![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এখন আমার শুধু অবসর আর অবসর। হঠাৎ অবসর পেলে যা হয় আর কি, কেমন কেমন যেন লাগছে। ছোট বেলা থেকেই অবসর তো খুব একটা পাইনি। যখন ক্লাস ফাইভ সিক্স এ পড়ি তখন থেকেই ছিল ঘোড়ার মতো রেইস। প্রতিদিন ১ ঘণ্টা গান প্রাকটিস করতেই হবে, এরপর স্কুলের পড়া, পড়ার টিচার, গানের টিচার, রাতে আবার রাত ৯ টা থেকে ১০ টা ১ ঘণ্টার একটা নাটক দেখতে হবে, যদিও সব দিন নাটক হত না, তবে আলিফ লায়লা, রবিন হুড, হারকিউলিক্স, দি এ টিম যা পেতাম তাই সই, ১ ঘণ্টা টিভি দেখা চাই ই চাই, টিভি দেখা হলে সাথে সাথে আবার পড়া। অবসর কাকে বলে জানতাম না। মনে আছে, ডিসেম্বারে স্কুলের ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হলে একটু পাখা গজাত। টিভি দেখতাম, গল্পের বই পড়তাম আর তখন ছোট ভাইয়া বলতো, কি retired করছিস? বাধ্য হয়ে পড়তে বসতাম যদিও জানি না কি পড়তে হবে কারণ তখনো তো বইই পাইনি, তখন আবার একটু পড়ছি দেখাতাম। ক্লাস টেনের পর সব বাদ, সত্যি সত্যি পড়া শুরু করলাম। কিন্তু বাদ সাধত বিভিন্ন গানের অনুষ্ঠান। তখন আবার যেতে না চাইলে মা বলতো যা এত কষ্ট করে গান শিখেছিস অনুষ্ঠান না করলে কি করে হবে। পরে বেশি বেশি পড়ে পুষিয়ে দিস, ব্যাস প্রতিদিন রাত জেগে সেটা আবার পুষিয়ে দেয়ার চেষ্টা করতাম। life is full packed that time. গ্রাজুয়েশন এর পুরো সময়টাও একই ভাবে গেছে। এরপর জব পেলাম, তখন অন্তত আর পড়তে হয়নি এটাই শান্তি। বন্ধুদের সব দেখেছি আবার এমবিএ করার ধুম, কিন্তু আমি ততদিনে পণ করেছিলাম, no more study. সপ্তাহে ৫ দিন অফিস করতাম, প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে অফিস, অফিস থেকে জ্যাম ঠেলে আসতে আসতে রাত, খেয়ে গুছাতে গুছাতে ঘুমের সময় হয়ে যেত টিভি দেখার সময় জীবন থেকে হারিয়ে যায় যায় অবস্থা। তখন প্রতিদিন ভাবতাম শুক্র শনি আসলেই খালি টিভি দেখবো। তখন এত কষ্টের পরও একটা ভূত মাথায় চেপে বসল, তা হচ্ছে ড্রেসের ডিজাইন করা। পুরোপুরি একটা শখ বলতে পারেন বা নেশা। আমার করা ড্রেস গুলো নিজেদের মধ্যে বেশ হিটও হল। অফিস এ তো বটেই তবে আমার আপু, ভাবি, আপুর পরিচিত, আপুর কলিগ, ওদের তো দারুণ লাভ হল কারণ মার্কেট এ না গিয়ে ওরা নতুন ডিজাইনের সব ড্রেস ঘরে বসেই পেত মার্কেট এর চেয়ে তুলনামূলক কম দামে। সত্যি বলতে টাকাটা একদমই প্রধান ব্যাপার ছিল না। আসল ব্যাপার হচ্ছে যখন কেউ আমার ডিজাইন করা ড্রেস পরত আমার অন্য রকম একটা ভাল লাগা কাজ করতো এরসাথে অন্য কিছুর তুলনা নেই, সৃষ্টির আনন্দের মতো, আমার মতো বেগুনতো আর বড় কিছু আবিস্কার করতে পারবে না, তাতে কি ছোট কিছু নিয়েই খুশি থাকি হা হা হা। এরপর বিয়ে করলাম, বাস্ততার তেমন কিছু পরিবর্তন হল না, শুধু কাজ কিছু বাড়ল যেমন ছুটির দিনে বেশি করে রান্না করে রাখা, মার সাথে দেখা করতে যাওয়া, স্বামীর সাথে ঘুরতে যাওয়া, আর আগের সব তো আছেই, চাকুরী আর বুটিক। কি পরিমাণ বাস্ত ছিলাম ভাবলে এখন অবাক লাগে। এভাবে চলেছে পুরা ৩ বছর। সেই আমি চাকুরী ছেড়ে যখন প্রবাসী হলাম মনে হচ্ছে কতো অবসর। আগেই বলে রাখি আমার কিন্তু একটা ৬ মাসের বাবু আছে ততোদিনে। তারপরও হাতে ভালই অবসর। ঐযে অভ্যাস চাকুরী করার তাই অন্য কাজগুলো কে ঠিক কাজ মনে হয় না। চাকুরী, বুটিক আর ঘুরতে যাওয়া ছাড়া অন্য কাজ গুলোকে ঠিক productive কাজ মনে হয় না। তাই ভাবলাম লেখালেখি করা যেতে পারে, যেহেতু শখের দাম লাখ টাকা তাই লেখালেখিতে পয়সা না আসলেও নিজের ভাল লাগা থাকবে, তাই একাজটাকে productive মনে হতে পারে। দেখা যাক কি হয়।
২| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৩৬
ইউমিহানা বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:২৮
কাবিল বলেছেন: আমার মতো বেগুনতো আর বড় কিছু আবিস্কার করতে পারবে না, তাতে কি ছোট কিছু নিয়েই খুশি থাকি হা হা হা।
আপনার লেখালেখিতে শুভ কামনা।
ব্লগে স্বাগতম।