নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আই ভিজ্যুয়ালাইজ রিয়্যালিটি!

Lead us from the unreal to the real; From darkness into light; From death into immortality

ভিজ্যুয়ালাইজার

- হোঁচট খেয়েছি ঠিকই, কিন্তু থেমে যাইনি , হেরে যাব বলে তো, আর স্বপ্ন দেখিনি।

ভিজ্যুয়ালাইজার › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালবাসার 'আংটি।'

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:১৬

; আমি কখনও টাকা জমাইতে পারি না। এইটা আমার একটা খুবই খারাপ গুণ। আমার কাছে যা টাকা আসে তারা আসা মাত্রই কেন যেন বিরক্তবোধ করে এবং বের হয়ে যাওয়ার জন্য লাফালাফি শুরু করে। তাই খরচের মাত্রা আমার অতি বেশি। আমার বাবা এই নিয়া খুব উদ্বিগ্ন ছিলেন। তিনি কেবল বুঝাইতেন যে মনে কর, তোমার এখন এমন একটা কাজ করতে হইবে যার জন্য তুমি আমার কাছে টাকা চাইতে পারবা না কিন্তু তোমার টাকা লাগবেই, কাজটা করতে হইবেই তখন তুমি কি করবা? টাকা পাবা কই? আমি নাক কুঁচকাইয়া জিগ্যেস করতাম, 'কি এমন কাজ? যে আপনাকে বলতে পারব না কিন্তু কাজটা করব, আবার টাকা ও আমি যোগাড় করব?' তিনি নির্লিপ্ত গলায় বলেছিলেন 'ফেল করলে কোর্স রিটেইক!'



তার এইরকম অনুপ্রেরনায় একসময় আমি অল্প অল্প কিছু টাকা জমাতে শুরু করি। মাসে ৫০০/১০০০ টাইপের। এইরকম করতে করতে একসময় বেশ কিছু টাকা জমে গেল আমার। হাজার ২৫'শেক। আমি তো মহা খুশি!! কি করা যায়? ততদিনে আমার 'ব্রেকআপের' অলরেডি ৪ বছর পার! কিন্তু মন তো আর মানে না। ভালবাসা মানে ভালবাসা। জীবনে প্রথম সিদ্ধান্ত নিলাম যে এই টাকা দিয়া একটা 'আংটি' কিনব। মুভিতে কত যে সুন্দর সুন্দর আংটি দেয়ার আইডিয়া দেখলাম তার কোন ইয়ত্তা নাই। যেই ভাবা সেই কাজ। পুরা নির্বাচন করার মত, দলবল নিয়া পৌঁছাইলাম 'ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডে।' এত্ত মানুষ দেইখা বেটারা মনে কনফিউসড হয়ে গেল যে আসলে এরা কি চায়! তারপর আমরা সবাই মিলে পুরা দোকান ঘাঁটা-ঘাটি কইরা একটা আংটি খুঁজে বের করলাম। হোয়াইট গোল্ডের উপরে পুরা মাইক্রোস্কোপ দিয়া খুঁজে বের করার মত ছোট ছোট তিনটা পাথর। আমার তো বেপক পছন্দ হইল। কিনে তো নিয়া আসলাম কিন্তু এখন দিব কিভাবে? শেষতক একটা বুদ্ধি বের করলাম। পুরা নীলক্ষেত খুঁজে আংটি'র বক্স সহ ঢুকবে এইরকম একটা বই কিনলাম। যতদূর মনে পড়ে বইটার নাম "পূর্ব-পশ্চিম" সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের। বাসায় আসলাম। সারা রাত বসে বসে একটু একটু করে বইয়ের ভেতরটা কাটলাম। আংটির বাক্সটা সেখানে রাখলাম। লিখলাম, 'উইল ইউ ম্যারি মি।' খুবই এক্সাইটেড। বইটাকে চকচকা একটা র‍্যাপিং পেপারে মুড়ে পাঠালাম ম্যাডামের বাড়ি।



এই ডিসেম্বরে ম্যাডামের এনগেজমেনট হইছে। সামনে বিয়ে। কিন্তু ম্যাডামের হাতে'র আংটির পাথরটা অনেক বড়, আমারটার মত মাইক্রোস্কোপ দিয়া খুঁজে বের করতে হয়না। আমার সেই অনেক আবেগ আর ভালবাসা মিশানো আংটিটা হয়ত ম্যাডাম ফেলে দিয়েছেন কোন ম্যানহোলে অথবা সযত্নে লুকিয়ে রেখেছেন নিজের কাছে। কোন এক অবসরে নিজের মেয়েকে দেখিয়ে হয়ত স্মৃতিচারন করবেন। আমার তবু ভাল লাগে। ভাল লাগে ভাবতে। শুধু মাঝে মাঝে নিজে নিজে চিৎকার করে বলতে ভাল লাগে,



'প্রতিদিন কিছুকিছু ইচ্ছা মরে যায়

অনিচ্ছাকৃত মরে যেতে হয়

অযত্নে মরে যায়।



প্রতিদিনই কিছু কিছু ইচ্ছারা

নির্বাসিত হতে বাধ্য হয়

নির্বাসিত হয়।



ব্যর্থ প্রেমের মতো কিছু কিছু ইচ্ছা

স্মৃতির অসুখে ভোগে দীর্ঘদিন,

কিছু কিছু ইচ্ছা স্বইচ্ছায় হত্যা করি

ইচ্ছার হননে বিবর্ন হই বারবার

তবু হত্যা করতেই হয়।'



'

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.