![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
"মেয়েটা কি মরে গেলো " টানা তিনবারের মতো জিজ্ঞাস করলো কদমতলির চেয়ারম্যান বদিউল উল্লাহ । কেরামত চুপ করে মাটির দিকে তাকিয়ে আছে । আঙ্গুল দিয়ে মাটিতে নকশা এঁকে যাচ্ছে ।
- কথা কস না ক্যান হারামজাদা ?
- কি কমু চেয়ারম্যান সাব , ছোড মানুষ ,এতবার নিবার পারে নাই ।
- তাইলে পুবের জঙ্গলে মাটি চাপা দিয়া দে , রাত শেষ হবার আগেই দিবি । কাকপক্ষী টের পাইলেও তোর খবর আছে ।বলেই সিগারেটে টান দিলো বদিউল্লাহ চেয়ারম্যান । আজকে বড় আনন্দ পেয়েছে সে । যদিও অনেক রক্তপাত দেখতে হলও তাও কাজটায় একটা মজা ছিল । বাচ্চা পোলাপানের সাথে এগুলো করে সে নির্মল বিনোদন পায় ।
-আইচ্ছা । এটা বলেই চুপ হয়ে গেলো কেরামত । এই কাজ কেরামত প্রথমবার করে নাই । এর আগেও নয় বছরের এক মেয়ে ধরে আনছিল চেয়ারম্যান সাবের আমুদের জন্য গতবছর । সেই মেয়েও রাতে অনেক চিল্লাইছিল আর বাঁচেও নাই । এটা যদিও দোষের না ভাবে কেরামত। পুরুষ মানুষ নানা জাতের কাজ করে , তাদের আমুদের দরকার আছে । তাও যদি চেয়ারম্যান সাবের মতো নামী দামী লোক হয় ! চেয়ারম্যান সাব সব সময় এমনটা করে না । কামের একটা মেয়ে আছে বান্ধা , তাকেই রাত বিরাতে ঘরে ঢুকাইয়া নেয় । তারপরও মাঝে মাঝে এদিক সেদিক থেকে কমবয়সী মেয়ের দরকার পরে । চেয়ারম্যান সাব আমুদে লোক ভাবে কেরামত । ছোট ছোট মেয়ের নাকি পায়ুপথও ব্যবহার করে বিরাট আনন্দ পায় সে ।
সে যাই হোক এই মেয়েটা আরও ছোট । সাত কি আট হবে । হাফপ্যান্ট পরে খালি গায়ে ঘুরাঘুরি করছিলো চরায় ।মেয়েটাকে পটাতে বেশী কিছু করতে হয় নি কেরামতের । শুধু বলছে তার সাথে গেলে একটা আইসক্রিম কিনা দিবে , দুধ দিয়ে ঢ্যাঁশা মজার আইসক্রিম । পাগল মেয়েটা পিছে পিছে চলে এসেছে । সারাদিন ভাঁড়ার ঘরে আটকায়ে রাখছিল । দুপুরে খাওয়া নিয়ে গিয়েছিলো কেরামত । মেয়েটার মুখের বাধন খুলে দিতেই কি ভীষণ চিৎকার । একটাই কথা - মায়ের কাছে যামু চাচা । কেরামত আবার গামছা দিয়ে শক্ত করে মুখটা বাধলও ।চেয়ারম্যান সাব ঘরে ঢুকাইছে সন্ধ্যার পর । রাত দশটা বাজতেই কিনা ফুটুস ! মরে গেলো ছেমড়ি দুম করে । মাঝরাত্তিতে এগুলা ঝামেলা কার ভালো লাগে !!!
সে যাকগে মেয়েটাকে মাটিতে ভালোমত পুতে বাড়ি ফিরলো কেরামত । সারাদিন এসব কাজে ব্যস্ত ছিল বলে বাড়ি আসতে পারে নাই । ঘর্মাক্ত ভিজা শরীরে বাড়ির কাছে এসে থমকে যায় কেরামত আলী । কি আশ্চর্য এত রাতেও তার বাড়িতে এত লোক ক্যান ?? তার বউ আম্বিয়া চিৎকার করে বিলাপ করে কাঁদছে । আর তারও মাও তাকে দেখে দৌড়িয়ে এসে চিৎকার করে কাদতেছে ।
-বাজান বাজানরে তোর মাইয়া আর নাই । আমাগো টুকটুকি আর নাইরে ।
কি বলে এগুলা মা , তার ফুলের মতো ছোট মেয়ে । আদর করে নাম রাখছে টুকটুকি ।
- কি কউ মা !! বলে চিৎকার করে উঠলো কেরামত ।
- হ বাজান , মাইয়াটা পিশাব করতে উঠছিল । ছোড মাইয়া বুঝে নাই , কাউরে ডাকেও নাই । কোন হারামি যেন লুকায়া ছিল জঙ্গলে । তোর মাইয়ার সর্বনাশ কইরা মাইরা ফেলাইছে ।
কেরামত আঁতকে উঠে । তার মেয়ে টুকটুকি । পাঁচ বছরের ছোট্ট মেয়ে তার । কে এমন সর্বনাশ করলো । হায়রে খোঁদার কি বিচার ! সকালবেলা ধরে আনা মেয়েটার চেহারা চোখের সামনে ভেসে উঠলো ।
চালার উপরে শান দেওয়া রামদাঁও রাখছিল কোরবানে মাংস কাটার জন্য । তাই নিয়ে দৌড়াইয়া বাহির হলও ।
হ্যাঁ সে জানে কোথায় এমন অমানুষরা থাকে । তাদের সাথে কোরবানি দিবে সে তার নিজের পশুত্বকে । ভোরের সূর্য উঠছে , কেরামত আলী দৌড়াচ্ছে , তার গন্তব্যস্থল চেয়ারম্যানবাড়ী । তার মনে হচ্ছে জঙ্গল থেকে সে অসংখ্য বাচ্চার হাসি শুনতে পাচ্ছে , এই বাচ্চাদের মাঝে তার মেয়েও আছে ।
©somewhere in net ltd.