![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি সহ আমার বাকি চার ভাইবোনের জন্ম হয়েছিল একটা গোয়াল ঘরে। সে ঘরে প্রতিদিন সাপ এসে গাভির দুধ খেয়ে যেত। আমরা আতংকে জড়সড় হয়ে সাপের দুধ খাওয়ার দৃশ্য দেখতাম। সাপ সম্ভবত কুকুরের সাথে খুব একটা বিবাদে যায় না। আমাদের সাথে সে সাপের বিবাদের কথা কেউ কখনো বলেনি।
চুনারুঘাট থাকা অবস্থাতেই আপার বিয়ে হয়ে গেল । আপা যেমন কৃপণ তেমনই কৃপণ, ভিতু, সাবধানী এক বেঁটে ছোট খাটো লোকের সাথে । বিয়ের আগে তাদের কখনো দেখা হয়নি কিন্তু বিয়ের এক ঘণ্টা পর আচরন দেখে বোঝার উপায় রইল না যে তারা পরস্পরের অপরিচিত । আসলে তারা দুজনেই বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছিল । তারা ছিল ক্লান্ত কিন্তু সন্তান জন্মদানে উদ্গ্রিব । ( আপার গল্প এখানেই সমাপ্ত )।
বড় ভাইয়া চাকরির ভাইভা দিয়ে এসেছিলেন অনেকদিন হয়ে গেল । হঠাৎ করেই তাঁর চাকরি হয়ে গেল তাও সরকারি চাকুরি । আমি ভিতু হয়ে পড়লাম এবং খুশি হবার ভান করলাম । ভাইয়া আমাদের ছেড়ে চলে গেলে কোনদিন-ই এ বাসায় আর ফেরত আসবেন না । আমাকে তাহলে কচু কাটা করা হবে । কোনমতে বললাম, তোমার পোস্টিং কুমিল্লা করানো যাবেনা ? লাকসামে পোস্টিং হল । আমরা এই যাত্রায় টেনশন ফ্রি হয়ে গেলাম । অন্তত খাওয়া পড়ার ভয় আর করতে হবেনা । সপ্তাহে তিনদিন অফিস করেন বাকি তিনদিন ফয়সল হসপিটালে সকাল থেকে রাত অবধি কাজ করেন । ৪৮০০ টাকা থেকে একলাফে ঘরের আয় বেড়ে দাঁড়াল ২৫০০০ টাকায় । অজস্র টাকা । একটা ড্রয়ারে এই টাকা থাকে । একটা চাবি আমার কাছে অন্য চাবিটা থাকে ভাইয়ার কাছে । ওনার কাছে চাবি থাকা না থাকা সমান কথা । ঘরে নতুন টেলিফোন সংযোগ এসেছে । মার্বেল পাথরের একটা সুন্দর টেলিফোন সেট কিনে নিয়ে এসেছি । ঘরের সদাই পাতি থেকে শুরু করে সব কিছুই চলে আমার ইশারায় । দরকার লাগলে ভাইয়া ফোনে ইন্সট্রাকশন দেয় । যদিও তার প্রয়োজন সাধারনত হয় না ।
বড় ভাইয়া আমার উপর সব দায়িত্ব ছেড়ে দেবার অন্য যে কারণটি ছিল তা হল সবার ছোট হয়েও আপার পুরো বিয়েটা একহাতে শেষ করেছিলাম কোনোরকম দাগ ছোপ ছাড়া । শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত জোরে একটা শব্দ পর্যন্ত হয়নি বলতে গেলে । এই বিয়েতে প্রায় দুই লক্ষের অধিক টাকা খরচ হয়ে যায় যার একটি টাকাও বাবা বা অন্য কেউ শেয়ার করেন নাই ।
ভাইয়া কিছুটা ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়ে কিন্তু তাঁর মনোবল থেকে যায় আকাশচুম্বি । এতদিনে আমাদের বাসার মাসিক খরচ আরও বেড়ে ত্রিশ হাজার ছাড়িয়ে স্থিতিশীল একটা অবস্থায় এসে ঠেকেছে । সমস্যা যেটা ক্রনিক তা হল ২৪ ঘণ্টাই আত্মীয় স্বজনদের চিৎকার চেচামেচি হই হুল্লোড় চলতে থাকলো । সারাদিন কেটলিতে চা জাল দেয়া হচ্ছে । যার যখন ইচ্ছা সেই খাচ্ছে । কোন নিয়ম শৃঙ্খলা আর রইল না । সবাই গোষ্ঠী নিয়ে বেড়াতে আসে আম্মাকে দেখার ছলে । যাবার সময় ব্যগ ভর্তি কাপড় চোপড় টাকা পয়সা চুরি করে চলে যায় । এমন কি চুরির ব্যগ আগে ভাগে পাঠিয়ে দিতেও দ্বিধা করেনা ।
আমার সৎ মা দিনে দুই প্যাকেট বিড়ি খায় শুনে আমি কিছুটা বিহবল অবস্থায় ছিলাম । দিনে পঞ্চাশটা বিড়ি খাওয়া চাট্টি খানি কথা নয় । তাঁর সপ্তাহে দুইদিন সিঙ্গাপুরে কথা বলতে হয় । নয় বোনের মধ্যে অন্তত তিন জনকে এনে নিজের কাছে রেখেছে । এই বিষয়ে আব্বার কোন মাথা ব্যাথা আছে বলে মনে হল না । সেও দিব্বি ফ্লোরে শুয়ে শুয়ে বিড়ি টানে । নিজের করামের লোকদের সাথে মস্করা ঠাট্টা করে বেড়ায় । আমার সন্দেহ হত প্রায়-ই যে ভাইয়ার টাকা গুলোকে সে নিজের কিছু মনে করে না । বরং সাঙ্গ পাঙ্গ সহ এই সব লোপাটে সে ব্যস্ত । যেদিন ভাইয়া সবাইকে ছেড়ে চলে যাবে সেদিন তারা টের পাবে ।
আমি এমন শত শত উদাহরণ দিতে পারব যে ভাইয়ার দিল দরিয়া মার্কা আচরন কে আব্বা নানা ভাবে উৎসাহ দিত ।‘ তুমি শুধু চাকুরিজীবীই নও । একজন ব্যবসায়ীও । আর ব্যবসায়ীদের হাত থাকে খোলা । তারা নিত্য দিনের খরচে বিচলিত হয়না । বিচলিত হলে তাদের চলে না । তোমার হয়তো বুদ্ধি বেশি কিন্তু আমার অভিজ্ঞতা বেশি’ – এ জাতীয় কথা বলে তাকে পরোক্ষ ভাবে উৎসাহ যোগানো হত । আমার খুব খারাপ লাগতো এবং আমি এইসবের মোটিভ বুঝতে পারতাম । যার বোঝার দরকার সে না বুঝলে তো আমি নিজেদের মধ্যে বিবাদ তৈরি করে দিতে পারিনা । তাইনা ? তাছাড়া আমি মদ টদ খাই । কিছুটা কোণঠাসা জীবন যাপনে অভ্যস্ত হয়ে পরেছিলাম ।
মানুষের বাসার গড়ে যখন টেলিফোন বিল আসতো ৫ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে তখন আমাদের বাসায় বিল আস্তে শুরু করল সাড়ে সাত থেকে সাড়ে আট হাজারের মধ্যে । আমি বিষয়টা আমার প্রান প্রিয় ভাইয়ের নজরে আনলাম । ততদিনে তাঁর পিঠে সওয়ার হয়ে গেছে নতুন ফ্রাঙ্কেন্সটাইনের ভুত ।
২০ অক্টোবর রাত ৩ টা ১০ মিনিট ২০১৩ ইং ।
২| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১১:৫২
zaku বলেছেন: na. golpo eto elomelo hoyna ........
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে অক্টোবর, ২০১৩ ভোর ৫:২৫
কুচ্ছিত হাঁসের ছানা বলেছেন: Golpo or bastob?