নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সতীত্ব খোয়ানো নারীর গর্ভে সোনা জন্মালো নাকি তামা জন্মালো তাতে কি আসে যায় ? আমি কলংকের সোনা।

zaku

আমি সহ আমার বাকি চার ভাইবোনের জন্ম হয়েছিল একটা গোয়াল ঘরে। সে ঘরে প্রতিদিন সাপ এসে গাভির দুধ খেয়ে যেত। আমরা আতংকে জড়সড় হয়ে সাপের দুধ খাওয়ার দৃশ্য দেখতাম। সাপ সম্ভবত কুকুরের সাথে খুব একটা বিবাদে যায় না। আমাদের সাথে সে সাপের বিবাদের কথা কেউ কখনো বলেনি।

zaku › বিস্তারিত পোস্টঃ

রয়েলদের দিনাত্রি

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:৩৭

আবুল কাকা আছেনা হ্যাঁ, কোন কথা না কইলে তিন মিনিটে খাওয়া ফিনিস করে।

আমি জিগাইলাম- আর কথা কইলে?

হাজার কথা কইলেও খাইতে তাঁর পাঁচ মিনিটের বেশি লাগেনা, রয়েল খুব গর্বিত ভঙ্গিতে জবাব দিল। রয়েল বয়সে আবার সামান্য বড়। নানার বাড়িতে আমার সম বয়সী তেমন কেউই নাই। খালতো ভাই দু একটা থাকতে পারে কিন্তু ওরা আমাদেরকে পাত্তা দেয়না। আমার দরদ সামান্যও যদি কেউ বুঝে তবে সে রয়েল। তাঁর চেহারায় ক্ষেত ক্ষেত একটা ভাব আছে । আর আমার মুখে গায়ে পায়ে তো মাটি লেগেই থাকে। সন্ধ্যার সাথে সাথেই আমরা দল বেঁধে কুলি মজুরদের সাথে মাটিতে বসে খেয়ে দেয়ে শুয়ে পড়ি। গভীর রাতে এ বাড়ির মেহমানেরা টেবিলে বসে খাওয়া দাওয়া সারে। তাঁদের চামচ প্লেটের টুং টাং আওয়াজ আর নানার গুরু গম্ভীর গলার আওয়াজে আমার ঘুম ভেঙ্গে যেত। আধো আলো আর আধো অন্ধকারে দেখতাম একদল পরী সোনার পোশাক পরে নানার চারদিকে গোল হয়ে বসে আছে। বিশাল প্লেটে সামান্য ভাত্‌ একটু ঘি, পোড়া মরিচ আর প্রচুর রসুনের কোয়া সরিষার তেলে লাল লাল ভাজি করে রাখা। আমি আমার জীবনে নানাকে রাতের খাবারে অন্য কোন মেনুতে খেতে দেখিনি। গোল হয়ে বসে থাকা পরীরা সবাই আমার মা খালার দল। এরা এত এতো গহনা পরত যে মাঝে মাঝে এসব আমার কাছে বিকল্প পোশাক মনে হত। অল্প আলোতে এসবে বসানো পাথর গুলো ঝিকমিক করত।

কি আজব ব্যাপার। এখানে ভাত খাওয়ার বিষয়টাও সময়ে হিসেব হয়। আর আমাদের পুরা বাড়িতে কারো কোন ঘড়ি নাই। ঘড়ির কারো প্রয়োজনও নাই। আমরা চলি চান তারার হিসাবে। শীতে প্রতিদিন পাখি আর বর্ষায় অফুরন্ত মাছ শিকার করি। সাইকেলের একটা ভাঙ্গা রিং আর তিন চারটা কুকুর হল সঙ্গী। ঝড়ের বেগে এ পাড়া ও পাড়া করি। কোন পাড়ার কোন দল আমাদের সাথে লাগার সাহস করেনা শুধুমাত্র কুকুরের ভয়ে।

আর আচারের তেল হইলে তো কথা-ই নাই। এক মিনিটে খাওয়া শেষ- রয়েল যোগ করলো। আমি মনে মনে আফসসে মরি। আমার এমন চাচা নাই কেন। ওরাও যদি আজ আচারের তেল দিয়া ভাত খাইতে পারতো তাইলে নিশ্চয়ই একটা উচিত জবাব দেয়া যাইত। এমন সময় জামিল যোগ দিল। সে বারো মাস হাটু পর্যন্ত বুট জুতা পরে। থাকে শহরে। সুযোগ পেলেই হয় আমাদের পায়ে পাড়া দেয় অথবা আম্মু আম্মু করতে করতে শুধু শুধু কানতে থাকে। খালা আসলে তিন চারটা বাচ্চা হয়তো আতঙ্কে সাক্ষী দিয়ে বসে যে, আমি জামিলকে মারছি।

আবুল আঙ্কেট ( সে মামাকে আঙ্কেল বলতে চাইত। কিন্তু উচ্চারন করত আঙ্কেট ) আমাদের বাসায় এক সেকেন্ডে খাওয়া শেষ করছে- বলে জামিল এমন একটা ভাব করতে লাগল যে, সে তাঁর এই অবস্থান থেকে এক চুলও নরবেনা। আমরা তাঁর সমর্থনে মাথা নাড়লাম। জামিলের শত্রু হলে আবুল মামা মারবে। এই দামড়াকে সে কোলে নিয়ে সারাদিন ঘুরে বেড়ায়। আর আমার এই মেঝো মামাটা হচ্ছে এ বাড়ির অলিখিত ঈশ্বর। জমকালো অন্ধকারাচ্ছন্ন এক বিশাল কালো বাড়ি যেখানে শুধু কবুতর পোষার জন্য আলাদা লোক এবং ঘর আছে। যে বাড়ির প্রতিটি পরতে পরতে লেগে রয়েছে রক্ত স্নানের দগদগে ক্ষত। পৈশাচিকতার সর্বচ্চ প্রান্তর থেকে এ বাড়ির পৈশাচিকতা শুরু। এখানকার প্রতিটি ফুটে পাওয়া যাবে একেকটা নির্যাতিত শ্রমিকের একেকটা আস্ত জীবনগাথা। এইখানে নিকষ কালো রানু, জুলিরা জন্মেছে সাদা মায়ের গর্ভে। এইখানে নিকষ কালো রানু জুলিরা জন্ম দিয়েছে রাজপুত্রের চেহারার অসংখ্য শ্রমিক।

আজ সকাল থেকেই গুড়া মাছ ধরার চেষ্টা করেছি। কিছু পাইনি। মাঝে আমার একমাত্র মহামুল্যবান হাফ শার্ট ও হাফ প্যান্টে কাদা মাখিয়ে একাকার করে বসে আছি। এখন গোসল করে কি পরব এই চিন্তায় আমি যখন অস্থির তখনই রয়েল তাঁর গোপন গুহা থেকে একটা হাঁসের ডিম নিয়ে বের হয়ে এলো। খুশিতে আমার চোখে পানি এসে যাবার অবস্থা। আমাদের বাড়িয়ে কচুঘেচু একমাত্র খাবার যখন নিজেরা কিছু যোগাড় করতে পারিনা। আর এখানে কামলাদের দেয়া হয় এসব। যেহেতু আমরা কামলা শ্রেণীর আত্মীয় সেহেতু কোন বিকল্প নেই। একবার আবদার করেছিলাম পরে ভাত খাব বলে। এর ফলাফল খুব খারাপ হয়েছে। আমি ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করলাম- ডিমের বিষয়টা বড় মামি জানে রয়েল?। এই ডিমটা কি কোন সময় আম্মা পাড়ছিল যে জানবে - তাঁর নির্বিকার উত্তর। আবার জিজ্ঞসে করলাম – পিয়াজ্‌ কাঁচামরিচ আর তেল? রয়েল গম্ভীর ভাবে বলল, -সব আমার উপর ছাইড়া দে। সব ছাইড়া দিলাম ঠিকই কিন্তু মনের ভিতর কু ডাক ডাকতে শুরু করল।

২৯।০৪।১৪

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৪:৫১

মাহমু২৩ বলেছেন: ব্যাংক জব, বি সি এস বা যেকোনো নিয়োগ পরীক্ষার মডেল টেস্ট দিতে চাইলে ভিজিট করতে পারেন http://www.etestbd.com/ এখানে ৬০+ মডেল টেস্ট আছে ...

২| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৫:৫২

এনামুল রেজা বলেছেন: বেশ লাগলো পড়তে..

৩| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০২

zaku বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.