নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাতাল ঋত্বিক আমি, প্রেমকথা আমার ঋগ্বেদ

আরণ্যক রাখাল

মাতাল ঋত্বিক আমি, প্রেমকথা আমার ঋগ্বেদ

আরণ্যক রাখাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

অনর্থক আত্মকথন: হাসি ও বই বা অন্যকিছু

২১ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১২:১৬

বিকাশ থেকে টাকা তোলা আর ফ্লাক্সি লোডের জন্য একটা দোকানেই প্রতিবার যাই। ভাই বলে ডাকি দোকানের মালিককে। সারাদিন তিনিই বসে থাকেন দোকানে। কোন সহযোগী নেই, অথচ দোকানটাও ছোট নয়। কাস্টোমার লেগেই থাকে সবসময়। বিকাশ আর ফ্লাক্সি’র সাথে অন্যান্য জিনিসও আছে। যেমন- সাবান, জেল, ফেসওয়াস, ব্যাটারি, কার্ডরিডার, ব্রাশ-পেস্ট ইত্যাদি। প্রচণ্ড ভালো ব্যবহার। হেসে কথা বলেন সবসময়।
আটমাস থেকে টানা যাচ্ছি বলে খুব ভালো সম্পর্ক হয়ে গিয়েছে আমার সাথে। আমি ভেবেছিলাম অবিবাহিত। কিন্তু পরে ভেবে দেখেছি, বাঙালি ছেলেরা পড়া ছেড়ে কাজে নেমে পড়লেই বিয়ে করে বসে। নিজের ইচ্ছায় নয়তো পরিবারের চাপে। সে হিসেবে তার দুই তিনটা বাচ্চা থাকার কথা। বাচ্চাগুলা হয়তো ভর্তিও হয়েছে স্কুলে। জিজ্ঞেস করিনি কোনদিন।
আজ বন্ধুর কাছে শুনলাম, তার বৌ নাকি ফার্স্ট ক্লাস পেয়ে অনার্স শেষ করেছে। তাদের বিভাগে প্রথম বিভাগে পাস করেছে মাত্র তিনজন- সে সহ। আর তার ছেলে পড়ছে ক্লাস থ্রিতে!
টাস্কি খেয়ে গেলাম রীতিমত। এতোটা আশা করিনি আমি। ছেলে ক্লাস থ্রিতে পড়ে, আর মা শেষ করলো পড়া; তারমানে মেয়েটার বিয়ে হয়েছে ক্লাস সিক্সসেভেনেই। তের-চৌদ্দ বছর বয়সে!
জিজ্ঞেস করলাম, “তুই কীকরে জানিস?”
-আজ দোকানে গেলাম। বলছিল একজনকে। শুনলাম বলছে, “পড়াশুনার খুব শখ। তো পড়া চালায় যাইতে বললাম। আমি তো নিজে ইন্টারও পাশ করতে পারি নাই। ওকে পড়াতে ভালো লাগে। মনে হয় নিজেই পড়ছি। রেজাল্টও ভালো করছে- মনে হচ্ছে কষ্টটা সার্থক।”
অবাক হয়ে শুনে যাচ্ছিলাম শুধু। সে বলছিল। আমার মনে হচ্ছিল, লোকটার ফ্যান হয়ে গেছে সেও। আমার মতো।
এতক্ষণ লোকটার কথাই ভাবছিলাম। আমাদের দেশে বিয়ের পর মেয়েরা পড়ালেখার সুযোগ পায় খুব কমই- তাও স্বামী শিক্ষিত হলে। বেশিরভাগ সময়ই, বিয়ের পর মেয়েরা সাংসারিক চাপ, উৎসাহের অভাব- ইত্যাদি মেলা কারণে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারে না। বাচ্চা হলে তো কথাই নেই। আমি তো এক চল্লিশ বছরের শিক্ষকেও চিনি, যে চল্লিশ বছর বয়সে মেয়ের বয়সী ১৭ বছরের একজনকে বিয়ে করেছে। যতদূর জানি লেখাপড়া করছে না মেয়েটা।
এমন প্রেক্ষাপটে, এই চিত্র সত্যিই বিস্মিত করে। ভাবায়। থমকে যেতে হয়, এমন লোকগুলোর সামনে। ইচ্ছা করে একটু কথা বলি- কথাচ্ছলে প্রশংসা করি একটু। কিন্তু হয়ে ওঠে না। হয়তো লজ্জায়।
কথাটা শোনার পর লোকটার সাথে দেখা হয়েছে কয়েকবার। দরকারে। প্রতিবার তার হাসি দেখেছি মুখে। প্রতিবারই মনে হয়েছে, সত্যিই হাসিটা সুন্দর লোকটার। নির্মল।

বই পড়ার অভ্যাসটা ঠিক কবে শুরু হয়েছিল জানি না, তবে মনে আছে ক্লাস স্যাভেনে পড়ার সময় বৃত্তির টাকা পেয়ে প্রথম বই কিনেছিলাম। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘চাঁদের পাহাড়’। বইটা এতোই ভালো লেগেছিল যে, এরপর আর বই পড়া ছাড়তে পারিনি। যেখান থেকে পারি, যেভাবে পারি বই সংগ্রহ করে পড়েছি। বিভূতিভূষণের আত্মজীবনী পড়ে কিনা কে জানে, একসময় ইচ্ছে হয়েছিল লেখক হওয়ার। কল্পনা করতে ভালো লাগত, আমার বই বেড় হচ্ছে, পাঠক পড়ছে, নামী সাহিত্য পত্রিকায় লেখা প্রকাশিত হচ্ছে, বিভিন্ন সাহিত্য সম্মেলনে যোগ দিচ্ছি- ইত্যাদি। এসব ভাবতেও এখন লজ্জা লাগে।
আজ সন্ধ্যায় নিজের সংগ্রহ করা বইগুলো দেখছিলাম। সংকল্প করেছিলাম, কিনেছি এমন বই পড়ব। কিন্তু ৩০০ বইয়ের ভিড়ে নিজের টাকায় কেনা বই একটাও খুঁজে পেলাম না! সব কোন না কোন লাইব্রেরী থেকে আনা। কিছু বই বন্ধুর থেকে ধার করে আনা। কিছুদিন আগে পর্যন্ৎ, কোথাও গেলে সেখানে পাবলিক লাইব্রেরী আছে কিনা খোঁজ করতাম। যদি থাকতো, তবে লাইব্রেরী কার্ড করে, কয়েকটা বই পড়ার জন্য নিয়ে চম্পট দিতাম। আমি এপর্যন্ত অন্তত ২৫ টা লাইব্রেরীতে রেজিস্ট্রেশন করেছি। একই লাইব্রেরীতে বিভিন্ন নামে রেজিস্ট্রেশনও করেছি কয়েকবার। ভাগ্যিস, আমার চেহারাটা মনে রাখার মত নয়। তেমন হলে, ধরা খেয়ে যেতাম নির্ঘাত।
যাক গে, বলছিলাম, লেখক হওয়ার বাসনার কথা। পেশাদার লেখক হওয়ার ইচ্ছে ছিল। এখন সে ইচ্ছে ছুটে গিয়েছে। বিভূতিভূষণেরই আত্মজীবনী পড়ে জেনেছি, তিনি জীবন চালানোর জন্য মাস্টারি থেকে শুরু করে হেন চাকরি নেই করেননি। ‘আদর্শ হিন্দু হোটেল’ লেখার পর তো সে সময়ে রব উঠেছিল, তিনি হোটেলের ব্যবসাও শুরু করেছেন!
আসলে কোন বাঙালি লেখকের পক্ষেই লেখালেখিকে পেশা হিসেবে নেয়া সম্ভব নয়। দুই বাঙলার প্রখ্যাত লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় পেশা হিসেবে নিয়েছিলেন সাংবাদিকতাকে। শামসুর রাহমান সাংবাদিকতা করেছেন বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় কবি হওয়ার পরও। লেখার মান যেমনই হোক, ইমদাদুল হোক মিলন বা আনিসুল হকের বই প্রচুর বিক্রি হয় বলে জানি। তারাও লেখালেখিকে পেশা হিসেবে নিতে পারেননি। ইমদাদুল হক মিলন, এখন কালের কণ্ঠের সম্পাদক; আনিসুল হক প্রথম আলোর সাথে কীভাবে যেন জড়িত।
এর কারণ হয়তো, আমার মত পাঠকেরাই- যারা বই কেনে খুব কম। কিনলেও বছরে গন্ডাখানেক এর বেশি নয়। একজন হার্ডকোর পাঠকের (আমি এর মধ্যে পরি না) সপ্তাহে অন্তত দুইতিনটা বই লাগে। তারা হয়তো বই কেনে, কিন্তু সাধারণ পাঠকের মাঝে বই কিনে পড়ার স্বভাবের অভাব আছে। এতে তো অপাঠ্য (সিলেবাসের পাঠ্য তালিকায় নেই বলে বলছি) বই, তার উপর যদি টাকা দিয়ে কিনে পড়তে হয়, তাহলে বই পড়ার দরকারটাই বা কী!
কিছুদিন আগে, উইকিপিডিয়ায় পড়লাম, সিডনি শেলডনের ১৮ টি উপন্যাসের মোট বিক্রির পরিমাণ ৩০০ মিলিয়ন কপি! ড্যান ব্রাউনের একেকটি বই কয়েক কোটির বেশি কপি বিক্রি হয়। ভাবি, ড্যান ব্রাউন বাঙালি লেখক হলে কত কপি বিক্রি হতো। বড় জোর দুই তিন হাজার কপি! তার বেশি একটাও নয়।
ইংরেজি বইয়ের পাঠক সারাবিশ্ব জুড়ে আছে, বই বেশি বিক্রির এটা একটা কারণ হলেও, সবচেয়ে বড় কারণটা হলো সেসব দেশের মানুষের বই কেনার প্রবণতা। সব লেখকই তো বিশ্বব্যাপী খ্যাতি পায় না, অথচ খুব কম পরিচিত লেখকের বইও কয়েক লাখ কপি বিক্রির রেকর্ড আছে। Me before You নামের মাঝারি মানের একটা আমেরিকান উপন্যাস পড়লাম কয়েকদিন আগে- এমন লেখা ইমদাদুল হক মিলন হয়তো মাসে দুইটা তিনটা করে লিখতে পারবেন। অথচ বইটা লাখেরও বেশি পাঠক কিনেছে!
হুমায়ূন আহমেদ ছাড়া আর কেউ শুধু লেখাকে পেশা হিসেবে নিয়ে খুব ভালোভাবে জীবনযাপন করতে পেরেছেন বলে শুনিনি। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় কিছু করতেন না। একসময় ব্যবসা করতেন- সেটাও ছেড়ে দিয়ে লেখালেখিতে পুরো মনোনিবেশ করেছিলেন। লিখেছিলেনও প্রচুর অল্প সময়েই। কিন্তু তার লেখালেখিকে পেশা হিসেবে নেয়ার ফলাফল আমরা জানি। অর্থকষ্টে মরতে হয়েছে তাকে।
আজ সন্ধ্যায় নিজের কেনা বইয়ের কথা বলছিলাম। হ্যাঁ, পেয়েছি বটে একটা। বুদ্ধদেব গুহের ‘দশম প্রবাস’। তার কানাডা ও আমেরিকা ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখা অনবদ্য এক ভ্রমণবৃত্তান্ত। বইটার ২য় অধ্যায়ে খুব ছোট করে, বাঙালি লেখকের দুঃখের কথা বলেছেন। লিখেছেন, “আমি যে বাঙালি লেখক। হতভাগ্য। ইংরেজিতে লিখলে, সে লেখা যেমনই হোক না কেন, আমি কোটিপতি হতে পারতাম। অতি নিচের স্তরের ইংরেজি লেখকও আমার মত বাঙালি বেস্ট সেলারকে চাকর রাখতে পারে।”
বুদ্ধবেদ গুহের মত বিখ্যাত লেখক যখন এমন কথা বলেন, তখন লেখক হওয়ার ইচ্ছেটা মরে যায়। অবশ্য, আমার সে ইচ্ছা আগেই মরে গিয়েছিল, যখন বুঝেছিলাম, যাই লিখছি সব ভাগাড়ে যাওয়ার মত। আমি না লিখলেই বরং কিছু জঞ্জালের হাত থেকে বাংলা সাহিত্য রক্ষা পাবে।
তবে, লেখক হতে না পারি, পাঠক হবো অন্তত। খুব ভালো পাঠক- যে বই কিনে পড়ে।

মন্তব্য ৪১ টি রেটিং +১৪/-০

মন্তব্য (৪১) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১২:৩৩

সুমন কর বলেছেন: আমি আবার উল্টো, বই কিনে পড়তেই পছন্দ করি। আমিও কিন্তু পাঠক হতে চাই। ;)

লেখায় লাইক দিয়ে ঘুমাতে গেলাম। শুভ রাত্রি।

২১ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১:১৯

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: এটা চালিয়ে যাবেন আশা করি। বই কিনে নাকি কেউ দেউলিয়া হয়না। অবশ্য আমার পকেট হালকা হয়ে যায়!
শুভরাত্রী

২| ২১ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১২:৫২

চাঁদগাজী বলেছেন:


আমার মনে হয়, আপনি ভালো লিখেন; আমি আপনার গল্পের প্লট দেখিনি এখনো, এখন অবধি আপনি কথা-শিল্পির মত লিখছেন।

আনিসুল হনের বই যদি কেহ কিনে পড়ে, তা'হলে চিন্তিত হওয়ার মত ব্যাপার আছে!

২১ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১:২১

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: অপ্স। অনেক ধন্যবাদ।
ওর বই কেনার লোকের অভাব নেই।
তবে দুএকটা বই ভাল লিখেছে। এখন তো প্রথম আলোর লোক। বিজ্ঞাপনের চিন্তা নেই

৩| ২১ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ২:৩৮

উম্মে সায়মা বলেছেন: আমার বই কিনে পড়তেই ভালো লাগে। অবশ্য পেলে বন্ধুদের কাছ থেকে এনেও পড়ি। কেন যেন কখনো কোন লাইব্রেরী কার্ড করা হয়নি। আমিও পাঠক হতে চাই। সুন্দর দুটো ব্যাপার তুলে ধরেছেন।

২১ শে মার্চ, ২০১৭ সকাল ১১:৫৯

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: :)

৪| ২১ শে মার্চ, ২০১৭ সকাল ৯:৩৮

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: আপনার লেখা পড়ে অনেক ভাল লাগল। লেখক হওয়ার শখ এক সময় আমারও ছিল এখন আর নাই।
নিজের মনের ভাল লাগা থেকে কিছু লেখার চেষ্টা করি।

২১ শে মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১২:০০

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: চেষ্টা। চালিয়ে যান। হয়েও যেতে পারেন

৫| ২১ শে মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১২:৫২

বিলিয়ার রহমান বলেছেন: শেষে কিন্তু একটা দারুন কথা বলেছেন!


লেখক হতে না পারি, পাঠক হবো অন্তত। খুব ভালো পাঠক- যে বই কিনে পড়ে।:)



প্রথম লোকটার নির্মল মনটাও কিন্তু হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার মতো!:)

২১ শে মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১:১৩

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: হ্যাঁ। ঐ লোকটাকে পরে আরও অনেক দেখেছি। ভাল লোক যেমনটা খুব একটা দেখা যায় না

৬| ২১ শে মার্চ, ২০১৭ দুপুর ২:৪২

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: প্রথমটা পড়ছি-খুব ভাল লাগা লেখায় :)

সুন্দর মনমানসিকতার মানুষ এই দুনিয়ায় খুব কমই দেখতে পাওয়া যায় ।

২১ শে মার্চ, ২০১৭ দুপুর ২:৪৯

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: আসলেই। সুন্দর হাসিখুশী লোক দেখার জন্য একসময় হয়তো যাদুঘরে যেতে হবে :(

৭| ২১ শে মার্চ, ২০১৭ দুপুর ২:৫৮

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আরে ধুরু আমি তো সারাদিনই হাসি --------- চিড়িয়াখানা যেতে হপে না। আমার কাছে আসলেই হপে ভাইয়া হাহাহাহাহাহ

২১ শে মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৩:২১

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ওহহো।
তাইলে যখন হাসিখুশি ভালোমানুষ খুঁজে পাবো না, তখন গুগোল সার্চ দিয়ে আপনাকে বের করে ফেলবো! নাহলে আপনাকেই যাদুঘরে রাখতে হবে

৮| ২১ শে মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৩:১৯

অতঃপর হৃদয় বলেছেন: ১ নম্বর কাহিনী টা কোথা থেকে যেন আগেই পড়েছি, হয়তো ফেসবুক কিংবা ব্লগে। আর হুমায়ূন আহমেদ কিন্তু লেখালেখি কে পুরোপুরি পেশা হিসেবে নেন নি। তিনি কেমিস্ট্রির প্রফেসর ছিলেন। লেখালেখি কে পেশা হিসবে না নেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ বলে মনে করি। লেখালেখি ভালো লাগা থেকে করতে পারলে ভালো। অন্য পেশার পাশাপাশি লেখালেখি করাই উত্তম।

২১ শে মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৩:২৯

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: হুমায়ুন আহমেদ পরে শিক্ষকতা ছেড়ে দিয়েছিলেন। লেখালেখিতে মনোনিবেশ করবেন বলে।
আমি পেশা হিসেবে নেয়ারই পক্ষে। শখের লেখকদের দিয়ে সাহিত্য হয় না। সারাদিন যে সাহিত্যের মাঝেই বাঁচবেন, তার কাছ থেকেই না পাওয়া যাবে অমূল্য কিছু।
তবে এটা বাংলাদেশে বা কলকাতায় সম্ভব নয়।
ভারতের চেতন ভগত পর্যন্ত লেখালেখিকে জীবিকা হিসেবে নিয়েছেন। অথচ তার চাইতে শতগুন ভাল লেখক এদেশে আছে।
হেমিংওয়ে প্রতিটি শব্দের জন্য পাঁচ ডলার করে নিতেন নোবেল পাওয়ার পর।
আসলে, লেখককে তো হতে হয় সাহসী। তার প্রতিবাদ করার মানসিকতা থাকতে হবে। চাকরি করলে তো সেটা করতে আর পারছে না ইচ্ছামত। বাঙালি লেখকদের ভাগ্য খারাপ, তাদের প্রতিভা থাকার পরও গরীর থেকে যেতে হয়।
হ্যাঁ, ওটা ফেসবুকেই পড়েছ তুমি।

৯| ২১ শে মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৮

অতঃপর হৃদয় বলেছেন: আমি আপনার কথার সাথে একমত। তবে একটা জিনিস ভেবেছি বলেই ওমন কথা বললাম। আমরা লেখা পড়া করছি জ্ঞান অর্জনের জন্য সেইসাথে মান সম্মত জীবিকা; যখন আমি লেখালেখি কে পেশা হিসেবে নিবো তখন অন্য পেশা গ্রহন করার প্রশ্নই আসেনা। ধরা যাক, আমি লেখালেখি পেশা হিসেবে নিয়েছি। আমি ভাল লিখি, বইও বের করেছি কিছু। দেখা যাচ্ছে, বই বিক্রির টাকা বা আমার লেখালেখির টাকা দিয়ে সংসার চলছে না। যখন আমি ক্ষুধার্ত থাকব তখন নিশ্চই আমি লেখালেখিতে পুরো মনোযোগ দিতে পারব না, সংসারের নানা চিন্তা আমাকে লেখালেখিতে মনোযোগ দিতে দিবেনা। তখন তাহলে একজন পেশাদার লেখক কি করবে? এই জিনিসটাই আমাকে ভাবাচ্ছে।

২১ শে মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৪:২৩

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: বাঙালি লেখকদের বেলা তো সম্ভব নয়। কোনভাবেই। আমরা তো বই কিনি না

১০| ২১ শে মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৪:৩৯

মনিরা সুলতানা বলেছেন: সারাজীবন ই পাঠক ছিলাম ,মাথার কাছে বই না থাকলে মন খারাপ থাকে ।
লেখায় ভালোলাগা !!

২১ শে মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৪:৪১

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ধন্যবাদ অনেক।
আপনার অভ্যাসটা সুন্দর

১১| ২১ শে মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৯

কাল্পনিক কামিনী বলেছেন: অনেক সুন্দর লিখেছেন। প্রথমের ১ নম্বর লেখাটি থেকে আমাদের অনেক শেখার আছে।

২১ শে মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৬

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ধন্যবাদ অনেক

১২| ২১ শে মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৫:৩৭

আমি ইহতিব বলেছেন: প্রথম ঘটনাটি মন ছুঁয়ে গেলো। এমন কিছু ভালো মানুষদের জন্যই আসলে পৃথিবী টিকে আছে।

আর বই কিনে পড়তেই অনেক ভালো লাগে। অনেকে পিডিএফ ভার্সনে বই পড়েন। কিন্তু আমার কাছে বই বই হিসেবেই পড়তে ভালো লাগে। অনেক অনেক বই কিনে ঘর ভরিয়ে ফেলেছি, আফসোস পড়ার সময় হয়না।

২১ শে মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৭

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
সময় করে পড়ে নিয়েন সবগুলো

১৩| ২১ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ৮:৩১

জুন বলেছেন: ফ্লেক্সির দোকানের লোকটির জন্য শ্রদ্ধা আরন্যক রাখাল । আমার এক আত্মীয়া বিএ পাস ছিলেন বিয়ের সময় । দীর্ঘকাল পরে ছেলের সাথে মাস্টার্স পাশ করেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ।

আর চাঁদের পাহাড় পরে আমি যে মনে মনে কত দিন তখনকার দিনের সেই অন্ধকার মহাদেশে কল্পনায় হেটে বেড়িয়েছি তার আর লেখাজোকা নেই । বিভুতিভুষনের আত্মজীবনী পড়ে পাহাড় জঙ্গল আর জংলী গাছকে ভালোবেসেছি ।
সত্যি আগের দিনের লেখকরা অত বৈষয়িক ছিল না । দরিদ্র অনেক লেখকই দিন গুজরান করে গেছেন চরম দারিদ্রতায় ।
কবি সুকান্তের কথাই ধরুন ।
+

২১ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ৯:৩৭

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: বিভূতির চাইতে তো আপনি বেশি ঘোরাঘুরি করেন। বরং বেশিই করেন!!

১৪| ২১ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ৯:০০

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: জুন বলেছেন: ফ্লেক্সির দোকানের লোকটির জন্য শ্রদ্ধা আরন্যক রাখাল আমার তরফ থেকেও।


বই না পড়ার মজ্জাগত দোষ আছে আমাদের। একুশের বইমেলায় ৬৫ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়েছে এবার। অনেকে বলবেন ভালোই তো। কিন্তু আমি বলি, সারা দেশের কথা বাদই দিন, শুধু ঢাকার দেড় দুই কোটি মানুষের অনুপাতে এই বিক্রি কিছুই না, যেখানে শুধু সিগারেটের দৈনন্দিন গড় বিক্রি দেড়শ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক মাসে শুধু ঢাকা শহরে সিগারেট বিক্রি হয় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার। ( মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী )। অথচ সারা ফেব্রুয়ারি মাসে এত আয়োজন করে বই বিক্রি হয়েছে মাত্র ৬৫ কোটি টাকার।
তারপরেও যারা বই কেনেন, তাদের অধিকাংশই কেনা বই পড়েন না। বই কেনা তাদের কাছে স্ট্যাটাস সিম্বল, এক ধরণের ফ্যাশন, আঁতেল সাজার প্রবণতা, জ্ঞানী হবার ভান অথবা ড্রইংরুমের সৌন্দর্য বর্ধনের চেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়। আমার সাথে ২০১২ সালের একুশের বইমেলায় গিয়ে আমার দুই বন্ধুও আমার একটি উপন্যাস সহ তিন চারটি বই কিনেছিল। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে এক আড্ডায় কথা প্রসঙ্গে জানতে পেরেছি এরা দুইজন কেউ বইগুলো পড়েনি। চার বছরেও বইগুলো পড়ার সময় হলো না তাদের।

ভালো পোস্টের জন্য ধন্যবাদ ভাই আরন্যক রাখাল।

২১ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ৯:৪০

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: আপনার মন্তব্যটা সুন্দর, হেনা ভাই।
সিগারেটির পিছনে আমি নিজেই যত খরচ করেছি, তত বইয়ের পিছনে করলে, অনেক বড় এক সংগ্রহ হত

১৫| ২১ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ৯:০৫

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: এক সময় চেয়ে চিনতে প্রচুর বই পড়েছি। এখন কিনে পড়ি। আমার অন্তত ৫ টা বই কেনা হয়েছে পিডি এফ পড়ার পরে।
পিডিএফ ভাল লাগায় হার্ড কপি কিনে নিয়েছি, যাতে বার বার পড়া যায় ।

এখনকার লিখকদেরই বই পড়ার অভ্যাস নাই, তারা না পড়েই লিখা শুরু করে।
চমৎকার পোস্টের জন্য ধন্যবাদ লিখক।

২১ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ৯:৪৬

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: পিডিএফ পড়তে আমার ভাল লাগে। আসলে কিছুদিন পরই দেখবেন, মানুষ পিডিএফ পড়ছে হার্ডকপির বদলে। পিডিএফ সব জায়গায় বহন করা যাচ্ছে, একসাথে একলাখ বইও বহন সম্ভব।
ইংরেজি বই তো পিডিএফ বা ইপাবেও বিক্রি হয়। আমাদের এখন পিডিএফ বিক্রির দিকে নজর দিতে হবে। টাকা দিয়ে পাঠিক পিডিএফ কিনবে। এতে পাইরেসি থেকে যেমন বাঁচা যাবে, তেমনই লেখকের পকেটও বাঁচবে।
ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

১৬| ২১ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ৯:২০

আহমেদ জী এস বলেছেন: আরণ্যক রাখাল ,




আপনি ভালো পাঠকও হতে পারবেন না । ৩০০ বইয়ের মধ্যে বই নাকি কিনেছেন মাত্র ১টা । বাকীসব এধার- ওধার ! ভালো পাঠক তাহলে হবেন কিভাবে ? :((

তবে আপনাকে দিয়ে হবে ।
বিখ্যাত লেখক মার্ক টোয়েনের লাইব্রেরীর বই নাকি গড়াগড়ি যেতো টেবিল চেয়ার আর ফ্লোরে ফ্লোরেই । বন্ধুরা জিজ্ঞেস করতো , কি হে লেখকপ্রবর সব বই রাস্তায় গড়াগড়ি যাচ্ছে কেন, বুক শেলফ নাই ? মার্ক টোয়েন বাঁকা চোখে বলতো , " বুক শেলফ তো আর চুরি করে বা তোমাদের কাছ থেকে ধার করে আনা যায়না .... B:-) ;)
এমন করেই যদি টোয়েন সাহেব লেখক হতে পারেন, তবে পাঠক নয় আপনি লেখক হতে পারবেন নির্ঘাৎ । B:-/ :-P

২১ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ৯:৪৭

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: হা হা।
যদি পারি, আপনার নামটাই সবার আগে স্মরণ করবো নোবেল নেয়ার সময়

১৭| ২১ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১০:০২

শেয়াল বলেছেন: আইজকা আড়াই হাজার টেকার বই অর্ডার দিলাম B-)

আমি পিডিএফ বালএফ সার্চ করি না 8-|

২১ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১০:৩০

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: Good job :)

১৮| ২২ শে মার্চ, ২০১৭ সকাল ৯:৪১

জুন বলেছেন: বিভূতির চাইতে তো আপনি বেশি ঘোরাঘুরি করেন। বরং বেশিই করেন!! :-*
:( :(

২২ শে মার্চ, ২০১৭ সকাল ৯:৫৩

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: :P

১৯| ২২ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ৮:৪১

বুক ওয়ার্ম বলেছেন:
দোকানদার লোকটাকে শ্রদ্ধা জানাই। আমি বই কিনেই পড়ি

২২ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ৯:২০

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: :)

২০| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: "আমি তো নিজে ইন্টারও পাশ করতে পারি নাই। ওকে পড়াতে ভালো লাগে। মনে হয় নিজেই পড়ছি। রেজাল্টও ভালো করছে- মনে হচ্ছে কষ্টটা সার্থক।” -- এমন লোকের সন্ধান পেলে নিজের মধ্যেই আত্মবিশ্বাস অনেকটা বেড়ে যায়। মনে হয়, আমরা পারবো!
এসব ভাবতেও এখন লজ্জা লাগে -- ওরকম ভাবনা আমার এই বয়সেও হয়, এবং যথারীতি লজ্জাও লাগে! :)
আমি না লিখলেই বরং কিছু জঞ্জালের হাত থেকে বাংলা সাহিত্য রক্ষা পাবে। -- হা হা হা, :)
আমি প্রতিবছর বইমেলা থেকে ২০-২৫ টার মত বই কিনে থাকি, যার বেশীরভাগ অপঠিত রয়ে যায়।

২১| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ২:৫০

হাসান মাহবুব বলেছেন: দীর্ঘশ্বাস!

২২| ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ২:৪৮

নীলপরি বলেছেন: লেখা দারুন লাগলো । আর আপনি অলরেডি লেখক ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.