![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি জীবনের কোন কিছু নিয়ে রিগ্রেট করিনা এখন। কখনও মনে হয় না আরেকবার রিস্টার্ট দিতে পারলে ভালো হত। আমি জানি এখন যা আছে তাই হত সবসময় - হত বিষাদময় , অন্ধকার আর বিষণ্ণ।
জানি না কেন- সেই ক্লাস সেভেনের পর থেকে কখনও আমি কোন লম্বা সময়ের জন্য "ভালো" থাকিনি। "অসুখ"- এক আক্ষরিক "সুখের অভাব" ছিল প্রতিটা মুহুর্তে। কখনও তীব্রভাবে, কখনও ব্যাকগ্রাউন্ডে।
নাহ, আমি আমার জীবন নিয়ে হতাশ না। হওয়ার কোন কারনও নেই। আসলে কারোরই "নিজের জীবন নিয়ে হতাশ" থাকার কোন কারন নাই। জীবন ইটসেলফ একটা হতাশাজনক ব্যাপার। মানুষের জীবন তো আরও বেশীই...
একটা নিগুঢ় শূন্যতার মাঝে হুট করে কি জানি হল - কি সব আসলো- আমরা জানিও না ঠিকমত। মাঝে মাঝে মনে হয়- আমি যদি সৃষ্টির একদম আদিতে তৈরি হওয়া একটা হাইড্রোজেন পরমাণু হতাম? বা আমি না হলেও তার যদি অনুভূতি থাকত ? সে কি ফীল করতো ? অনন্তকাল ধরে জাস্ট শূন্যতায় ভেসে থাকা- শেষ নেই, শুরুটা জানা নেই, কোন কাজ নেই, কোন উদ্দেশ্য নেই... কিছুই নেই আল্টিমেটলি। সে কি বিষণ্ণ হত না?
ভাগ্যিস জড়দের অনুভূতি থাকে না।
কে বলছে থাকে না?
থাকে। জাস্ট সেটা একটু অন্যরকম । অনুভূতি না থাকলে ইলেকট্রন কিভাবে প্রোটনের প্রতি আকর্ষন "অনুভব" করে?
আর কি দিয়েই বা অনুভব করে ?
তারও কি সেন্স আছে?
কিভাবে সে মেনে চলে কুলম্বের সূত্র?
তারও কি বুদ্ধি আছে?
জড়ের এই বুদ্ধির, এই অনুভূতিরও কিন্তু কোন ব্যাখ্যা নেই- আমাদের এই ওভাররেটেড "অনুভূতির" থেকেও এটা জটিল, রহস্যময়... আমরা জাস্ট জানি এটা হয়। কিছু ক্ষেত্রে কিভাবে হয়। কিন্তু কেন হয় সেই প্রশ্ন মানবিক অনুভূতির ক্ষেত্রে অনেকক্ষেত্রে উত্তর এনে দিলেও ইলেকট্রনের ক্ষেত্রে দেয় না, দেয় না গ্র্যাভিটনের ক্ষেত্রে, দেয় না...... কারও ক্ষেত্রেই - একটা নির্দিষ্ট ডেপথে ঢুকলে।
হিহিহিহিহি...
এই জড়রা জটিল হতে হতে একদিন সৃষ্টি করল "প্রাণ"- সব নষ্টের গোড়া। এই প্রাণ একসময় ইভল্ভড হয়ে নিয়ে আসলো মানুষ। এমন এক প্রাণী যার বুদ্ধি তার টিকে থাকার প্রয়োজনের থেকে বেশী। অলস মস্তিষ্ক শয়তানের টং। তাই শুরু হল "অসুখ" । খাই-দাই-ঘুমাই কিন্তু কি যেন নাই। কি চাই তোমার বাবু?
"সুখ" চাই- "সুখ"। "মানসিক প্রশান্তি"। হাহাহাহাহা। এ কথাটার মানেই বা কি?
সুখের নিমিত্তে স্বস্থি দরকার। স্বস্থির জন্য দরকার উদ্দেশ্য। আমরা জীবনের মানে খুঁজতে একে উদ্দেশ্য দিলাম। উদ্দেশ্য থেমে থাকে কিন্তু মস্তিষ্ক এগিয়ে যায়। পাগলা ঘোড়ার মুখে লাগাম লাগাতে আসে জ্ঞান-বিজ্ঞান-শিল্পের মত কিছু অ্যাবসার্ড জিনিস। মস্তিষ্ককে বিজি রাখতে আসে পড়াশুনা, আসে চাকরী, আসে ক্যারিয়ার, আসে "মানুষ তার স্বপ্নের মত বড়" টাইপের ছেলে ভুলানো কথা । মস্তিষ্ক সেই ভোলে ভুলে।
মস্তিষ্ক আবার এগিয়ে যায়- ভালো থাকার জন্য , অসুখ ভোলার জন্য আসে আরও নিত্য নতুন ইলেমেন্ট। আসে ফোন, আসে গাড়ী, আসে ল্যাব, আসে ইন্টারনেট।
আমরা ভুলি। ভুলি আমাদের অসুখকে।
নিরর্থক অস্তিত্বকে ধর্ম-বিজ্ঞান-সাহিত্য-টাকা যা দিয়েই মাহাত্য দানের চেষ্টা করি না কেন- এটা প্যাথেটিক। সেই সাথে হাস্যকর। কিছু ওভার ইভল্ভড জিনিসপত্র সামগ্রিক অস্তিত্বের একটা ক্ষুদ্র জায়গায় ইতস্তত ঘুরাফিরা করতেছে - কোন সিসি ক্যামেরা নাই, কোন পুরস্কার নাই-শাস্তি নাই- জাস্ট হুদাই। সবকিছুই হুদাই। এটা ভাবলেই হাসি পায় না?
অন্ধকার , বিষণ্ণ একটা হাসি।
আমি আমার জীবন নিয়ে হতাশ নই। কি হতে পারতাম জীবনে? নোবেল লরেট? সানি লিওন? এঞ্জেলিনা জোলি? একটা ইলিশ মাছ? বট গাছ? ফোটন? নাকি একটা দুর্বা ঘাসের ফুল?
বিশাল এক মহাজাগতিক অনুভূতির ক্যানভাসের মাঝে একটা ক্ষুদ্র- প্রায় অদৃশ্য একটা অন্ধকার ফোঁটা হয়েই আমাকে কাটাতে হত "জীবনটা"।
একসাথে প্লে-বয়ের আনন্দ আর প্রেয়সীর ভালবাসা যেমন পাওয়া যায় না, তেমনি একসাথে পাওয়া যায় না ডিম পারার বেদনা, পরাগায়নের সুখ আর প্রোটনের প্রতি আকর্ষন।
আসলে কিছুই পাওয়া যায় না- কিচ্ছু না। যদি না জানতাম এই বিশাল ক্যানভাসের কথা, না বুঝতাম অনুভূতি, না থাকত ঢাউস আকৃতির একটা মগজ, তাহলে বেঁচে থাকার একটা মানে ছিল, সম্ভাবনা ছিল সুখে থাকার।
কিন্তু এখন নেই।
যারা ভাবে আছে- তারা ভুল ভাবে। হয় এই ব্যাপারটা ভুল ভাবে অথবা যা ভেবে তারা ভালো থাকার ভান করে সেই ব্যাপারটা ভুল। মানবমস্তিষ্ক নিয়ে কখনও ভালো থাকা যায় না। এই বস্তু নিয়ে জন্ম নেয়াটা এক আজন্ম পাপ। এক অন্ধকার কার্স।
আমার নিজের জীবন নিয়ে কোন হতাশা নেই, নেই কোন রিগ্রেট। আমার শুধু মাঝে মাঝে খুব রাগ হয় এই সামগ্রিক "অস্তিত্ব" ব্যাপারটার উপর। ঘিন্না লাগে "প্রাকৃতিক নিয়ম" নামে খ্যাত ফিজিক্স, ক্যামিস্ট্রি আর বায়োলজির উপর। কেন তোমরা এত ডাম্ব? এতটা ইথিক্সলেস ? কিভাবে পারো সমগ্র বস্তুজগতকে এতটা যন্ত্রণা দিতে? কুঁড়ে কুঁড়ে খেয়ে ফেলতে সব সুখকে? কেন একই সাথে নিজের একমাত্র চকলেটটা হাতে রেখেই সেটাকে খেয়ে ফেলা যায় না? কেন চাইলেই একদিনের জন্য একটা গাছ হওয়া যায় না? কেন আমি পারিনা একবার মরে গিয়ে দশ বছর পড়ে বেঁচে উঠতে? কার্বনের মত একটা শ্বেতশুভ্র হাইড্রোজেনকে চুমু খেতে?
কেন পারি না সব অসুখকে ঝেড়ে ফেলতে? অস্তিত্বের অন্ধকার থেকে একটিবার মুক্ত হতে?
©somewhere in net ltd.