![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি সহ আমার বাকি চার ভাইবোনের জন্ম হয়েছিল একটা গোয়াল ঘরে। সে ঘরে প্রতিদিন সাপ এসে গাভির দুধ খেয়ে যেত। আমরা আতংকে জড়সড় হয়ে সাপের দুধ খাওয়ার দৃশ্য দেখতাম। সাপ সম্ভবত কুকুরের সাথে খুব একটা বিবাদে যায় না। আমাদের সাথে সে সাপের বিবাদের কথা কেউ কখনো বলেনি।
( রিয়েল মনে হয় কষ্ট পেয়েছে । তাঁর প্রতি বিনীত ভাবে বলছি- এ নষ্ট শিলালিপির প্রতিটা পাতা প্রতিটা লাইন প্রতিটা শব্দ প্রতিটা ক্ষন, পল অনু পল নানান দুঃখ কষ্টে ভরা । সস্তা অনুভুতির জন্য কোন বর্ণ এখানে সংযজন আমি করিনি । তাঁরপরও সে চাইলে আমি তাঁর কাছে মাফ চেয়ে নেব । যাকে ভালোবাসি তাঁর পায়ে পড়া আমার মত এ অভাজনের জন্য সম্মানের । তাকে নিয়ে অসম্ভব সত্য ও অসাধারন কিছু কীর্তির কথাও আমি উল্লেখ করেছিলাম । সে নিশ্চয়ই সেসব দেখেছে) ।
এডমিশন টেস্ট এর সময় চলে আসলো দেখতে দেখতে । যথেষ্ট পড়াশোনা নাই তহবিলে এ সত্য আমি হাড়ে হাড়ে টের পেলাম কোচিং করতে গিয়ে । ইয়াসমিন একদিন ডেকে নিয়ে বলল- তোমার তো মনে হয় কিছু হবেনা নাকি হবে ? আমি বললাম- হবে না মনে লয় । ‘ তাইলে তুঁমি তোমার পথ দেখ । খেইল খতম’ - এই নারী আমাকে ঝুলাইয়া রাইখা আমার তিন বন্ধুর লগে প্রেম করছে একে একে । আমি গাধা আশায় আশায় বুক বাইন্ধা বইসা থাকছি । নারী আমারে বুলি শোনায় ফিউচার নাই তো আমি নাই । আমি কোন মতে কষ্ট করে বললাম, যা আমার চউখের সামনে থিক্কা বিদায় ল । হারামি মাগি, তোর মা মাগি তোর চৌদ্দ গোষ্ঠী মাগি হারামির জাত । শেষ, সব শেষ হয়ে গেল । আমি নিরবে ফিজিক্সে অনার্স করতে লেগে গেলাম । কিন্তু মন বিদ্রোহ করে বসল । তিন মাসে একদিনও ক্লাসে গেলাম না ।
১৯৯৭ সাল শেষ হয়ে ৯৮ এর এপ্রিল মাস । বড় আপা বিরাট লাট বহর নিয়ে হাজির কুরবানি ঈদ করার জন্য । এই প্রথম জীবনে একটা ভালো উপলব্ধি আসলো । সিদ্ধান্ত নিলাম এটাই করব । আপা ঈদ শেষে ফেরার পর তাঁর সাথে সিলেট চলে যাব । একমাস সেখানে থেকে পড়ব । পরের বার যেন খুব ভালো ভাবে এডমিশন টেস্ট গুলো অন্তত দিতে পারি । তখনও এ বছরের সব টেস্ট শেষ হয়ে যায়নি । শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়য়ের পরীক্ষা সামনের মে মাসের ২১ তারিখে ।
এপ্রিলের ২৭ তারিখে পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনে উঠে বসলাম । আপার সাথে নতুন বাচ্চা, কাজের লোক দুইজন। বৃদ্ধা শাশুড়ি, দুলাভাই এবং আমি । চারটা সিটে সবার ব্যক্তিগত ব্যগ হাঁতে হাঁতে নিয়ে কোন রকম গাঞ্জাগুঞ্জি করে বসলাম । আমাদের সাথে আরও আছে বড় বড় তিনটা সুটকেস ( সব গুলোতে সম্ভবত পাথরে ঠাঁসা ), চারটা কাচা মাংসের ব্যগ আর দুইটা প্লাস্টিকের বড় বড় ঝুড়ি ( ঝুড়ি ঠাঁসা দুধের টিন, বাটি, চামচ, প্লাস্টিকের ফ্লাস্ক, বাচ্চার কাপড় চোপড় সহ হাজার রকমের হাবিজাবি )। ট্রেন থেকে নেমে দুলাভাই তাঁর বউ বাচ্চা আর মাকে নিয়ে সামনে হাঁটতে শুরু করল । দুই কাজের মেয়ে দুইটা ব্যগ নিয়ে সামনে বাড়ল । হায়রে কপাল । টন কে টন বস্তা নিয়ে নিরবে দাঁড়িয়ে রইলাম । কিছুক্ষন পর দুলাভাই হন্তদন্ত হয়ে ফিরেই চিৎকার শুরু করলেন আমি কোন খানের কান বাল এই ঢঙ্গে । পাঁচটা ব্যাগ কাধে পিঠে নিয়ে টলতে টলতে টেক্সি পর্যন্ত গেলাম । দিন দুয়েকের মধ্যেই জেনে গেলাম অথর্ব শালা তাঁর বোনের বাড়িতে থাকতে গেলে তাকে কেমন জীবন যাপন করতে হয় ।
সব মেনে নিলাম । সকালে আপা দুলাভাই কলেজে চলে যায় । আমি গরম দুধ বোতলে ভরে ভাগিনার সামনে বসে থাকি । সে দশটায় ঘুম থেকে উঠে একটা পর্যন্ত তাড় স্বরে চিৎকার করে কাদতে থাকে । এক ফোটা দুধ বা অন্য কিছু সে মুখে নেয় না । আমি তাঁর সামনে নাচি গাই কাঁদি হাসি সবি করি । চিতকারের পরিধি বাড়তে থাকে । কাজের মেয়েটা কোন সময় এসে একটু ছুয়েও দেখেনা , মজা লয় । আপা একটার দিকে ফিরে প্রথম যে প্রশ্নটা করে টা হল- তুই এতক্ষন আমার ছেলেরে কি করছস ? সে এতো কান্দে কা ? ওর পিঠে ঠোঁটে এতো লাল লাল দাগ কিসের ? দেখি তোর হাঁত দেখা নখ দেখা । আমি দেখাই আর মনে মনে ক্ষয় হই । এই বোন আমাকে সারা জীবন কোলে কোলে রেখেছে । আর এখন সে কিভাবে কথা বলে কিভাবে তাকায় । হায়রে জীবন । আমার ভয় করতে শুরু করল তাঁদের বাসায় চুরি হবে আর তখন আমাকে দোষারোপ করবেনা । ঘাড় ধরে বের করে দিবে ।
দুপুরে ভাত খেয়েই পড়তে বসি । বিকেলের আগেই দুলাভাই ডাকতে শুরু করে তাড়াতাড়ি তাঁর সাথে বটেশ্বর বাজারে যাবার জন্য । প্রতিদিনই একটা মিষ্টি কুমড়া কিনে বাসায় নিয়ে আসি পরদিন সকালে রুটির সাথে ভাজি হিসাবে, দুপুরে তরকারি এবং রাতে ডাল কুমড়োর তরকারি খাবার জন্যে । মিষ্টি কুমড়া মিষ্টি কুমড়া মিষ্টি কুমড়া । এভাবেই টানা তেইশ দিন কোন রকমে পার করলাম ।
কুমিল্লা থেকে সব বন্ধুরা সিলেটে এলো শাবিপ্রবি টে পরীক্ষার জন্য । অনেক দিন পর এদের দেখা পেয়ে পাগল হয়ে যাবার জোগাড় । দৌড়ে বাসায় এসেই বইপত্র গোছাতে শুরু করলাম । ‘আপা কাল সকাল সাতটায় কুমিল্লা চলে যাব আর আজ রাতে হোটেলে থাকব সবাই এক সাথে ।‘ আর কোন কিছু না বলেই বইপত্র নিয়ে ভোঁ দৌড় । প্রচণ্ড হই হুল্লোড় করে রাত কাটালাম । সকাল ছয়টায় হোটেল থেকে বের হলাম ট্রেনের উদ্দেশ্যে । নাচতে নাচতে এসে দেখি গেটে দুলাভাই হাসি মুখে দাঁড়িয়ে আছে । আমার মন খারাপ হয়ে গেল । শুধু শুধু লোকটার উপর আমি রেগে আছি । তাঁর সাথে আমার নিম্নলিখিত কথাবার্তা হল ।
দুলাভাইঃ আজকে মজার একটা ঘটনা ধরা পড়ল ।
আমিঃ সবই মজার ঘটনা । আপনে কি ধরলেন সেইটা আগে বলেন ।
দুলাভাইঃ কাজের মেয়েটা এতদিন নানান খারাপ কাজ যা করতেছে সেইটা আমি আর তোমার আপা ঠিকই আন্দাজ করছিলাম । কিন্তু কালপ্রিট ধরতে পারি নাই এতদিন...
আমিঃ এখন কি ধরা পড়ল ?
দুলাভাইঃ মোটামুটি নিশ্চিত হয়েছি ।
আমিঃ বাহ ভালো তো । সে করছে টা কি?
দুলাভাইঃ সে তোমার আপার বেশ কিছু কাপড় চোপড় আর টাকা চুরি করে আজ ভোর আনুমানিক ৫ টায় পালিয়েছে ।
আমিঃ কি সর্বনাশ । পুলিশে খবর দেন । দুলাভাই, ট্রেন ছেড়ে দিয়েছে আমি উঠলাম । পরে বাকি কথা বলব । বাই
দুলাভাইঃ বাই । ইয়ে জাকু, সে কি তোমার সাথে যাচ্ছে? এই ক্ষতিটা না করলে হত না?
ট্রেন হেলে দুলে প্লাটফরম ছেড়ে বাইরে এসে পড়েছে । আমি জানি এখন একটা দীর্ঘ বাক নিয়ে সে সিলেট শহরকে বিদায় জানাবে । সোজা সামনের দিকে আমি তাকিয়ে আছি । ওইতো অজগর সাপের মত ধিরে সুস্থে বাক নিচ্ছে । মনে মনে বলছি বিদায় । বিদায় হে পবিত্র শহর ।
৩রা নভেম্বর ২০১৩ ইং রাত ৩ টা ৩৫ মি ।
২| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৩ ভোর ৪:২০
zaku বলেছেন: bhalo kharap jai hok apnara plz doay kore kicho likhe Jan....ta na hole Ami likhte parina .....
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৪৪
হকেরআলো বলেছেন: কঠিন তো ?