![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
- হোঁচট খেয়েছি ঠিকই, কিন্তু থেমে যাইনি , হেরে যাব বলে তো, আর স্বপ্ন দেখিনি।
আমার বাবা ছিলেন একজন অত্যন্ত রাশভারী ভাল মানুষ। তিনি সব কথাতেই এত গম্ভীর হয়ে যেতেন যে কোন কিছু তাকে বলার আগে তার মুড ফোরকাস্ট করতে হত। হয়ত খুবই সাধরন কিছু বলেছি কিন্তু তিনি অস্বাভাবিকভাবে রেগে গেছেন। হয়ত তাকে বলেছি বাবা আজ তো হরতাল, স্যার এর বাসায় যেতে পারবনা। বাবা রেগে গিয়ে বলত, তোমরা তো কেবল ফাঁকির নামে ওস্তাদ - আমাদের সময় আমাদের স্কুল ছিল ৫ মাইল দূরে, আমরা হেঁটে যেতাম আর আসতাম। অনেক কষ্ট করে পড়াশোনা করে তবেই মানুষ হয়েছি। আবার এমন অনেক সময় হয়েছে যে বাবাকে বলেছি, বাবা আজ তো পড়তে ইচ্ছা করছে না, শিক কাবাব খেতে ইচ্ছে করছে। বাবা কিছুক্ষণ পড়াশোনা বিষয়ক নীতিবাক্য বলে আমাকে নিয়ে বের হতেন গুলিস্তানের মোড়ে রাজধানী হোটেলে শিক কাবাব খেতে।
বাবা'র কাজের বর্ণনাটা এই কারনেই দিলাম যে, তার নিজস্ব ধরণটা যেন সহজেই বোঝা যায়। বাবার একটা অলিখিত নিয়ম ছিল যে যেখানেই থাকি না কেন সন্ধ্যা'র ভেতর বাসায় ফিরতে হবে। কি যে! কড়া ছিল সেই শাসন! কোন দিন যদি একটু দেরি হয়ে যেত আসতে, মনে মনে যত সূরা জানতাম সব পড়ে দোয়া করতাম আজকের দিনটা কোন মতে যেন কেটে যায়, আর কোন দিন দেরি করব না। কোন কোন দিন দোয়া'র ফল কাজে লাগত, কোন কোন দিন লাগত না। বাবা'র সব চেয়ে কঠিন শাস্তি ছিল, আমার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দেয়া। কি যে খারাপ লাগত তখন!
বাবা তার এই নিয়ম থেকে আমাকে স্বাধীনতা দেয়, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হওয়ার পর। বাবা আজ নেই, কিন্তু তার দেয়া সেই স্বাধীনতার মূল্যের সম্মান আজও ততটুকুই দিয়ে চলেছি।
নিজের স্বাধীনতার সম্মান যেমন বুঝতে পেরেছি, দেশের স্বাধীনতার সম্মান ঠিক তেমনটিই যেন দিয়ে যেতে পারি - স্বাধীনতা দিবসে এটাই ইচ্ছা আমার।
©somewhere in net ltd.