প্রখ্যাত তথ্য-অনুসন্ধানী সাংবাদিক জন পিলজার ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ সম্পর্কে কি বলেছিলেন। তিনি ১৯৭৪ সালের ১৭ই ডিসেম্বর লন্ডনের ডেইলী মিরর পত্রিকায় লিখেছেন,“একটি তিন বছরের শিশু -এত শুকনো যে মনে হলো যেন মায়ের পেটে থাকাকালীন অবস্থায় ফিরে গেছে। আমি তার হাতটা ধরলাম। মনে হলো তার চামড়া আমার আঙ্গুলে মোমের মত লেগে গেছে। এই দুর্ভিক্ষের আর একটি ভয়ঙ্কর পরিসংখ্যান এই যে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে ৫০ লাখ মহিলা আজ নগ্ন দেহ। পরিধেয় বস্ত্র বিক্রি করে তারা চাল কিনে খেয়েছে।” পিলজারের সে বক্তব্য এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সে অভিমতের প্রমাণ মেলে ইত্তেফাকের একটি রিপোর্টে। উত্তর বংগের এক জেলেপাড়ার বস্ত্রহীন বাসন্তি জাল পড়ে লজ্জা ঢেকেছিল। সে ছবি ইত্তেফাক ছেপেছিল। পিলজার আরো লিখেছেন,“সন্ধা ঘনিয়ে আসছে এবং গাড়ী আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম-এর লরীর পিছনে পিছনে চলেছে। এই সমিতি ঢাকার রাস্তা থেকে দুর্ভিক্ষের শেষ শিকারটিকে কুড়িয়ে তুলে নেয়। সমিতির ডাইরেক্টর ডাঃ আব্দুল ওয়াহিদ জানালেন,“স্বাভাবিক সময়ে আমরা হয়ত কয়েক জন ভিখারীর মৃতদেহ কুড়িয়ে থাকি। কিন্তু এখন মাসে অন্ততঃ ৬০০ লাশ কুড়াচ্ছি- সবই অনাহার জনিত মৃত্যু।”
লন্ডনের “ডেইলী টেলিগ্রাফ” ১৯৭৫ সালের ৬ই জানুয়ারি ছেপেছিল,“গ্রাম বাংলায় প্রচুর ফসল হওয়া সত্ত্বেও একটি ইসলামিক কল্যাণ সমিতি (আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম) গত মাসে ঢাকার রাস্তা,রেল স্টেশন ও হাসাপাতালগুলোর মর্গ থেকে মোট ৮৭৯টি মৃতদেহ কুড়িয়ে দাফন করেছে। এরা সবাই অনাহারে মরেছে। সমিতিটি ১৯৭৪ সালের শেষার্ধে ২৫৪৩টি লাশ কুড়িয়েছে- সবগুলি বেওয়ারিশ। এগুলোর মধ্যে দেড় হাজারেরও বেশী রাস্তা থেকে কুড়ানো। ডিসেম্বরের মৃতের সংখ্যা জুলাইয়ের সংখ্যার সাতগুণ।.. শেখ মুজিবকে আজ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বোঝা বলে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। ছোট-খাটো স্বজন প্রীতির ব্যাপারে তিনি ভারী আসক্তি দেখান। ফলে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া বাঁকী পড়ে থাকে।.. অধিকাংশ পর্যবেক্ষকদের বিশ্বাস,আর্থিক ও রাজনৈতিক সংকট রোধ করার কোন সুনির্দিষ্ট কার্যক্রম এ সরকারের নেই। রাজনৈতিক মহলো মনে করেন, মুজিব খুব শীঘ্রই বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক বুনিয়াদ আরো নষ্ট করে দেবেন। তিনি নিজেকে প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করার পরিকল্পনা করছেন। ডেইলী টেলিগ্রাফের আশংকা সত্য প্রমাণিত হয়েছিল। শেখ মুজিব প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে প্রেসিডেন্ট হয়েছেন। জরুরী অবস্থা জারি করেছেন, আরো বেশী ক্ষমতা কুক্ষিগত করেছেন। অবশেষে তাতেও খুশি হননি, সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে নিষিদ্ধ করে তিনি একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করেছেন। আওয়ামী লীগ যাকে নিয়ে গর্ব করে, এ হলো তার অবদান।
১৯৭৫ সালের ২১শে মার্চ বিলেতের ব্রাডফোর্ডশায়র লিখেছিল,“বাংলাদেশ যেন বিরাট ভুল। একে যদি ভেঙ্গে-চুরে আবার ঠিক করা যেত। জাতিসংঘের তালিকায় বাংলাদেশ অতি গরীব দেশ। ১৯৭০ সালের শেষ দিকে যখন বন্যা ও সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে দেশের দক্ষিণ অঞ্চল ডুবে যায় তখন দুনিয়ার দৃষ্টি এ দেশের দিকে - অর্থাৎ তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের দিকে নিবদ্ধ হয়। রিলিফের বিরাট কাজ সবে শুরু হয়েছিল। এমনি সময়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের আগুণ জ্বলে উঠল। --কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাদের বিদ্রোহ যখন শুরু হলো,তখন জয়ের কোন সম্ভাবনাই ছিল না। একমাত্র ভারতের সাগ্রহ সামরিক হস্তক্ষেপের ফলেই স্বল্পস্থায়ী-কিন্তু ভয়াবহ ও রক্তক্ষয়ী- যুদ্ধের পর পাকিস্তানের পরাজয় ঘটে এবং বাংলাদেশের সৃষ্টি হয়।” পত্রিকাটি লিখেছে, “উড়োজাহাজ থেকে মনে হয়,যে কোন প্রধান শহরের ন্যায় রাজধানী ঢাকাতেও বহু আধুনিক অট্রালিকা আছে। কিন্তু বিমান বন্দরে অবতরণ করা মাত্রই সে ধারণা চুর্ণ-বিচুর্ণ হয়ে যায়। টার্মিনাল বিল্ডিং-এর রেলিং ঘেঁষে শত শত লোক সেখানে দাঁড়িয়ে আছে,কেননা তাদের অন্য কিছু করার নাই। আর যেহেতু বিমান বন্দর ভিক্ষা করবার জন্য বরাবরই উত্তম জায়গা।”
পত্রিকাটি আরো লিখেছে,”আমাকে বলা হয়েছে,অমুক গ্রামে কেউ গান গায়না। কেননা তারা কি গাইবে? আমি দেখেছি,একটি শিশু তার চোখে আগ্রহ নেই,গায়ে মাংস নেই। মাথায় চুল নাই। পায়ে জোর নাই। অতীতে তার আনন্দ ছিল না, বর্তমান সম্পর্কে তার সচেতনতা নাই এবং ভবিষ্যতে মৃত্যু ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারে না সে।” দেশে তখন প্রচণ্ড দুর্ভিক্ষ চলছিল। হাজার হাজার মানুষ তখন খাদ্যের অভাবে মারা যাচ্ছিল। মেক্সিকোর “একসেলসিয়র” পত্রিকার সাথে এক সাক্ষাৎকারে শেখ মুজিবকে যখন প্রশ্ন করা হলো, খাদ্যশস্যের অভাবের ফলে দেশে মৃত্যুর হার ভয়াবহ হতে পারে কিনা,শেখ মুজিব জবাব দিলেন,“এমন কোন আশংকা নেই।” প্রশ্ন করা হলো,“মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,পার্লামেন্টে বিরোধীদল বলেন যে,ইতিমধ্যেই ১৫ হাজার মানুষ মারা গেছে।” তিনি জবাব দিলেন,“তারা মিথ্যা বলেন।” তাঁকে বলা হলো,”ঢাকার বিদেশী মহলো মৃত্যু সংখ্যা আরও বেশী বলে উল্লেখ করেন।” শেখ মুজিব জবাব দিলেন,“তারা মিথ্যা বলেন।” প্রশ্ন করা হলো,দুর্নীতির কথা কি সত্য নয়? ভুখাদের জন্য প্রেরিত খাদ্য কি কালোবাজারে বিক্রী হয় না..? শেখ বললেন, “না। এর কোনটাই সত্য নয়।”(এন্টার প্রাইজ,রিভার সাইড,ক্যালিফোর্নিয়া, ২৯/০১/৭৫)।
বাংলাদেশ যে কতবড় মিথ্যাবাদী ও নিষ্ঠুর ব্যক্তির কবলে পড়েছিল এ হলো তার নমুনা। দেশে দুর্ভিক্ষ চলছে,সে দুর্ভিক্ষে হাজার মানুষ মরছে সেটি তিনি মানতে রাজী নন। দেশে কালোবাজারী চলছে,বিদেশ থেকে পাওয়া রিলিফের মাল সীমান্ত পথে ভারতে পাড়ী জমাচ্ছে এবং সীমাহীন দুর্নীতি চলছে সেটি বিশ্ববাসী মানলেও তিনি মানতে চাননি। অবশেষে পত্রিকাটি লিখেছে,“যে সব সমস্যা তার দেশকে বিপর্যস্ত করত সে সবের কোন জবাব না থাকায় শেখের একমাত্র জবাব হচ্ছে তাঁর নিজের একচ্ছত্র ক্ষমতা বৃদ্ধি। জনসাধারণের জন্য খাদ্য না হোক,তার অহমিকার খোরাক চাই।" (এন্টার প্রাইজ,রিভার সাইড, ক্যালিফোর্নিয়া,২৯/০১/৭৫)।
শেখ মুজিব যখন বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেন তখন লন্ডনের ডেইলী টেলিগ্রাফে পিটার গিল লিখেছিলেন,“বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর দেশ থেকে পার্লামেন্টারী গণতন্ত্রের শেষ চিহ্নটুকু লাথি মেরে ফেলে দিয়েছেন। গত শনিবার ঢাকার পার্লামেন্টের (মাত্র) এক ঘণ্টা স্থায়ী অধিবেশনে ক্ষমতাশীন আওয়ামী লীগ বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে শেখ মুজিবকে প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেছে এবং একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য তাঁকে ক্ষমতা অর্পণ করেছে। অনেকটা নিঃশব্দে গণতন্ত্রের কবর দেয়া হয়েছে। বিরোধীদল দাবী করেছিল,এ ধরণের ব্যাপক শাসনতান্ত্রিক পরিবর্তনের ব্যাপারে আলোচনার জন্য তিন দিন সময় দেয়া উচিত। জবাবে সরকার এক প্রস্তাব পাশ করলেন যে,এ ব্যাপারের কোন বিতর্ক চলবে না। .. শেখ মুজিব এম.পি.দের বললেন, পার্লামেন্টারী গণতন্ত্র ছিল “ঔপনিবেশিক শাসনের অবদান”। তিনি দেশের স্বাধীন আদালতকে “ঔপনিবেশিক ও দ্রুত বিচার ব্যাহতকারী” বলে অভিযুক্ত করলেন।” অথচ পাকিস্তান আমলে শেখ মুজিব ও তাঁর আওয়ামী লীগ পার্লামেন্টারী পদ্ধতির গণতন্ত্রের জন্য কতই না চিৎকার করেছেন। তখন পাকিস্তানে আইউবের প্রেসিডেন্ট পদ্ধতির গণতন্ত্রই তো ছিল। গণতন্ত্রের নামে আওয়ামী লীগের পতাকা তলে যে কতটা মেরুদণ্ডহীন ও নীতিহীন মানুষের ভীড় জমেছিল সেটিও সেদিন প্রমাণিত হয়েছিল। এতদিন যারা গণতন্ত্রের জন্য মাঠঘাট প্রকম্পিত করত তারা সেদিন একদলীয় স্বৈরাচারি শাসন প্রবর্তনের কোন রূপ বিরোধীতাই করল না। বরং বিরোধী দলের পক্ষ থেকে এতবড় গুরুতর বিষয়ে যখন সামান্য তিন দিনের আলোচনার দাবী উঠল তখন সেটিরও তারা বিরোধীতা করল। সামান্য এক ঘণ্টার মধ্যে এতবড় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিল। অথচ গণতান্ত্রিক দেশগুলিতে এক টাকা ট্যাক্স বৃদ্ধি হলে সে প্রসঙ্গেও বহু ঘণ্টা আলোচনা হয়। ভেড়ার পালের সব ভেড়া যেমন দল বেঁধে এবং কোন রুপ বিচার বিবেচনা না করে প্রথম ভেড়াটির অনুসরণ করে তারাও সেদিন তাই করেছিল। আওয়ামী লীগের গণতন্ত্রের দাবী যে কতটা মেকী,সেটির প্রমাণ তারা এভাবেই সেদিন দিয়েছিল। দলটির নেতাকর্মীরা সেদিন দলে দলে বাকশালে যোগ দিয়েছিল,এরকম একদলীয় স্বৈরচারি শাসন প্রতিষ্ঠায় তাদের বিবেকে সামান্যতম দংশনও হয়নি।
১৯৭৪ সালে ১৮ অক্টোবর বোষ্টনের ক্রিশ্চিয়ান সায়েন্স মনিটরে ডানিয়েল সাদারল্যান্ড লিখেছিলেন,“গত দুই মাসে যে ক্ষুধার্ত জনতা স্রোতের মত ঢাকায় প্রবেশ করেছে,তাদের মধ্যে সরকারের সমর্থক একজনও নেই। বন্যা আর খাদ্যাভাবের জন্য গ্রামাঞ্চল ছেড়ে এরা ক্রমেই রাজধানী ঢাকার রাস্তায় ভিক্ষাবৃত্তির আশ্রয় নিচ্ছে। কিন্তু মনে হচ্ছে সরকার এদেরকে রাজপথের ত্রিসীমানার মধ্যে ঢুকতে না দিতে বদ্ধপরিকর। এরই মধ্যে বেশ কিছু সংখ্যককে বন্দুকের ভয় দেখিয়ে ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে সারাদিন দুই এক টুকরা রুটি খেতে পাওয়া যায, মাঝে মাঝে দুই-একটা পিঁয়াজ ও একটু-আধটু দুধ মেলে। ক্যাম্পে ঢুকলে আর বের হওয়া যায় না। “যে দেশে মানুষকে এমন খাঁচাবদ্ধ করে রাখা হয় সেটা কি ধরনের স্বাধীন দেশ”- ক্রোধের সাথে বলল ক্যাম্পবাসীদেরই একজন। ক্যাম্পের ব্লাকবোর্ডে খড়িমাটি দিয়ে জনৈক কর্মকর্তা আমার সুবিধার্থে প্রত্যেকের রুটি খাওয়ার সময়সূচির তালিকা লিখে রেখেছেন। “তালিকায় বিশ্বাস করবেন না”-ক্যাম্পের অনেকেই বলল। তারা অভিযোগ করল যে, রোজ তারা এক বেলা খেতে পায়- এক কি দুই টুকরা রুটি। কোন এক ক্যাম্পের জনৈক স্বেচ্ছাসেবক রিলিফকর্মী জানাল যে, “সরকারী কর্মচারীরা জনসাধারণের কোন তোয়াক্কা করে না। তারা বাইরের জগতে সরকারের মান বজায় রাখতে ব্যস্ত। এ কারণেই তারা লোকদেরকে রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে যাচেছ। বিদেশীরা ভুখা-জনতাকে রাস্তায় দেখুক এটা তারা চায় না।”
১৯৭৪ সালে ৩০ অক্টোবর লন্ডনের গার্ডিয়ান পত্রিকায় পিটার প্রেসটন লিখেছিলেন,“এই সেদিনের একটি ছবি বাংলাদেশের দৃশ্যপট তুলে ধরেছে। এক যুবতি মা -তার স্তন শুকিয়ে হাঁড়ে গিয়ে লেগেছে,ক্ষুধায় চোখ জ্বলছে - অনড় হয়ে পড়ে আছে ঢাকার কোন একটি শেডের নীচে,কচি মেয়েটি তার দেহের উপর বসে আছে গভীর নৈরাশ্যে। দু’জনাই মৃত্যুর পথযাত্রী। ছবিটি নতুন,কিন্তু চিরন্তন। স্বাধীনতার পর থেকে ঢাকা দুনিয়ার সবচেয়ে -কলিকাতার চেয়েও -বীভৎস শহরে পরিণত হয়েছে। সমস্ত বীভৎসতা সত্ত্বেও কোলকাতায় ভীড় করা মানুষের যেন প্রাণ আছে,ঢাকায় তার কিছুই নাই। ঢাকা নগরী যেন একটি বিরাট শরণার্থী-ক্যাম্প। একটি প্রাদেশিক শহর ঢাকা লাখ লাখ জীর্ণ কুটীর,নির্জীব মানুষ আর লঙ্গরখানায় মানুষের সারিতে ছেয়ে গেছে। গ্রামাঞ্চলে যখন খাদ্যাভাব দেখা দেয়,ভুখা মানুষ ঢাকার দিকে ছুটে আসে। ঢাকায় তাদের জন্য খাদ্য নেই। তারা খাদ্যের জন্য হাতড়ে বেড়ায়,অবশেষে মিলিয়ে যায়। গেল সপ্তাহে একটি মহলের মতে শুধুমাত্র ঢাকা শহরেই মাসে ৫০০ লোক অনাহারে মারা যাচ্ছে। এর বেশীও হতে পারে,কমও হতে পারে। নিশ্চিত করে বলার মত প্রশাসনিক যন্ত্র নাই।.. জন্মের পর পর বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সাহায্যের এক অভূতপূর্ব ফসল কুড়িয়েছিলঃ ৫০০ মিলিয়ন পাউন্ড। আজ সবই ফুরিয়ে গেছে। কোন চিহ্ন পর্যন্ত নেই। রাজনীতিবিদ, পর্যবেক্ষক, দাতব্য প্রতিষ্ঠান -সবাই একই যুক্তি পেশ করছে যা অপরাধকে নিরাপদ করছে, দায়িত্বকে করছে অকেজো। তাদের মোদ্দা যুক্তি হলো এই যে, বাংলাদেশের ঝুলিতে মারাত্মক ফুটো আছে। যত সাহায্য দেয়া হোক না কেন, দুর্নীতি, আলসেমী ও সরকারী আমলাদের আত্মঅহমিকার ফলে অপচয়ে ফুরিয়ে যাবে। বেশী দেয়া মানেই বেশী লোকসান।”
পাত্রের তলায় ফুটো থাকলে পাত্রের মালামাল বেড়িয়ে যায়,তবে তা বেশী দূর যায় না। আশে পাশের জায়গায় গিয়ে পড়ে। তেমনি বাংলাদেশের তলা দিয়ে বেড়িয়ে যাওয়া সম্পদ হাজার মাইল দূরের কোন দেশে গিয়ে উঠেনি,উঠেছিল প্রতিবেশী ভারতে। আর এ ফুটোগুলো গড়ায় ভারতীয় পরিকল্পনার কথা কি অস্বীকার করা যায়? পাকিস্তান আমলে ২৩ বছরে পাকিস্তান সরকারের সবচেয়ে বড় কাজ ছিল,সীমান্ত দিয়ে চোরাকারবারী বন্ধ করা। এ কাজে প্রয়োজনে পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্যদের বসানো হত। অথচ শেখ মুজিব সীমান্ত দিয়ে চোরাকারবারি বন্ধ না করে ভারতের সাথে চুক্তি করে সীমান্ত জুড়ে বাণিজ্য শুরু করেন। এভাবে সীমান্ত বাণিজ্যের নামে দেশের তলায় শুধু ফুটো নয়,সে তলাটিই ধসিয়ে দিলেন। তলা দিয়ে হারিয়ে যাওয়া সম্পদ তখন ভারতে গিয়ে উঠল। ভারত বস্তুত তেমন একটি লক্ষ্য হাছিলের কথা ভেবেই সীমান্ত বাণিজ্যের প্রস্তাব করেছিল। অথচ পাকিস্তান আমলে ভারত এ সুবিধার কথা ভাবতেই পারেনি। অথচ মুজিব সেটাই বিনা দ্বিধায় ভারতের হাতে তুলে দিলেন। বাংলাদেশের বাজারে তখন আর রাতের আঁধারে চোরাচালানকারী পাঠানোর প্রয়োজন পড়েনি। দিন দুপুরে ট্রাক-ভর্তি করে বাংলাদেশের বাজার থেকে সম্পদ তুলে নিয়ে যায়। দুর্বৃত্তরা তখন পাকিস্তান আমলে প্রতিষ্ঠিত কলকারখানার যন্ত্রাংশ খুলে নামে মাত্র মূল্যে ভারতীয়দের হাতে তুলে দেয়। তলাহীন পাত্র থেকে পানি বেরুতে সময় লাগে না,তেমনি দেশের তলা ধসে গেলে সময় লাগে না সে দেশকে সম্পদহীন হতে। ভারতের সাথে সীমান্ত বাণিজ্যের দাড়িয়েছিল,ত্বরিৎ বেগে দুর্ভিক্ষ নেমে এসেছিল বাংলাদেশে।
প্রখ্যাত সাংবাদিক ওরিয়ানী ফালাচীর সাথে শেখ মুজিবের সাক্ষাৎকারটি ছিল ঐতিহাসিক। শেখ মুজিবের চরিত্র,আত্ম-অহংকার,যোগ্যতা ও মানবতার মান বুঝবার জন্য আর কোন গবেষণার প্রয়োজন নেই,সে জন্য এই একটি মাত্রসাক্ষাৎকারই যথেষ্ট। এখানে সে বিখ্যাত সাক্ষাতাকারের কিছু অংশ তুলে ধরা হলঃ
রোববার সন্ধাঃ আমি কোলকাতা হয়ে ঢাকার পথে যাত্রা করেছি। সত্যি বলতে কি,১৮ই ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী তাদের বেয়োনেট দিয়ে যে যজ্ঞ চালিয়েছে তা প্রত্যক্ষ করার পর এ পৃথিবীতে আমার অন্তিম ইচ্ছা ছিল যে, এই ঘৃন্য নগরীতে আমি আর পা রাখবো না- এ রকম সিদ্ধান্ত আমি নিয়েই ফেলেছিলাম। কিন্তু আমার সম্পাদকের ইচ্ছা যে, আমি মুজিবের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করি। (এখানে তিনি এক বীভৎস বর্বর ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করছেন। সেটি হলঃ ঢাকা স্টেডিয়াম কাদের সিদ্দিকী তার দলবল নিয়ে কিছু হাতপা বাধা রাজকারকে বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করেছিল। আন্তর্জাতিক আইনে কোন বন্দীকে হত্যা করা গুরুতর যুদ্ধাপরাধ। আর সেটি ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল প্রকাশ্যে,ঢাকা স্টেডিয়াম হাজার হাজার মানুষের সামনে। এবং যে ব্যক্তিটি এ নৃশংস যুদ্ধাপরাধের সাথে জড়িত তাকে জাতীয় বীর হিসাবে মুজিব সরকার স্বীকৃতি দেয়। হত্যারত কাদের সিদ্দিকীর ছবি বিদেশী পত্রিকায় ছাপাও হয়েছিল। ভারতীয় বাহিনী তাকে গ্রেফতার করে, কিন্তু মুজিব তাকে ছাড়িয়ে নেন।)
আমার স্মরণ হলো,১৮ই ডিসেম্বর যখন আমি ঢাকায় ছিলাম,তখন লোকজন বলছিল,“মুজিব থাকলে সেই নির্মম,ভয়ংকর ঘটনা কখনোই ঘটতো না”। কিন্তু গতকাল (মুজিবের বাংলাদেশে ফিরে আসার পর) মুক্তিবাহিনী কেন আরো ৫০ জন নিরীহ বিহারীকে হত্যা করেছে?.. আমি বিস্মিত হয়েছি যে,এই ব্যক্তিটি ১৯৬৯ সালের নভেম্বরে সাংবাদিক অ্যালডো শানতিনিকে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন আমার দেশে আমি সবচেয়ে সাহসী এবং নির্ভীক মানুষ,আমি বাংলার বাঘ,দিকপাল।.. এখানে যুক্তির স্থান নেই।.. আমি বুঝতে পারিনি আমার কি ভাবা উচিত।
সোমবার সন্ধাঃ ..তার মানসিক যোগ্যতা সম্পর্কে আমার সন্দেহ ছিল।..তার ভারসাম্যহীনতাকে আমি আর কোন ভাবেই ব্যাখা করতে পারি না।..আমি যত তাকে পর্যবেক্ষণ করেছি,তত মনে হয়েছে তিনি কিছু একটা লুকাচ্ছেন। এমন কি তার মধ্যে যে সার্বক্ষণিক আক্রমণাত্মক ভাব,সেটাকে আমার মনে হয়েছে আত্মরক্ষার কৌশল বলে। ঠিক চারটায় আমি সেখানে ছিলাম। ভাইস সেক্রেটারি আমাকে করিডোরে বসতে বললেন,যেখানে কমপক্ষে পঞ্চাশজন লোকে ঠাসাঠাসি ছিল। তিনি অফিসে প্রবেশ করে মুজিবকে আমার উপস্থিতি সম্পর্কে জানালেন। আমি একটা ভয়ংকর গর্জন শুনলাম এবং নিরীহ লোকটি কম্পিতভাবে পুনরায় আবির্ভূত হয়ে আমাকে প্রতীক্ষা করতে বললেন। আমি প্রতীক্ষা করলাম-এক ঘণ্টা,দুই ঘণ্টা,তিন ঘণ্টা,চার ঘণ্টা –রাত আটটা যখন বাজলো তখনো আমি সেই অফিসের করিডোরে অপেক্ষামান। রাত সাড়ে আটটায় আমাকে প্রবেশ করতে বলা হলো। আমি বিশাল এক কক্ষে প্রবেশ করলাম। একটি সোফা ও দুটো চেয়ার সে কক্ষে। মুজিব সোফার পুরোটায় নিজেকে বিস্তার করেছেন এবং দুইজন মোটা মন্ত্রী চেয়ার দু’টো দখল করে বসে আছেন। কেউ দাঁড়ালো না। কেই আমাকে অভ্যার্থনা জানালো না। কেউ আমার উপস্থিতিকে গ্রাহ্য করলো না। মুজিব আমাকে বসতে বলার সৌজন্য প্রদর্শন না করা পর্যন্ত সুদীর্ঘক্ষণ নীরবতা বিরাজ করছিল। আমি সোফার ক্ষুদ্র প্রান্তে বসে টেপ রেকর্ডার খুলে প্রথম প্রশ্ন করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। কিন্তু আমার সে সময়ও ছিল না। মুজিব চিৎকার শুরু করে দিলেন,
“হ্যারি আপ,কুইক, আন্ডারষ্টান্ড? ওয়েষ্ট করার মত সময় আমার নাই। ইজ দ্যাট ক্লিয়ার?..পাকিস্তানীরা ত্রিশ লক্ষ লোক হত্যা করেছে, ইজ দ্যাট ক্লিয়ার?
আমি বললাম,মি. প্রাইম মিনিস্টার..। “মি. প্রাইম মিনিস্টার, গ্রেফতারের সময় কি আপনার উপর নির্যাতন করা হয়েছিল?”
“ম্যাডাম নো। তারা জানতো,ওতে কিছু হবে না। তারা আমার বৈশিষ্ট্য,আমার শক্তি,আমার সম্মান,আমার মূল্য,বীরত্ব সম্পর্কে জানতো,আন্ডারস্ট্যান্ড?”
“তা বুঝলাম। কিন্তু আপনি কি করে বুঝলেন যে তারা আপনাকে ফাঁসীতে ঝুলাবে? ফাঁসীতে ঝুঁলিয়ে কি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়?”
“নো নো ডেথ সেন্টেন্স?” এই পর্যায়ে তাকে দ্বিধাগ্রস্ত মনে হলো। এবং তিনি গল্প শুরু করলেন,
“আমি এটা জানতাম। কারণ ১৫ই ডিসেম্বর ওরা আমাকে কবর দেয়ার জন্য একটা গর্ত খনন করে”।
“কোথায় খনন করা হয়েছিল সেটা?”
“আমার সেলের ভিতর।”
“আপনার প্রতি কেমন আচরণ করা হয়েছে মি. প্রাইম মিনিস্টার?”
“আমাকে একটি নির্জন প্রকোষ্ঠে রাখা হয়েছিল। এমনকি আমাকে সাক্ষাৎকারের অনুমতি দেয়া হতো না। সংবাদপত্র পাঠ করতে বা চিঠিপত্রও দেয়া হতো না, আন্ডারস্ট্যান্ড?”
“তাহলে আপনি কি করেছেন?”
“আমি অনেক চিন্তা করেছি।”
“আপনি কি পড়েছেন?”
“বই ও অন্যান্য জিনিস।”
“তাহলে আপনি কিছু পড়েছেন।”
“হ্যা কিছু পড়েছি।”
“কিন্তু আমার ধারণা হয়েছিল,আপনাকে কিছুই পড়তে দেয়া হয়নি। “
“ইউ মিস আন্ডারস্টুড।”
“..কি হলো যে শেষ পর্যন্ত ওরা আপনাকে ফাঁসীতে ঝুলানো না।”
“জেলার আমাকে সেল থেকে পলাতে সহায়তা করেছেন এবং তার বাড়ীতে আশ্রয় দিয়েছেন।”
“কেন,তিনি কি কোন নির্দেশ পেয়েছিলেন?
“আমি জানি না। এ ব্যাপারে তার সাথে আমি কোন কথা বলিনি এবং তিনিও আমার সাথে কথা কিছু বলেননি।”
“নীরবতা সত্ত্বেও কি আপনারা বন্ধুতে পরিণত হয়েছিলেন।”
“হ্যাঁ,আমাদের মধ্যে বহু আলোচনা হয়েছে এবং তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে, আমাকে সাহায্য করতে চান।”
“তাহলে আপনি তার সাথে কথা বলেছেন।”
“হ্যাঁ,আমি তার সাথে কথা বলেছি।”
“আমি ভেবেছিলাম,আপনি কারোই সাথে কথা বলেননি।”
“ইউ মিস আন্ডারস্টুড।”

... এরপর ১৮ই ডিসেম্বর হত্যাযজ্ঞ সম্পর্কে তার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি রাগে ফেটে পড়েন। নিচের অংশটি আমার টেপ থেকে নেয়া।
“ম্যাসাকার? হোয়াট ম্যাসাকার?”
“ঢাকা স্টেডিয়ামে মুক্তিবাহিনীর দ্বারা সংঘটিত ঘটনাটি?”
“ঢাকা স্টেডিয়ামে কোন ম্যাসাকার হয়নি। তুমি মিথ্যে বলছো।”
“মি. প্রাইম মিনিস্টার,আমি মিথ্যাবাদী নই। সেখানে আরো সাংবাদিক ও পনের হাজার লোকের সাথে আমি হত্যাকাণ্ড প্রত্যক্ষ করেছি। আমি চাইলে আমি আপনাকে তার ছবিও দেখাবো। আমার পত্রিকায় সে ছবি প্রকাশিত হয়েছে।”
“মিথ্যাবাদী, ওরা মুক্তিবাহিনী নয়।”
“মি. প্রাইম মিনিস্টার,দয়া করে মিথ্যাবাদী শব্দটি আর উচ্চারণ করবেন না। তারা মুক্তিবাহিনী। তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছিল আব্দুল কাদের সিদ্দিকী এবং তারা ইউনিফর্ম পরা ছিল।”
“তাহলে হয়তো ওরা রাজাকার ছিল যারা প্রতিরোধের বিরোধীতা করেছিল এবং কাদের সিদ্দিকী তাদের নির্মূল করতে বাধ্য হয়েছে।”
“মি. প্রাইম মিনিস্টার,..কেউই প্রতিরোধের বিরোধীতা করেনি। তারা ভীতসন্ত্রস্ত ছিল। হাত পা বাঁধা থাকায় তারা নড়াচড়াও করতে পারছিল না।”
“মিথ্যেবাদী।”
“শেষ বারের মতো বলছি, আমাকে মিথ্যেবাদী বলার অনুমতি আপনাকে দেবো না।”
(ইন্টারভিউ উইথ হিস্টরী,ওরিয়ানী ফালাসী অনুবাদে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু)।

এই হলো মুজিবের চরিত্র ও মানবতার মান। ঢাকা স্টেডিয়ামে হাতপা বাঁধা রাজাকারদের কাদের সিদ্দীকী ও তার সাথীরা হত্যা করল,বিদেশী পত্রিকায় সে খবর ছাপা হলো,বহু সাংবাদিকসহ বহু হাজার বাংলাদেশী সেটি দেখল,অথচ শেখ মুজিব সেটি বিশ্বাসই করতে চান না। এতবড় যুদ্ধাপরাধের ন্যায় সত্য ঘটনাকে তিনি মিথ্যা বলেছেন। অপর দিকে যে পাকিস্তান সরকার তার গায়ে একটি আঁচড়ও না দিয়ে জেল থেকে ছেড়ে দিল তাদের বিরুদ্ধে বলছেন,তাকে নাকি তারা হত্যা ও হত্যা শেষে দাফন করার জন্য তারই জেলের প্রকোষ্টে একটি কবর খোদাই করেছিল! অথচ তার কোন প্রমাণই নেই। কিন্তু সমস্যা হলো,সাধারণ বাংলাদেশীদের জন্য ইতিহাসের এ সত্য বিষয়গুলো জানার কোন পথ খোলা রাখা হয়নি। ইতিহাসের বই থেকে এসব সত্যগুলোকে পরিকল্পিত ভাবে লুকানো হয়েছে। নতুন প্রজন্মকে এ বিষয়ে কিছুই বলা হচ্ছে না। যে কোন ফসলের ক্ষেতে গাছের পাশে বহু আগাছাও থাকে। জীবনটা সুখের করতে হলে কোনটি গাছ আর কোনটি আগাছা এটি জানা জরুরী। নইলে আগাছার বদলে ফসলের গাছকে আবর্জনার স্তূপে যেতে হয়। আর তখন পানি ও সার গিয়ে পড়ে আগাছার গোড়ায়। যে কোন জাতির জীবনে শুধু মহৎ মানুষই জন্ম নেয় না। চরিত্রহীন দুর্বৃত্তরাও জন্মায়। শিক্ষক ও পাঠ্য বইয়ের কাজ হলো,মহৎ মানুষের পাশাপাশী দুর্বৃত্তদের চিত্রগুলোও তুলে ধরা। এটি না হলে ফিরাউন,নমরুদ, আবু জেহলের মত দুর্বৃত্তরা বীরের মর্যাদা পায়। কিন্তু বাংলাদেশে সেটি হয়নি। হয়নি বলেই কে সৎ আর কে দুর্বৃত্ত সেটি চিনতেই ভুল করে। সবচেয়ে বেশী ভুল করে তারা যারা এ শিক্ষা ব্যবস্থায় জীবনের দশ-বিশটি বছর কাটায়। তখন বিবেক সুস্থতা হারায় শিক্ষার নামের মিথ্যাচারে। এজন্যই সকল দল নিষিদ্ধ করে যখন একমাত্র রাজনৈতিক দল বাকশাল প্রতিষ্ঠা করা হলো তখন এ সব তথাকথিত শিক্ষিতরা দল বেঁধে সে দলের সদস্যপদ গ্রহণে লাইন ধরেছিল। তাদের চেতনা রাজ্যে মানবতা ও বিবেক বোধের যে কতটা মৃত্যু হয়েছিল সেটির প্রমাণ মেলে বস্তুত এরূপ বাকশালে যোগদানের মধ্য দিয়ে। বাকশালে যোগদানের সে মিছিলে শামিল হয়েছিলেন বিপুল সংখ্যক পুরোন রাজনীতিবিদ,বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক,প্রবীণ সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবী। মানবিক মূল্যবোধে তারা যে কতটা নীচু ছিলেন সেদিন সেটি তারা নিজেরাই প্রমাণ করেছেন। এমন চেতনার ধারকেরাই দেশের প্রতিষ্ঠিত আইন-আদালতকে বুড়া আঙ্গুল দেখিয়ে নব্বই দশকে ঢাকায় তথাকথিত গণ-আদালত বসিয়েছিলেন। এটি ছিল সেক্যিউলারিস্ট প্রজেক্ট। লক্ষ্য ছিল, দেশের ইসলামপন্থিদের নির্মূল করা।
বাংলাদেশে দুর্বৃত্তরা বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়,নেতা হয়,মন্ত্রী হয় এমনকি প্রেসিডেন্টও হয় -মূলত এমন চেতনার বিপুল সংখ্যক মানুষদের কারেণে। এদের কারণেই দেশ দুর্নীতিতে বিশ্বে বার বার প্রথম হওয়ার কলংক অর্জন করে। জাতীয় জীবনে এ এক চরম ব্যর্থতা। বিদেশ থেকে শত শত কোটি লোন নিয়ে কলকারখানা ও রাস্তাঘাট নির্মাণ করে কি জাতি ব্যর্থতার এমন কলংক থেকে মুক্তি পায়? আসে কি অর্থনৈতিক উন্নয়ন? বাড়ে কি ইজ্জত? বরং যা বাড়ে তা হলো লোনের দায়ভার। এবং বাড়ে ব্যর্থতার কলংক। বাংলাদেশে এ দুটিই সমানে বেড়েছে। এ ব্যর্থ শিক্ষাব্যবস্থা ভারি হয় দুর্বৃত্তদের রাজনৈতিক দল। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তখন পরিণত হয় তাদের রিক্রটমেন্ট ক্ষেত্রে। এখান থেকেই তারা পায় হাজার হাজার দলীয় ক্যাডার যারা বিরোধীদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র লাঠিয়ালের কাজ করে।
যে মহল্লায় দুর্বৃত্ত মানুষের সংখ্যা বেশী সে গ্রামে যেটি সহজেই বেড়ে উঠে সেটি হলো সন্ত্রাসী ডাকাত দল। বাংলাদেশে একই কারণে প্রবলভাবে শক্তিশালী হয়েছে দুর্বৃত্ত নেতাদের রাজনৈতিক দল। জমিতে ফসলের আবাদ না হলে সে জমিতে যা বেড়ে উঠে তা হলো আগাছা। তেমনি সত্যের প্রচার না হলে প্রতিষ্ঠা পায় মিথ্যা ও দুর্বৃত্তি। অথচ মুজিবামলে বাংলাদেশে সত্যের প্রচার গায়ের জোর বন্ধ করা হয়েছে। নিষিদ্ধ করা হয়েছিল সকল বিরোধী মতের পত্রিকা। ফলে বাজার পেয়েছিল মিথ্যা-প্রচার। এরা এ প্রচারও বাজারে ছেড়েছে যে,শেখ মুজিবই হাজার বছরের ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ বাঙালী। কথা হলো,সেই শ্রেষ্ঠ বাঙালীটি যদি এরূপ মিথ্যাচারি ও স্বৈরাচারি হয় তবে সাধারণ বাঙালীদের জন্য মর্যাদাকর কোন গুণ অবশিষ্ঠ থাকে কি? আবর্জনা মাথায় চাপিয়ে রাস্তায় নামা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। এমন নির্বুদ্ধিতায় ইজ্জত বাড়ে না। সে আবর্জনাকে আস্তাকুঁড়ে ফেলতে হয়। অথচ বাংলাদেশে সেগুলোকে অনেকে মাথায় তুলেছে। বিষয়টি ঘটেছে জাতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে। স্বৈরাচারি,বিদেশী চর,মিথ্যবাদী ও আত্মস্বীকৃত লম্পট ও খুনের মামলার আসামীদের কোন জাতিই নেতা রূপে মাথায় তুলে না। কারণ এতে বিশ্ব মাঝে শুধু অসম্মান বাড়ে। অথচ বাংলাদেশ তাদেরকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করা হয়। বাংলাদেশের ১৫ কোটি মানুষের বুদ্ধিবৃত্তিক ব্যর্থতা নিছক এ নয় যে তারা বিজ্ঞানি বা আবিষ্কারক তৈরীতে ব্যর্থ হয়েছে,বরং সবচেয়ে ব্যর্থতা হলো বীর ও দুর্বৃত্তের মাঝে পার্থক্য নি

৩৭| ১৬ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ১:৪৩

বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন:
এ বিষয়ে কোন কিছুই জানা ছিল না।

অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে তথ্যগুলো শেয়ার করার জন্য।

প্রজন্ম কিছুটা ঘৃনা রেখা না পুরো রাখতে হবে।

২৯ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৯:২৮

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: মেনি মেনি থ্যাঙকস

৩৮| ১৭ ই জুন, ২০১৬ রাত ১২:২২

আরিফুর রহমান হাওলাদার বলেছেন: পোস্ট ভাল লাগল অনেক কিছু নতুন করে জানলাম। পোস্ট এর চেয়ে কমেন্ট একটু বেশী ভাল লাগল।



২৯ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৯:২৯

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: :)

৩৯| ১৭ ই জুন, ২০১৬ ভোর ৪:৩৭

রুদ্র জাহেদ বলেছেন: দারুণ পোস্ট।নতুনভাবে জানা-অজানা অনেককিছু পড়লাম।প্রজন্ম জন্মভূমির ইতিহাস নিয়ে তেমন আগ্রহী না।তারা বর্তমান রাজনীতিতে বুদ হয়ে নিজস্ব চেতনা হারিয়ে ফেলছে।

সবার প্রকৃত ঘটনা জেনে শিক্ষা নিয়ে বিচার করা উচিত

প্রজন্ম কিছু ঘৃণা রেখ

২৯ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৯:৩১

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ রুদ্র

৪০| ১৭ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৩:৩১

এই আমি সেই আমি বলেছেন: বঙ্ঘবন্ধুর জানাজার লোক সংখ্যা নিয়ে অনেকে এমনকি বিএনপির উচ্চ সারির নেতারাও টীকা টিপ্পনী করে। তখন খুব পীড়িত বোধ করি। আপনার লেখাটা মনে একটি শান্তির প্রলেপ বুলিয়ে দিল।
আমি আমার নিজের মত করে কেন বঙ্ঘবন্ধুর জানাজায় লোক হয়নি , কেন জিয়া এবং গোলাম আজমের জানাজায় লোক হয়নি তার টেকনিক্যাল দিকটার দিকে আলোকপাত করেছি।

কতিপয় বিপথ গামী কুলাঙ্গার জুনিয়র সামরিক অফিসার কতৃক ক্রু সংগঠিত হবার পর যদি সেটা ব্যর্থ হত আর তাজউদ্দীন , সৈয়দ নজরুল , কামরুজ্জামান, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী বা বঙ্গবন্ধুর প্রতি অনুগত কেউ ক্ষমতায় আসত , আর ঢাকায় জানাজা হত তাহলে কল্পনা করুন বঙ্গবন্ধুর জানাজায় কত লোক সমাগত হত ?
পক্ষান্তরে জিয়াউর রহমান মারা যাবার পর তার অনুগত সাত্তার যদি ক্ষমতায় না আসত মঞ্জুরই টিকে যেত তাহলে জিয়ার লাশ ঢাকায় আসত না , (দুর্জনেরা বলে আদৌ সেটা জিয়ার লাশ ছিল কিনা?) আর লাখো লো্কের প্রশ্নই আসে না । বঙ্গবন্ধুর জানাজায় পাঁচ সাতজন লোক হয়েছিল বা ৫৭০ সাবান দিয়ে গোসল দিয়েছিল কিন্তু এটা তো ঠিক বঙ্গবন্ধুকে প্রথামাফিক দাফন করা হয়েছিল । জিয়াউর রহমানকে পটিয়ায় স্রেফ পুতিয়ে ফেলা হয়েছিল ।
হেলিকপ্টারে করে লাশ নিয়ে বন্দুক উচিয়ে আধ ঘণ্টার মধ্যে গোসল জানাজা ছাড়া দাফন করতে বলা হয়েছিল । কিন্তু স্থানীয় ইমাম দৃরতার সাথে সেটা প্রত্যাখান করায় প্রথা মাফিক বঙ্গবন্ধুর দাফন করা হয়েছিল ।
গুয়াজমের জানাজায় প্রচুর লোক হয়েছে ।ছেলেদের দেশে আসার বাহানায় তার জানাজা দুই দিন বিলম্বিত করা হয় । আর জামাতের মত কমান্ড নির্ভর দলের জন্য সারা বাংলাদেশের লোক দুই দিনে ঢাকায় জড়ো করা খুবই সম্ভব, আর তাছাড়া জামাতী কর্পোরেট বিজনেসের উচ্ছিস্ট ভোগী ছানাপোনারা তো ছিলই । গোলামের জানাজায় কোন সাধারন লোক অংশ গ্রহণ করেছিল কি ?
বঙ্গবন্ধুর মত প্রতিকুল অবস্থা না হোক সরকার যদি বৈরী আচরণ করত তাহলে গোলামের জানাজায় কত লোক হত ?

২৯ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৯:৩২

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: খুব সুন্দর বলেছেন, এই আমি সেই আমি।
জানাজার লোক দিয়ে মানুষ বিচার করা যায় না।
গুয়াজমের কবরের উপর একটা টয়লেট বানানো উচিৎ ছিল

৪১| ১৭ ই জুন, ২০১৬ রাত ১০:২২

কোলড বলেছেন: "লেখক বলেছেন: I have a question for u in the post...
Would you plz answer?"
You didn't ask the right question! End doesn't justify the mean but the background provides clue as to why it happened. Our leftists still cry the way Allende was killed by Pinochet but in the long run Chille turned better which didnt happen in Bangladesh but it might have been!

২৯ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৯:৪১

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: Our leftists still cry the way Allende was killed by Pinochet but in the long run Chille turned better which didnt happen in Bangladesh but it might have been!
Might have been!!!!
Those who killed Mujib were just wanting to rule BD, they didn't have the ability to do anything good, anything new actually..... They r from cantonments, they can just follow orders....
And the leftists!!! He wanted pak as china supported them! This make me laugh and I do feel sympathy for those shitheads

৪২| ১৮ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ১:৪৬

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: চমৎকার পোস্টটি দেবার জন্যে লেখককে ধন্যবাদ জানাই।

২৯ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৯:৪১

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ধন্যবাদ প্রফেসর

৪৩| ১৯ শে জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০৭

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন অল্প কথায়। তথ্যপূর্ণ পোস্টে আমার অনেকদিনের জিজ্ঞাসার জবাব পেলাম। ধন্যবাদ।

২৯ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৯:৪৩

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ধন্যবাদ

৪৪| ২০ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৩:২৬

দেবজ্যোতিকাজল বলেছেন: দেশটা সুন্দর হোক । এই কামনা রইল ।

২৯ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৯:৪৪

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: :)

৪৫| ২৫ শে জুন, ২০১৬ রাত ১০:৪৭

শায়মা বলেছেন: এত সুন্দর একটা লেখার জন্য অনেক অনেক ভালোবাসা পিচ্চিভাইয়া।

২৯ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৯:৪৫

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: তোমাকেও মেলাগুলা ধন্যবাদ

৪৬| ২৮ শে জুন, ২০১৬ দুপুর ২:৫৮

নীলসায়র বলেছেন: প্রজন্ম কিছু নয় অনেক ঘৃনা ধরে রেখেছে।

১৯৭১ সালে এই দেশের মানুষের উপর পাক বর্বর বাহিনী যে নৃশংস তাণ্ডব চালিয়েছে সে অপরাধের জন্যে আমরা কখনও ক্ষমা করিনি তাদেরকে। যাদের এত বড় দুঃসাহস জাতির জনকের সাথে বিশ্বাসঘতকতা করে তাদের প্রতিও রইলো এক রাশ ঘৃনা। আমাদের বুকের ভেতর যে ঘৃণার আগুন জ্বলছে তারা তার তাপ সহ্য করতে পারবে না।

২৯ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৯:৪৬

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে

৪৭| ২৯ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৯:৩৬

নীলপরি বলেছেন: যাক , অবশেষে প্রতিউত্তর পেয়ে ভালো লাগলো ।
ধন্যবাদ । :)

নতুন লেখা দেখছি না তো !

২৯ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৯:৪৯

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: হা হা।
আলসেমি লাগছিল প্রতিউত্তর করতে। আর এত দাঁতভাঙ্গা সব কমেন্ট!
লিখবো হয়তো তাড়াতাড়িই একটা। মাথায় নাই কিছু :(

৪৮| ০১ লা জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:২১

মহা সমন্বয় বলেছেন: হাজার বছরের শ্রেষ্ট এ বাঙালীর প্রতি শ্রদ্ধা সবসময়।

৪৯| ০২ রা জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৭

মাদিহা মৌ বলেছেন: প্রায় সবটাই অজানা ছিল। সত্যিই, পুরো দেশ মিলে
(সাধারণ জনগন বাদে) জাতীর জনককে মেরে দিল?

৫০| ০৩ রা জুলাই, ২০১৬ সকাল ৭:৪৩

সুবল চন্দ্র বর্মন বলেছেন: সত্য তো সত্যই। একে না পদদলিত করা যায়, না ধামা চাপা দেওয়া যায়। কোন না কোন দিন তা চন্দ্র সূর্যের মত প্রখর আলোর তেজে প্রকাশিত হবে। সময়িক প্রতিহত হলেও বিধাতা তা ঠিক সময়মত পাটকেল মারেন। যে যেমন অন্যায় অবিচার করবে, পরবর্তীতে সে সেরকমই অরাজকতার শিকার হবে। এটা প্রকৃতির নিয়ম। ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন।

৫১| ১৫ ই জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৪:১৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: ইতিহাসকে বিকৃত করতে অনেকেই প্রয়াসী হন, তবে শেষ পর্যন্ত সত্য ইতিহাসই মাথা উঁচু করে দাঁড়ায়।

৫২| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১০:৪১

রমজান আহমেদ সিয়াম বলেছেন: অনেক কিছু জানলাম ৷ অনেক অনেক ধন্যবাদ ৷

সত্য কখনো গোপন থাকেনা

৫৩| ০৯ ই মে, ২০১৮ সকাল ১০:১৯

বিপরীত বাক বলেছেন: লেখক গবেষক মহিউদ্দিন আহমদের মতে, ''বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কাল্ট তৈরিতে সবচেয়ে বড় ভুমিকা রেখেছিলেন সিরাজুল আলম খান। মুজিব তাকে একরকম ব্ল্যাংক চেক দিয়েছিলেন। এককথায় সিরাজ ছিলেন শেখ মুজিবের সবচেয়ে ‘আস্থাভাজন শিষ্য’। এটাই ছিল সিরাজুল আলম খানের ক্ষমতার ভিত্তি। দুজনের ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ায় দুজনই দুর্বল হয়ে পড়েন। মুজিব নিহত হওয়ার সংবাদ শুনে সিরাজ দুঃখ পেয়েছিলেন সন্দেহ নেই। তবে তিনি মনে করতেন, এটা ছিল অনিবার্য। শেখ মুজিব নিজেই এই পরিণতি ডেকে এনেছিলেন"।

‘বঙ্গবন্ধুর নামে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। কিন্তু যুদ্ধকালীন সময়ের নেতা হলেন তাজউদ্দীন। জামায়াতে ইসলামি হলো পাকিস্তানী ফোর্স আর আওয়ামী লীগ ছিল এন্টি লিবারেশন ফোর্স। আওয়ামী লীগ তো ছয় দফা থেকে এক ইঞ্চিও আগে বাড়তে চায়নি। এদের সত্যিকার চেহারা জানতে পারলে মানুষ এদের থুথু দেবে। মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনায় তাজউদ্দীনের নাম আসা উচিৎ এক নম্বরে। অথচ তিনিই হলেন এর প্রথম ক্যাজুয়ালটি’ (জাসদের উত্থানপতন: অস্থির সময়ের রাজনীতি, পৃষ্ঠা- ৬৯-৭১)।

জাসদ নেতা বাদল সাহেব যেমন বলেছেন; 'আমরা বঙ্গবন্ধু সরকারের রক্তাক্ত বিরোধীতা করেছি, আমরা মেরেছি এবং মরেছি'। জাসদের ২০ হাজার কর্মি এই লড়াইয়ের বলি হয়।জাসদের নেতারা বঙ্গবন্ধুর ওপর এতটাই চটে ছিল যে তার লাশকে কবর দিতেও অপারগ ছিল তাদের সামরিক এক নেতা।বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যা করার পর, কর্নেল তাহেরের মন্তব্য ছিল;
ওরা বড় রকমের একটা ভুল করেছে। শেখ মুজিবকে কবর দিতে এ্যালাও করা ঠিক হয়নি। এখনতো সেখানে মাজার হবে। উচিৎ ছিল লাশটা বঙ্গোপসাগরে ফেলা দেওয়া।’
একজন মুক্তিযোদ্ধার মুখে মাত্র ৪ বছরের মাথায় মুক্তি আন্দোলনের সর্বোচ্চ নেতার ব্যপারে এরকম দৃষ্টিভঙ্গি কি কেবলি রাজনীতিগত? ক্ষমতার লড়াই? আদর্শিক? এই প্রশ্নগুলোই তরুণ প্রজন্মের অধ্যয়ন জরুরী।মর্সিয়া ক্রন্দন করে কোন লাভ নেই।কাউকে নায়ক বা ভিলেনও বানানোর দরকার নেই, কেননা আমরা জানি কে নায়ক আর কে ভিলেন।আমাদের দরকার ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে আগানো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.