নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আল্লাহ ও নবীকে নিয়ে কটুক্তিকারী ব্লগারকে কে হত্যার বিচার চাই'...
"আপনি কী নিশ্চিত যে মৃত্যুর এক মিনিট আগে সে ঈমান আনেনি?"
***মডিফাইডদের এমন কথা আমায় ভাবিয়ে তোলে...
"আর বনু ইস্রাঈলকে আমরা সাগর পার করে দিলাম। তারপর তাদের পশ্চাদ্ধাবন করল ফেরাঊন ও তার সেনাবাহিনী বাড়াবাড়ি ও শত্রুতা বশতঃ। অতঃপর যখন সে (ফেরাঊন) ডুবতে লাগল, তখন বলে উঠল, আমি ঈমান আনছি এ বিষয়ে যে, সেই সত্তা ব্যতীত কোন উপাস্য নেই, যার উপরে ঈমান এনেছে বনু ইস্রাঈলগণ এবং আমি আত্মসমর্পণকারীদের একজন।
'(আল্লাহ বললেন) এখন একথা বলছ? অথচ তুমি ইতিপূর্বে না-ফরমানী করেছিলে এবং ফাসাদ সৃষ্টিকারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলে’।
‘অতএব আজ আমরা তোমার দেহকে (বিনষ্ট হওয়া থেকে) বাঁচিয়ে দিচ্ছি। যাতে তোমার পশ্চাদ্বর্তীদের জন্য তুমি নিদর্শন হতে পার। বস্তুতঃ বহু লোক এমন রয়েছে যারা আমাদের নিদর্শনাবলীর বিষয়ে বেখবর।" [সূরা ইউনুস ১০ : ৯০-৯২]
একজন ইসলাম বিদ্বেষী ব্লগের মালিক-
তুমি একজন মেধাবী যুবক ছিলে। কিন্তু তোমার মেধা তোমাকে আলো দেখাতে পারে নি। তুমি বিজ্ঞানমনস্কতার কথা বলতে, কিন্তু বিজ্ঞানের সাথে ইসলামের বিরোধ তুমি কোথায় দেখলে? যদি ভালভাবে চোখ খুলে দেখতে, তাহলে ঠিকই বুঝতে, ইসলামই বিজ্ঞানকে জাগিয়েছিল, যখন ইউরোপ ছিল ঘুমিয়ে। তুমি বিজ্ঞান-সচেতনতা সৃষ্টি করতে চেয়েছিলে, অথচ তা ছিল ইসলাম বিদ্বেষের মোড়কে। তুমি ডারউইনবাদের মতো একটা মুখ থুবড়ে পড়া হাইপোথিসিসকে থিওরী হিসেবে পেশ করতে চেয়েছিলে, অথচ যা ছিল নিছক একটা হাইপোথিসিস। কিন্তু এই ডারউইনবাদই যে ছিল তোমাদের একমাত্র ভোঁতা অস্ত্র। তোমাদের অস্ত্রটি যখন চরমভাবে ব্যর্থ হচ্ছিল, তখন বাধ্য হয়ে হাদীস বিকৃতি শুরু করেছিলে। হাদীসের মাঝে নিজের পছন্দসই শব্দ বসিয়ে মহান রাসুলের চরিত্রে কলংক লেপন করতে চেয়েছিলে। ভিনদেশী কোন পরাজিত সর্দারের মেয়েকে যিনি বিবাহের মাধ্যমের মুমিনদের মায়ের আসনে বসিয়েছিলেন। মূহুর্তের মধ্যে এক অসহায় নারীকে নিরাপত্তা ও সম্মানের পোষাক পরিয়ে দিয়েছিলেন। আর তুমি কিনা এতদিন পরে এসে তোমার কলমের খোঁচায় আব্দুল্লাহ ইবনে উবাইকেও হারিয়ে দিলে।
তুমি মানবতার কথা শোনাতে, অথচ আশ্চর্যজনকভাবে কলমের খোঁচা দিয়ে আহত করতে লক্ষ মানবতাকে।
তুমি তোমার পিতৃধর্মের অশ্লীলতার সমুদ্রে তালাশ করে কিছু পেতে না, অথচ পবিত্র কোরআন ও হাদীসের মাঝে তুমি কিভাবে যেন অশ্লীলতা আবিষ্কার করতে। আসলে তোমার পঁচা মস্তিষ্ক থেকে এর বেশি আর কিই বা আশা করা যেত!
তোমাকে সেই নিয়তির কাছেই ধরাশায়ী হতে দেখলাম, যে নিয়তিকে তুমি বরাবরই অহংকারের সাথে তুচ্ছজ্ঞান করতে।
সারাজীবন পরকালকে অস্বীকার করলে, আর এখন তোমার সামনেই মুনকিরনাকির বসা। প্রকৃত বিষয় এরই মধ্যে তোমার সামনে ধরা পড়েছে। কিন্তু আফসোস, তা অনেক দেরিতে। তোমার কর্মই আজ তোমাকে এই পরিণতির সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। যদি তুমি তা আরও আগে বুঝতে।
তুমি যাদের বারে বারে আঘাত করেছ তোমার নিভের খোঁচায়, তারা আজ একটু খুশী হতেই পারে। অথচ তুমি সত্যিকারের মানবতাবাদী হলে অন্য কিছুও হতে পারত।
তোমার নাস্তিকতা একমাত্র তোমারই ব্যাপার। স্রষ্টাও বিশ্বাস-অবিশ্বাসের এই সুযোগ প্রত্যেককে দিয়ে রেখেছেন। তোমার সেই নাস্তিকতাকে তুমি যত ইচ্ছা বুক ফুলিয়ে প্রকাশ কর, তাতে কারও বলার কিছু ছিল না। কিন্তু তুমি অপরের চেতনা ও বিশ্বাসে, অন্যের ভালবাসার স্বাধীনতায় আঘাত করাকেই তোমার ধর্ম বানিয়েছিলে। সেটিই আজ তোমার জন্যে বুমেরাং হয়েছে। তোমার পরিণতি ইসলাম বিদ্বেষের মাধ্যমে নিজের আখের গোছানোর অভিলাষীদের কিছুটা হলেও ভাবিয়ে তুলবে।
তোমার হেদায়াতই আমি চেয়েছিলাম। এ জন্য অনেক দোয়াও করেছিলাম। কিন্তু তুমি যে তার যোগ্য ছিলে না! হিন্দা কিংবা আবু সুফিয়ান, ওয়াহশী কিংবা ইকরামা হেদায়াত পায়, কিন্তু কাব বিন আশরাফদের পরিণতি তোমার মতই হয়। তুমি মরে গিয়ে দ্বিতীয়বারের মত প্রমান করলে, রাসুল বিদ্বেষ এর চেয়ে ভাল কিছু আনতে পারে না।
আর আখেরাতে জাহান্নামের অনলের দাহন তো বাকি থাকছেই।
আর যারা তাঁকে কষ্ট দেয় তিনি তাদের জন্য অবমাননাকর শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন। এ তো হলো এদের বিরুদ্ধে আল্লাহর পক্ষ থেকে নেয়া ব্যবস্থা। আর দুনিয়াতে এদের ব্যাপারে যুগে যুগে ইসলামী মনীষীদের ফতোয়া হলো :
ইমাম ইবনে তাইমিয়া বলেন—আল্লাহ ও তদীয় রাসুল (সা.)-কে গালি দেয়া প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কুফরি, চাই গালি প্রদানকারী এটাকে হারাম মনে করে দিয়ে থাকুক অথবা হালাল মনে করে দিয়ে থাকুক বা ঠাট্টার ছলে দিয়ে থাকুক।
প্রখ্যাত মোহাদ্দেস ইমাম বোখারি (র.)-এর উস্তাজ ইমাম ইসহাক ইবনে রাহওয়াই বলেন : সব মুসলমান এর ওপর একমত হয়েছেন যে, আল্লাহ তায়ালা ও তদীয় রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে কটূক্তি প্রদানকারী কাফের, যদিও সে আল্লাহ কর্তৃক নাজেলকৃত বিষয়াদিকে স্বীকৃতি প্রদান করুক না কেন?
শেখ আবদুল আজিজ বিন বায় বলেন : আল্লাহ ও তার দ্বীনকে মন্দ বলা কবিরা গুনাহ, এর দ্বারা সে মুরতাদ হয়ে যাবে। অনুরূপভাবে সে যদি আল্লাহ, তাঁর রাসুল (সা.), জান্নাত, জাহান্নাম, নামাজ, জাকাত অর্থাৎ ধর্মের কোনো বিষয়ের সঙ্গে বিদ্রূপ করে তাহলে সে মুরতাদ হয়ে যাবে। যেমন আল্লাহ তায়ালা সূরা তাওবার ৬৫ নং আয়াতে বলেছেন, ‘বল, তাহলে কি তোমরা আল্লাহর সঙ্গে, তাঁর কোরআনের সঙ্গে ও তাঁর রাসুলের সঙ্গে বিদ্রূপ করছ?’ এরপর পরবর্তী ৬৬ নং আয়াতে বলেন : ‘ছলনা করো না, তোমরা যে কাফের হয়ে গেছ ঈমান আনার পর...।’
আল্লাহ ও রাসুল (সা.)-কে গালি দেয়ার প্রসঙ্গে হুকুম :
রাসুল (সা.)-এর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করা ঈমানের অংশ। তাঁকে ভালোবাসার মধ্য দিয়ে আল্লাহর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হয়। যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘বলুন : যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসতে চাও তাহলে আমার অনুসরণ কর’ (সূরা আলে ইমরান, আয়াত : ৩১)।
রাসুল (সা.)-কে ভালো না বাসলে ঈমান পরিপূর্ণ হবে না। যেমন যোহরা বিন মা’বাদ তার দাদা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন : একদা আমরা রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে ছিলাম, তখন তিনি উমর (রা.)-এর হাত ধরাবস্থায় ছিলেন। তখন উমর (রা.) বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমি শপথ করে বলছি, আপনি আমার কাছে আমার জীবন ছাড়া আর সবকিছু থেকে প্রিয়। তখন রাসুল (সা.) বললেন, যার হাতে আমার প্রাণ তার শপথ করে বলছি; তোমরা কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ ঈমানদার হতে পারবে না যতক্ষণ না আমি তার কাছে তার জীবন থেকে প্রিয় না হব। তখন উমর (রা.) বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি এখন আমার কাছে আমার প্রাণ থেকেও বেশি প্রিয়। তখন রাসুল (সা.) বললেন : হে ওমর, এখন তুমি পরিপূর্ণ মোমেন হয়েছ। (আসালি ইবনে বিশরান, হাদিস নং ৮৮)
যেখানে রাসুল (সা.)-কে জীবন থেকে শুরু করে সবকিছুর চেয়ে বেশি ভালোবাসা না হবে, সেখানে যখন একজন পরিপূর্ণ মোমেন হওয়া যাবে না, সেখানে আল্লাহর রাসুল (সা.)-কে অকথ্য ভাষায় গালি দিয়ে কীভাবে মুসলমান বলে দাবি করা যায়? রাসুল (সা.)-কে গালি দেয়ার হুকুম আল্লাহ তায়ালাকে গালি দেয়ার হুকুমের মতোই। এছাড়া সব ওলামা এর ওপর একমত হয়েছেন যে, রাসুল (সা.)-কে গালিদাতা এবং তার মান হানিকারী কাফের, তাকে আল্লাহর শাস্তি দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে, তাকে হত্যা করার বিধান রয়েছে, যে তার কাফের হওয়া ও আল্লাহর শাস্তি ভোগ করার ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করবে সে নিজেও কাফের (আল সারেম আল-মাসলুম আলা শতেমির রাসুল : ১/১৩-১৬)
রাসুল (সা.)-কে গালিদাতাকে হত্যা করার বৈধতার প্রমাণ হাদিসেই পাওয়া যায়। যেমন : হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন : রাসুল (সা.)-এর সময় এক অন্ধ লোক ছিল। তার এক দাসী ছিল, যার গর্ভে তার দুই ছেলে জন্মে। সে দাসী সর্বদাই রাসুল (সা.)-এর কথা উল্লেখ করে তাকে মন্দ বলত। অন্ধ ব্যক্তিটি এ জন্য তাকে তিরস্কার করত, কিন্তু সে তাতে কর্ণপাত করত না। তাকে নিষেধ করত, কিন্তু তবুও বিরত হতো না। অন্ধ লোকটি বলেন : এক রাতে আমি রাসুল (সা.)-এর কথা উল্লেখ করলে সে তার নিন্দা করতে শুরু করল। আমার তা সহ্য না হওয়ায় আমি একটি হাতিয়ার নিয়ে তার পেটে বিদ্ধ করলাম। তাতে সে মারা গেল। ভোরে লোক তাকে মৃতাবস্থায় দেখে ব্যাপারটি রাসুল (সা.)-এর খিদমতে জানাল। তিনি সব লোককে একত্র করে বললেন : আমি আল্লাহর কসম দিয়ে ওই ব্যক্তিকে বলছি, যে এমন কাজ করেছে সে আসুক। এ কথা শুনে ওই অন্ধ ব্যক্তি ভয়ে উঠে এসে হাজির হলেন এবং বললেন : ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি এ কাজ করেছি। সে আমার বাঁদি ছিল, আমার অত্যন্ত স্নেহশীল ছিল, সঙ্গিনী ছিল। তার গর্ভে আমার দুটি ছেলে রয়েছে, যারা মুক্তাসদৃশ। কিন্তু সে প্রায় আপনাকে মন্দ বলত, গালি দিত। আমি নিষেধ করলেও সে কর্ণপাত করত না। তিরস্কার করলেও সে নিবৃত্ত হতো না। অবশেষে গত রাতে আমি আপনাকে নিয়ে কথা বলতে শুরু করলে সে আপনাকে মন্দ বলতে শুরু করল। তখন আমি একটি অস্ত্র উঠিয়ে তার পেটে রেখে চেপে ধরি। তাতে সে মারা যায়। রাসুল (সা.) বললেন : তোমরা সাক্ষী থাকো, ওই দাসীর রক্তের কোনো বিনিময় নেই। (সুনানে আন-নাসায়ী হাদিস নং : ৪০৭১)
আল্লাহ তায়ালা স্বীয় গ্রন্থে রাসূল (সা.) কে কষ্ট দেয়া হারাম ঘোষণা করেছেন। এবং উম্মত তাঁর ছিদ্রান্বেষণকারী ও তাঁর প্রতি অশ্লীল বাক্য উচ্চারণকারীর মৃত্যুদন্ডের ব্যাপারে ঐক্যমত্য পোষণ করেছে। পরকালে জাহান্নামের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি তো আছেই দুনিয়াতেও তাদের কঠিন পরিণতি বরণ করতে হয়, অথবা লাঞ্চনার জীবন যাপন করতে হয়।
এ মর্মে আল্লাহ তায়ালা বলেন, إِنَّ الَّذِينَ يُؤْذُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ لَعَنَهُمُ اللَّهُ فِي الدُّنْيَا وَالْآَخِرَةِ وَأَعَدَّ لَهُمْ عَذَابًا مُهِينًا “যারা আল্লাহ ও রাসূলকে পীড়া দেয়, আল্লাহ তাদেরকে দুনিয়া ও আখিরাতে অভিশপ্ত করেন এবং তিনি তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি।” (৩৩/৫৭)
অন্যত্র এরশাদ হচ্ছে - وَالَّذِينَ يُؤْذُونَ رَسُولَ اللَّهِ لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ “যারা আল্লাহর রাসূলকে কষ্ট দেয় তাদের জন্য আছে মর্মন্তুদ শাস্তি।” (৯/৬১)
আবু দাউদ শরীফের এক বর্ণনায় আছে - عَنْ عَلِىٍّ رَضِىَ اللَّهُ عَنْهُ أَنَّ يَهُودِيَّةً كَانَتْ تَشْتِمُ النَّبِىَّ -صلى الله عليه وسلم- وَتَقَعُ فِيهِ فَخَنَقَهَا رَجُلٌ حَتَّى مَاتَتْ فَأَبْطَلَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- دَمَهَا.(رواه أبو داود في سننه) “হযরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, একজন ইয়াহুদী মহিলা রাসূল (সা.) কে গালিগালাজ করত এবং তাঁর ছিদ্রান্বেষণ করত। একারণে এক ব্যক্তি তাকে গলা টিপে হত্যা করে ফেলল। অতঃপর রাসূল (সা.) তার রক্তকে মূল্যহীন ঘোষণা করলেন।” অতএব এ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, শানে রেসালতের অবমাননাকারীর শাস্তি হল মৃত্যুদন্ড।
যে কেহ রাসূলুল্লাহ (সা.) কে হেয় প্রতিপন্ন করে, গালি দেয়, দোষ চর্চা করে অথবা তাঁর সত্তা, বংশধারা বা চরিত্রে কালিমা লেপন করে অথবা তিরষ্কার ও নিন্দা করে মর্যাদা খাটো করে, তাঁর প্রতি দায়িত্ব পালনে অবহেলার অভিযোগ উত্থাপন করে এবং তাঁর দোষ সাব্যস্ত করার জন্য কোন কিছুর সঙ্গে তাঁকে উপমা দেয় বা ব্যাঙ্গ কার্টুন করে ইত্যাদীর যে কোন ভাবে রাসূল (সা.) কে কষ্ট দেয়া সুস্পষ্ট কুফরী, এ ধরনের কুফরীর কারণে ঐ ব্যাক্তিকে চাই সে পূর্ব থেকে মুসলমান থাকুক বা কাফের থাকুক হত্যা করা ইসলামী শরীয়তের বিধান। قال ابن المنذر : [ أجمع عوام أهل العلم على أن حد من سب النبي صلى الله عليه و سلم القتل ] “আল্লামা আবূ বকর ইবনুল মুনযির বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) এর গালমন্দকারীর মৃত্যুদন্ডের ব্যাপারে সমস্ত ফকীহ ঐক্যমত্য পোষণ করেছেন।” (আশ শিফা -২/৪৭৪) و قال محمد بن سحنون : [ أجمع العلماء على أن شاتم النبي صلى الله عليه و سلم و المتنقص له كافر و الوعيد جار عليه بعذاب الله له و حكمه عند الأمة القتل و من شك في كفره و عذابه كفر ] “মুহাম্মদ ইবনে সাহনূন বলেন, আলিমগণ এব্যাপারে একমত হয়েছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) এর গালমন্দকারী ও তাঁর ছিদ্রান্বেষণকারী কাফির। তাঁর জন্য আল্লাহর শাস্তিবিধানের সতর্কবাণী অবধারিত এবং উম্মতের নিকট তার শাস্তি হল মৃত্যুদন্ড। আর যে ব্যক্তি তার কুফরী ও শাস্তি সম্পর্কে সন্দেহ পোষণ করবে সেও কাফির।”(আশ্ শিফা-২/৪৭৬, সীরাত বিশ্বকোষ-৪/৫০৫-৫০৭)
নবীগণের অবমাননাকরীর তাওবা গ্রহণযোগ্য নয় নবীগণের শানে বেআদবী করলে তার শাস্তি ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী মৃত্যুদন্ড। এরূপ জঘন্যতম অপরাধের পর যদি ঐ ব্যক্তি তাওবাও করে তবে তার তাওবা গ্রহণযোগ্য নয়। অর্থাৎ দুনিয়ার শাস্তি তার জন্যে অবধারিত। কেননা নবী-রাসূলের অবমাননা সমস্ত কুফরির মূল। (কামূসুল ফিকহ : ৪/১৯৫, খুলাসাতুল ফাতাওয়া : ৪/৩৮৬)
অতএব নবী-রাসূলগণের অবমাননাকারীরা জঘন্যতম কাফের। তাদেরকে যারা কাফের বলবে না তারাও কাফের। (ইকফারুল মুলহিদীন : ৫৪) সরকারের জন্য এদের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা একান্ত কর্তব্য। অন্যথায় সরকারও আল্লাহ তা’আলার কাছে অপরাধী বলে সাব্যস্ত হবে। কাল কেয়ামতের ভয়াবহ ময়দানে এর জন্য কঠিন বিচারের সম্মুখীন হতে হবে।
একটি হত্যাকাণ্ড ও কিছু কথা~
একটি ঘটনা বলার লোভ সামলাতে পারছি না...
পরিচিত এক ফ্যামিলিতে একবার বউ জামাই ঝগড়া লাগলো। ঝগড়াটা এত মারাত্মক পর্যায়ে যেয়ে পৌঁছল যে, তৃতীয় পক্ষকে মধ্যস্থতার জন্য ডাকতে হল। মীমাংসার জন্য বসার পর প্রথমে বেশ লম্বা সময় ধরে স্ত্রী তার স্বামীর বিভিন্ন দোষ বর্ণনা করলেন। যার অধিকাংশই ছিল, হাসব্যান্ডের খারাপ ব্যাবহার ও গায়ে হাত তোলার বিভিন্ন ঘটনার বর্ণনা।
প্রায় ত্রিশ মিনিট ধরে কথা শোনার পর যখন স্বামীকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হল, তিনি শুধু ছোট একটি দৃষ্টান্ত দিলেন। যার দ্বারাই তার অবস্থান ও এ আচরণের কারণ সামনে চলে আসলো। তিনি বললেন,
আমার বউ পিছন থেকে লুকিয়ে লুকিয়ে আমাকে চিমটি দেয়। নিজের ও স্ত্রীর সম্মান রক্ষার্থে আমি তা সহ্য করি। মুখটা বাঁকা পর্যন্ত করি না। এটা দেখে সে আরও মজা পায়। আবারো চিমটি দেয়। এভাবে দিতেই থাকে আর আমি সহ্য করতেই থাকি। এক পর্যায়ে আর নিজেকে থামাতে না পেরে আমি তাকে যখন একটা ঘুসি দেই, সে তখন সেটাকেই বড় করে প্রচার করে। আর সবার কাছেও আমার আচরণটাকেই অন্যায় মনে হয়।
--------------------
মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতাকে কারা হামলা করেছে নিশ্চিতভাবে সেটা এখনও প্রমাণিত হয়নি। একই সঙ্গে এটাও সত্য যে, হামলাকারীরা আইন নিজ হাতে তুলে নিয়েছেন এবং দেশের আইন লঙ্ঘন করেছেন। এ জাতীয় আইন অমান্যকারীরা সাধারণত বিভিন্ন পর্যায়ে নিন্দিত হয়ে থাকেন। তবে নিন্দা করার পূর্বে এ হামলার উস্কানি দেওয়া ও প্রেক্ষাপট তৈরির পেছনে নিহত ব্যক্তিটির যে ভূমিকা ছিল, সেটাকেও সামনে আনা নিরপেক্ষতার দাবী। মূলত ইসলামের উপর বিভিন্ন মিথ্যা অপবাদ, গালিগালাজ এবং কোরআন ও হাদিসকে বিকৃত করে হামলার ক্ষেত্র যে তৈরি করেছে, বলতে হবে সে অনেক বেশি নিন্দা ও ধিক্কারের কাজ করেছে।
“ইসলাম কখনও এ ধরণের কাপুরুষচিত হত্যা সমর্থন করে না, ইসলাম মানবতার ধর্ম মানব হত্যার নয়” ইত্যাদি ফতোয়া অন্যান্য ক্ষেত্রে কেন প্রয়োগ করা হয় না একথা বলবো না। তবে, এ সমস্ত নীতি বাক্য এ ক্ষেত্রে যথার্থ মেনে নেয়া হলেও এর আগের কাজ ছিল শান্তি ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার উপাদান (ইসলামের অবমাননা) নিঃশেষ করে দেওয়া এবং উস্কানিদাতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী হাতগুলোকে নামিয়ে দেওয়া। কিন্তু তা করা হয়নি। দিনের পর দিন মুক্তমনা ব্লগসহ একাধিক ব্লগ, ওয়েবসাইট ও পেইজে আল্লাহ ও তার রসুলকে গালিগালাজ করা হয়েছে। যদি এ কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানানো হত, সময় মত তা বন্ধ করা হত, তাহলে উত্তেজনাও প্রশমিত হত এবং এ পরিস্থিতি কখনও সৃষ্টি হত না।
মনে রাখবেন, ইসলামের প্রতি ভালবাসা একজন মুসলিমের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য। রসুলের প্রতি ভালবাসা তার ঈমানের দাবী। পৃথিবীর কোন দেয়াল, কোন শিশা ঢালা প্রাচীর, কোন ফতোয়া তাঁদের এই আবেগের গতিরোধ করতে পারে না। ধৃষ্ট নবী-অবমানকারীর টুটি চেপে ধরার জন্য যে কোন কিছুকেই তারা উপেক্ষা করতে পারে। সুতরাং যতদিন ইসলামের অবমাননার গোড়ায় হাত না দেওয়া হবে ততদিন পর্যন্ত তাদের থামানো যাবে না। অবমাননার ঘটনা নবীর প্রেমে পাগল এসব বান্দাদের হঠাৎ-ই দাঁড় করিয়ে দেয়। এদের কে কবে কোথায় থামাতে পেরেছে? অতএব এদেরকে দমিয়ে দেওয়ার কসরত করার চেয়ে এমন লোক ও এমন অবস্থা যেন সৃষ্টিই না হয় সেদিকে মনোযোগ দেওয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
০৩ রা মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৭
ওয়ালী আশরাফ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। কালো পতাকার খোঁজে
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা মার্চ, ২০১৫ সকাল ৮:৫৩
কালো পতাকার খোঁজে বলেছেন: রেফারেনস হিসেবে প্রিয়তে নিলাম।