নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পাস্োারড

ইউমিহানা

নিজেকে নিয়ে আরও ভাবতে হবে

ইউমিহানা › বিস্তারিত পোস্টঃ

My glorious memory

১৫ ই মে, ২০১৫ দুপুর ২:৩৫

আমার অন্তঃসত্তা সময়ের কাহিনী আসলে লিখে শেষ করা যাবেনা। তারপরও লিখে রাখতে চাই কারণ আজ হোক কাল হোক অনেককিছু ভুলে যাব, এখনই মনে হচ্ছে লেখার অনেক কিছু আছে যেটা মনে পড়ছে না। তারপরও যতটুকু মনে আছে লিখে ফেলি, কারণ এটা যে আমার জীবনের সব চেয়ে স্মরণীয় সবচেয়ে আলাদা সময়, আমি কিছুতেই ভুলে যেতে চাই না এসময়টা। তখন অফিসে যাতায়াত করতাম অফিসের মাইক্রোবাসে করে। সেই সুবাদে পরিচয় ছিল রেজা ভাই নামক এক কলিগ এর সাথে। উনার সাথে পরিচয় না হলে জীবনে অনেক কিছু হয়তো জানতাম কিন্তু মানুষ যে কতো উপকারী হতে পারে সেটা জানা হতো না। উনার ছেলের বয়স ছিল ১বছর, উনি সদ্য বাবা হয়েছেন তাই উনার বউ এর এই সময়ের যত সমস্যা ছিল সব আমাকে আগেই বলে দিচ্ছিল, উনি প্রথম আমাকে বলল আপনি একটা লেখা পরেন my magical journey একটা মেয়ে তার অন্তঃসত্তা সময়ের গল্প খুব সুন্দর করে লিখেছে। অফিসে তখনো বলিনি কাউকে। কিন্তু রেজা ভাই শুনল যে আমার ভয়াবহ গ্যাসের সমস্যা হচ্ছে, ওমনি ভাই এতো খোঁজ খবর নিচ্ছিল যে, আমি লজ্জায় পরে গিয়ে উনাকে বললাম আর বলে দিলাম কাউকে না জানাতে। আমার আর ফয় এর প্লান ৪ মাসের পর সবাইকে বলবো। আমরা কিন্তু অসম্ভব চিন্তা যুক্ত দুটো মানুষ। তার কারণ এই পৃথিবীতে প্রান শুধু আল্লাহই দিতে পারে আর কারো কোন হাত নেই। তাই জীবনে যত মানুষের কাছে এই সময়ের যত দুর্ঘটনা শুনেছি সবই আমরা দুজনই খুব সিরিয়াসলি নিয়েছিলাম। কোন কিছুকে আমরা হালকাভাবে নেইনি। তাছাড়া ফয় আমার চেয়ে অনেক বেশি সাবধানী। যাই হোক, অফিসে বসেই গল্পটা পড়েছিলাম আর চোখ মুছতে মুছতে খালি মনে মনে বলেছি মা, মা তুমি এত কষ্ট করেছো। এত বয়স পর্যন্ত খালি মনে হয়েছে মা হতে অনেক কষ্ট, কিন্তু শুধু এক না খেতে পারায় আমার যে কষ্ট হচ্ছিল, খালি ভাবছিলাম এতো আমার চিন্তার চেয়ে অনেক অনেক অনেক বেশি কষ্ট। এত কষ্ট, মা কিভাবে আমি আরও ৮মাস পার করবো? তখন আরেকটা ব্যাপার খুব মনে হচ্ছিল, আমার যদি মেয়ে হয় তাহলে আজ হোক কাল হোক সে ঠিক অনেক বছর পর এই অনুভুতিটা বুঝবে, কিন্তু ছেলে হলে কখনো বুঝবে না। তাই স্বার্থপরের মতো মনে হচ্ছিল প্রথম সন্তান মেয়েই হোক। প্রথম থেকেই কোন খাবার গলা দিয়ে নামছিল না। অফিসের ডাইনিং এ ঢুকতেই পারতাম না গন্ধে। এদিকে শরীরে কোন শক্তি ছিল না অফিসের কাজ করার মতো। খালি কাঁদতাম। যেদিন জানলাম আমি অন্তঃসত্তা, ফয় সেদিনই বলল আজ থেকে রান্না ঘরে ঢুকা বন্ধ। আমার এমনিতেই ভয়াবহ গ্যাট্রিকের সমস্যা ছিল তার উপর কোন শক্ত খাবার পেটে না পরতে পরতে ভয়াবহ অবস্থা সারাক্ষণ। এদিকে ডাক্তার এর কাছে যেতাম প্রথম প্রথম মাসে একবার। ডাক্তার যে তারিখ দিত ঠিক সেই তারিখেই, ফয় কখনো দেরি হতে দিতো না। প্রথমে ডাক্তার দেখিয়েছি সেলিনা আক্তারকে। উনার নাম অনেক শুনেছি তাই কন্সিভ করার আগেই উনার পরামর্শ নিচ্ছিলাম। খুব ভালো লাগত ডাক্তারকে, উনি বসতো বনানী “Prescription point” এ, যেটা আসলে একটা ডায়াগনস্টিক সেন্টার তাই কন্সিভ করার পর আমাদেরকে ভাবতে হল ডেলিভারি নিয়ে তখন ভাবলাম যেখানে ডেলিভারি হবে চেকআপও সেখানে করাতে হবে। তখন আমার বড় আপুর কলিগের কথা শুনে মনে ধরল স্কয়ার হসপিটালের খালেদা ইয়াসমিন মির্জাকে। ভাবলাম ওখানেই শুরু করবো চেক আপ। প্রথমবার গেলাম সেলিনা আক্তারের কাছে উনি বলল খেতে না পারলে সমস্যা নাই ৩মাস পর খেতে পারবেন, একগাদা ওষুধ দিলেন সকাল বিকেল খাওয়ার জন্য। আয়রন, ক্যালসিয়াম, গ্যাসের ওষুধ দিলেন। লিকুইড সিরাপও দিলেন। সারাদিন লিকুইড সিরাপ খেতাম। এরপরের বারও সেলিনা আক্তার বললেন সব ঠিক আছে। কেমন যেন মন মানত না। তবে ফয় সব সময় বলতো চিন্তা করবে না এত নামি দামি ডাক্তার নিশ্চয়ই উলটা পাল্টা বলবে না। ফয় জোর করে করে দুধ, আর ডিম খাওয়াত। কি জোর যে করতো বিশ্বাস করা যায় না। এই সময়ের কিছু সারা জীবন মনে রাখার মতো ঘটনা হচ্ছে এগুলো, ফয় কি যে করেছে, সব সময় মনে হতো আমি হাটলে ফয় ব্যথা পায়। আমার অফিসের এক আপু ছিল মালেকা নাম আমার চেয়ে বড় ছিল, উনার ২ ছেলে মেয়ে বড় হয়ে গিয়েছিল। ঐ আপু প্রতিদিন একবার করে খোঁজ নিত। আর খালি বলতো আপু আমার খুব ভাল্লাগে এই সময়টা, তখন আমার অবস্থা ত্রাহি ত্রাহি তাই উনার সব পরামর্শ শুনতাম কিন্তু এই একটা কথা শুনলেই মাথা গরম হয়ে যেত। খালি ভাবতাম এই সময় মানুষের কিভাবে ভাললাগে? জানি না ঐ আপু আমার লেখাটা পড়বে কিনা। আপু আজ আপনাকে বলি আসলেই এই সময়টা আল্লাহ মেয়েদের কে রানি করে পাঠিয়েছে পৃথিবীতে, আমি এখন হারে হারে বুঝতে পারছি আপনার কথাটা কতোটা সত্যি, আসলেই অনেক ভালো লাগার একটা সময়। এটা শুধু অনুভব করার বিষয়। প্রতিটা মানুষ কি যে যত্ন নিয়েছে। তবে এই সময় ২টা মানুষের ঋণ কোনদিন শোধ হওয়ার নয়, ১।আমার ভাবী, ৭টা মাস একবারের জন্যও রান্না ঘরে যেতে হয়নি সে তিন বেলা খাবার সরবরাহ করেছে ২। ফয় আমার স্বামী (যাকে আমি ফয় বলে ডাকি)। এই মানুষটা এত করেছে এতো করেছে, লিখে শেষ করা যাবে না। রাতে ঘুমাতে পারতাম না, যতক্ষণ ও পা মেসেস করে না দিতো। আমার মা অসুস্থ (শরীরের ডান পাশ প্যারালাইসড) তাই সব সময় মনে হতো আমার জন্য কে করবে কিন্তু আল্লাহ ঠিকই মিলিয়ে দিয়েছিল। আমার স্বামী খুব লাজুক ওকে বললে ও লজ্জা পায়, কিন্তু সত্যি বলতে কি এই সময় ফয়কে আমার মা মনে হত। আর বাবু হওয়ার পর ৪ মাস শাশুড়িকে পেয়েছিলাম মা হিসেবে সে গল্প আরেকদিন করবো।
৩মাস পার হওয়ার পর ২ বার সেলিনা আক্তারের ভিজিট শেষ করে শুরু করলাম স্কয়ারে খালেদা ইয়াসমিন মির্জার কাছে চেকআপ। সেখানেও একই কথা সব ঠিক আছে অথচ কিছুই খেতে পারিনা। বললাম ৪মাস হয়ে গেছে এখনো কেন খেতে পারিনা। ডাক্তার বলল ৫ মাসের পর ঠিক হবে, তখন খালি কান্না পেত আরো ১মাস আমি বাচবতো? অফিস যাওয়া আর আসা ছাড়া সারাক্ষণ সুয়ে থাকতাম। আর এতটাই দুর্বল ছিলাম যে সিঁড়ি দিয়ে উঠার পর প্রতিদিন মনে হতো এখনি মারা যাব। আমি উপরে আসার আগেই ফয় ঘরে ঢুকে রুম এর তাপমাত্রা সর্বনিম্ন করে রাখতো। নইলে হাঁপাতে হাঁপাতে শেষ হয়ে যেতাম। এপ্রিলের গরমেও রুম এতো ঠাণ্ডা করতাম যে ফয় আমার পাশে কাঁথা গায়ে শুয়ে থাকতো আর আমার কাছে মনে হতো ঠিক আছে। বাসায় ঢুকা মাত্র ফয় ডিম সেদ্দ করে দিত সেটা জোর করে খেয়ে সুয়ে থাকতাম। আমি এত দুর্বল ছিলাম যে শুয়ে শুয়ে ফোনে ফেইসবুকও চালাতে পারতাম না মাথা ঘুরতো। আমার কিন্তু বমি খুব যে বেশি হয়েছে তা না, তবে মনে আছে অফিসে বসে মাঝে মাঝে বাথরুমে ঢুকে হর হর করে সব বের করে দিতাম। এটা হতো যখন ভাবতাম আহ আজ একটু খেতে পেরেছি এবার শান্তি, ব্যস সব বমি হয়ে যেত। অফিসে বসে শরীর কাঁপত কিন্তু কখনো বসদের কে বুঝতে দেইনি যে এত খারাপ অবস্থা। সবাইকে বলতাম শুধু বসদের বাদে। কলিগদের সব সময় বলতাম, উনারা অনেক সাহায্য করেছে, আসলে ঐ সময় যারা একটু সাহায্য করেছে তাদের কথা বোধ হয় সারাজীবন মনে থাকবে। ঐ সময়টা নিজেকে খুব অসহায় লাগতো। আর যারা হেটে বেড়াতো, অর্থাৎ দুনিয়ার তাবৎ জনতাকে আমার মনে হতো ইস সবাই কি সুখী। মনে আছে আশিক ভাই সব সময় প্রিন্টার থেকে প্রিন্ট করা কাগজগুলো এনে দিতো, ৩ তলা থেকে স্ক্যান করে এনে দিতো, ওয়াহিদ ভাই সিমগুলো টেবিলে দিয়ে যেত, সামিকে সামান্য কিছু বলার জন্য ফোন করে ডেস্কে ডাকতাম। মনে আছে সানজিদা একদিন ওর মাকে বলে আমার জন্য ৩ রকম ভর্তা এনেছিল, ওইদিন একটু ভাত খেতে পেরেছিলাম। তন্দ্রা কতদিন টমেটো ভর্তা করে এনেছিল। পিংকি আপু প্রতিদিন শরীরের খোজ নিতো। একই সময় অফিসে আরও ৩ জন অন্তঃসত্তা ছিল কিন্তু বাকী সবাই সারাক্ষণ খাওয়া দাওয়া করতো, তাদের এ নিয়ে কোন সমস্যা ছিল না, তাই আমার ভয়াবহ দুর্বলতার ব্যাপারটা আমি আসলে কাউকে বুঝাতে পারিনি বলে আমার মনে হয়। পুরো প্রেগন্যান্সি সময়ে খুব ভালোভাবে খেয়েছিলাম ৮-৯দিন। সবই দাওয়াতে। মনে আছে এক বন্ধু আমার জন্য চাংখার পুল থেকে ভর্তা এনে দিয়ে ছিল সেটা খেতে ভালো লেগেছিল দেখে, ফয় গিয়ে এনে দিয়েছে, একবার খেতে পেরেছি পরে আবার এনেছে খেতে পারিনি। কন্সিভ করার আগের মাসে ধাবাতে ফ্রাইড রাইস খেয়েছিলাম, এত ভালো লেগেছিল ভেবেছিলাম খেতে পারবো, পরে রেজা ভাই উনার বিদায়ী অনুষ্ঠানে ওখানে খাওয়াল শুধু আমার অনারে, খেতে পেরেছিলাম খুব মজা করে। এরপর পরের সপ্তাহে ফয় গিয়ে ওখান থেকে আবার খাবার এনে দিল, কিন্তু খেতে পারিনি। কোন খাবার একবার খেতে পারলেও পরের বার আর পারতাম না। যেখানে মনে হতো খেতে পারবো সেই খাবারই ফয় এনে দিত কিন্তু খেতে পারতাম না। বেশির ভাগ দিন দুপুরে খেতাম ডাবের পানি, আম ভর্তা আর ডিম। ৫ মাসের একটা প্রান আমার পেটে বড় হচ্ছে আর আমি এসব খেতাম আর কাঁদতাম। এরপর যা ভাবলাম তাই হল, ৫মাসে একটা আলট্রাসাউন্ড দেয়, আর শেষে দেয়, কিন্তু ৫ মাসে আলট্রাসাউন্ড করেই ডাক্তার প্রথম সমস্যা বলল একটা, তাও জোরাল কিছু না খালি বললও বাচ্চা খুব ছোট। অনেক খেতে হবে মেজাজ খারাপ হয়ে গেল, আমি খেতেই পারছিনা, সেতো বললাম। পরে একগাদা রুচি বর্ধক অসুধ দিল। কিন্তু কিছুই হল না। ডাক্তার পর্যন্ত অবাক, আপনি এখনো খেতে পারেন না? এরপর আবার আলট্রাসাউন্ড আবার বাচ্চা ছোট এভাবে চলতে থাকল সাত মাস পর্যন্ত অথচ এসময় আলট্রাসাউন্ড করাই কথা না। এদিকে কিছুই খেতে পারিনা, বাচ্চা ছোট কিন্তু ডাক্তার কখনো বলে না যে খারাপ কিছু বা সমস্যা। ডাক্তার বলল ডিম আর দুধ খেতে পারছেন এতেই হবে, তাছাড়া অনেকে ৯ মাসই খেতে পারে না, সুতরাং এটা কোন সমস্যা না। আমি আর ফয়, আমার দুই আপু, ভাবি আমরা সারাক্ষণ আলাপ করি যে কি ব্যাপার ডাক্তার কিছু বলে না কেন? আমরা খুবই চিন্তিত। আমার একেকটা দিন কাটছিল ১ মাসের সমান। ৭ম মাসে ডাক্তার এক সপ্তাহ পর পর যেতে বলল। ঐ মাসে ৪বার আলট্রাসাউন্ড করালো। এরপর হঠাৎ ৩৩ সপ্তাহ এর সময় বলল বাচ্চা বড় হচ্ছে না, এক সপ্তাহে ৫০ গ্রাম বেড়েছে তাই এখনই পরবর্তী সপ্তাহই ডিসিশন নিয়ে ফেলতে হবে। আমি প্রথম লক্ষ করলাম ডাক্তার নরমালের বাইরে কিছু বলল, এদিকে মনে মনে ভাবছিলাম আল্লাহ বোধ হয় মুখ তুলে তাকিয়েছে। তখন একটা দিন যে পার করবো সেটাই পারছিলাম না, চারিদিকে খাবার কিন্তু কিছু খেতে পারিনা, ভাবুন তো এভাবে একদিন না দুদিন না পুরা ৭ মাস হয়ে গেছে। কিন্তু খুব চিন্তা হচ্ছে এমন ভাব নিয়ে আমি বললাম বাচ্চা বড় হচ্ছে না, সুতরাং আমি তো শুনেছি পেটের ভিতর থাকলেই ভালো বাড়তে পারে, কিন্তু এখন বের করলে যদি ইনকিউবেটরে রাখতে হয়। আমার আবার এই বিষয়টা নিয়ে আগেই ভয় ছিল, বড় হসপিটালগুলো বিশেষ করে অ্যাপোলোর ব্যাপারে শুনেছি ইনকিউবেটরে রেখে আকাশ চুম্বী বিল ধরিয়ে দেয়ার কথা, রেজা ভাইয়ের ছেলের ক্ষেত্রে ইউনাইটেড হসপিটালে একই ভাবে ৩ দিন ইনকিউবিটরে রাখতে হয়েছে। তখন ডাক্তার বলল নরমাল ক্ষেত্রে পেটের ভিতর বাড়ে কিন্তু আপনার ক্ষেত্রে তো বাড়ছে না, তাই পেটে রাখা ঝুঁকিপূর্ণ। পরের সপ্তাহে ঈদ, এরপরের সপ্তাহে সিজার করে ফেলতে হবে, ২টা ইঞ্জেকশান দিয়ে দিচ্ছি এটা বাচ্চার শ্বাসকষ্টজনিত কোন সমস্যা যাতে না হয় এর জন্য, আর যেমন দেখছি বাচ্চা অনেক সুস্থ আছে, তাই ইনকিউবেটরে রাখতে হবে না, বাকিটা আল্লাহ এর ইচ্ছা। তারপরও ডাক্তার আমাকে বলল আপনি কি চান? যেই আমাকে জিজ্ঞেস করল পরে গেলাম বিপদে, ডাক্তারের কথা না শুনলে পরে কিছু হলে তো ডাক্তার কোন ঝুঁকি নিবে না বলবে আপনিই তো চাননি। তাই বললাম আপনি যা বলবেন তাই, আমার কোন মতামত নাই। পরে দুই আপুর সাথে কথা বললাম, মেজ আপু তো অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন মানুষের সাথে কথা বলল, খোঁজ নিল, পরে জানালো, হু ঠিকই আছে ডাক্তার যা বলছে ওইটাই ঠিক। আর স্কয়ারের মতো হাসপাতাল নিশ্চয়ই সামান্য একজন রোগী এর টাকা মারার ধান্ধায় থাকবে না, তাছাড়া ডেলিভারি করাবে ডাক্তার উনার কথা শুনতেই হবে, যদি এমন হতো ডাক্তার ছাড়া পারছ তাহলে একটা কথা ছিল। ব্যস আপুর সাথে কথা বলে আর চিন্তা না করে ডাক্তারের দেয়া তারিখেই পুরা ১ মাস আগে চলে গেলাম হাসপাতালে। আল্লাহ এর অশেষ রহমত। সব ঠিক মতই হয়েছিল। আমার মেয়ে হল। এত ছোট বাচ্চা হয়ে ছিল, মাত্র ১৯৩০ গ্রাম ওজন। আমি নিজেই এত ছোট বাচ্চা জীবনে প্রথম দেখেছিলাম, কিন্তু আনন্দের বিষয় ছিল যে সে পুরাপুরি প্রাকিতিক ভাবে সুস্থ ছিল, কোন কৃত্তিম কিছু লাগেনি। সত্যি বলতে আমি খুব নিশ্চয়তা নিয়ে স্কয়ারে গিয়েছিলাম, সেবাটাও ঠিক সেভাবেই পেয়েছিলাম। সব কিছু মিলিয়ে অনেক ভালো সেবা পেয়েছি। আসলে খেতে পারিনি এটা যেমন আমার সমস্যা ছিল, আবার এই কারণেই অনেক সমস্যা থেকে বেঁচেও গেছি, যেমন পায়ে কোন পানি আসেনি, সুগার বাড়েনি, ওজোন আহামরি বাড়েনি। বাবু হল আগস্টের ৩ তারিখে, ২ তারিখেও সারাদিন না খেয়েছিলাম। বাবু হওয়ার পরদিন থেকে হঠাৎ মনে হল শুধু বাবু না আমারও নতুন করে জন্ম হয়েছে, কোন দুর্বলতা নেই, একদম আগের মতো, আমি সারাক্ষণ ভাবতাম আর কোনদিন আগের মতো হবো না। এতো খুশি লাগছিলো। সাথে সাথে এটাও বুঝতে পারছিলাম যে পুরো অন্তঃসত্তা সময়টা ছিল আমার glorious time.

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৩:২৮

সোহেল আহমেদ পরান বলেছেন: খুব সুন্দর ও সাবলীল করে লিখেছেন অনুভূতিগুলো।
অনেক ভালোলাগা নিয়ে পড়লাম।
--
আপনার ছোট্ট মেয়েটির জন্য শুভকামনা।
কী নাম রেখেছেন ওর?

২| ১৫ ই মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪৪

ইউমিহানা বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই, আপনি ভাললাগা নিয়ে পড়েছেন শুনে উৎসাহিত হলাম। আমার মেয়ের নাম রেখেছি ফাইজা।

৩| ১৫ ই মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৭

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন:
আগ্রহ নিয়ে পড়ছিলাম। সুন্দর লিখছেন।

ফাইজা নামটাও সুন্দর। পিচ্চির জন্য শুভকামনা রইলো। ধনী হোক আর নাই হোক তবে অনেক বড় মনের মানুষ হোক। :)

৪| ১৬ ই মে, ২০১৫ রাত ৮:৪৯

ইউমিহানা বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, আগ্রহ নিয়ে পড়েছেন শুনে লেখার আগ্রহও অনেক বেড়ে গেল। আপনার শুভ কামনাটাও অনেক সুন্দর।

৫| ০৭ ই জুলাই, ২০১৬ সকাল ৯:০৫

মেয়ে থেকে মা বলেছেন: ভাল লাগল , সুনডোর কোরে লিখেচেন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.