![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি সহ আমার বাকি চার ভাইবোনের জন্ম হয়েছিল একটা গোয়াল ঘরে। সে ঘরে প্রতিদিন সাপ এসে গাভির দুধ খেয়ে যেত। আমরা আতংকে জড়সড় হয়ে সাপের দুধ খাওয়ার দৃশ্য দেখতাম। সাপ সম্ভবত কুকুরের সাথে খুব একটা বিবাদে যায় না। আমাদের সাথে সে সাপের বিবাদের কথা কেউ কখনো বলেনি।
১৯৯৪ সালের শেষের দিকে ( সম্ভবতঃ ) আমার সবচেয়ে বড় ভাই ডাঃ মাসুদ হাসান সিলেট থেকে এমবিবিএস পাশ করে ব্যাগ এন ব্যাগেজ কুমিল্লা চলে আসেন। আমি ক্লাস নাইনে পড়ি। চরম দরিদ্র একটা পরিবারে মানুষ হবার চেষ্টা করছি। অভাব অভিযোগ, দুঃখ কষ্ট নিত্য সঙ্গী। যদিও আমার বাবা একটা সরকারি কলেজের সিনিয়র মোস্ট লেকচারার ছিলেন। বিরাট পরিবারের অযোগ্য কর্তা। ৪২০০ টাকা মাসিক আয়। ২৪০০ টাকা বাসা ভাড়া, ১০০০ টাকা বড় ভাই আর ৮০০ টাকা বড় আপাকে মাসে মাসে দিতে হত। মাসের ১ তারিখে যদি তাঁর কাছে শূন্য টাকা থাকতো ধরি ২ তারিখে সে ৪২০০ টাকা বেতন তুলত এবং ৩ তারিখে তাঁর হাঁতে থাকতো শূন্য টাকা । তখনো দুই ভাই ইন্টারমেডিয়েটে পড়ছে । সাথে তাদের দুইটা করে প্রাইভেট পড়ার খরচ চালানো এবং চির অসুস্থ মায়ের চিকিৎসা খরচ বাবদ টাকা লাগতো নিয়মিত । আমার দুইটা প্রাইভেট পরতে হত অংক আর ইংরেজি। চাল ডাল সবজি ১২ মাস কিনে খাও। কি ভয়ঙ্কর অভাব। মাগরিবের আজানের সময় ছালার ব্যাগ আর কাঁচি নিয়ে ডোবায় নেমে পড়ি কচুর কান্ড কাটার জন্য। এ সময় কেউ কাউকে তেমন একটা খেয়াল করেনা। এ গুলো সিদ্ধ হলেই কেবল ভাত গেলা যাবে। বাবা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৮ ঘণ্টাই পালিয়ে বেড়ায়। লুকিয়ে লুকিয়ে সারাদিন আকিজ বিড়ি খায়। চলে নিচু শ্রেণীর কুলি মজুরদের সাথে। আমি জানিনা কেন তাঁর লেভেলের লোকেরা কেউ তাঁর বন্ধু ছিলনা। দুইদিন পর পর এর বাড়ি তাঁর বাড়িতে বেড়াতে চলে যেত ভাল খাবারের লোভে। আমরা অনাহারে অর্ধাহারে পরে থাকতাম। কত যে এক দুই টাকার তেল কিনতে গিয়ে নাজেহাল হয়েছি তাঁর কোন হিসাব নাই। আমাদের এই অপমানকর জীবনে তাঁর কিছু আসতো যেত না। সে দিব্বি মগে করে দুই টাকার চা আনিয়ে সারাদিন বন্ধু বান্ধব নিয়ে পরে থাকতো। পড়ার যায়গা দখল করে এরাও সারাদিন বসে থাকতো। কিছু বললেই গুম্মুর গুম্মুর পিঠে পড়তো। আমাকে ছাড়া মারার মত আর কেউ ছিলনা যেহেতু সবাই বড় হয়ে গেছে। প্রসংগ থেকে সরে অনেক দুর চলে এসেছি, তাইনা? ফিরে যাচ্ছি। বড় ভাইয়া এমন ভয়াবহ একটা পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন। বাবার মাসিক খরচ ১০০০ টাকা বাঁচল। কিন্তু অভাব কমল না।
১৪ অক্টোবর ২০১৩ ইং। রাত ১১ টা ১ মিনিট।
২| ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৫১
ইলুসন বলেছেন: এভাবে শেষ করে দিলেন? বাকিটুকু পড়তে ইচ্ছে করছে।
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:১৬
কালোপরী বলেছেন: শুভ কামনা রইল