![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
- হোঁচট খেয়েছি ঠিকই, কিন্তু থেমে যাইনি , হেরে যাব বলে তো, আর স্বপ্ন দেখিনি।
; আপনি যদি কখনও 'কাস্টমার সার্ভিস সেন্টারে' যান এবং রাগত স্বরে কিছু কথা বলেন অথবা বেশ চোটপাট দেখান তখন কি হবে?
১) আপনাকে বেশ মধুর স্বরে 'স্যার/ম্যাডাম' ডেকে যৌক্তিক অথবা অযৌক্তিক নানা ধরনের তৈলাক্ত কথার বাহারে আপনার রাগ কমাবার চেষ্টা করবে?
২) আরও ২/৩ জনকে ডেকে আপনাকে একটা 'ধোলাই' দিবে।?
৩) আপনাকে কোন সেবা দেয়া হবে না বলে সার্ভিস সেন্টারটি বন্ধ করে দিবে?
প্রতিটি কাজেরই একটা আলাদা ভাবমূর্তি আছে। কেউ যদি বলে 'তমুক'কে' ধরতে পুলিশ এসেছে, তবে তা যেমন গুরুগম্ভীর শোনাবে বা স্বাভাবিক শোনাবে ঠিক একইভাবে কেউ যদি বলে 'তমুক'কে' ধরতে আনসার এসেছে, তবে তা কিন্তু স্বাভাবিক শোনাবে না! সেই হিসেবে আপনিও ধরে নেবেন যে একটা কাস্টমার সার্ভিসে গিয়ে আপনি সেবা পান আর না ই পান, কমপক্ষে তারা বিনয়ের সাথে আপনাকে 'সরি' বলবে। আমার জানা মতে, যাদের ওই জায়গায় চাকরি দেয়া হয়, তাদের এই বিষয়টা খুব ভালভাবে বোঝানো হয়। কারন 'গুলিস্তানের দোকানদারের' মত 'নিলে নেন না নিলে রাস্তা মাপেন' আর 'সেবা দান' দুইটা সম্পূর্ণ আলাদা দুইটা ব্যাপার।
ডাক্তারদের ক্ষেত্রেও তাই। তীব্র মানসিক শক্তি ছাড়া কেউ মনে হয় না এই পেশাটায় যায়। এইখানে যে পরিমানে কষ্ট, তা ছোট বেলা থেকেই সবার মনে ভাসতে থাকে। আর তাই হয়ত ক্লাস ৯ এ বিজ্ঞান এ যাব না বানিজ্যে যাব এই নিয়ে এক বিশাল মানসিক চাপে থাকে সবাই।
এই সব মানুষদের কাছ থেকেও তাই সবাই একই ধরনের ব্যবহার আশা করে। কারন এইটাই মনে হয় একমাত্র পেশা যেখানে 'ধন্যবাদ, আবার আসবেন' কথাটা লেখা থাকে না। জি, ঠিক তাই। প্রচণ্ড রকম মানসিক চাপ নিয়ে এইসব মানুষের কাছে যায় সাধারন মানুষেরা। নিজের বাবা/মা অসুস্থ থাকলে আর যাই হোক নিজের মাথা ঠিক রাখা সম্ভব না।
ডাক্তাররা যে এটা জানে না তা না। আমি মনে প্রানে বিশ্বাস করি তারা এটা জানেন। কিন্তু তবুও যদি তারা পান থেকে বোঁটাটা সহ চুন খসে পড়লে 'ওই চিনছ?' আচরণ করেন তখন আমাদের আর কিছু করার থাকেনা।
পৃথিবীতে একমাত্র মনে হয় ডাক্তারের কাছেই কেউ টাকা খরচ নিয়ে দ্বিতীয় কোন প্রশ্ন করে না। বারগেইনের তো কোন অপশনই নাই! উল্টা সবাই বলে, 'কত টাকা লাগবে বলেন, ম্যানেজ করতেছি!' এইটা কোন দোকান ও যে এইটা না পছন্দ হইলে আরেকটায় যাব। তাই সবারই একটা আশা নিয়ে ডাক্তারের কাছে যায় যে তারা একটু হাসি মুখে বলবেন, 'ভয় পাবেন না। আল্লাহকে ডাকুন। আমরা চেষ্টা করছি। ইনশাল্লাহ সব ঠিক হয়ে যাবে।'
বিশ্বাস করেন, এরপরে যদি কারও হায়াত ও না থাকে তবুও কেউ ই বলবে না, 'ওই ডাক্তার তো একটা ডাকাত। আমার তমুকরে মাইরা ফেলছে।' অথবা বলবে না 'ওই ডাক্তারের অবহেলার কারনেই এরকম হইছে।' ইত্যাদি, ইত্যাদি। কিন্তু আপনার হাতে ক্ষমতা আছে দেখেই যদি আপনি 'ওই চিনছ?' গ্রুপে যোগ দেন, তাহলে তো গোলযোগ বাধবেই।
আমার বাবা'র বিভিন্ন রোগ একসাথে ছিল। তাকে কোন বেসরকারি হাসপাতাল (বসুন্ধরা'র এবং পান্থপথের বিখ্যাত ২টা হাসপাতাল সহ) ডাক্তাররা ভর্তি করতে চাননি 'রিস্ক' এর ভয়ে। ফলশ্রুতিতে তাকে ১ মাস পিজি হাসপাতালে ভর্তি রাখতে হয়। আমি জানি সেই ১মাস আমার উপর দিয়ে কি গিয়েছে! রাতে কেবিন ইউনিটের গেট আটকে রাখা হত। রাতে যদি দরকার ও পড়ে আপনি নিচে যেতে পারবেন না। তার উপর প্রায়শই ডিউটি ডাক্তার থাকতেন না। ড্রেসিং তো দূরের কথা, একবার ভিজিটে আসার জন্যে আমার ৩বার করে তার রুমে যেতে হত। আর ব্যবহার? আমার বাবা যদি একবার জানতেন আমার সাথে তারা কিরকম ব্যবহার করেছেন, তাহলে তিনি জীবনেও হাসপাতালে ভর্তি থাকতেন না।
আমার বাবা আজকে নেই। কিন্তু সেই দিনগুলোর স্মৃতি আজও আছে। সবারই থাকে। কেউ হয়ত সেই আবেগের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে পারে আবার কেউ পারে না। কারন ডাক্তাররা যদি 'ওই চিনছ?' গ্রুপের হতে পারেন তবে সাধারন অনেক মানুষই তো 'ওই চিনছে'র আব্বা' গ্রুপে আছেন, তাই না?
সেবা পেশাটা অন্যরকম। অনেক ধৈর্য, সহ্যক্ষমতা আর মুখে হাসি না থাকলে দয়া করে এই পেশাটায় কারও আসা উচিত না। কারন আমরা বাংলাদেশি, আমাদের আবেগটা অনেক বেশি। আমাদের সাথে কারও তুলনা করে লাভ নেই।
পুনশ্চঃ সব ডাক্তারগন আবার রাগ করে গাল ফুলাইয়েন নাহ! আপনারা সবাই ভাল। শুধু দুই একজনের কৃমির ওষুধের মেয়াদ শেষ! নতুন করে আবার খাওয়াইতে হবে।
১৭ ই মে, ২০১৪ রাত ১২:০৬
ভিজ্যুয়ালাইজার বলেছেন: ধন্যবাদ জনাব
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই মে, ২০১৪ বিকাল ৪:৩২
চানাচুর বলেছেন: অনেক ভাল্লাগ্লো।